কটিয়াদীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প ও মাটির তৈরি খেলনা
আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যে মিশে আছে মৃৎশিল্প। মাটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিস দেখাতও দৃষ্টিনন্দিত। কালের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে এই ঐতিহ্য। আধুনিকতার ছোঁয়াতে এসেছে পরিবর্তন। পরিবেশবান্ধব মাটির তৈজসপত্রের ব্যাবহার কমে গেছে। প্লাস্টিকের আধিক্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এখনো প্রচলন রয়েছে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের। বংশ পরস্পরায় ২০-৩০ টি কুমোর পরিবার এখনো তৈরি করছেন মাটির জিনিস। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, গ্রামীণ মেলায় উঠে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। ছোট ছেলে-মেয়েদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন খেলনা। তার মধ্যে, ঘোড়া, ষাঁড়, পুতুল, শিল পাটা, আম, হাড়ি পাতিল, চুলা সহ ইত্যাদী বাহারি রং এর তৈজসপত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে বসেন মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে। ছোট বাচ্চাদের জন্য পছন্দের জিনিসটি কিনে নিচ্ছেন। অনেক ছোট বাচ্চারা দেখে দেখে পছন্দ করে বাবার কাছে বায়না করছে কিনে দিতে।
যুগের পর যুগ ধরে এই ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ মাটির তৈরি জিনিসপত্র গুলো এখনো টিকে আছে। দেখতেও অনিন্দ্য সুন্দর নকশা। চকচকে রং চোখধাঁধানো মনোমুগ্ধকর। এসব প্রাচীন শিল্পের নিদর্শন।
এই শিল্পের প্রধান উপকরণ হল মাটি। সব মাটি দিয়ে এই কাজ হয় না। এসব জিনিসপত্র তৈরি করতে এঁটেল মাটির প্রয়োজন হয়। কারণ হচ্ছে এঁটেল মাটি খুব আঠালো। তৈরি করতে কঠিন শ্রমের দরকার হয়। হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি মুনশিয়ানা দিয়ে তৈরি হয়। কুমোরদের হাতের দক্ষতায় তৈরি হয় মাটির জিনিস।
বিক্রেতা জয়দেব কুমার বলেন, 'আগের মতো মাটির জিনিসের চাহিদা নেই, পরিশ্রম অনুযায়ী দাম পাই না। সৌখিন মানুষের এখনো ব্যাবহার করছে কিছু জিনিস। বহু বছর ধরে এসব তৈরি করি এবং মেলায় বিক্রি করি। ঐতিহ্যের অংশ হিসাবেই বাপ দাদার পেশাকে ধরে রেখেছি।'