কর্মচাঞ্চল্যেই সকালের সৌন্দর্য!



মাহমুদ মেনন, সাংবাদিক ও শিক্ষক
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সকালবেলা চা খেতে খেতে হঠাৎ বাইরের দিকে তাকিয়ে সহধর্মিনী বললেন, ‘কী সুন্দর একটি ঝকঝকে সকাল- অথচ একটুও আর সুন্দর লাগছে না! সকালের সৌন্দর্য আসলে কর্মচাঞ্চল্যে!’ কথাটি ভাবিয়ে তুললো। সত্যিই তো‍! একটি সকালের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে মানুষের কর্মচাঞ্চল্যে! নগর জীবনের এটাই নিত্য চেহারা। সকালবেলা অফিসমুখী মানুষগুলোকে দেখতেও খুব ভালো লাগে। সবচেয়ে ভালো লাগে তাদের ত্রস্তপায়ে হাঁটা।

পৃথিবীর অপরপীঠে নিউইয়র্ক শহরেই দেখেছি এর সবচেয়ে সেরা দৃশ্যপট। সেটাই আগে বলি। ম্যানহাটন নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র। বলা চলে কর্মমুখর পৃথিবীরই প্রাণকেন্দ্র এটি। কেন বলছি?- কারণ পৃথিবীর নিউক্লিয়াস যদি হয় নিউইয়র্ক। তাহলে নিউইয়র্কের নিউক্লিয়াস এর ম্যানহাটন। আর ম্যানহাটনের নিউক্লিয়াস এর টাইমস স্কয়ার। কংক্রিটের তৈরি গ্লাস অ্যান্ড লাইটসের এক চোখজুড়ানো দৃশ্যপট। সেই টাইমস স্কয়ারকে ঘিরে তার মাটির নিচের অংশ রয়েছে ১২১টি ট্রেন স্টেশন। ফিফথ এভিনউ-ফিফটিথ্রি স্টেশন, থার্টিফোর্থ স্ট্রিট-হাডসন ইয়ার্ডস, সেকেন্ড এভিনিউ, সিক্সথ এভিনিউ, এইটথ এভিনিউ, ব্রডওয়ে লাইন, ফোর্টি সেকেন্ড স্ট্রিট, রোকেফেলার সেন্টার সাবওয়ে স্টেশন এমন সব নাম।

এরমধ্যে ফোর্টিসেকেন্ড স্ট্রিটে ভিড়টা বেশি থাকে। এখান থেকে সহজেই বের হয়ে আসা যায় টাইমস স্কয়ারে। এছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ডের এই পথটি ধরেই যেতে হয় পাশেই পোর্ট অথরিটি বিল্ডিংয়ে। সেখান থেকে ছাড়ে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার বড় বড় বাসগুলো। স্টেশনটি পাতালদেশে ছয় কিংবা সাততলা গভীর। একেকটি স্কেলেটর, একেকটি স্টেয়ারকেস, লিফট কানায় কানায় ভরে থাকে প্রতিটি সকাল। কর্মমুখী মানুষ যেমন ঘরে ফেরে, বলা হয়- নিউইয়র্ক নেভার স্লিপস, রাতেও জেগে থাকা শহরে রাতের শিফটে কাজকরা মানুষগুলোও ঘরে ফেরে- সে কারণে আপ-ডাউন দুটি পথই থাকে সমান সচল।

তাছাড়া- এই ম্যানহাটনে যেমন মানুষ কাজে আসে- তেমনি এখানে যারা বাস করেন- বলা হয়, ২২ বর্গমাইলের ম্যানহাটন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরাংশের একটি। যেখানে প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ মানুষের বাস। তারাও কেউ কুইন্স, কেউ ব্রংকস, কেউ ব্রুকলিনের পথে ছোটেন। কেউ কেউ অদূরের নিউজার্সি স্টেটেও যান। কাজে যাওয়ার তাড়ায় থাকা মানুষগুলো লম্বা লম্বা পা ফেলে ছুটতে থাকে। কী নারী কী পুরুষ, কী যুবক, কী বয়স্ক- কী শ্বেতাঙ্গ, কী কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপানিক, মেক্সিকান, চায়নিজ, এশিয়ান কিংবা খোদ আমেরিকান- সব দেশ-জাতি-বর্ণ-ধর্ম-গোত্রের মেল্টপটে জমে থাকা মানুষগুলো সকালে কাজের অভিমুখে যে ছুট দেয় সেটাই বোধহয় সকালের সেরা সৌন্দর্য।

ঢাকায় ফিরি। এই যে ঢাকা- সেও এক কর্মচঞ্চল শহর। আমাদের হয়তো ম্যানহাটনের মতো গোছানো কোনও স্টেশন নেই। নেই সাবওয়ে। নেই পরিকল্পিত স্ট্রিট কিংবা এভিনিউ। হচ্ছে সবে। তবে মানুষ আছে। সারা দেশ থেকে জীবিকার সন্ধানে রাজধানীতে এসে জমে থাকা মানুষগুলো প্রতিটি সকালে কর্মমুখী হয়। ফলে এখানকার সড়কগুলো ভরে থাকে গাড়িতে। কেউ বাসে, কেউ টেম্পুতে, কেউ অটোরিকশায়, কেউ প্রাইভেট কারে, কেউ মোটরবাইকে, কেউ আবার পায়ে হেঁটেই ছোটে নিজ নিজ কাজে। সড়কগুলোতে গাড়ির হর্ন বাজতে থাকে। তাতে শব্দদূষণ হয় বটে, কিন্তু প্রতিটি হর্নেই থাকে দ্রুত কাজে যেতে হবে, আমায় পথ ছাড়ো— এমন তাড়ার স্পষ্ট প্রকাশ।

