মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি: ড. নূরুন নবী



কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২০ সালে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালি ড. নূরন নবী। পেশায় তিনি একজন বিজ্ঞানী। তার পেটেন্টকৃত আবিস্কারের সংখ্যা ৫৫টি, পাবলিকেশেন সংখ্যা ৫০টি। তিনি নিউইয়র্কের অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক প্রবাসীর প্রেসিডেন্ট ও সম্পাদক। ২০০৭ সাল থেকে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের প্লেইনবোরো শহরের নির্বাচিত কাউন্সিলম্যান। তিনি একজন সংগঠক এবং রাজনীতিবীদ। তবে তার সবেচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। নিউইয়র্ক বইমেলাসহ বাংলাদেশ এবং নিউইয়র্কে শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন কাজের সাথে তিনি সম্পৃক্ত। করোনার মধ্যে ড. নূরুন নবী বার্তা২৪.কম-এর সাথে একান্তে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। ভার্চ্যুয়ালি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদনান সৈয়দ

প্রশ্ন: আপানার অনেক পরিচয়। তবে কোন পরিচয়ে আপনি সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন?

. নূরন নবী: মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে আমি সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কারণ মুক্তিযুদ্ধ জাতির  জীবনে একবারই আসে। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সেই মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার।

প্রশ্ন: ফার ইস্টার্ন রিভিউতে আপনাকে কেন ‘ব্রেইন অব দি ফোর্স’ বলে বিবেচনা করা হয়?

. নূরন নবী: আমরা টাঙ্গাইলে হিট অ্যান্ড রান কায়দায় যুদ্ধ করেছি। প্রথম দিকে মুক্ত অঞ্চল ধরে রাখার মতো আমাদের কোনও সক্ষমতা ছিল না। ফলে অভিযান চালিয়ে চলে গেলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেখানের জনগণকে অত্যাচার করতো। তাই মুক্তাঞ্চল ধরে রাখার প্রয়োজনীতা দেখা দেয়। যার জন্য প্রচুর গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রের প্রয়োজন ছিল। ওই সময় ভারত থেকে কোনও সাপ্লাই লাইনও ছিল না। তাই ভারত থেকে টাঙ্গাইলে অস্ত্র সংগ্রহের দায়িত্ব আমার উপর বর্তায়। এজন্য আমি তিনবার ভারতে গিয়ে ভারতীয় বাহিনীর জেনারেলদের সাথে আলোচনা করে ৪০টি নৌকা বোঝাই অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আসি। অবশ্য এ জন্য আমাকে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবদিহি করতে হয়েছিল। এমনকি ভারতীয় জেনারেলদের আস্থা অর্জন করতে হয়েছিল। অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনতে পারায় আমাদের মুক্তিবাহিনীর মনোবল বেড়ে যায় এবং শত্রুর বিরুদ্ধে ক্রমাগত জয় অর্জন করতে থাকি।

প্রশ্ন: প্রবাসে বসে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা কতটুকু সফল বলে আপনার কাছে মনে হয়?

. নূরন নবী: প্রবাসে সাহিত্য চর্চার করার যেমন সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তেমনি রয়েছে অনেক সুবিধা। প্রবাস জীবন অনেকটাই শৃঙ্খলাবদ্ধ। ফলে লেখক নিজের মতো করে লেখালেখিতে মনোযোগ দিতে পারেন। প্রবাসে বই লেখার অন্যতম সমস্যা হলো হাতের কাছে রেফারেন্স বই না থাকা। ইন্টারনেটেও বাংলা রেফারেন্স বইয়ের বড়ই অভাব। প্রবাসে বাংলা সাহিত্য চর্চা বাড়লেও প্রকাশিত বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। এরমধ্যেও অনেক প্রবাসী লেখক জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার পাচ্ছেন। এটা ভালো দিক। তবে প্রবাসী লেখকদের লেখার মানের দিকে নজর দেওয়া উচিত।

প্রশ্ন: আপনার প্রবাস জীবন সম্পর্কে কিছু বলুন?

. নূরন নবী: দেশের জন্য মন কাঁদলেও আমার প্রবাস জীবন ভালই কাটছে। আমি প্রবাসে থাকলেও আমার অনেক কর্মকান্ড দেশ নিয়ে। দেশের জন্য যেসব কাজ করছি, তা দেশে থাকলে হয়তো করতে পারতাম না।

প্রশ্ন: আমেরিকায় বাংলা ভাষার চর্চা সম্পর্কে আপনার মত কী?

