বর্তমান সময়ের একটি গভীর নৈতিক প্রশ্ন

“আমি কি পার্কে বসে রোদ পোহাতে পারব?”



অ্যালিসন হিলস, প্রফেসর, সেইন্ট জন কলেজ, অক্সফোর্ড
অ্যালিসন হিলস

অ্যালিসন হিলস

  • Font increase
  • Font Decrease

এমনিতে সাধারণ সময়ে, পার্কে বসে রোদ পোহানো একটা নির্মল প্রসন্নতার বিষয়। বর্তমান সময়ে এসে বিষয়টা এক অতিশয় সাহসিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে পুলিশ জড়িত হয়ে গেছে, এবং পার্কও হয়তো বন্ধ হয়ে গেছে।

লকডাউন কখনোই আনন্দের ব্যাপার না। কিন্তু যখন, বাইরে পরিবেশ খুব সুন্দর, তখন বাইরে বের হবার তাড়না জাগা, কিংবা মুখে একটু রোদ লাগানো, বা একটু ঘাসের উপর শুয়ে থাকা, গাছের নিচে বসে থাকার ইচ্ছা জাগা—স্বাভাবিকভাবেই অনিবার্য। আপনি যদি চোখ বন্ধ করে একটু সময়ের জন্য ভাবেন, জীবনের সবকিছু এখনো ঠিকঠাকই আছে—তাহলে এইসবে অসুবিধা কোথায়?

চূড়ান্ত উদারবাদীরা মনে করেন, না এতে কোনো অসুবিধা নেই। তারা বলেন, স্বাধীনতাই পরম গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা বিনষ্ট হওয়া মৃত্যুর চেয়েও খারাপ (অন্য মানুষদের মৃত্যু, যে অঙ্কেই হোক)। আমরা বেশিরভাগ মানুষ এইধরনের চিন্তার সঙ্গে একমত না। আমরা সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করি। কিন্তু এমনকি, লকডাউনের নিয়ম-কানুনও আমরা সবসময় এরকম থাকি, তা দরকার মনে করে না।

এখানে ব্যতিক্রমও আছে। কেন নয় শুধু আর একবার, শুধু আমার জন্য, আমার পরিবার, আমাদের সানটান ক্রিম এবং বনভোজনের ঝুড়ির জন্য? যদি আমার আঞ্চলিক পার্ক শূন্য হয়, আমার পরিবার এবং আমি উন্মুক্ত বাতাসের মধ্যে আমাদের বনভোজন উপভোগ করতে পারি। আমরা নিজেরাও এতে সতেজ হলাম, আর অন্য কারো ক্ষতি করলাম না—অন্যরা তো যে কোনো মূল্যেই হোক নিজগৃহে থাকার ব্যাপারে মনস্ত করেছে।

কিন্তু এই ধরনের চিন্তাভাবনায় সম্ভাব্য কী ধরনের ভুল থাকতে পারে?

মানুষের এই ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং অপরদিকে সমাজের সার্বিক মঙ্গল, একদিকে সাধারণ নিয়মনীতি, অন্যদিকে এর ব্যতিক্রম—এই বিষয়গুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিয়ে নৈতিক ও রাজনৈতিক দার্শনিকদের দীর্ঘ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে, এবং সঠিক উত্তরের ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন উপসংহারে পৌঁছাতে হয়েছে তাদের।

ক্রিড়াতত্ত্ববীদদের মতে (ক্রিড়াতত্ত্ব : কৌশলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি অধ্যয়ন) এটা খুবই যুক্তিসঙ্গত যে, সবাইকে ঠিক করার চাইতে কিছু মানুষকে [যেমন আমাকে বা আমার পরিবারকে] ঠিক করা উত্তম। কিছুসংখ্যক নৈতিক দার্শনিকেরা মনে করেন, নৈতিকভাবেও এই পন্থাটি সঠিক। উপযোগবাদীদের বয়ান অনুসারে, নিয়মনীতি বানানোই হয়েছে ভাঙবার জন্য, তবে তখন, যখন আপনি এই নিয়মনীতি ভাঙবার মধ্য দিয়ে মানুষকে সুখি করতে পারবেন। জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, আমাদের মৌলিক এবং নৈতিক দায়িত্বটাই হলো বৃহত্তর সংখ্যক মানুষের জন্য বৃহত্তর সুখের বিধান করা। করোনাভাইরাসের সময়ে এই কথার অর্থ হবে, একে অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।

