ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে শেষ হচ্ছে না লকডাউন



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন, ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে সবাইকে

বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন, ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে সবাইকে

  • Font increase
  • Font Decrease

বেশ কিছুদিন যাবত থমকে আছে পৃথিবী। কার্যত স্থবির হয়ে আছে জনজীবন। একঘেয়েমি, বিরক্তির সাথে যোগ হয়েছে ভয় আর হতাশা। যত দিন যাচ্ছে আতঙ্ক বাড়ছে বৈ কমছে না। মানুষ খুব দ্রতই এই বিপদ থেকে মুক্তি পেতে চাইছে। ঘরে বসে সকল সুযোগ সুবিধা পেয়েও ছটফট করছে বাইরে যাওয়ার জন্য। সবার মাঝে আজ এই প্রশ্ন উদিত হয়েছে—“আর কতদিন?”

তবে এক্ষেত্রে মহামারির ইতিহাসের দিকে তাকালে হতাশা আরো বাড়বে। দেখা গেছে কোনো কোনো মহামারি পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে নিয়েছে দীর্ঘ সময়। এমনকি কোনোটির এক্ষেত্রে সময় লেগেছে প্রায় ১০০-২০০ বছর। প্রাণ কেড়ে নিয়েছে কোটি মানুষের।

কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে। আশার কথা হলো এই মহামারি মোকাবেলার জন্য পৃথিবীর সকল গবেষকরা একযোগে কাজ করছেন। এমনকি মোটামুটিভাবে সবাই নিজেদের কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি উন্মুক্তও করে দিয়েছেন। তাই খুব দ্রুত গতিতেই চলছে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় বের করার কাজ।

ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে লকডাউনকেই একমাত্র উপায় বলে ভাবছে সকল দেশ। সফলতাও আসছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) কোভিড-১৯ এর উৎপত্তিস্থল উহান থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে লকডাউন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছে মানুষ আবার। কিন্তু এভাবেই কি সফলতা আসবে? মুক্তি মিলবে লকডাউনের বন্দিত্ব থেকে?

এর জবাবে খুব একটা আশাবাদী হওয়ার সময় এখনো আসেনি। কেননা হংকং-ভিত্তিক একদল গবেষক বলছেন, নাগরিকদের প্রতিদিনের জীবন যাপনের উপর চীনের আগ্রাসী নিয়ন্ত্রণ কোভিড-১৯ এর প্রথম তরঙ্গকে থামিয়ে “এ যাত্রায় প্রাণ রক্ষা” করতে পেরেছে বটে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করতে পারেনি। তাই দ্বিতীয় তরঙ্গের বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

গবষকরা অবশ্য শুরু থেকেই বলে এসেছেন লকডাউন কোনো সমাধান নয়। এটা হলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধিকে কিছুটা দমিয়ে রাখা যেন স্বাস্থ্য খাত ভেঙে না পড়ে এবং নীতি নির্ধারকগণ একটি সঠিক পরিকল্পনার গ্রহণের জন্য কিছু সময় পান। যেহেতু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া দুষ্কর হয়ে যায়। ঔষধসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব দেখা দেয়—ইতালি, স্পেন থেকে খোদ আমেরিকাও এক্ষেত্রে উদাহরণ।

তাই বলে হতাশ হয়ে যাওয়ার কিছু নাই। জ্ঞান বিজ্ঞান এবং গবেষণার উন্নতির ফলে খুব সহজেই জানতে পারা গেছে কোভিড-১৯ কিভাবে ছড়ায়, কিভাবে আক্রান্ত করে এবং এর জিনোম কী। যেটা ইতিহাসের আর কোনো মহামারির বেলায় এত দ্রুত জানা সম্ভব হয়নি।

জিনোম হলো জীবের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের বিন্যাস বা নকশা। এর ওপর নির্ভর করে ওই প্রাণী বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। আর জিনোম সিকোয়েন্স করা মানে জীবের বৈশিষ্ট্য জানা। একটা ভাইরাস নির্মূল করতে হলে এবং এর প্রতিষেধক তৈরি করতে হলে ভাইরাসটির জিনোম এবং জিনোম সিকোয়েন্স জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে আশার কথা এই যে, এর জিনোম এবং জিনোম সিকোয়েন্স বের হতে সময় লেগেছে অন্য যে কোনো ভাইরাসের চেয়ে অনেক অনেক কম।

বলে রাখা ভালো, কোভিড-১৯ এর আগেও সম্প্রতি বেশ কিছু ভাইরাস মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে ২০১৫ সালের জিকা ভাইরাস অন্যতম। জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এর জিনোম সিকোয়েন্স করে প্রতিষেধক উদ্ভাবন করতে সময় লেগেছিল ছয় মাস।

জেনে আশান্বিত হতে পারেন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এত সময় লাগেনি। আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার প্রায় ১৫ দিনের মধ্যেই চীনা বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের জিনের গঠন সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন এবং জানতে পারেন। এরপর সাথেসাথেই এটির জিনোম সিকোয়েন্সের কাজ এবং ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির কাজ শুরু হয়।

গবেষকরা কোভিড-১৯ এর প্রতিকারক হিসেবে নির্দিষ্ট একটি ওষুধের চেয়ে, টিকা আবিষ্কারকেই এই রোগ প্রতিরোধের উত্তম উপায় বলে মনে করছেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, একটি টিকার মাধ্যমে শতভাগ লোকের জন্য সম্ভব না হলেও যদি অন্তত ৫০-৬০ শতাংশ মানুষের মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা যায় তবে একটি দেশের ৯০ শতাংশ মানুষকে এর সংক্রমণ থেকে বাঁচানো যায়।

পরীক্ষমূলক ভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে ভ্যাকসিন

তবে কাজ শুরু করে টিকা আবিষ্কার হলেই এটি আক্রান্তের ওপর প্রয়োগ করা যায় না। এর আগে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো প্রাণী যেমন ইঁদুর, বানর ইত্যাদির ওপর তা প্রয়োগ করে দেখে নিতে হয় কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা। এ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হওয়ার পর কিছু স্বেচ্ছাসেবী মানুষের ওপর প্রয়োগ করে এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা তা আবারও যাচাই করা হয়। মূলত এরপরই একটি টিকা বা ভ্যাক্সিন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

আনন্দের সংবাদ এই যে, ইতোমধ্যেই তিনটি টিকা মানুষের শরীরে ব্যবহার করে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড, যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে এবং চীনের উহানে শুরু হয়েছে টিকাগুলোর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ। এ তিন জায়গায় ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মোট ৬৫০ জন সুস্থ মানুষকে এই ট্রায়ালে যুক্ত করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, আরো প্রায় ৪০টির মতো টিকা নিয়ে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। জাপানের একদল গবেষক এই ভাইরাসের ঔষধ আবিষ্কারের কাজ ও প্রায় সফলতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে দাবি করেছেন।

মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব

গবেষকদের বলছেন, এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগতে পারে ১২ থেকে ১৮ মাস। ততদিন সতর্কতা অবলম্বন করে নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করতে হবে। লক ডাউনের নিয়ম কানুন মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করতে হবে চলাফেরা। চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত হাত ধোয়ার কাজ।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;