বিশ্বস্বীকৃতি পেল বিশ্বকবির শান্তিনিকেতন



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে/যাবে না ফিরে’—কালোত্তীর্ণ পুরুষ কবিগুরুর সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উদার চিন্তাধারার ছাপ এই দুই লাইনে উপলব্ধি করা যায়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন সীমাহীন জ্ঞানের পরিপূর্ণ বিকাশ। বিশ্ব মানবতাবাদের চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শান্তিনিকেতনকে সমগ্র বিশ্বে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন কবি। কবিগুরুর সেই বাসনা এবার পূরণ হলো ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে স্বীকৃতির মাধ্যমে। 

বাউল লালমাটির দেশ শান্তিনিকেতন উজ্জ্বল হয়ে উঠল বিশ্ব মানচিত্রে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন পেল বিশ্বস্বীকৃতি। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে তকমা পেয়েছে শান্তিনিকেতন। 

গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো এ ঘোষণা দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের নাম টুইটার) ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়ে এ কথা জানায় ইউনেসকো। তাতে বলা হয়, ‘ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ভারতের শান্তিনিকেতন। অভিনন্দন!’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় অবস্থিত শান্তিনিকেতনকে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিতে বহুদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল ভারত সরকার। অবশেষে আজ সেই স্বীকৃতি দিল ইউনেসকো।

শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেসকো বলছে, ‘কলকাতা থেকে এক শ মাইল উত্তরে অবস্থিত শান্তিনিকেতন মূলত একটি আশ্রম। এটি প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে যেকোনো মানুষ সেখানে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার আরাধনা করতে পারতেন।’

শান্তিনিকেতন যে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে, কয়েক মাস ধরেই অবশ্য সে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। বিশেষ করে কয়েক মাস আগে ফ্রান্সভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটসের (আইসিওএমওএস) পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করার পর থেকে এ আলোচনা জোরালো হয়।

গত শুক্রবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইউনেসকোর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৫তম বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার দুই দিন পর গতকাল শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানাল ইউনেসকো।

উল্লেখ্য, ১৯০১ সালে শান্তিনিকেতনে স্কুল এবং ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর পথ চলা শুরু। ১৯৫১ সালে এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায়। শান্তিনিকেতনেই জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

   

রাস্তায় জমা পানিতে হারানো শৈশব খুঁজে পেয়েছে তারা



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জমে থাকা পানি শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে

জমে থাকা পানি শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় জমেছে পানি। দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। রিকশা বা ভ্যানে চড়ে কোমর সমান পানি ডিঙ্গিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ। পানির উপর ভাসছে ড্রেন আর রাস্তার ময়লা। ময়লা-আবর্জনার সাথে রাস্তার সেই নোংরা পানিতে আপন মনে ভাসতে দেখা যায় দুই শিশুকে। এ যেন শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে। ভেসে আসা ড্রাম আর ককশিটকে পুঁজি করে আপন মনে খুনসুটিতে মেতেছে তারা।

জমা পানিতে উল্লাসে মেতেছে তারা

বলছি রাজধানীর নিউ মার্কেটের সামনে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা পানিতে সাঁতার কাটা শিশু রাবেয়া ও মিমের কথা। ইট পাথরের শহরে বসবাসকারী শিশুরা জানে না দুপুরবেলা পুকুরে লাফালাফি করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে সাঁতারের আনন্দ। তাই তো বছরের রেকর্ড গড়া এই বৃষ্টি যেন আনন্দের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে তাদের মনে। সুযোগ পেয়ে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা পানিতেই সাঁতারের সখ মেটাচ্ছিলো তারা।

খুনসুটির ব্যস্ততার মাঝে কথা হয় রাবেয়া ও মিমের সাথে। রাবেয়া জানায়, নিউ মার্কেট এলাকায় মায়ের সাথে থাকে সে। মিম তার প্রতিবেশি। এক সাথেই খেলে তারা। গ্রামে থাকতে সাঁতার শিখেছিল রাবেয়া। মায়ের সাথে শহরের এসে আর সাঁতার কাটতে পারেনি। তাই মিমকে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে সাঁতার শিখিয়ে একেই সাথে সাঁতার কাটছে তারা।

টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় জমেছে পানি, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

নোংরা পানিতে সাঁতার কাটা দেখে অনেকেই শিশু রাবেয়া ও মিমের দিকে চোখ বাঁকা করে তাকালেও বাস্তবতা ভিন্ন। ইট পাথরের শহরের সুইমিং পুল কিংবা টাকা দিয়ে সাঁতার কাটার সুযোগ নেই তাদের। তাই ইচ্ছা যখন সাধ্যের কাছে জিম্মি তখন রাবেয়া মিমদের সাঁতার এই শহরের বড় সৌন্দর্যই বটে।