বিশেষ করে ঘড়ির কাঁটা সকাল ৮টা ছোঁয়ার আগেই দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী ঢুকে পড়েন যে যার কারখানায়। ঢাকার আশেপাশে ও ইপিজেডগুলোয় গড়ে ওঠা সেসব কারখানার পথে শ্রমিকদের ত্রস্ত পায়ে হেঁটে যাওয়ার সে দৃশ্য ম্যানহাটনের সেই দৃশ্যের চেয়ে কম সুন্দর নয়। নানান রঙের নানার ছাপার কাপড় পরে আমাদের গার্মেন্টস কন্যারা দুপুরের খাবার নেয়া টিফিন ক্যারিয়ার হাতে  ঢুকে পড়েন যে যার কারখানায়।

অনেক মানুষ এখন ঢাকার অদূরে গাজীপুরে থাকেন। তারা ভোরে ঢাকায় ফেরা ইন্টারসিটি ট্রেনগুলোয় উঠে পড়েন। গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি করে তারাও এসে নামেন হয় বিমানবন্দর, নয়তো কমলাপুর স্টেশনে। সেখান থেকে দ্রুত ছোটেন যে যার কর্মস্থলে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের দিকে মানুষ ছুটতে থাকে হন্যে হয়ে।

ঢাকায় উবার-পাঠাও এসব রাইড শেয়ারিং চালু হওয়ার পর মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য নিয়ে অনেকেই অখুশি। কিন্তু এটা এখন এক অতি সহজলভ্য দ্রুতযান হয়ে উঠেছে কর্মমুখী মানুষের জন্য। ফলে প্রতিটি সকালে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে, জমাট বেঁধে থাকা গাড়িগুলোর মধ্য দিয়ে এঁকেবেঁকে শতশত যাত্রীবহনকারী মোটরবাইক সিগন্যাল পয়েন্টের সামনে এসে দাঁড়ায়। সিগন্যাল ছাড়ার অপেক্ষায় থাকে। আর সবুজ বাতি জ্বললে, কিংবা ট্রাফিক পুলিশের ইঙ্গিত পেলেই দে ছুট। সে ছোটা যে কেবল যাত্রীকে দ্রুত কাজে পৌঁছে দেয়ার তাগিদে, তা নয়। চালক জানেন, দ্রুত ফ্রি হতে পারলে এই সকালেই হয়তো আরও একটি ট্রিপ তিনি পেয়ে যাবেন। তাতে বাড়বে দিনের আয়। ফলে এই তাড়াতেই তার কর্মচাঞ্চল্যতা। এই তাড়াতেই তার জীবিকা।

নগর জীবনে এসবই সকালের সৌন্দর্য। শুধু ঢাকা কিংবা নিউইয়র্ক কেন! পৃথিবীর সকল বড় বড় শহরের একই চিত্র একই দৃশ্যপট। গোটা বিশ্ব আজ থমকে আছে। কী বেইজিং কী দিল্লি, কী করাচি, কী বার্লিন, কী লন্ডন কী টোকিও- সব। কোথাও নেই কর্মচঞ্চল সকাল। অথচ ভোরের আলো ফোটে সেই একই রকম। হয়তো একটু বেশিই উজ্জ্বল হয়ে ফোটে সে আলো। মনুষ্যসৃষ্ট সকল ধরনের দূষণ বন্ধ থাকায়- হয়তো সকালগুলো আরও নির্মল, আরো শান্ত। কিন্তু এমন নিঃশব্দ, স্তব্ধ, অচঞ্চল সকাল আমরা চাই না। কারণ প্রকৃতিকে শান্ত করে রেখে, পৃথিবীটাকে স্তব্ধ করে দিয়ে, একটি ঘাতক ভাইরাস আজ পৃথিবীময় তার রাজত্ব বিস্তৃত করে একে একে কেড়ে নিচ্ছে মনুষ্যপ্রাণ। সুন্দর সুন্দর সকালগুলোতেও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে ভাইরাসের হানায় ফুসফুস বিকল হওয়া মানুষগুলো। ঢাকার সড়কগুলোতে অ্যাম্বুলেন্সের ভেঁপু ছাড়া আর কিছুই কানে আসছে না। এ কোন মৃত্যুপুরী!

হ্যাঁ প্রকৃতির দেওয়া শিক্ষা থেকে আমাদের অন্তত এটা বুঝে নিতে হবে, প্রকৃতির ওপর অত্যাচারেরই প্রতিশোধ এসব। সে শিক্ষা বোধ হয় গোটা পৃথিবীরই হয়ে গেছে। এবার পৃথিবী ফিরুক তার প্রতিদিনকার রুটিনে। সকালগুলো হোক কর্মচঞ্চল। দুপুরগুলো থাকুক কর্মমুখর। স্বাভাবিক সন্ধ্যা নামুক। রাতগুলো থাক শান্ত ও নির্মল। তবে সে কাজ যেনো পৃথিবী নামের গ্রহটিকে আর কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে না ঠেলে দেয় সে চেষ্টা মানুষকে এখন থেকে করতেই হবে। যার কোনো একটি বিকল্পও আর সামনে থাকছে না।

লেখক:মাহমুদ মেনন, সাংবাদিক ও শিক্ষক 

আরও পড়ুন: রিমোট ওয়ার্কে সকলের জন্য শুভকামনা

যে বাড়ি ফেরাকে গ্লোরিফাই করা গেল না!

করোনা: আসুন ইগনাজ সেমেলুইসকে ধন্যবাদ জানাই

এই লেখাটি ধীরে পড়ুন... কেন? তবে শুনুন

করোনা ক্লান্তি ও আশা জাগানিয়া ঝা রোদ

   

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;