“নয়া উদারনীতিবাদের সর্বশেষ মহাবিপর্যয়”



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াম চমস্কির জন্য করোনাভাইরাস মহামারির অগ্রাহ্য করে যাওয়া শিক্ষাটা হলো, “এই সংকট পুঁজিবাদেরই সংস্করণ নয়া উদারনীতিবাদের জন্য আরেক মহাবিপর্যয়।” যুক্তরাষ্ট্রে এই পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে ওয়াশিংটনে বসে সরকার পরিচালনা করা সোশিওপ্যাথ ভাঁড়গুলোর মাধ্যমে।

ম্যাসাচুসেটস্ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজিতে ভাষাবিজ্ঞানে অধ্যপনার পর বিশ্বের সবচেয়ে সমাদৃত এই পণ্ডিত ২০১৭-তে যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনাতে। নিজ বাসা তুসন থেকে তিনি কথা বলেছেন ইউর‌্যাক্টিভের পার্টনার ইএফই-এর সাথে। কোভিড-১৯ এর শিক্ষা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে চমস্কি আঙুল তোলেন বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যর্থতার দিকে।

“একটা শিক্ষা হলো, পুঁজিবাদেরই সংস্করণ নয়া উদারনীতিবাদের জন্য আরেকটা বিপর্যয়। মহাবিপর্যয়। সেই শিক্ষাটা যদি আমরা না নেই; তবে পরের দফায় আরো খারাপ হয়ে ফিরে আসবে। যা ঘটেছে তা অবশ্যম্ভাবি ছিল। ২০০৩ সালের সার্স মহামারির পর বিজ্ঞানীরা ভালোভাবেই জানত যে সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের ধরন হিসাবেই আরো মহামারি সামনে আসছে। তখনই প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব ছিল। সচরাচর যেভাবে ফ্লুয়ের সাথে নেওয়া হয়। সামান্য তারতম্যের কারণে প্রতি বছরই আনতে হয় নতুন ফ্লু ভ্যাকসিন। আগেই প্রস্তুত থাকলে উৎপন্ন করা যায় দ্রুত। কিন্তু তা হয়নি। কাউকে তো বলটা নিতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে।”

দুইটি সম্ভাবনা আছে এরজন্য। প্রথমত ঔষধ কোম্পানিগুলো। পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে তাদের। সমৃদ্ধ আমাদের উদার উপহারে। অথচ তারা এটা করে না। বরং লক্ষ্য রাখে বাজারের সংকেতের দিকে। বাজার সংকেত আপনাকে বলে দেয় বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুতি নিলে আদতে মুনাফা নেই। অন্যদিকে আছে নয়া উদারনীতিবাদের হাতুড়ি অর্থাৎ সরকারের, কিছু করার অনুমতি নেই। যেন সমাধান না; সরকার নিজেই এখানে সমস্যা।

যুক্তরাষ্ট্র ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ওয়াশিংটন গ্যাং-এর কারণে। তারা জানে কিভাবে নিজেদের ব্যতীত পৃথিবীর বাকি সবাইকে দোষারোপ করা যায়। এই বিপর্যয়ের দায় তাদের। যুক্তরাষ্ট্র এখন সংকটের কেন্দ্র। আর একমাত্র দেশ হিসাবে এতটাই বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতিতে যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মৃত্যু এবং সংক্রমণের সঠিক তথ্যটা অব্দি দিতে পারছে না।

সংকটের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণকে চমস্কি বর্ণনা করেন পরাবাস্তব হিসাবে। সুতরাং ফেব্রুয়ারিতেই মহামারি লাগামহীন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের সবাই এটি দেখতে পেল ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতেই। ট্রাম্প বেরিয়ে এলেন পরবর্তী বছরের নতুন বাজেট হাতে ধরে। বিষয়টা গভীরভাবে দৃষ্টির দাবি রাখে। রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে বাজেট মহামারির মধ্যে আরেক দফা কাটা হলো। বৃদ্ধি পেল জীবাশ্ম জ্বালানিশিল্পের জন্য বরাদ্দ। আরো ভর্তুকি দেওয়া হলো বিপর্যস্ত করে তুলতে মানবজীবন। আরো বরাদ্দ পেল সামরিক খাত; দিনকে দিন যা স্ফীতি হচ্ছে এবং চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এবং আরো বরাদ্দ দেওয়া হলো ট্রাম্পের বিখ্যাত প্রাচীরের জন্য। এটিই আপনাকে সরকার পরিচালনা করা সোশিওপ্যাথিক ভাঁড়গুলোর প্রকৃতি সম্পর্কে বলে দেয়। আর দেশটাও তাদের জন্যই ভুগছে।

