প্রাচীন বাংলার পাল শাসনের ইতিবৃত্ত



মো. তাহমিদ হাসান
মো. তাহমিদ হাসান, শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মো. তাহমিদ হাসান, শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলায় ১১৯ বছরের মৎস্যন্যায়ের যুগের পতন ঘটিয়ে ৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে আর্বিভূত হন পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল। পালদের উত্থানের গল্প অধিকাংশ মানুষের জানা হলেও পালবংশের ৪০০ বছর শাসনের মধ্যে প্রায় ৯৪ বছর পরেই তাদের অবনতি গল্প খুব কম সংখ্যক পাঠকেই জানেন।

পালবংশের শক্তিশালী রাজাদের নাম আসলেই গোপাল, ধর্মপাল, দেবপালের নাম চলে আসে। পালদের তাম্রশাসন থেকে তাঁদের কৃতিত্ব কথা জানা যায়। কিন্তু দেব পালের পরেই পালদের সাম্রাজ্যের ক্রমাগত অবনতি শুরু হতেই থাকে।

পালদের অবনতি

ধর্মপালের ছেলে দেবপালের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। বাদল স্তম্ভলিপিতে শূর পালের নাম ও নারায়ণপালের ভাগলপুর তাম্রশাসনে বিগ্রহপালের নাম পাওয়া যায়। বিগ্রহপাল ছিলেন জয়পালের পুত্র এবং ধর্মপালের ভ্রাতা বাকপালের পৌত্র। কিন্তু অধিকতর ঐতিহাসিক শূরপাল ও বিগ্রহপালকে অভিন্ন মনে করেন। আবার কিছু ঐতিহাসিক দেবপালের মৃত্যুর পরে উত্তরাধিকার যুদ্ধের কথাও অনুমান করেন। ৮৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিগ্রহ পাল সিংহাসনে বসার পর মাত্র ৪ অথবা ৫ বছর রাজ্য পরিচালনা করেন।

বিগ্রহপালের মৃত্যুর পর অত্যন্ত দুর্বল ও শান্তিপ্রিয় শাসক নারায়ণ পাল সিংহাসন আরোহন করেন। ভাগলপুরের তাম্রশাসনে নারায়ণ পালের পিতা প্র. বিগ্রহপালের শান্তিপ্রিয় ও সংসারবিরাগীর কথা উল্লেখ ছিল। ঠিক তেমনি নারায়ণপালের স্বাভাব তার পিতা প্রথম বিগ্রহপালের মতোই ছিল। বাদল স্তম্ভলিপি বা তাঁর নিজস্ব ভাগলপুরের তাম্রশাসনে তাঁর সময়ে সাফল্যের কথা উল্লেখ নাই। রাষ্ট্রকূট রাজা দ্বিতীয় কৃষ্ণ পাল রাজ্যে আক্রমণ করেন কিন্তু রাষ্ট্রকূট রাজা বিজয়ের ফলেও কোনো অংশ রাষ্ট্রকূট রাজ্যের ভুক্ত হয়েছিল বলে মনে হয় না। তার সময়েই প্রতীহার রাজাদের আক্রমণের ফলে পাল সাম্রাজ্যের যথেষ্ট সংকোচন হয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। নারায়ণপালের পাশাপাশি সময়ে দক্ষিণ ও পূর্ব বাংলায় স্বাধীন রাজবাংশের উত্থান ঘটে। নারায়ণপালের ১৭ বছর রাজত্ব পাল সাম্রাজ্য পশ্চিম বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

নারায়ণ পালের মৃত্যুর পর ৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তার পুত্র রাজ্যপাল সিংহাসন আরোহন করেন। তার রাজত্বকালে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু তিনিও তাঁর অদূরদর্শিতার কারণে পাল সাম্রাজ্যের পতনরোধ করতে পারেনি।

নারায়ণ পালের মৃত্যুর পর ৯৪০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় গোপাল সিংহাসনে বসেন। তার শাসনামলে বিজয়ের কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি কিন্তু তার সময়ে বৈদেশিক আক্রমণ ঘটে। জানা যায়, চান্দেল্লরাজ যশোবর্ম পরবর্তীতে তার পুত্র ধঙ্গা দ্বিতীয় গোপালের সময় পাল সাম্রাজ্যে আক্রমণ ও লুণ্ঠন চালান। একই সময়ে কুলচুরি রাজবংশ পাল রাজ্যের উপর আক্রমণ চালায়। দুর্বল পাল রাজারা এইসব বিদেশি আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেনি।

