কোমর ব্যথায় করণীয়



ডা. দলিলুর রহমান
প্রতীকী

প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কোমর ব্যথায় সাধারণত কেউ মারা যায় না। কিন্ত ভুল চিকিৎসায় মারাত্মক ক্ষতি খুবই স্বাভাবিক, এমনকি মৃত্যুও হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

কোমর ব্যথা সম্পর্কে ভুল ধারণা কিংবা ভুল চিকিৎসা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। কিন্তু কোমর ব্যথার সংখ্যা কিংবা মাত্রার তাতে কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

শারীরিক চলাচলে অক্ষমতার সব ধরনের রোগের ভয়াবহতার মধ্যে এক নম্বর কারণ হিসেবে দেখা হয় বিশ্বব্যাপী কোমর ব্যথাকে। গবেষণামতে কোমর ব্যথায় যত ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতিই প্রয়োগ করা হোক না কেন, মোট জনগোষ্ঠীর ২৫-৩০ শতাং মানুষ এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশ মানুষ জীবনের কোন না কোন সময় কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ সব রোগীদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগীর ব্যথা ৮ সপ্তাহের মধ্যে কোন চিকিৎসা ছাড়া কিংবা চিকিৎসা নিয়ে সেরে যাচ্ছে। ৫ শতাংশ রোগীর ব্যথা ১২ সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়।

কিনতু এ সময়ের মধ্যে ব্যথা সেরে যাওয়া রোগীদের ৭০ শতাংশ ভবিষ্যতে পুনরায় কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছে। কোমর ব্যথা সারাজীবনে শুধু একবারই হবে এরকম ধারণা ভুল। কোমর ব্যথা সাধারণ ঠান্ডা লাগার মতই ব্যাপার, ব্যথায় আক্রান্ত হলে ম্যানেজ করা শিখতে হবে, সময়ের সাথে সাথে ব্যথা কমে যাবে।

কোমর ব্যথার কারণ
বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৯৫ শতাংশ কোমর ব্যথার রোগীদের রোগের সুনির্দিষ্ট কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্ত কোমর ব্যথার মারাত্মক কারণ যেমন ক্যান্সার, যক্ষা, কডা ইকুউনা সিনড্রম, ইনফেকশাস ডিজিজেস খুবই নগণ্য।

যদিও মনে করা হচ্ছে মেরুদণ্ডের ক্ষয়, স্পন্ডিলোসিস, ডিস্ক হানিয়েশন, গাউট, আর্থ্রাইটিস, স্পাইনাল ক্যানেল স্টেনোসিস জনিত কারণে ব্যথা হচ্ছে। কিন্তু এ সমস্যাগুলি এমনকি যাদের কোমর ব্যথা নাই তাদের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসা পেশাজীবীরা রোগীদের ব্যথা সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝিয়ে না বললে রোগীরা মনে করেন তাদের কোমরে হয়তো মারাত্মক কোন সমস্যা আছে।

প্রচলিত চিকিৎসা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
গবেষণায় দেখা যায়, এ যাবতকাল কোমর ব্যথার চিকিৎসায় যত পদ্ধতিই প্রয়োগ করা হোক না কেন, দুর্ভাগ্যক্রমে এ সব চিকিৎসার বেশিরভাগই ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি এ সব চিকিৎসা নিয়েও ভালোর পরিবর্তে খারাপ হওয়ার উদাহরণ আছে অগণিত। কোমর ব্যথা হলে শুধু সুনির্দিষ্ট কিছু থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ সবচেয়ে কাযকরী বলে প্রমাণিত।

গ্লোবাল থেলথ এর মাসকুলোস্কেলিটাল বিভাগের নেতৃস্থানীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্রিস মাহের বলেন, “চিকিৎসা পেশাজীবীরা কোমর ব্যথার জন্য অনেক ধরনের চিকিৎসা মাধ্যম চর্চা করে থাকেন। এর মধ্যে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকারক ব্যথার ওষুধ, এপিডিওরাল ইনজেকশন, সার্জারি, ট্রাকশন ও হিট থেরাপি অন্যতম। অথচ স্বপ্লকালীন সময়ে এগুলো কিছুটা কার্যকরী মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদী কোন কার্যকারিতা নেই। কিন্তু উচু মাত্রার ওধুষ সেবনের ফলে রোগীদের বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কিডনির সমস্যাসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা বেড়েই চলছে। এমনকি এপিডিওরাল ইনজেকশনের বিষক্রিয়ায় ও দীর্ঘমেয়াদী উচু মাত্রার ব্যথার ওধুষ সেবনের ফলে মৃত্যূর হার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।

