কোভিড নিয়ে মুখোমুখি সমকালীন বুদ্ধিজীবী (১ম পর্ব)



অনুবাদ ও গ্রন্থনা: আহমেদ দীন রুমি
অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাসের মেঘ ক্রমশ ভারী হয়ে আসছে মানবজাতির আকাশে। সবকিছু ভেঙে পড়ছে। স্পষ্ট যে, কোভিড পরবর্তী দুনিয়া আর আগের মতো থাকবে না। কিভাবে পৃথিবী বদলে যাবে? প্রশ্নটি করা হয়েছিল ইউভাল নোয়াহ হারারি, এলিফ শাফাক, এরিক স্মিথ, লোরেইন ড্যাস্টন, গর্ডন ব্রাউন, সাফিয়া নোবেল, জন গ্রে, ডেভিড কাসালেজ্জো, অনোরা ও’নেইল, জ্যারেড ডায়মন্ড, লি জিংলিন, ডামবিসা মোয়ো, প্যাট্রিক সুন-শিং, প্যাসকেল লেমি, ডেভিড ব্রিন, হেলে থর্নিং-স্মিথ, বিল জয়, জোসেফ নায়ের মতো বর্তমান সময়ের চিন্তকদের। তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সংক্ষেপসার নিয়েই এই আয়োজন।


তেল আবিব: পরবর্তী কয়েক মাসে রাজনীতিবিদেরা পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করবে। এই কয়েক মাসে পৃথিবীটা তরল এবং নমনীয় হয়ে উঠছে। বৈশ্বিক সংহতি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে বর্তমান সংকটকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। যা পরবর্তীতে আরো ঐক্যবদ্ধ এবং সমন্বয়পূর্ণ পৃথিবী নিয়ে আসবে। অবশ্য আমরা জাতীয়তাবাদী একাকিত্ব এবং প্রতিযোগিতাকেও বেছে নিতে পারি। যা খুব সম্ভবত আমাদের সংকটকে আরো ঘনীভূত করে তুলবে। বয়ে আনবে বিচ্ছিন্ন এবং শত্রুতাপূর্ণ পৃথিবী।

সার্বিকভাবে নিশ্ছিদ্র নজরদারির শাসন জারি করেও আমরা সংকট মোকাবেলা করতে পারি। অথবা করতে নাগরিক ক্ষমতায়ন এবং বৃহত্তরভাবে সরকারি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্যমে। সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে শক্তিশালী কর্পোরেশনগুলোকে উদ্ধার এবং দুর্বল সাংগঠনিক শ্রমকে ছেড়ে দেবার। অথবা একে নিতে পারে বড় কর্পোরেশনগুলোর লাগাম টেনে ধরা এবং সাংগঠনিক শ্রমকে শক্তিশালী করার সুযোগ হিসাবে। মানবজাতি তার পরিবহন ব্যবস্থাকে পুনর্নিমাণ এবং শক্তির শাখাগুলোতে নজর দিতে পারে। কিংবা নজর দিতে পারে পরিবেশের প্রাধান্যকে বাতাসে ছুড়ে ফেলে সরু অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে। এরকম অজস্র সিদ্ধান্ত আমাদের সামনে আছে বর্তমানে।

ইউভাল নোয়াহ হারারি
সেপিয়েন্স, হোমো ডিউস এবং টুয়েন্টি ওয়ান লেসন ফর দ্য টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি-এর লেখক

এই সংকট রাজনীতিবিদদের হতবাক করে দিয়েছে। তাদের কাছে আগে থেকেই তৈরি করা কোনো পথও নেই। সুতরাং নতুন আদর্শ ও চিন্তার প্রতি তারা উন্মুক্ত। এমনকি সে আদর্শ যদি উন্মাদনাও হয়। কিন্তু একবার যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যায়; সেটাই সহনীয় হয়ে উঠবে। আস্তে আস্তে তার ভিন্ন পথ গ্রহণের উপায় কঠিন হতে থাকবে। ২০২১ সালে কারো ক্ষমতায় আসার মানে হলো পার্টি শেষ হয়ে যাবার পর পার্টিতে যোগ দেওয়া। কেবল বাকি থালাবাসন ধোয়ার কাজটা। যতক্ষণ পার্টি চলে; আমাদের নজর কেন্দ্রীভূত এবং সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করতে হবে।


লন্ডন: মহামারিটি পৃথিবীকে খুব অল্প বদলাবে কিংবা আদতে কিছুই বদলাবে না—এটাই আমাদের মনোযোগ হওয়া প্রয়োজন। সবকিছু বদলালেও যেন আসলে সব আগের মতোই থাকে।