দ্বিতীয় গোপালের রাজত্বে শেষের দিকে ও দ্বিতীয় বিগ্রহপালের রাজত্বে প্রথমদিকে যখন পাল সাম্রাজ্য বৈদেশিক আক্রমণে জর্জরিত, সেই সময়ে পাল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রে, উত্তর ও পশ্চিম বাংলায় কম্বোজ বংশের অভ্যুত্থান ঘটে। বাইরে থেকে এসে ক্ষমতা দখল করেছিল এমনটি নয়, কম্বোজদের অভ্যুত্থান পালরাজাদের মধ্য হতেই ঘটেছিল। কম্বোজদের ক্ষমতা দখলেই প্রমাণ করে পাল সাম্রাজ্যের দুর্বলতার কথা।

কম্বোজ রাজবংশ

লুসাই পর্বতের নিকটবর্তী বঙ্গ ও ব্রহ্মদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কম্বোজ জাতির কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার তিব্বতীয়েরা কোনো কোনো গ্রন্থে কম্বোজ নামে অভিহিত হয়েছে। আবার অনেকে মনে করেন কোচ জাতিই প্রাচীন কম্বোজ জাতির বংশধর। কম্বোজরা যে বাইরে থেকে এসে পাল বংশে আধিপত্য বিরাজ করেনি তা প্রমানিত। ধারণা করা হয় কিছু কম্বোজ বংশের লোক পাল বংশের রাজকার্যে নিয়োজিত ছিল। যখন পালবংশ দুর্বল হতে শুরু করে ঠিক তখনই কম্বোজরা ক্ষমতা দখল করেন। দুইটি লিপি থেকে উত্তর ও পশ্চিম বাংলায় কম্বোজদের রাজত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। দশম শতাব্দীর প্রথম দিক থেকেই তাদের এই উত্থানের শুরু এবং শতাব্দীর মাঝমাঝি সময় পর্যন্ত তাদের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। তিনজন রাজার নাম ছাড়া কম্বোজ রাজবংশের অন্যকারো শাসন সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

পুনরায় পাল বংশের উত্থান

দশম শতাব্দীতে পাল সাম্রাজ্য যখন ধংসের দিকে তখনি আবির্ভাব ঘটে দ্বিতীয় বিগ্রহ পালের পুত্র প্রথম মহীপালের। প্রথম মহীপাল পিতার মতো অযোগ্য শাসনকর্তা ছিলেন না। তিনি ধর্মপাল, দেবপালের মতো দ্বিগবিজয়ী ছিলেন। সিংহাসন আরোহন করার পর তিনি পূর্বপুরুষের হারানো যাওয়া রাজত্ব পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হন।

প্রথম মহীপালের ৫ম রাজ্যাঙ্কের বেলওয়া তাম্রশাসন ও ৯ম রাজ্যাঙ্কের বানগড় তাম্রশাসনে পিতৃরাজ্য পুনরুদ্ধারের কথা উল্লেখ আছে।

তাম্রশাসনটিতে বলা হয়েছে, "মহীপাল রণক্ষেত্রে বাহুদর্প প্রকাশে সকল বিপক্ষ পক্ষ নিহত করে অনধিকারী কতৃক বিলুপ্ত পিতৃরাজ্যের উদ্ধার সাধন করে রাজাগণের মস্তকে চরণপদ্ম সংস্থাপিত করে অবনীপাল হয়েছিলেন।"

সেই সময়ে কম্বোজরা উত্তর পশ্চিমের আধিপত্যে ছিলেন। সেই সময় প্রথম মহীপাল কম্বোজদের যুদ্ধে পরাজিত করে পিতৃরাজ্য উদ্ধার করতে সক্ষম হন। প্রথম মহীপালের বড় কৃতিত্ব তিনি পাল সাম্রাজ্যকে আসন্ন বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সেই সাথে ভারতের প্রবল দুই শক্তি চোল ও কলচুরিগণের হাত থেকে তিনি বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব রক্ষা করেছিল।

ইতিহাস সাক্ষী কোনো রাজ্যের উত্থানের পর কোনো না কোনো মাধ্যমে পতন ঘটেছিল৷ পালদের দীর্ঘ ৪০০ বছরের ক্ষমতার মধ্যে সাময়িক পতনের দিকে পাল সাম্রাজ্য ঝুঁকে গিয়েছিল। প্রথম মহীপালের কর্তৃক সেই যাত্রায় পাল বংশ পুনরায় উত্থান বা সাম্রাজ্যে ফেরত এসেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পালদের প্রায় ৫০ বছর ধরে অভ্যন্তরীণ গোলযোগ ও বহিঃশত্রুর আক্রমণের ফলে পুণরায় পতনের দিকে ধাবিত হয়৷ দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বাংলার প্রায় ৪০০ বছর ধরে চলা পাল সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত পতন ঘটে।

মো. তাহমিদ হাসান, শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;