সার্জারিকে কোমর ব্যথার সর্বশেষ চিকিৎসা মনে করা হলেও এর কার্যকারিতা প্রশ্নমুখী এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যাপক। বিশেষজ্ঞরা রোগীদের বিছানায় শুয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিশ্রাম নিতে বলেন, যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিওি নেই এবং অপ্রয়োজনে গণহারে মেরুদণ্ডের ইমেইজিং এমআরআই, এক্সরে করতে পাঠান। এমআরআই-এর তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলেও এক্সরে-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক। কিন্তু এমআরআই-তে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন না কোন সমস্যা দেখা যায়, যার সাথে হয়তো কোমর ব্যথার কোন সম্পর্ক নেই। অথচ এর ওপর ভিত্তি করে সার্জারিসহ নানাবিধ জটিল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য ৬৪ শতাংশ এমআরআই ফলস পসিটিভ।

কোমর ব্যথার সাথে মেরুদণ্ডের সরাসরি সংযোগ আর মেরুদণ্ড যেহেতু রোবাস্ট অর্গান, তাই এর সাথে মেকানিক্যাল ও কেমিক্যাল বিষয়সমূহ যুক্ত। যার জন্য বিশেষজ্ঞদের পেথমেকানিক্স জানতে হয়। পেথমেকানিক্স জানতে হলে মেরুদণ্ডের বায়মেকানিক্স, মুভমেন্ট সাইন্স, স্ট্রাকচারাল ও ফাংশনাল এনাটমি জানতে ও বুঝতে হয়। আর এসব বিষয় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের সুচারুভাবে শিখতে হয়, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়। তাই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকেরা অতি অল্প সময়ে রোগীকে ব্যথামুক্ত করে প্রমাণিত ও সবচেয়ে কাযকরী সুনির্দিষ্ট কিছু থেরাপিউটিক এক্সারসাইজের মাধ্যমে কর্মক্ষম জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারেন।

কোমর ব্যথা প্রতিরোধ
কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করা সত্যিই কঠিন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের এলাইনমেন্ট/পজিশন, হার-পেশীর সক্ষমতা এবং মেরুদণ্ডের স্টেবিলিটি ঠিক রাখতে পারলে কোমর ব্যথা থেকে দীর্ঘমেয়াদে ভালো থাকা যায়। এই ক্ষেত্রেও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকেরা আপনার মেরুদণ্ড ও টোটাল বডি অ্যাসেসমেন্ট করে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন (লাইফ স্টাইল রুটিন) দিতে পারেন।

করোনা পরিস্থিতিতে কোমর ব্যথায় যা করবেন
=> পরিচিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের কাছে ফোনে আলোচনা করে পরামর্শ নিন।

=> কোমরকে ২-৩ দিনের জন্য পূর্ণ বা আংশিক বিশ্রাম দিতে পারেন। কিন্তু বিছানায় শুয়ে পূর্ণ বিশ্রাম নিষেধ। যতটা সম্ভব স্বাভবিক জীবনযাপন করতে হবে এবং সচল থাকতে হবে।

=> যেসব কারণে ব্যথা বাড়ে (যেমন নিচে বসা, সিঁড়িতে ওঠা-নামা করা, লো কমডে বসা, সামনে ঝুঁকে কাজ করা, লম্বা সময় বসা বা দাঁড়িয়ে থাকা বা হাঁটা ইত্যাদি) কিছুদিনের জন্য এড়িয়ে চলুন। আর যেভাবে রাখলে ব্যথা কম লাগে, সেভাবে রাখার চেষ্টা করুন।

=> ব্যথার স্থানে ব্যথার ধরন ও কারণ অনুযায়ী ব্যথার ক্রিম লাগিয়ে সুতার তোয়ালে দিয়ে ২০ মিনিট গরম সেঁক ও ১০ মিনিট ঠাণ্ডা পানির সেঁক দিনে ৩ থেকে ৪ বার দিতে পারেন। অথবা প্রয়োজনে শুধু গরম বা ঠাণ্ডা পানির সেঁক দিতে পারেন।