;

চুলের কারণে দু'বার স্কুল থেকে বরখাস্ত



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য মানুষ চুলের কতই না স্টাইল করে থাকেন। কিন্তু, সেই স্টাইল করা চুলই যুক্তরাষ্ট্রের এক তরুণের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। চুলের স্টাইলের জন্য তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছে, তাও একবার নয়, দুইবার। বরখাস্ত হওয়া ছাত্রটির নাম ড্যারিল জর্জ (১৭)। সে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মন্ট বেলভিউয়ের বারবারস হিল হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। সিএনএন, এনবিসির বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মন্ট বেলভিউয়ের বারবারস হিল হাই স্কুলের ছাত্র ড্যারিল জর্জকে চুলের স্টাইলের (ড্রেডলকস স্টাইল) জন্য দুইবার স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এই স্টাইলে প্রথমবার স্কুলে যাওয়ার পর তাকে দুই সপ্তাহের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছিল। দু’সপ্তাহের শাস্তি শেষ করে সে আবার চুলের একই স্টাইল করে স্কুলে আসে। পরে তাকে দ্বিতীয়বারের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় জর্জের মা দারেশা জর্জ অনেক কেঁদেছিলেন বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।   

জর্জের মা দারেশা জর্জ সিএনএনকে জানান, আমার ছেলেকে শিক্ষার সাথে অপ্রাসঙ্গিক কিছুর জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে। সে এই পরিস্থিতির কারণে হতাশা বোধ করছে।

দারেশা জর্জ আরও জানান, আমাদের পূর্বপুরুষ সবার ড্রেডলক স্টাইল ছিল এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই নিয়ম সবাই মেনে আসছে। আমাদের কাছে চুলের এই স্টাইলটির সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। ড্রেডলক স্টাইল আমাদের শক্তি এটাই আমাদের শিকড়।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষ ড্যারিলকে বলেছিল ছোট ছোট বেনি বাঁধা চুল তার চোখের নিচে, কানের নিচে এসে পড়ে, যা তাদের প্রতিষ্ঠানের পোশাকবিধির লঙ্ঘন।  

দারেশা এনবিসি নিউজকে বলেন, চুলের কারণে ড্যারিলকে স্কুলে শাস্তি দেয়া হয়েছে। সেই শাস্তির কথা শুনে আমি নিজেই কান্না করি। দারেশা বলেন, একটি ছোট্ট ঘরে বেঞ্চে আট ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এটি খুবই অস্বস্তিকর। প্রতিদিন সে বাড়িতে এসে বলে, দীর্ঘ সময় টুলে বসে থাকার কারণে তার পিঠে খুব ব্যথা হয়।

দারেশা জর্জ এই ঘটনার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে বলেও গণমাধ্যমে জানানো হয়।

;

ভাস্কর্যে চড়ে জরিমানা গুনলেন ২০ লাখ টাকা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার শখ নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সেটা ছোটবেলা হোক কিংবা বড় হলেও। হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার সুযোগ থাকলে সেই সুযোগ সহজে কেউ হারাতে চায় না। তবে, বাস্তবে উঠতে না পারলেও অনেকেই 'দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান'। ইট-পাথরের তৈরি বাঘ, সিংহ, হাতি ও ঘোড়ার পিঠে বসে ছবি উঠাতেও কেউ কার্পণ্য করে না। কিন্তু, এমন শখ পূরণ করতে গিয়ে এক আইরিশ পর্যটককে জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাও আবার সেই জরিমানার পরিমান ১০০ বা ২০০ টাকা নয়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২০ লাখ টাকা (১৯ হাজার মার্কিন ডলার)। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এমন ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইর্য়ক পোস্টের বরাত দিয়ে এমন বিচিত্র খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এ ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (আগের নাম টুইটার) ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, আইরিশ ওই পর্যটক এক ব্যক্তি সিংহের মাথায় একটি হাত দিয়ে রেখেছে ও তার আরেক হাতে একটি টর্চ—এমন একটি ভাস্কর্যের সিংহের পিঠে চড়ে নামতে গিয়ে ভাস্কর্যের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইরিশ পর্যটক বেলজিয়ামের ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জে ‘দ্য বোর্স’ নামে একটি সিংহের ভাস্কর্যে চড়ে নামার সময় ভাস্কর্যের হাতে থাকা মশালটি ভেঙে ফেলেন। যার কারণে ওই ব্যক্তিকে ১৯ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ওই পর্যটক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ভেঙে ফেলা ভাস্কর্যটি সংস্কারের একদিন পরই এমন ঘটনা ঘটেছে। ভাস্কর্যটি সংস্কার করতে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছিল বলেও জানানো হয়। 