“এখন তারা হন্যে হয়ে কারো ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য খুঁজছে; চীন কিংবা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে। তারা যারা করছে তা রীতিমতো অপরাধ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় বরাদ্দ নামিয়ে আনার মানে কী? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কাজ করে সারা পৃথিবীব্যাপী। বিশেষ করে গরীব দেশগুলোতে মায়েদের স্বাস্থ্য এবং ডায়েরিয়ায় মৃত্যুর মতো বিষয়াদি নিয়ে। সুতরাং আপনি বলবেন, ওকে, চলো দক্ষিণের প্রচুর মানুষ হত্যা করি; কারণ তাতে সম্ভবত আমি আমার নির্বাচনের ছকে উন্নতি আনতে পারব।”

করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমানোর প্রচেষ্টার পর ট্রাম্প নীতি গ্রহণ করলেন সংকট কমানোর। যদিও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় কৃত ভুলগুলোকে স্বীকার করেননি। ট্রাম্পকে আপনার ক্রেডিট দিতেই হবে। খুব সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী মানুষ। পি টি বারনামকে তিনি বানিয়েছেন অপেশাদার। তিনি তো এটা করতেও সক্ষম যে এক হাতের ব্যানারে লেখা, “আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমিই তোমার রক্ষক। আমার উপর আস্থা রাখো; দিনরাত আমি তোমার জন্যই কাজ করছি।” আর অন্য হাতে পেছনে ছুরি বসানো। নির্বাচকমণ্ডলিদের যারা তার বন্দনা করে; তাদের সাথেও এমনটাই করে। কী করেছে; যায় আসে না। তাকে সাহায্য করে কতিপয় গণমাধ্যম। আর রিপাবলিকানরা কেবল তাকিয়ে থাকে ফক্স নিউজ, রাশ লিম্বাহ, ব্রেইটবার্টের সেগম্যান্টগুলোর দিকে।

ট্রাম্প যা বলে; তারই প্রতিধ্বনি করে তারা। যদি সে বলে, “এটি কেবল একটি ফ্লু; বাদ দাও।” তারা বলবে, হ্যাঁ, এটি কেবল একটা ফ্লু; বাদ দাও। পরের দিন সে বলবে, “এটি একটি ভয়ানক মহামারি। আমিই প্রথমে লক্ষ্য করেছি।” তখন আবার সকলে জিগির তোলবে, “তিনি ইতিহাসের মহানতম পুরুষ এবং তার আবিষ্কার স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে চমৎকার।” দিনের পর দিন এভাবেই চলে। সকালে সে নিজে ফক্স নিউজের দিকে তাকায় এবং সিদ্ধান্ত নেয় আজ কী বলা উচিত। ব্যাপারটা বিস্ময়কর, রুপার্ট মারডক, রাশ লাম্বাহ এবং হোয়াইট হাউসের সোশিওপ্যাথগুলো দেশটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

মানুষের সাথে প্রকৃতির সম্পর্কে বদল আসবে কিনা, চমস্কির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এর জবাব তরুণদের মধ্য থেকে আসবে।

ভবিষ্যদ্বাণী করার জোঁ নেই। এটা নির্ভর করে চলতি ঘটনাগুলো পৃথিবীর মানুষ কিভাবে নিচ্ছে। এটি আরো স্বৈরাচারীর দিকে নিতে পারে। দমনমূলক দেশগুলো, যারা ঘটনার চেয়ে বেশি প্রচার করে বেড়াতো নয়া উদারনীতিবাদ নিয়ে। বস্তুত তারা সে সব নিয়ে কাজ করছে এখন। মনে রাখবেন, পুঁজিবাদী শ্রেণিটা কখনো ঢিল দেয়নি। বরং সব সময় সংগ্রামে আছে। এতকিছুর মধ্যেই তারা আহ্বান করছে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বাজেট বরাদ্দের জন্য। নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থাপনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থা ট্রাম্পের অধীনে উল্টে গিয়ে সংযোজিত হলো কয়লা উৎপাদক হিসাবে। আর তা কয়লা স্থাপনার চারপাশের মাটিতে মার্কারি এবং অন্যান্য দূষণে নিষেধাজ্ঞা আইনকে নাকচ করে। তার মানে হলো, “চলুন আরো আমেরিকান শিশুদের হত্যা করি এবং চলুন ধ্বংস করি পরিবেশ।” কারণ কয়লা কোম্পানির জন্য এই পথেই মুনাফা আসে। আর অবশ্যই তা পরিবেশ ধ্বংস করার মাধ্যমে। এটাই তারা করে চলছে ক্রমাগত। প্রতিদিন বিরতিহীন। যদি কোনো বিরোধিতা না আসে; তাহলে দিনশেষে পৃথিবীর কপালেই শনি।

