'বর্ষাবন্দনা' ও মালদার নদী ভাঙন



রূপ কুমার বর্মণ ও কাজী কামাল নাসের, কলকাতা
'বর্ষাবন্দনা' ও মালদার নদী ভাঙন

'বর্ষাবন্দনা' ও মালদার নদী ভাঙন

  • Font increase
  • Font Decrease

সংস্কৃত মহাকবি কালিদাস বর্ণিত এবং ঋতুচক্রের আবর্তে আগত বর্ষার শুরুতে ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ থেকে অবিরাম বৃষ্টিধারার সঙ্গে গুরু গুরু মেঘের ডাক বাঙালির কবি মনে আনন্দের বান ডেকে আনবে, এনিয়ে কারো মনে কোন সন্দেহ নেই। দুকুল ছাপিয়ে পাহাড়ি নদীর কুলকুল ধারা প্রতিবছর সমতল ডিঙিয়ে নদীমাতৃক বাংলার হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। কবির কলমে সৃষ্টি হয় বর্ষাবন্দনার মিষ্টি কাব্য। তাই কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ বা আধুনিক কবিরাও বর্ষামঙ্গল রচনায় কখনই কার্পণ্য করেননি। স্বভাবিকভাবেই বাদল মুখরিত নিশীথে গায়ক-গায়িকারাও বর্ষাবন্দনায় মেতে ওঠেন। কল্লোলিত প্রথম কদম ফুলের সুবাসে সঙ্গীতের নবধারা জলে স্নাত স্নিগ্ধ বাতাশের স্পর্শ বর্ষাকে অনেকের কাছেই করে তোলে অতি প্রিয়। আর এই বর্ষা যদি উত্তরবঙ্গের হয় তাহলে সেটা তো কবিদের কাছে এক কথায় অতুলনীয়!

তবে বর্ষায় উত্তরবঙ্গের আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য আছে। সেই রূপ অনেক বেশি ভয়ংকর। আষাঢ়-শ্রাবণের অবিশ্রান্ত ধারায় গঙ্গা-পদ্মার সুস্বাদু ইলিশের মোহে মজে থাকা কবি, পর্যটক বা শহরবাসী সাহিত্যিরসিকদের দৃষ্টির বাইরে থাকা বর্ষার উত্তরবঙ্গকে অনুধাবন করতে হলে আমাদের তাকাতে হবে এখানকার নদী ভাঙনের দিকে।

নদীতীরের বাড়িঘর বা কৃষিজমির ভাঙন নদীমাতৃক পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের একটি অতি পরিচিত দুর্যোগ। পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মালদায় প্রতি বছর অতি বৃষ্টি, বন্যা ও নদী ভাঙনের মত  প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য বিপুল পরিমাণে সম্পদ ধ্বংস হয় ।

১৯৯৮ সালে মালদার টানা তিন মাসের বন্যাতে প্রায় ৮৭৮.৫৮ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ নিজেদের বাসভূমি হারিয়ে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষে (Internally Displaced Persons) পরিণত হয়েছেন। বিশ শতকের শেষ তিন দশকে (১৯৬৯-১৯৯৯) মালদা জেলায় গঙ্গার বাম তীরের ভাঙনের ফলে প্রায় ৪.৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তবে সমস্যা এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। মালদা জেলার ভূতনি অঞ্চল থেকে কলিয়াচক পর্যন্ত নদী ভাঙনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বছরের পর বছর। রতুয়া, মানিকচক, ইংলিশ বাজার, বৈষ্ণব নগর, মোথা বাড়ি ও কালিয়াচক অঞ্চলের প্রায় কয়েকশ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