. নূরন নবী: প্রবাসে বড় বড় শহরে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় বাংলা স্কুল চালু রয়েছে। সেখানে বাংলা ভাষা ছাড়াও শিশুরা নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র এবং বাংলা গান শিখছে। তবে এখানের ছোট শহরগুলোতে বাঙালি কম হওয়ায় এসব চর্চা দেকা যায় না। প্রবাসে বাংলা শিক্ষা নির্ভর করে বাবা মায়ের ইচ্ছার উপর। তবে প্রবাসের বাংলা পত্রিকাগুলো বাংলা চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় হিন্দি ও ইংরেজির ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ভবিষ্যতে বাংলা সাহিত্য চর্চায় এটা কি ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে?

. নূরন নবী: হিন্দি ও ইংরেজি বাংলা ভাষা চর্চায় প্রভাব ফেলবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ ভাষা একটি প্রবাহমান বিষয়। সময়ের সাথে এর বিবর্তন হয়। অন্য ভাষা থেকে শব্দ সংযোগ হয়ে ভাষা সমবৃদ্ধ হয়। বর্তমানে আমরা গ্লোবাল ভিলেজে বাস করি। ভাষা ও সংস্ক্রতির আদান প্রদান হতে বাধ্য। এটাকে রদ করা যাবে না। দূষণ বা  সংমিশ্রণ যাই বলি না কেন, তা আপন গতিতেই  চলবে।

প্রশ্ন: কথা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন- বাংলা ভাষা যদি ভবিষ্যতে টিকে তাহলে বাংলাদেশেই টিকবে। আপনার কি মনে হয়?

. নূরন নবী: আমিও সেটা মনে করি। কারণ রক্ত দিয়ে আমরা বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। বাংলাদেশেই বাংলা ভাষা টিকে থাকবে এবং উৎকর্ষ লাভ করবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে মৌলাবাদীদের উত্থান নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই।

. নূরন নবী: বাংলাদেশে মৌলাবাদীদের উত্থানের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ১৯৭৫-এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে বাংলাদেশকে একটি মিনি পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের  পরাজিত শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে আর অন্য কোনও  আদর্শ ব্যবহার করা কার্যকর হবে না। বিধায় ধর্মভীরু বাঙালিদেরকে ইসলামের নামে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ধর্মান্ধদের দখলে যাবে না। সেই পরিস্থিতি আসলে বাঙালিরা রুখে দেবে।

প্রশ্ন: ডিজিটাইজেশনের ফলে বই পড়ার প্রবণতা কমেছে। এই প্রবণতা বাড়াতে আপনার পরামর্শ কী?

. নূরন নবী: ভিডিও গেম, ফেসবুক, আইপ্যাড, কিন্ডেল কখনও বই পড়ার বিকল্প হতে পারে না। একজন লেখককে অবশ্যই বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশুনা করতে হবে। বই পড়ুয়াদের সংখ্যা একটু কমেছে বটে। কিন্তু যারাই বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশুনা করবেন, তারাই ভালো লেখক হয়ে উঠবেন।

প্রশ্ন: সাহিত্যের ভাষা কোনটা হওয়া উচিৎ- মুখের ভাষা নাকি আঞ্চলিক ভাষা?

. নূরন নবী: আমি মনে করি, প্রমিত ভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় সাহিত্য রচনায় কোনও বাধা নেই। কিন্তু নজর রাখতে হবে কিভাবে ভাষাকে ব্যবহার করতে হবে। চরিত্রের উপর নির্ভর করবে কোন ভাষা ব্যবহৃত হবে।

প্রশ্ন: একুশে পদক পাওয়া সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।

. নূরন নবী: রাষ্ট্রের এ ধরনের একটি পুরস্কার পওয়া অবশ্যই সম্মানের ও আনন্দের। আমি দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখি করি, পুরস্কারের জন্য নয়। আমার এই পুরস্কার শুধু আমার একার নয়, এটা প্রবাসী সব বাঙালির। ভালো কাজ করলে প্রবাসীরাও জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পেতে পারে।

প্রশ্ন: নিউইয়র্কে বইমেলা নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

. নূরন নবী: গত ৩০ বছর ধরে নিউইয়র্কে বইমেলা চলে আসছে। এর গুরুত্ব অনেক। এই বইমেলা নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলা সাহিত্য চর্চা, পাঠক সৃষ্টি এবং লেখক সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে। দেশ বিদেশের লেখক ও পাঠকদেরকে মুখোমুখী করেছে। ভবিষ্যতে এই বইমেলা আরও উৎকর্ষ লাভ করবে।