=> হাঁটা বা চলাফেরার সময় কিছু দিন কোমরের করসেট ব্যবহার করতে পারেন।

=> পুষ্টিকর ও এন্টিটক্সিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখুন।

=> প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট থেরাপিউটিক এক্সারসাইজগুলো নিয়মিত করুন। সুনির্দিষ্ট ব্যয়ামগুলি নিরূপণের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং তার তত্ত্বাবধানে সঠিকভাবে করতে পারেন। থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ভুল হলে আপনার ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

=> সাধারণ মানের ব্যথার ওষুধ খেতে পারেন, তারমধ্যে প্যারাসিটামলই সবচেয়ে ভালো। প্রয়োজনে ব্যথানাশক ওষুধ ও সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।

=> কোমর ব্যথায় যেকোন চিকিৎসা নেওয়ার আগেই তার প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা এবং অপকারিতা ভালোভাবে জেনে নিন।

ডা. দলিলুর রহমান, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। পেইন, ফিজিওথেরাপি ও স্পোর্টস ইঞ্জুরি বিশেষজ্ঞ। e-mail: [email protected]

   

ঈদের ছুটিতেও স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব পড়েনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের লম্বা ছুটিতেও দেশের কোনো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব পড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঈদে লম্বা ছুটিতে দেশ। এর মধ্যেও দেশের কোনো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাঘাত ঘটেনি। মন্ত্রী হিসেবে এটা আমার প্রথম ঈদ। আমি আশা করছি দেশের মানুষ খুব সুন্দরভাবে ঈদ পালন করছেন।

তিনি বলেন, আমি বুধবারও কয়েকটা হাসপাতালে গিয়েছি। আজকে আরও কয়েকটি হাসপাতালে যাব। বুধবার দুটি হাসপাতালে গিয়েছি, দুই জায়গায়ই আমি পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স পেয়েছি। আমি সন্তুষ্ট। রোগীদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

হাসপাতাল পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং পয়লা বৈশাখের ছুটি চলাকালে দেশের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিজে মনিটরিং করার ঘোষণা দেন। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্য ছুটির সময় নিজে মনিটরিং করব। না জানিয়ে হাসপাতালে যাব। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরের হাসপাতালেও মনিটরিং করা হবে বলেও জানান তিনি।

;

‘দেশে ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু আশঙ্কাজনকহারে বাড়লেও তা মোকাবেলায় বাজেট বরাদ্দ খুবই কম। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে শনিবার (৬ এপ্রিল) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আমার স্বাস্থ্য, আমার অধিকার’।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণ, তামাকের ব্যবহার, কায়িক শ্রমের অভাব, বায়ুদূষণ প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে, যা বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশ। তবে এসব রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ খুবই সামান্য, মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশিমিক ২ শতাংশ।

ওয়েবিনারে আরও জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জাতীয় বাজেটের অন্তত ১৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দিলেও, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে কম।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, কেবল উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর মাধ্যমেই অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের মধ্যে লবণ গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।

জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে উচ্চ রক্তচাপের পরীক্ষা ও ওষুধের পিছনে ১ টাকা ব্যয় করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া সম্ভব। কাজেই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক ড. লায়লা আখতার। ওয়েবিনারে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা এবং সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।

;

স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসার সরকারি হাসপাতাল নিউরোসায়েন্সেস



রুহুল আমিন ও রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

হাসপাতালের মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পথে বামে পরিষ্কার সাজানো ফুলের বাগান। চারদিক বেশ পরিপাটি। হাসপাতালে ঢোকার পথটিও বেশ পরিচ্ছন্ন। বামদিকে একটি নির্মাণাধীন ভবন। পাশে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনটিও হতে চলেছে এই হাসপাতালের অংশ। মূল ভবনে ঢুকতেই সিঁড়ির বাম পাশে টিকিট কাউন্টার। পাশে ফার্মেসি। সেখান থেকে দেওয়া হচ্ছ, সরকারি বিনামূল্যের ওষুধ। কাউন্টারে এসে রোগীদের যেন হয়রানি শিকার না হতে হয়, সে জন্য আছে বিশাল বোর্ডে সরকারি ওষুধের তালিকা।