হ্যাঁ, আপনার নিজের আনন্দের জন্য আপনি যদি তেমনটা করতে চান—সূর্যস্নান করে, বনভোজন করে, সবাই লকডাউনে আছে এই ভাবনা ভেবে—সেক্ষেত্রে আপনার এই কাণ্ড শুধু অনুমোদিতই না, বরং নৈতিকভাবেও আসলে আপনার এটি করবার অধিকার আছে। অবশ্যই আপনি ভাবতে পারেন, আমার পরিবারকে বাইরে বাইরে এভাবে শুয়ে-বসে থাকতে দেখে লোকেদের প্রচণ্ড ক্ষোভ তৈরি হলে হবে, এবং তাতে সামগ্রিক সুখ বিনষ্ট হলে হবে (যদিও প্রচণ্ড ক্ষোভ বিষয়টাও খুব উপভোগ্য)। কিন্তু আসলে এর মধ্য দিয়ে আমরা হয়তো অন্যদেরকেও নিয়ম ভাঙতে উদ্বুদ্ধ করে তুলব। এবং সকলেই যদি এইভাবে ভাবেন, তাহলে একসময় পুরা পার্কটাই লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। যেহেতু এটা খুবই বিপজ্জনক হবে, তাই আমাদের ঘরে থাকাই সবচেয়ে উত্তম রাস্তা। আসলে এই সব কথার অর্থ একটাই, কর্তব্যের সঙ্গে আমাদেরকে বিচক্ষণতা বজায় রাখতে হবে। তা যদি আমি রাখি, তবে কোনো ক্ষতি নেই, অসুবিধাও নেই।

আমরা যেভাবে ভাবলাম, সেটা কি আসলেই সঠিক?

ইমানুয়েল কান্ট নীতির এই মৌলিক প্রশ্নটিকে অন্যভাবে ভেবেছেন। বিষয়টা আদতে প্রত্যেকের ক্ষেত্রে কিভাবে প্রযোজ্য হবে? কান্টের চিন্তামতে, কেবলমাত্র ইউনিভার্সাল ল বা সার্বজনীন বিধানের অনুসারেই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা সঠিক হবে। আমরা জানি, যদি আমরা প্রত্যেকে পার্কে গিয়ে বনভোজন আরম্ভ করি, তাহলে কেউই নিরাপদভাবে সেটা করতে পারব না। যখন আমি এটা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে করে ফেললাম, তখন কিন্তু আমি সবার কথা ভেবে করলাম না। আমি অন্যদের ওপর নির্ভর করলাম যে, তারাই সব নিয়মকানুন মানবেন, তারাই কষ্ট করবেন আমাকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। আমি নিজেকে ব্যতিক্রম, অথবা একটা ‘স্পেশাল কেইস’ হিসেবে ধরে নিলাম। এটা আসলে অন্যদের প্রতি সম্মানসূচক আচরণ করা হলো না। এটা অনুচিত হলো।