গণমাধ্যমটির খবর অনুযায়ী, পুলিশ ওই পর্যটককে কাছের একটি ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁ থেকে গ্রেফতার করে। পর্যটক তার ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেছেন।

সংস্কার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক নেল ভ্যানডেভেনেট গণমাধ্যম ভিআরটি নিউজকে বলেন, ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন এবং এই ভাস্কর্যগুলো আমাদের তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যে। আমরা দ্রুত এটি সংস্কার করতে চাই, তবে এতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও লাগতে পারে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পুরো ভবনটির আগের সৌন্দর্য মাত্রই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভবনের দুটি সিংহের ভাস্কর্যসহ অনেক ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হয়েছে।

নেল আরও বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, ভাস্কর্যগুলোকে মানুষ অনেক গুরুত্ব দেবে। কিন্তু যা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক।’

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভাস্কর্য মেরামত করতে বেলজিয়াম সেই আইরিশ পর্যটকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাইছে। 

;

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা



সাহিদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত জামালপুরের ইসলামপুরের চরাঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। প্রতি বছর রবি মওসুমে ইসলামপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়ে থাকে। স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচের বেগুন চাষে অধিক টাকা আয় করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাই স্থানীয় কৃষকরা বেগুন গাছকে নাম দিয়েছেন টাকার গাছ।

চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় বেগুন চাষিরা তাই আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। ইসলামপুরের চরাঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের বেগুন, শীতের সবজি হিসাবে দেশ-বিদেশে ব্যাপক কদর ও সুখ্যাতি রয়েছে। ইসলামপুরের উৎপাদিত সাদা, কালো ও বল বেগুন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। এছাড়া বেগুন চাষে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় বাড়ছে চাষীর সংখ্যা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ২৪০ মেক্টিক টন বেগুন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন উৎপাদন হয়েছে ৪৫ হাজার ৭২৫ মেক্ট্রিক টন বেগুন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ৫০ হাজার ৭৮০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদন হয়েছে।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে বেগুন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস। এতে ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে এক কেজি বেগুন ৫০ টাকা।

ফলে ১ মেক্ট্রিক টন বেগুনের দাম দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুনের মূল্য ৫০ টাকা দরে আনুমানিক বাজার মূল্যে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৪০ শতাংশের এক বিঘা জমিতে সাড়ে ৪ হাজার বেগুনের চারা রোপণ করা যায়। ফল আসতে ৪৫ দিন সময় লাগে। এসময় পর্যন্ত কৃষকদের খরচ হয় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার মতো। আবহাওয়া ও জমির উর্বরতা ভালো হলে ৪৫ দিন পর থেকে টানা তিন মাস প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ মণ বেগুন তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। গড় হিসাবে এ তিন মাসে বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়ে থাকে ২২০ মন বেগুন। পাইকারি গড় হিসাবে ২০ টাকার দরে বাজার মূল্যে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪নং চরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘তার গত বছরের এক বিঘা জমিতে মোট খরচ হয়েছে ৩৬ হাজার টাকার মতো। আর বেগুন বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো। কম খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় এবছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে বেগুনের চারা রোপণ করেছেন’।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

একই এলাকার কৃষক আমজাদ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বেগুনে আরও লাভ বেশী হতো । সঠিক সময়ে যদি কৃষি অফিসাররা আমাদের সঠিক পরামর্শ দিতো। তারা আমাদের কোন খোঁজ-খবরই রাখেন না। আমরা গ্রামের মানুষ চাষাবাদ করেই সংসার চালাই। সব সময় মাঠেই পড়ে থাকি। গত ১৫ দিন হলো সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বেগুনের চারা গাছ লাগিয়েছি। মাঝে খেতের কিছু চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।’

গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতেরচর এলাকার সোহাগ মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা কৃষক মানুষ। এই যে আমি এক বিঘা জমিতে বেগুন গাছের চারা লাগিয়েছি, এটাকে আমি চারা গাছ মনে করি না , মনে করি টাকার গাছ। আশা করছি গত বছরের মতো এবছরেও ভালো ফলন হবে। তাই দিন রাত রোদে পুড়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছি কিছু-টাকা লাভের আশায়।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি বেগুন চাষে। তাই তারা আমাদের পরামর্শে আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। এ উপজেলায় বারি-১ জাতের বেগুন বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া বোম্বাই বেগুন, লম্বা বেগুন ও বাগলতি (ফম বেগুন) বেগুন নামে আরও তিন জাতের বেগুনের চারা রোপন করা হয়েছে।;

জামালপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ উপজেলার মাটি পলি দো-আঁশ হওয়ায় এখানে বেগুন চাষ বেশি হয়। আমরাও কৃষকদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করি ও বেগুন চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। সারা দেশে এ বেগুনের চাহিদা রয়েছে।’

;