এছাড়াও ইমার্জেন্সিতে আসা রোগীদের জন্য স্ট্রেচার ও হাঁটাচলা করতে না পারা রোগীদের জন্য রাখা আছে পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার। হাসপাতালের লবি থেকে হাতের বামে ইমার্জেন্সি ও ডানে বহিঃবিভাগ। ওদিকটায় একটু বেশি ভিড়। তবে চারদিকটাই সাজানো গোছানো ও সুন্দর।

অপরিচ্ছন্ন, অপরিষ্কার আর নোংরা পরিবেশই যেন সরকারি হাসপাতালের নিয়মিত চিত্র। তারই বিপরীতে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে, উন্নত মেশিনারিজ আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবামূলক আচরণে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল।

সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় খুশি সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনেরাও। পুরো হাসপাতাল সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকায় নেই দালালের উৎপাতও। ওয়ার্ড বয়, স্ট্রেচার বয় ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহারেও আছে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। কম খরচে এমন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারায় মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে দেশ জুড়ে এই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল।

এমন নাম কুড়িয়েও শয্যা সংখ্যার অপ্রতুলতায় ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে অনেককেই। তবে আশার কথা হলো, ৪শ ৫০ শয্যা থেকে ৯শ ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে সে আক্ষেপ অনেকটাই ঘুচবে বলে আশা করছেন সবাই।

ইতিমধ্যেই হাসপাতালটিতে চালু হয়েছে, অত্যাধুনিক ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্ট্রোক ইউনিট। জানা যায়, অত্যাধুনিক এই স্ট্রোক ইউনিটে স্ট্রোক হওয়ার চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে নিয়ে আসতে পারলে লাঘব করা যাবে পঙ্গুত্বসহ নানা শারীরিক সমস্যা। এছাড়াও রয়েছে মাথাব্যথা, এপিলেপসি, মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার ক্লিনিক। নিউরোলোজি, নিউরোসার্জারি, পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি, পেডিয়াট্রিক নিউরোসার্জারি, নিউরোফিজিওলজি, নিউরোইন্টারভেনশন, নিউরোরিহাবিলিটেশন, নিউরোরেডিওলজি, নিউরোপ্যাথোলজি, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং মেডিসিনসহ আরও বেশ কিছু বিভাগ। আছে অপারেশন থিয়েটার, ক্যাথ ল্যাব, ল্যাবরেটরি সার্ভিস ও আইসিইউর মতো জরুরি প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার ব্যবস্থাও।

সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আদলে গড়ে তোলা হাসপাতালটি চালু হয়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এই হাসপাতালের প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০০৩ সালে। তবে দীর্ঘদিন পরিকল্পনায় আটকে থাকার পর ২০০৯ সালে শুরু হয়, হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম। দেশের বৃহত্তম নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারিবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবার এই হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২শ ৩১ কোটি টাকা। চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিবছর নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারিবিষয়ক উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিন হাসপাতালটিতে ঢুকতেই চোখে পড়ে এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকগুলো। হাসপাতালের লবি থেকে হাতের বামে ইমার্জেন্সি ও ডানে বহিঃবিভাগ। এখানে মানুষের জটলাটা একটু বেশি। জানা গেল, কয়েক হাজার রোগীর তুলনায় বহিঃবিভাগ ছোট হওয়ায় ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে রোগীদের থাকতে হয় দীর্ঘ অপেক্ষায়। এছাড়াও নেই পর্যাপ্ত বসার স্থান। সে কারণে অসুস্থ শরীর নিয়েও বাধ্য হয়ে সেবা প্রত্যাশীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। 

হাসপাতালটিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীদের অনেকেই বার্তা২৪.কম প্রতিবেদককে জানান, তাদের সন্তুষ্টির কথা। হাসপাতালের পরিবেশ, সেবার মান ও উন্নত সরঞ্জামাদি থাকায় অনেকটায় নিশ্চিন্তে সেবা নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন অনেকে। রোগী ও তাদের স্বজনরা বলেন, সরকারি হাসপাতালে এমন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারেননি তারা। এখানকার খাবারের মানও অনেক ভালো। রোগীর সেবায় থাকা নার্স ও ওয়ার্ডবয়রাও রোগীর সেবাযত্নে কোনো ত্রুটি রাখেন না। অনেক বেসরকারি নামিদামি হাসপাতালের চেয়েও এখানকার চিকিৎসা সেবা উন্নত বলেই মনে হয় আমাদের, বলছিলেন একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