খুব সংক্ষেপে এটাই ২০০৮ সালে ঘটেছিল। গোটা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চোখে দেখলে আমরা জিতেছিলাম। কিন্তু হারিয়ে ফেলেছি শান্তি। কিছু অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ, উচ্চ ব্যাংক পুঁজির শর্তাবলি, সক্রিয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আছে সত্য; কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মেরামত আসেনি। হয়নি বৈশ্বিক বাজার কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

এইবার কেন একই রকম হবে না? ২০০৮ সালে বৈশ্বিক নেতাদের একটা দল প্রস্তুত ছিল। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ করছিল স্বদিচ্ছা ও সক্ষমতা। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অনুপস্থিত। আমরা জানি কী প্রয়োজন ছিল—স্বাস্থ্যসেবার সঠিক সামগ্রী, ছিমছাম এবং সহানুভূতিশীল সামাজিক নিরাপত্তা, লাভের চেয়ে সমাজকে গুরুত্ব দেওয়া, ব্যবসায় সচল বাজারব্যবস্থা, সরকার এবং বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটা বিশেষ লক্ষ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করা। সম্ভবত এই সত্যটা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমরা।

হেলে থোর্নিং স্মিথ
ডেনমার্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

আমরা জানি আগের মতোই ব্যবসায় ফেরা ঠিক হবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো—মানুষ কি সেই নেতাকে নির্বাচন করবে, যে মহামারি পরবর্তী নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে সক্ষম? অবস্থাদৃষ্টে প্রশ্নটির উত্তর ‘না’ বলেই অনুনাদ উঠেছে। কিন্তু আমেরিকার আসছে নভেম্বরে প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচন কিছুটা আলোর আশ্বাস দেয়।


মিয়ামি: ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন মৌলগত বিচ্ছিন্নতা। কিন্তু একটা ভ্যাক্সিন বের করা, বিশ্ব অর্থনীতি পুনরায় চালু করা এবং আরো একটা মহামারির আগমনকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন গভীর সহযোগিতা।

বিশ্বসংকটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমাদের কাছে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আছে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে তথ্য নিয়ে অন্য প্রান্তে বিশ্লেষণ, ভ্যাক্সিন অনুসন্ধান কিংবা স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কন্টাক্ট ট্রেসিং এপ্লিকেশনগুলো ভবিষ্যতের মহামারিকে নিয়ন্ত্রণ করতেও পর্যাপ্ত তথ্য দেবে। স্বাস্থ্য পরিষেবা সামগ্রীর সীমিত অবস্থায় থ্রিডি-প্রিন্টিং সামনে আনা যেতে পারে। যেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর বিশ্লেষণিক পদ্ধতি সঠিক উপাত্তের সাথে মিলে আমাদের কার্যকর বরাদ্দ সরবরাহে সহযোগিতা করবে।

ভবিষ্যত পৃথিবীতে প্রযুক্তি সক্রিয়করণের মধ্যদিয়ে মহামারি আমাদের আরো দৃঢ় পারস্পরিক সহযোগিতার দিকে নিতে পারে। কিন্তু এটা দৈব নির্ধারিত নয়। দেশগুলোর মধ্যে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় আমরা জাতীয় প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছি। সাপ্লাই-চেইনে ঝুঁকি সরকারকে উদ্বুদ্ধ করেছে জরুরি সরবরাহ সীমিত কিংবা বন্ধ করে দিতে। ভাইরাস কতিপয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারকে পরিণত করেছে একনায়কতান্ত্রিকে। ব্যক্তির গোপনীয়তা খর্ব এবং কেন্দ্রীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। সাময়িক উদ্যোগ পরিণত হতে পারে স্থায়ী বৈশিষ্ট্যে।

এরিক স্মিথ
গুগলের সাবেক সিইও

মহামারিতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিদ্যমান বৈষম্য প্রকাশিত হয়ে উঠেছে। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর সময় ডিজিটাল যোগাযোগে থাকা মানুষগুলো অনেক বেশি সজ্জিত। তাদের সন্তানেরা শিখতে পারে এবং তারাও দূরে থেকে কাজ করতে পারে। তাদের এই টেলিজীবন বিঘ্নিত হয়েছে কিন্তু থেমে যায়নি। অপরদিকে কারো জন্য স্যোশাল ডিসট্যান্স পরিণত হয়েছে অসম্ভবে। তাদের বাধ্য হতে হচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জীবিকার মধ্য থেকে যে কোনো একটি বেছে নিতে। টেলিজীবনের অনেক কিছুই টিকে থাকবে। প্রয়োজন প্রতিটা মানুষকে আধুনিক জীবনের মৌলিক ডিজিটাল সেবার নিশ্চয়তায় বৈশ্বিক পরিকল্পনা।