‘গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি'র জরিপে দেখা গিয়েছে যে কালিয়াচক ও মানিকচকের ৭৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ক্ষতি হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে এই অঞ্চলের ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৪টি উচ্চ বিদ্যালয়। বছরের পর বছর নদী ভাঙনের ফলে দুই অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার পরিবার। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা মনে করেন তাদের মূল সমস্যা শুরু হয়েছিল ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণের পর। ফারাক্কার বাঁধ তৈরির পর গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তনে ২০০২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৮৫৬ কোটি টন পলি গঙ্গা গর্ভে সঞ্চিত হয়েছে। তাই গঙ্গা দ্রুত খাত বদলানোর চেষ্টায় পাড় ভেঙে চলেছে। গঙ্গার গ্রাস থেকে বাদ পড়েনি অন্যান্য ছোটো ছোটো নদীও। পঞ্চানন্দপুরের কাছে থাকা পাগলা নদীর চিহ্ন ২০২১ সালে খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

গঙ্গার পাড় ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কলিয়াচক ২নং ব্লকের কাকৃবনা, ঝাওবনা, গোপালপুর ও রহিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাস্তুচ্যুত মানুষেরা তাঁদের সঙ্কট মোচনের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ নাগরিক কমিটি'। এই কমিটি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে চলেছে কয়েক দশক ধরে। গঙ্গা ভাঙ্গনে তলিয়ে যাওয়া গ্রামের বাসিন্দারা কৃষিজমি হারিয়ে রুজি-রোজগারের আশায় পাড়ি দিচ্ছেন ভিনরাজ্যে। 

নদী ভাঙনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গঙ্গার বুকেও উঠছে একের পর এক চর।  মানিকচক ও মথুরাপুরের মাঝে ফূলহার ও গঙ্গার বুকে জেগে ওঠা প্রায় ৭ বর্গ কিমি জুড়ে বিস্তৃত এমনই একটি চরের নাম হল ‘ভূতনি’। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ভূতনি চর ঠিকই ছিল। চরের লক্ষাধিক মানুষ চৈত্র মাসে তাদের জমিতে ভাদুই ধান বুনতেন ও বর্ষার পর জেগে ওঠা চরের জমিতে তারা বুনতেন কলাই । অগ্রহায়ণ মাসে শুরু হতো কুমড়ো ও তরমুজ চাষ। কৃষিকে কেন্দ্র করে ভূতনিতে গড়ে উঠেছিলো এক মজবুত অর্থনীতি। ১৯৭৬ সালের পর থেকে ভূতনি অঞ্চলে বন্যার প্রকোপ বাড়তে থাকে। ভূতনিকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয় ‘ভূতনি রিং বাঁধ’। এই বাঁধ দিয়ে ভূতনির কিছু অংশ বাঁচানো গেলেও কৃষিকাজে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষদের অনেকেই নিজের গ্রাম ছেড়ে মালদার মূল শহরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

২০১৭ সালে মালদার উত্তর পশ্চিম (মূলত রতুয়া ১নং ও রতুয়া ২নং ব্লক) অঞ্চলে বন্যার প্রকোপ শুরু হয়। ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে মহানন্দা টোলা, বিলাইমারি ও মহান  টোলা অঞ্চলের বহু একর জমি চলে গিয়েছে নদী গর্ভে । ২০২১ সালের বর্ষায় মানিকচক অঞ্চলে ভাঙন আবার ভয়ানক রূপ নিয়েছে।

বন্যা ও ভাঙনের  ফলে ধীরে ধীরে মালদার মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বহু গ্রাম। ক্রমশই বেড়ে চলছে সঙ্কট-জনিত বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা।  তাই কলকাতায় বসে কবিরা বর্ষা বন্দনায় মেতে উঠেলেও মালদার গঙ্গা তীরের বাসিন্দারা বর্ষার সময় প্রথম ফোটা কদম ফুল দেখেও কবিতার বদলে আশংকার প্রহর গোনেন।

ড. রূপ কুমার বর্মণ, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও আম্বেদকর চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক । কাজী কামাল নাসের,  ভারতীয় সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা অনুষদ (নয়া দিল্লী) প্রদত্ত গবেষণা প্রকল্পের ক্ষেত্র সমীক্ষক।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;