বাগেরহাট থেকে স্ট্রোক করা মা-কে নিয়ে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে এসেছেন নজরুল মিয়া। জানালেন, চারদিন আগে হাঁটতে গিয়ে বাড়ির উঠানেই পড়ে যান তার মা। পরে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রেফার করেন ঢাকার এই হাসপাতালে। এখানে নিয়ে আসার পর থেকে গত চারদিনে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তার মা। দুই-একদিনের মধ্যে ছুটিও দিয়ে দিতে পারে বলে জানান তিনি।

বার্তা২৪.কমকে নজরুল মিয়া বলেন, কখনো ভাবিনি সরকারি হাসপাতালে এমন সেবা পাবো। হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে কোথাও কোনো দালাল নেই। কর্মচারীদের ব্যবহারও ছিল ভালো। ওয়ার্ডে থাকার জন্যও আমাদের কিছু নিয়ে আসতে হয়নি বাইরে থেকে। আমার মায়ের দেখভালের জন্যও আমাকে থাকতে হয়নি। তারাই দায়িত্ব নিয়ে আমার মাকে সুস্থ করে তুলেছেন।

পটুয়াখালী থেকে শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন বিল্লাল হোসেন। সিট না পাওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করলেও হাসপাতালের পরিবেশ ও ডাক্তারদের ব্যবহারে অনেকটাই সন্তুষ্ট জানিয়ে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘আমি তো নিউরোসাইন্সের কথা আগেও শুনছি। এখানকার ডাক্তার নাকি অনেক ভালো। ডাক্তার ভালোই। চিকিৎসাও তো ভালোই হইতাছে। শাশুড়ি স্ট্রোক করছে। হেরে নিয়া আইছি। এইখানকার ডাক্তার দেখছে। দেইখা কইছে, ভর্তি করাইতে হইবো। কিন্তু আজকে নাকি সিট খালি নাই। কইছে কালকে আইতে।‘

হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীদের বক্তব্যই ছিল এমন। সিট না-পাওয়া ও লম্বা সিরিয়াল থাকায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করলেও হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থায় সন্তুষ্টির কথায় জানান তারা। বিনামূল্যে ঔষধ, কম খরচে উন্নত টেস্টের ব্যবস্থা ও ওয়ার্ড-কেবিনের পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতায় তাদের সন্তুষ্টির মূল কারণ বলেও জানান সেবাপ্রত্যাশীরা।

তবে ৫০০ শয্যার বর্ধিতাংশ প্রস্তুত হয়ে গেলে সে সংকটও কাটবে, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সবার। 

;

সামেক হাসপাতালে ডায়ালিসিস মেশিন বিকল, দুর্ভোগে রোগীরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরা জেলার প্রত্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার বংশিপুরের আজিজ মোড়ল। অনেকদিন ধরেই তার ছেলে জয়নাল ক্রনিক কিডনি রোগে (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ- সিকেডি) আক্রান্ত।

পরিবারে স্বচ্ছল অবস্থা না থাকায় ভালো প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে পারছেন না। তবে তারই জেলা শহর সাতক্ষীরায় অবস্থিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতাল। সেখানে কিডনি ডায়ালিসিস করাবেন, তারও উপায় নেই। কারণ, সামেক হাসপাতালের ১৯টি ডায়ালিসিস মেশিনের মধ্যে ১৬টিই মেশিন বর্তমানে বিকল।

এ নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন জয়নালের মতো অসহায় কিডনি রোগীরা।

জয়নাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার মা ভিক্ষা করে আমার ডায়ালিসিসের খরচ চালান। এখন যদি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা বন্ধ করে দেয়, তাহলে যেকোনো সময় আমার মৃত্যু হবে। কারণ, প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ডায়ালিসিস করানোর সামর্থ্য আমাদের নেই।

শুধু জয়নাল নয়, তার মতো একজন জহুরুল কবীর। সাতক্ষীরা শহরের বাসিন্দা তিনি। পেশায় একজন সংবাদকর্মী। তার স্ত্রী অনেকদিন ধরেই সিকেডিতে আক্রান্ত। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় জমি বিক্রি করে তার চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে তিনটি সেশনে ১২ ঘণ্টা করে ডায়ালিসিস করা প্রয়োজন। কিন্তু সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের একাধিক মেশিন বিকল থাকায়, দুই সেশনে চার ঘণ্টা করে সপ্তাহে আট ঘণ্টা ডায়ালিসিস করানো হতো। কম খরচে এই হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়ে স্ত্রীকে কোনো রকমে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।