বার্লিন: ভাইরাস হঠাৎ করেই আমাদের নিক্ষেপ করেছে সপ্তদশ শতকে। আমরা এখন বাস করছি অভিজ্ঞতার শূন্য কোঠায়। যেখানে প্রায় সবকিছুই নাগালের বাইরে। যেমনটা ছিল প্রাথমিক যুগের আনুমানিক ১৬৬০ সালের দিকের বৈজ্ঞানিক সমাজে। তাদের জন্য প্রায় সব মৌল সমস্যাগুলোতেও ঐকমত্য উত্তর ছিল না।

হঠাৎ নতুনত্ব এবং অনিশ্চয়তা সাময়িকভাবে আমাদের যেন ছুড়ে ফেলেছে গ্রাউন্ড জিরোতে। সম্ভাবনা পর্যবেক্ষণ, আপাত পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সাধারণভাবে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য, অপেক্ষাকৃতভাবে কম প্রকাশিত পিয়ার পর্যালোচিত জার্নাল ইন্টারনেটে গুঞ্জন তুলেছে চিকিৎসক, ভাইরোলজিস্ট, এপিডেমিওলোজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং আগ্রহী জনতার মধ্যে।

লোরেইন ড্যাস্টন
ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর দ্য হিস্ট্রি অব সায়েন্স

চরম বৈজ্ঞানিক অনিশ্চয়তার সময়ে পর্যবেক্ষণের সাথে পরীক্ষার সম্পর্ক থাকে খুব দুর্বল। বৈজ্ঞানিক পরিসংখ্যান সীমাবদ্ধ হয় নিজের মধ্যেই। যথার্থ একটা ঘটনা, ব্যত্যয়, প্যাটার্ন এবং পারস্পরিক সম্পর্কগুলো—প্রতিটি ক্লিনিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গিই আমাদের সমাধানের সূত্র খোঁজাকে পোক্ত করে।


স্কটল্যান্ড: সবচেয়ে বাস্তবধর্মী এবং ব্যয়বহুলসহ সকল স্বাস্থ্যবিধানকে হাজির করা হয়েছে ভাইরাসের সামনে। যদি কিছু না করা হয়; রোগ ছড়িয়ে যাবে আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার শহরগুলোতে। ছড়াবে এমনসব জনপদের মাঝে যাদের রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি, ভেন্টিলেটরস্ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র নেই।

গর্ডন ব্রাউন
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

যেখানে সামাজিক দূরত্ব এমনকি হাত ধোঁয়া নিশ্চিত করাটাও কঠিন। কোভিড-১৯ সেখানে টিকে থাকবে এবং বাকি পৃথিবীকে পুনরায় নতুন শক্তিতে আক্রমণ করবে। দীর্ঘস্থায়ী হবে সংকট।


লস এঞ্জেলস: আস্তে আস্তে এবং নিখুঁতভাবে তলিয়ে যাচ্ছে আমাদের অধিকার। আমাদের সমাজ, অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ এবং নয়া বিধিবিধানের সৃষ্টি আদতে বিপর্যয়বাদী পুঁজিবাদের বৈশিষ্ট্য। নাওমি ক্লেইন খুব মুন্সিয়ানার সাথে একে বর্ণনা করেছেন। বিপর্যয়বাদী পুঁজিবাদ আরো বড় পরিসরে জনগণ, গণতন্ত্র এবং শ্রমিক শ্রেণির ওপরে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ, সম্পদ এবং ক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি সার্বিক মঙ্গলের স্বার্থগুলোতে সচেতন, মনোযোগী এবং সোচ্চার না হই; তবে কোভিড-১৯-এর জবাব সেভাবেই আসবে।

সাফিয়া নোবেল
সহযোগী অধ্যাপক, ইউসিএলএ সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল ইন্টারনেট ইনকোয়ারি

এটা গ্রহণযোগ্য না যে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশটা সার্বিক অসহযোগিতার মূল্য দেবে। মহামারিতে আফ্রিকান আমেরিকানদের মৃত্যুহার শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের তুলনায় বেশি। কারণ আমাদের দরিদ্রতা, চাকুরি-নির্ভর স্বাস্থ্যসেবার অভাব এবং সংস্থানহীন জনগোষ্ঠী। যদিও আমাদের শহুরে প্রতিবেশিরাই প্রবল সম্পদে পূর্ণ। মজুদের সঠিক বিন্যাস না করে সবাইকে যার যার মতো চলতে দেওয়াটা অগ্রহণযোগ্য। কোভিড-১৯ এবং আর যে সকল মহামারি সামনে আছে; তাতে সকলেই ঝুঁকির মুখে। এই মহামারি আমাদের চিরন্তন ব্যবস্থার জন্য বিচার দিবস। এই হিসাব-নিকাশ পুরাতনকে বহাল রাখা কিংবা সংস্কার করার মাধ্যমে।

কোভিড নিয়ে মুখোমুখি সমকালীন বুদ্ধিজীবী (২য় কিস্তি)

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;