করোনাভাইরাস: খাদ্য নিরাপত্তা ও বর্তমান বাস্তবতা



এস. এম. আরিফ ইফতেখার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর (ডব্লিউ এফ পি) তথ্য অনুযায়ী, সমগ্র বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় তিন কোটি মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক অবনমন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় প্রায় ১০ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেবার বিষয়টিও তাই এখন হুমকির মুখে পড়েছে। সাহায্যকারী দেশসমূহের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা এই সঙ্কটময় মুহূর্তে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীতে সহায়তার পরিমাণকে হ্রাস করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বাস্তবিক অর্থে এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।    

করোনাভাইরাস বাংলাদেশের অর্থনীতির উপরও ক্রমান্বয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিশ্ব শ্রম সংস্থা (আইএলও), এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্য মতে, বাংলাদেশের মোট কর্মজীবীদের প্রায় ৮০-৯০ ভাগই অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির সাথে যুক্ত। তাই, লক ডাউনে এই বড় সংখ্যক স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে ঘরে বসে প্রতিদিনের খাদ্যসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব। অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে কর্মরতদের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই কেবল তাঁদের অধিকাংশের পক্ষে ঘরে থাকা, শারিরীক বা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য গুদামে বর্তমানে প্রায় ১৬.৯৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ রয়েছে তন্মধ্যে চাল ১৩.৮৭ লাখ মে. টন এবং গম ৩.০৮ লাখ মে. টন। এই মজুদ সন্তোষজনক এবং খাদ্য শস্য ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ‘খাদ্য শস্য পরিস্থিতি’ বিষয়ক এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

খাদ্য শস্যের পর্যাপ্ত মজুদ দেশের মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা দিলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য সবার কাছে পৌঁছে দেয়া এবং খাদ্য কেনার সামর্থ্য থাকার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মজুদকৃত খাদ্য দেশের মানুষের জন্য সরবরাহ করা হলেও অসাধু ব্যবসায়ী বা তৎসংশ্লিষ্ট কেউ যদি অন্যায়ভাবে তা মজুদ রাখে এবং দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তখন খাদ্যের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বিশিষ্ট নোবেল বিজয়ী বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে শুধু খাদ্যের কম উৎপাদনই নয় বরং পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার সত্ত্বেও যদি সুষম বণ্টন না হয় তবুও দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। তাই সংকটকালীন এ সময়ে দেশে মজুদকৃত খাদ্য সরবরাহের পর্যাপ্ততা, সুষম বণ্টন, স্বচ্ছতা এবং সহজেই পণ্য কেনার সামর্থ্যতার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জন্য রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করেছেন যেন তাঁদের অন্যতম মৌলিক চাহিদা খাদ্যের সমস্যায় পড়তে না হয়। পাশাপাশি আরও ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে রেশন কার্ড প্রস্তুতেরও নির্দেশনা দিয়েছেন। খাদ্যের মজুদ বাড়াতে প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহের (২৬ এপ্রিল ২০২০ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত) লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে বোরো মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবজনিত এই সংকটকালীন মুহূর্তে হোম কোয়ারেন্টিন, লক ডাউন ভেঙে ধান সংগ্রহ করার বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যত: সবার সার্বিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। কারণ, আমরা জানি বোরো মৌসুমের এই ধান বর্তমান দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্ভূত পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে ধান কাটা শ্রমিকদের মাঠে যাওয়া সহজীকরণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ প্রদান করা ছাড়াও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে এই কাজে সহায়তা করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বোরো ধান কাটার সময় কৃষকদের প্রযুক্তির ব্যবহার করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। জমির আয়তন অনুযায়ী হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে স্বল্প সংখ্যক কৃষক নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটতে পারেন। এই মেশিনের মাধ্যমে একদিনে ৮-১০ একর জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তায় সাজানো যায়। এতে প্রতি একরে ১২০০-১৫০০ টাকার ডিজেল খরচ হয়। তাই, করোনাকালীন সময়ে শ্রমিকের স্বল্পতা ও করোনা ঝুঁকি রোধে হারভেস্টার মেশিনের ভূমিকা অপরিসীম।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির পাশাপাশি খাদ্য পরিস্থিতিও ক্রমশ: অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও) প্রধান মহাপরিচালক টেড্রস আ্যাডহানম গ্রেব্রেইসুস যখন কোভিড-১৯ কে সোয়াইন ফ্লুর চেয়েও দশ গুণ শক্তিশালী ক্ষতিকর ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রদেয় আর্থিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। যা এই মুহূর্তে সমগ্র বিশ্বের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার বিবেচনায় অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত ও হতাশাজনক একটি সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) এর ডিরেক্টর অব ইমারজেন্সিস্ ডোমিনিক কার্জন বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলেন, ‘পৃথিবীর কিছু স্থান দুর্ভিক্ষের খুব কাছাকাছি’। নিশ্চয় এ ধরনের ঘোষণা বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তার প্রসঙ্গকে চরম নাজুক অবস্থায় ফেলে দেয়। কেননা, খাদ্যের সংকট হলে মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নয় বরং খাবারের অভাবে না খেয়েই মারা যাবে। তাই, প্রয়োজন পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট্রগুলোকে মত বিরোধ ভুলে পরস্পরের প্রতি পরস্পরের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া।

বিশেষজ্ঞরা এই মহামারিকে রুখতে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার কথা বলছেন। যে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি দেশের সমস্যা নিরুপণ করত: সমস্যার ধরন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সমাধান ও সহায়তা দিতে হবে। সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সফল দেশগুলোর তথ্যের অবাধ প্রবাহ বলবৎ রাখার পাশাপাশি তা যত দ্রুত সম্ভব সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ভিয়েতনাম যেমন- স্বাস্থ্যগত ও সামাজিক দুরত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে এটিএম বুথের মাধ্যমে জনগণকে চাল বিতরণ করেছে। এ প্রক্রিয়া সম্পাদনে চাল গ্রহণের পূর্বে হাত জীবাণুমুক্তকরণ এবং পরবর্তীতে নির্ধারিত বাটন চেপে বুথ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল নাগরিকদের সংগ্রহ করতে হয়েছে। সংকটময় এই মুহূর্তে ‘রাইস এটিএম বুথ’ প্রযুক্তির ব্যবহার করে ভিয়েতনাম শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত ও সামাজিক দুরত্বের বিষয়টিই নিশ্চিত করেনি, বরং স্বচ্ছতার সাথে রাষ্ট্রের নাগরিকদের খাদ্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছে।

সমগ্র বিশ্বের খাদ্যের অনিশ্চয়তা আমাদের দেশের জন্যও সুখকর কোন বিষয় নয়। যদিও বাংলাদেশ সরকার খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। তথাপি সংকটকালীন এ সময়ে কৃষি কাঠামো সচল রাখতে শুধু কৃষকই নয় বরং খাদ্য উৎপাদনে সবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণের অনিবার্য প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর যত মানুষের এ অবধি মৃত্যু হয়েছে, সতর্ক হওয়া প্রয়োজন যেন এর চেয়ে অধিক মানুষ দুর্ভিক্ষে মৃত্যুবরণ না করেন। করোনাভাইরাস মানব সভ্যতার প্রতি যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছে তা মানব চর্চিত জ্ঞানের গভীরতা, বিচক্ষণতা, বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা এবং মানব শ্রেষ্ঠত্বকে প্রকৃত অর্থেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এস. এম. আরিফ ইফতেখার, প্রভাষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।  

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;