হিমালয়ের কোলে সাজানো শহর সিমলা



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হিমালয়ের কোলে সাজানো শহর সিমলা

হিমালয়ের কোলে সাজানো শহর সিমলা

  • Font increase
  • Font Decrease

'দিনের আলো কমে আসছে, পাখিদের সঙ্গে আমাদেরও ফেরার পালা। জঙ্গলের রাস্তায় খুবই আস্তে গাড়ি চলছিল, হঠাৎ দেখি গাড়ির সামনে এক হিমালয়ান মোনাল রাস্তা পার হচ্ছে। গাড়ি থেকে নামতে নামতেই সে জঙ্গলে হারিয়ে গেল। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে নামছে।' হিমালয়ের কোল ঘেঁষা জনপদ থেকে এক পর্যটক জানালেন পায়ে পায়ে শীত এগিয়ে আসার পদধ্বনি আর প্রকৃতি ও পরিবেশের বদলে যাওয়ার কথাগুলো।

হিমালয় সন্নিহিত এলাকাগুলো গ্রীষ্মঋতুতে শীতল পরশের জন্য উপযুক্ত স্থান হলেও শীতে সেখানে পাওয়া যায় শ্বেতশুভ্র চরাচরের আরেক আমেজ। ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির ফারহান আর রাজুর কথাও মনে পড়ে তখন। সব কাজ ফেলে প্রিয় বন্ধু আমির খান তথা র‍্যাঞ্চোর জন্য চতুরকে নিয়ে তারা গাড়ি ছুটিয়েছিল দিল্লি থেকে সিমলা। খুঁজতে খুঁজতে সিমলা থেকে ৪০ কিমি দূরে চেল প্যালেসে পৌঁছে গিয়েছিল তারা।

মহামারির কারণে এক বছর ঘরবন্দি থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠা লোকজনও গ্রীষ্ম ও শীতের সন্ধিক্ষণে ছুটছেন হিমালয়ের নানা হিলস্টেশনে। বিশেষত সবার আকর্ষণ ছবির মতো সাজানো শৈলশহর সিমলা। বায়ু দূষণে দমবন্ধ দিল্লির লোকজনও শ্বাস নেওয়ার আশায় ছুটছেন কাছের সিমলায়।

দিল্লি থেকে সিমলা যেতে হয় হরিয়ানা ও পাঞ্জাব ছুঁয়ে। প্রথমে দিল্লি থেকে পানিপথ। ন্যাশনাল হাইওয়ে ধরে পানিপথ থেকে কারনাল। তারপর ঐতিহাসিক কুরুক্ষেত্র পেরিয়ে এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট পর পাঞ্জাবের ক্যান্টনমেন্ট সিটি আম্বালায়।

সিমলার অনিন্দ্য প্রকৃতি

এ পর্যন্ত আসতে আসতে নির্ঘাত বেশ খিদে পেয়ে যাবেই। গাড়িতে বসেই চা, পাস্তা, পরোটা সহযোগে পনির আর আলুভাজা খাওয়াই তখন দস্তুর। কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ি আবার গতিশীল হলে খুবই ভাল রাস্তায় জিরাখপুর পর্যন্ত কোনও অসুবিধে হবে না। তারপর থেকে অবশ্য ছোটখাটো যানজট। একটু বেশি সময় যাবে পথে। সামনেই চণ্ডিগড় শহরের রাস্তা এড়িয়ে ডান দিকের হিমালয়ান এক্সপ্রেসওয়ে ধরতে হবে। 

হিমালয়ান এক্সপ্রেসওয়ে এত ভাল রাস্তা যে মনে হবে, এ পথে গাড়ি চলা যেন শেষ না-হয়! দৃশ্যপট ক্রমশ পাল্টাবে, ঢেউখেলানো পাহাড় দেখা যাবে, বাড়বে পার্বত্য সবুজের ঘনত্ব। গাড়ির কাচ নামাতেই ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা চোখেমুখে। গাড়ির সানরুফ দিয়ে দেখা যাবে নীল আকাশ, একমুঠো শীত-মাখানো রোদ্দুরও ঢুকে পড়বে একেবারে গাড়ির ভেতরে।

হিমালয়ের টানে এভাবেই ভ্রমণে বের হওয়ার আনন্দ উপভোগ করেন পর্যটকরা। নগরীর ঘেরাটোপের বন্দিত্ব ছিঁড়ে মনেপ্রাণে পৌঁছে যান অরণ্য সবুজের পার্বত্য পাকদণ্ডীতে। কখনও রোমন্থন করেন, বহু আগের এমনই কোনও এক শীতের সকাল। ঐতিহাসিক টয় ট্রেনে চেপে কালকা থেকে সিমলা যাওয়ার স্মৃতি এখনও রোমাঞ্চিত করে বহুজনকেই। মনে ভেসে উঠে সোনওয়ারা, কোটি, বারোগ, সোলান, ধরমপুর, কান্দাঘাট, সিমলা।

পার্বত্য সুন্দরী সিমলা নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রকৃতির শ্যামলিমা। আবার সেখানকার প্রচলিত অর্থে শ্যামলা কথাটির মানে নীল বাড়ি। সিমলার জাখু শৃঙ্গে এক ফকির একটি নীল বাড়ি তৈরি করেছিলেন। সেখান থেকে সিমলা। আবার শ্যামলার অর্থ নীল নারীও ধরা হয়। হিন্দু দেবী কালীর আরেক নামও শ্যামলা।