প্রশ্ন: আপনার প্রকাশতি ‘স্মৃতিময় নিপ্পন’ এবং ‘জাপানীদের চোখে বাঙালি বীর’ গ্রন্থ সম্পর্কে কিছু বলেন।

. নূরন নবী: আমি দায়বদ্ধতা থেকে লেখক হয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের  ইতিহাস শুধু বিকৃতি নয়, এটাকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা শুরু হয়েছিল। আমি তখন ভাবলাম, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার  ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। আমি যদি আমার নিজের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করি, সেটা ইতিহাসের অংশ হয় থাকবে। তাই আমি মুক্তিযুদ্ধের উপর আমার অভিজ্ঞতা লেখা শুরু করি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য আমি ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমির  সম্মান সূচক ফেলোশিপ পেয়েছি এবং গত বছর একুশে পদক পেয়েছি।  এবার বইমেলায় ‘জাপানিদের চোখে বাঙ্গালী বীর’ এবং ‘স্মৃতিময় নিপ্পন’ গ্রন্থ দুটোর পাশাপাশি আরও একটি বই Bangabandhu and Turbulent Bangladesh বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

   

আমিরাতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব



তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে বসবাসরত বাঙালিরা দিনটি সাড়ম্বরে পালন করে থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার ঈদের ছুটি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পহেলা বৈশাখ। যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। লোকায়ত সংস্কৃতির ডালা সাজিয়ে বর্ণিল উৎসব আয়োজনের মধ্যদিয়ে দেশটিতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

ভিনদেশের মাটিতেও বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হলো নানা অনুসঙ্গে। দেশটিতে বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যেও ছিল আনন্দের কলরব। আর এই আনন্দ উচ্ছ্বাসকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রবাসী সনাতনি ঐক্য পরিষদের চমৎকার আয়োজনের মধ্য দিয়ে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।


রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আমিরাতের সারজায় আল জায়েদ ফার্ম হাউজে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুতে পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা নববর্ষ বরণ করে নিতে সকাল সাড়ে ১০টায় মঙ্গল শোভযাত্রা র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে নাচ, গান, মধ্যাহৃভোজ ও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ উদযাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

একাকী প্রবাসজীবনে পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা, দেশীয় স্বাদ ও আমেজের জন্য সারাবছর লালায়িত থাকা এই প্রবাসীরা হাজার মাইলের দূরত্ব কষ্ট ভুলে গিয়েছিল পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে। আমিরাতের আবুধাবী, দুবাই, আজমান ও বিভিন্ন শহর থেকে প্রবাসীরা পরিবার নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।


অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই লেডিস গ্রুপের সভাপতি আবিদা হোসেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশীষ কুমার সরকার, প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সিনিয়র উপদেষ্টা বিশ্বনাথ দাশ, সভাপতি অজিত কুমার রায়, সহ সভাপতি অজিত চৌধুরী মিঠু, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার, অর্থ সম্পাদক কার্তিক সাহা, দপ্তর সম্পাদক দেবব্রত তালুকদার, ফুজাইরাহ বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি বাবু তপন সরকার, জাতীয় হিন্দু মহাজোট ইউএই’র সিনিয়র উপদেষ্টা মিনাল কান্তি ধর প্রমুখ।

প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সভাপতি অজিত কুমার রায় জানান, প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আগামীতে আরও বড় পরিসরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

 

 

;

ব্রুনাইতে হাইকমিশনার সুমনা’র বিদায়ী ঈদ পুনর্মিলনী



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ-ইস্ট এশিয়া (ব্যাংকক, থাইল্যান্ড)
ব্রুনাইতে হাইকমিশনার সুমনা’র বিদায়ী ঈদ পুনর্মিলনী

ব্রুনাইতে হাইকমিশনার সুমনা’র বিদায়ী ঈদ পুনর্মিলনী

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রুনাই দারুসসালামে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের জন্য ঈদ পরবর্তী পুনর্মিলনী বা ওপেন হাউজ আয়োজন করেছে দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশন। গত বৃহস্পতিবারের (এপ্রিল ১১) এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি, ভারতীয় এবং স্থানীয় নাগরিকরা।

ব্রুনাই দারুসসালামে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা রহমান সুমনা এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তারা অতিথিদের স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার সুমনা তার বক্তব্যে জানান, আয়োজিত ওপেন হাউজটি ব্রুনাইয়ে তার শেষ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। কারণ তার মেয়াদ শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে।