আমরা যদি বুঝতে পারি নৈতিকতা শুধু লাভ-ক্ষতির বিষয় না, বরং সম্মান প্রদর্শন ও ঔচিত্যেরও বিষয়, তাহলে আমরা বুঝতে পারব এইসময়ে পার্কে গিয়ে আনন্দ করা কী ধরনের ভুল। আমরা একবার যদি এইভাবে ভাবতে শুরু করি, তাহলে আমাদের আরেকটু বড় ক্যানভাসেও তাকাবার প্রয়োজন আছে। রাজনৈতিক দার্শনিকদের অনেকে, যেমন কার্ল মার্ক্স, জোর দিয়ে বলেছেন যে, আমাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলো তৈরি হয় মূলত সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে, যা আমরা নিজেরা ইচ্ছামাফিক গ্রহণ করিনি। লকডাউনের অভিজ্ঞতা বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্নরকম হতে পারে—প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্ব, তাদের পরিবারের পরিবেশ এবং জীবনযাপনের ধরন, এইসবের বিবেচনায়। নিশ্চিতভাবেই উঁচু দালানের উঠানবিহীন আবদ্ধ ফ্ল্যাটে থাকার তুলনায় বড়সড় কোনো মনোরম বাগানসমৃদ্ধ বাসায় থাকাটাই আরামের।

লকডাউন সমাজের অসমতাগুলোকে প্রকট করে তুলছে। যদিও এটা লকডাউনের নিয়মকানুন ভাঙবার আনুকুল্য পাবার ক্ষেত্রে বরং আরো কম মার্জনীয় ব্যাপার। কিন্তু আমাদের সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে, এর মানে এটা নয় যে, আমরা কাউকে অযথাই দোষ দেব। তার ঘরে থাকার অর্থ না জেনে, এবং তার বাইরে বের হওয়ার কারণ না বুঝেই তাকে বিরাট দোষী বানিয়ে ফেলব। অবশ্যই তাকে মেনে চলতে হবে, কিন্তু আপনাকেও সদয় থাকতে হবে। বেশিরভাগ মানুষই এখন তাদের সেরাটা করে যাচ্ছেন।

এটা এই দুর্যোগের একটা চিহ্ন যে, পার্কে বসে নিতান্ত রৌদ্রস্নানও কিন্তু এখন গভীর কিছু প্রশ্ন তুলে আনছে, আমাদের জীবনের সবচাইতে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে: আমাদের সবার সুখে থাকা এবং এমনকি যদি আমি অন্যের নিয়ম মানার ওপর নির্ভর করি, উপযোগবাদীরা যেভাবে বলেছেন। অথবা কিভাবে আমরা সম্মান করতে পারি অন্যকে, এবং কিভাবে উচিত কাজটি করতে পারি, ইমানুয়েল কান্ট যার উত্তর দিয়েছেন। এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব কী হবে, কার্ল মার্ক্স যার ওপরে জোর আরোপ করেছেন!

পরিশেষে, আমরা একটি আবশ্যিকতার আলাপ দিয়ে শেষ করতে পারি, যেটা কার্ল মার্ক্সের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, (রুশো এবং হেগেলের কাছেও)। সেটা হলো, পারস্পরিকতার আবশ্যিকতা, বা সংহতি। এখানে দায়িত্বভার দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা বড়ধরনের তফাৎ আছে, এখানে কিছুমাত্র মানুষ বৃহত্তর সংখ্যক মানুষকে সেবা দিচ্ছেন। ডাক্তার, নার্স এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়বার ভাবনা বাদ দিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলেছেন, এবং প্রয়োজনীয় সেবাদান জারি রেখেছেন। আমাদের বাকিদের জন্য, এখানে খুব অল্প কিছুই করবার আছে, যা দিয়ে আমরা এই বৈশ্বিক দুর্যোগে কিছুমাত্র পরিবর্তন এনে দিতে পারি। এমতাবস্থায় আমাদের অসহায় এবং বিহ্বল বোধ করা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু আসলে, আমরা ঘরের মধ্যে অবস্থান করে তাদের সাথে সংহতি জানাতে পারি, যারা আমাদের চাইতে অনেক বেশি করছেন। আমরা আমাদেরটা নির্ধারিত অংশটা পালন করে যাচ্ছি, এবং সবার সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছি, যারাও একই রকম করছেন। এটাই সর্বোচ্চ, এবং অন্ততপক্ষে, যা আমরা করতে পারি।


দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রবন্ধের রূপান্তর
অনুবাদ : যাকওয়ান সাঈদ

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;