কিন্তু গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে আসা ফোন কলে তিনি চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। এখন থেকে তার স্ত্রী সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার ডায়ালিসিস করার সুযোগ পাবেন। ১৯টির মধ্যে মাত্র তিনটি মেশিন এখন সচল রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে সপ্তাহে একবারের বেশি ডায়ালিসিস সেবা পাওয়া যাবে না।

জহুরুল কবীর বলেন, ‘সপ্তাহে চার ঘণ্টা ডায়ালিসিস করালে অধিকাংশ রোগীই বাঁচবে না। খবরটি শুনে অনেক কেঁদেছি!’ স্ত্রীকে বাঁচাতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯টি ডায়ালিসিস মেশিনের মধ্যে ১৬টি বিকল। একটি পুরোপুরি সক্রিয় থাকলেও দুটোর কাজ চলছে জোড়াতালি দিয়ে। ফলে নিয়মিত চিকিৎসা করা কিডনি রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। এ অবস্থায় তিনটি সচল মেশিন দিয়ে সপ্তাহে একদিন রোগীদের ডায়ালিসিস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ ব্যক্তি দিয়ে মেশিন পরিচালনা করায় হাসপাতালের ১৬টি ডায়ালিসিস মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি তিনটিও নষ্ট হওয়ার পথে।

কিডনি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা ছাড়াও আশপাশের জেলার রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। ইউনিটের চালু থাকা প্রতিটি যন্ত্র দিয়ে দিনে দুই থেকে তিনজন রোগীর ডায়ালিসিস করানো হতো। ইউনিটে গড়ে ৩৫-৪০ জন রোগীর প্রতিদিন নিয়মিত ডায়ালিসিস করানো হতো। পর্যায়ক্রমে ৬০-৭০ জন সিরিয়ালে থাকতেন। একজন রোগীর সপ্তাহে দুদিন করে ডায়ালিসিস করা হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ডায়ালিসিসের জন্য ২শ টাকা ফি নেওয়া হয়। এতে সাধারণ ও দরিদ্র রোগীরা কম খরচে সেবা পান। জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকেও রোগী আসেন।

কয়েক মাস আগেও ১৯টি যন্ত্রের সবগুলো চালু ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে একটি একটি করে যন্ত্রগুলো নষ্ট হতে থাকে। ফলে চাপ বাড়তে থাকে বাকি যন্ত্রগুলোর ওপর। অকেজো মেশিনগুলো সময়মতো মেরামত না করায় বর্তমানে তিনটি চালু আছে। তা দিয়ে তালিকাভুক্ত শতাধিক কিডনি রোগীকে ডায়ালিসিস সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০ মার্চ থেকে সপ্তাহে দুটির পরিবর্তে মাত্র একটি ডায়ালিসিস করানো হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। বর্তমানে আতঙ্কে ভুগছেন তারা।

হাসপাতালের কিডনি ডায়ালিসিস ইউনিটের ইনচার্জ নমিতা রানী বলেন, ‘১৯টি মেশিনের মধ্যে একটি ভালো থাকলেও অপর দুটি মেশিনে জোড়াতালি দিয়ে রোগীদের ডায়ালিসিস চলছে। ফলে এখন থেকে সপ্তাহে দুই অথবা তিনবার ডায়ালিসিস দেওয়া সম্ভব হবে না।’

এ ব্যাপারে সামেক হাসপাতালের পরিচালক শীতল চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের মোট ডায়ালিসিস মেশিন ১৯টি। এর মধ্যে বর্তমানে তিনটি সচল আছে।

মেশিন নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অদক্ষ ব্যক্তি দিয়ে মেশিন পরিচালনা করায় মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নষ্ট মেশিনগুলো মেরামত প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। মেরামতের জন্য কয়েক দফায় টেকনিশিয়ান এসেছেন। কিন্তু খুচরা যন্ত্রাংশ না পাওয়া যাওয়ায় মেশিনগুলো ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।

নষ্ট মেশিনগুলো দ্রুত মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

;