হাইকমিশনার বলেন, ব্রুনাইতে তার বন্ধুদের আন্তরিকতা তাকে মুগ্ধ করেছে। সুলতানাতে তার মেয়াদকালে সকল সহযোগিতা পেয়েছেন এবং ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।

তিনি বলেন, ব্রুনাই এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক মিলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই ঈদ-উল-ফিতরের পরের পুনর্মিলনী বা ওপেন হাউজ। যেখানে সকলের সঙ্গে দেখা হয় এবং ভাবের আদান প্রদান করা যায়।

কাম্পং তাানাহ জাম্বুতে অবস্থিত চ্যান্সারিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী খাবার ও সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

;

মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ায় পবিত্র ঈদ উল ফিতরের দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ (৩১), আলি আজগর ও মো. সোহেল মিয়া।

বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদের দিন স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে দেশটির পেরাক রাজ্যের কাম্পার এলাকায় উত্তর-দক্ষিণ এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গাড়িতে থাকা ৮ বাংলাদেশির সবাই ক্যামেরন হাইল্যান্ডে একটি ফার্মে কাজ করতেন। এ খবর প্রকাশ করেছে দেশটির জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদপত্র বারনামা।

গাড়িচালক কবির হোসেন ( ৩২), সাইফুল ইসলাম ( ২৫), রাজু মিয়া (২৭) সোহেল রানা (৩০ ) অক্ষত অবস্থায় রয়েছেন। তবে মোহাম্মদ সোহেল নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় পার্শ্ববর্তি তাপাহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কাম্পার পুলিশের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, দুপুর ১ টা ৪৯ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কুয়ালালামপুর আশার পথে চলন্ত গাড়ির টায়ার ফেটে গেলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান এবং গার্ডরেলে ধাক্কা লেগে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে পেছন থেকে একটি লরি সজোরে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

;

আমিরাতে ঈদ আনন্দে শামিল প্রবাসীরা



তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। নিজেদের মতো করে ঈদ উদযাপন করছেন প্রবাসীরা। উৎসবের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বুধবার (১০ এপ্রিল) আবুধাবিতে সকাল ৬টা ২২ মিনিটে, দুবাইয়ে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে, শারজাহ ও আজমানে ৬টা ১৭ মিনিটে, রাস আল খাইমায় সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে, ফুজাইরাহ ও খোরফাক্কানে ৬টা ১৪ মিনিটে এবং উম্ম আল কুওয়াইনে সকাল ৬টা ১৩ মিনিটে ঈদগাহ ময়দানে ও মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে আল আইনে ৬টা ১৫ মিনিটে ও জায়েদ সিটিতে ৬টা ২৬ মিনিটে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।

তবে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানী আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে। সূর্য ওঠার আগেই বিশাল ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সেখানে বেশিরভাগ মুসল্লি বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয়। জামাত শেষে দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

ঈদের নামাজ শেষ করে প্রবাসীরা মোবাইল ফোনে দেশের প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বাসায় ফিরে আরব দেশের প্রধান খাদ্য খেজুর, পায়েস, বিরিয়ানি-পোলাও ও বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার খান সবাই। ঈদের আনন্দ উদযাপনে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে বেড়াবেন অনেকেই।

সিলেটের রায়হান আহমেদ রিয়াদ বলেন, দেশের মতো আনন্দটা তেমন নেই বললেই চলে। প্রবাসে ঈদ মানে সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈদগাহে নামাজ পড়ে রুমে এসে পরিচিতজনের সাথে কোলাকুলি করে ঘুমানো, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে সময় পার করা।

প্রবাসী কামরান চৌধুরী জানান, প্রবাসে ঈদের দিনে সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে দেশে প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানোর ঈদের দিনগুলোর কথা। তারপরও আমরা আমাদের মতো করে ঈদের আনন্দকে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করি।প্রবাসীদের ঈদের দিনগুলোকে অন্যান্য দিনগুলোর সঙ্গে পার্থক্য করা কঠিন। কারণ অনেক প্রবাসীকেই ঈদের দিনও তাদের নির্ধারিত ডিউটি করতে হয়।

ঈদ মানেই আনন্দ। তবে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করলে ঈদের উল্লাস আরও গাঢ় হয়। প্রবাসীদের জীবনে এই উল্লাসের সুযোগ নেই। প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন অন্যদের চেয়ে আলাদা। প্রবাসে বাংলাদেশের মতো ঈদের আমেজ পুরোপুরি থাকে না। তবুও সবাই সাধ্যমতো চেষ্টা করেন একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময়, কোলাকুলি, খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুরে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে।

;