কোভিড-১৯ এর ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় চমস্কি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে সংহতিহীনতার সমালোচনা করলেন। আন্তর্জাতিকভাবে যা ঘটে চলছে; তা সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক। সংকট মোকাবিলায় জার্মানি বেশ ভালো করছে। হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়িয়েছে; বাড়িয়েছে সেবাদানের ক্ষমতা। নয়া উদারনীতিবাদকে খুব কড়ায় গণ্ডায় মানা হয়নি। ইতালিতে মহামারির অবস্থা তীব্র। তারা কি জার্মানি থেকে সাহায্য পাচ্ছে? বরং সৌভাগ্যক্রমে সাহায্য পাচ্ছে আটলান্টিকের অপর পাড়ের ‘সুপারপাওয়ার’ কিউবার কাছে থেকে। কিউবা ডাক্তার পাঠাচ্ছে; চীন পাঠাচ্ছে যন্ত্রপাতি। অন্তত কিছুটা সাহায্য তারা পাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ধনী দেশগুলো থেকে না। এটা আপনাকে জানান দেয় কিছু একটা চিন্তার বিষয়।

আসলে একমাত্র দেশ হিসাবে যথার্থভাবে আন্তর্জাতিকতা দেখাচ্ছে কিউবা। তাও এবারই প্রথম না। তা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে। কিউবা ৬০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিধ্বংসী আক্রমণের কেন্দ্র ছিল। অর্থনৈতিক অবরোধের দীর্ঘ সন্ত্রাস এবং তারপরেও অলৌকিকভাবেই তারা টিকে গেছে। পৃথিবীকে দেখিয়ে চলছে তাদের আন্তর্জাতিকতাবাদ।

কিন্তু আপনি যুক্তরাষ্ট্রে এসব নিয়ে কথা বলতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে আপনাকে কেবল কিউবাকে দোষারূপ করতে হবে; কারণ সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। সে যা করে; তা ওই গোলার্ধের সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। দক্ষিণ কিউবার গুয়ান্তানামো নামের একটা স্থানে। যুক্তরাষ্ট্র যা কিউবার কাছে থেকে নিয়েছে কিন্তু ফিরিয়ে দেয়নি। অথচ তা আপনি বলতে পারবেন না। অপেক্ষাকৃত নম্র এবং অনুগতরা আরেকটু ভিন্ন কিছু বলবে। “চীনকে দোষারূপ করা উচিত। জোর দেওয়া উচিত ইয়েলো পেরিল তত্ত্বের ওপর। আমেরিকার ইতিহাসের আরো গভীরে ঢুকবে তারা। চীন আসছে আমাদের ধ্বংস করার জন্য। উনিশ শতকে ফিরে গিয়ে আপনি তাকে যে কোনো সময়ে আবির্ভুত দেখতে পাবেন।”

প্রগতিশীল আন্তর্জাতিকতাবাদীদের জন্য আহবান আছে। আহবানটি যুক্তরাষ্ট্রে বার্নি স্যান্ডার্স এবং ইউরোপে ইয়ানিস ভারোফাকিসের মাধ্যমে ইস্যু হয়েছে। ইউরোপ এবং আমেরিকার প্রগতিশীল উপাদানগুলো একত্রিত করার জন্য। হোয়াইট হাউসের কৃত্রিম প্রতিক্রিয়াশীল আন্তর্জাতিকতাবাদকে ঠেকাতে এর পরিকল্পনা হয়েছিল। ট্রাম্পের প্রশাসন একত্রিত করতে চাচ্ছে সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল বর্বর দেশগুলো। উপসাগরের তেলপ্রধান রাজ্যগুলো, সিসির মিশর, মোদির ভারত, ডানপন্থী পরিচালিত ইসরায়েল, ভিকটর ওরবান চালিত হাঙ্গেরি এবং অন্যান্য দেশ।

একমাত্র যথার্থ আশা আমি দেখি বার্নির নির্ভরতায় প্রগতিশীল আন্তর্জাতিকতার অগ্রগতিতে। সাধারণভাবে বলা হয় স্যান্ডার্সের ক্যাম্পেইন ব্যর্থ ছিল। পুরোপুরি ভুল। বস্তুত এটা ছিল দারুণ সফলতা; অবিশ্বাস্য সফলতা। স্যান্ডার্স আলোচনার মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছেন। যথেষ্ট রকম বদলে দিয়েছেন নীতি। দুই বছর আগে যা উল্লেখ করার মতো ছিল না; বর্তমানে তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে; যেমন ‘গ্রিন নিউ ডিল’ এর কথা। টিকে থাকার জন্য বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;