সিমলা বা  ইংরেজিতে Shimla ভারতের হিমাচল রাজ্যের সিমলা জেলার একটি শহর ও পৌর কর্পোরেশনাধীন এলাকা। এটি হিমাচল রাজ্যের রাজধানীও। ভারতের ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুসারে সিমলা শহরের জনসংখ্যা ৮১৪,০১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৭% এবং নারী ৪৩%। তবে, এরচেয়ে বহু মানুষ পর্যটক রূপে এখানে আসেন প্রতি বছরই। এখানে সাক্ষরতার হার ৮৩.৬৪%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮৯.৫৯% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭৭.১৩%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে সিমলা এর সাক্ষরতার হার বেশি।

সিমলা শহরের জনসংখ্যার ১০.০২% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী। বিশেষত, অভিজাত ও উচ্চপদাধিকারী লোকজন অবসরজীবনে বাড়ি বানিয়ে বা কিনে সিমলার অনিন্দিত প্রকৃতির বুকে বসবাস করেন। ফলে এখানকার অধিবাসীগণ শিক্ষিত, মার্জিত, রুচিশীল ও সংস্কৃতিবান।

প্রাকৃতিক সিমলা যৌবন ও সৌন্দর্য লাভ করেছে ঔপনিবেশিক শাসকদের হাত ধরে। ভারত শাসনকারী ব্রিটিশরা সিমলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী তৈরি করেন। মূল রাজধানী দিল্লির প্রচণ্ড গরমের সময় সাহেবরা কয়েক মাস এসে  থাকতেন সিমলায়। সঙ্গে নিয়ে আসতেন লোকজন, কর্মচারী, অস্থায়ী অফিস-আদালত। ব্রিটিশ আমলে বাংলায়ও যেমনভাবে গ্রীষ্মকালে রাজধানী কলকাতা থেকে  তুলে নেওয়া হতো দার্জিলিং-এ।

গ্রীষ্মকালীন রাজধানীর মর্যাদা হারালেও সিমলার পরতে পরতে রয়েছে পুরনো কলোনিয়াল আভিজাত্যের দ্যুতিময় নগর বিন্যাস। ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী রূপে সেই অতীত গৌরব এখনও সেখানে বহাল। শহরে পর্বতময়তা, রোপওয়ে, ওক ও পাইনের বীথি এবং রোডোডেন্ড্রন বনের ল্যান্ডস্কেপে ঔপনিবেশিক শৈলীর ভবনগুলো নস্টালজিক ছোঁয়ায় সবাইকে মোহিত করে।

সিমলার ঐতিহাসিক রেলওয়ের স্থাপনা, পুরানো চার্চ ইত্যাদি ভবনের সুন্দর রঙিন কাচের জানালা দিয়ে নান্দনিকতার দৃশ্যাবলী উন্মোচিত হয়। আরও আছে, অবজার্ভেশন লজ অব অ্যামবিভটরি হিল। রয়েছে ছবির মতো সাজানো বাড়ি, পাহাড়ে হাঁটাপথ, পলো, গলফ ও অন্যান্য খেলার প্রচুর আয়োজন এবং অনেকগুলো নামজাদা কনভেন্ট ও বোডিং স্কুল।

সিমলা ভ্রমণের অন্যতম সেরা জায়গা হল সামার পাহাড়, যা সুন্দর শহরটির বিখ্যাত রিজ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই পাহাড়টি সংখ্যাহীন বিশাল সবুজ বৃক্ষ দ্বারা ভরপুর। ভেতরে গেলে সবুজে হারিয়ে যেতে হয় আর উপর থেকে পাহাড়ের কোলে চমৎকার সবুজাভ আচ্ছাদনের মতো দেখা যায়। গ্রীষ্মকালীন পাহাড়টি আসলে সাতটি পাহাড়ের একটি অংশ বিশেষ। সিমলার সৌন্দর্যকে যা সমৃদ্ধ করেছে।

ব্রিটিশ কর্তৃক নির্মিত সিমলার আইআইএএস স্বাধীনতার পর প্রাথমিকভাবে ভারতীয় রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল একটি মানবিক ও কলা শিল্পে অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বিল্ডিংটি একটি নমনীয় সিস্টেমের সাথে একটি শাস্ত্রীয় স্থাপত্য নকশার অপূর্ব নিদর্শন স্বরূপ। সিমলা ভ্রমণে এমন স্থাপনা ও স্থানের অভাব নেই। বিভিন্ন পয়েন্ট, সুদীর্ঘ লন, ব্রিটিশদের হাতে নির্মিত গথিক স্থাপত্যকলা, প্রকৃতি ও স্থাপনার সমান্তরাল অবস্থানের শৈলী সিমলাকে করেছে মোহনীয়। সিমলার পার্বত্য-বনানীর শৈলাবাসে ভ্রমণ এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত কেবল চোখের দেখা বা অনুভবের বিষয় মাত্র নয়, 'লাইফ টাইম মেমোরি' হিসেবে বুকে ধারণা করার অমলিন স্মৃতিস্বরূপ।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;