জীবন ঘনিষ্ঠ কবি সাইমন আর্মিটেজ



সাঈদ চৌধুরী
জীবন ঘনিষ্ঠ কবি সাইমন আর্মিটেজ

জীবন ঘনিষ্ঠ কবি সাইমন আর্মিটেজ

  • Font increase
  • Font Decrease

সাইমন আর্মিটেজ বৃটেনের পোয়েট লরিয়েট বা জাতীয় কবি। তার লেখা প্রতিটি পঙক্তি জীবন ঘনিষ্ঠ। সমাজকে নিংড়ে যিনি সাহিত্যের রস খুঁজে বেড়ান। প্রতিটি কবিতার প্যাটার্ন ও এক্সপ্রেশনস অপূর্ব। প্রকৃতি প্রভাব বিস্তার করেছে তার কবিতার অঙ্গে-বিহঙ্গে। অনন্য উপমা ও চিত্রকল্প মিলে সৃষ্টি হয় ভালোলাগার এক অভূতপূর্ব আবেশ। অনবদ্য সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি গণমানুষের অত্যন্ত কাছে পৌঁছতে পেরেছেন। প্রগাঢ় মানবতাবোধ সম্পন্ন এই কবি নানা কারণে আমাদের অতি প্রিয় হয়ে উঠেছেন। 

বৃটেনের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মানুষ টিকেট করে অংশ নেয়। বৃটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসেও কবিদের জন্য রয়েছে বিশেষ জায়গা। এই সময়ে জাতীয়ভাবে স্বীকৃত লেখকদের মধ্যে সাইমন আর্মিটেজ শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। তার অনুষ্ঠানে লেখক-সাহিত্যিকদের ভিড় জমে যায়। কবিতা এবং ছোটগল্পের লেখক হিসেবে তিনি বিখ্যাত। অনন্য কাব্যসুষমা ও নান্দনিক প্রকাশের জন্য সুপরিচিত। আর্মি়টেজ উপন্যাস লিখেছেন, অনুবাদও করেছেন। তিনি সর্বজনীন কাব্যকন্ঠে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। তার কবিতা বিলেতের স্কুল পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত। 

আর্মিটেজের কোন কোন বই বিশ্বব্যাপী লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয়েছে। বৃটেনের রানীর ব্যক্তিগত পছন্দের কবি তিনি। তার কবিতা ও গানের শ্রোতা রানী নিজেও। সাহিত্যে কৃতিত্বের জন্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাকে স্বর্ণপদক উপহার দিয়েছেন।

সাইমন আর্মিটেজ বর্তমানে বৃটেনের ‘পোয়েট লরিয়েট’ বা জাতীয় কবি। এটি দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক ও গৌরবময় পুরস্কার। কবিকে বিশেষ সম্মানী প্রদান করা হয়। যার কাজে রয়েছে জাতীয় তাৎপর্য।

৮ জুলাই নরফোক আইলশাম টাউন হলে একটি অনুষ্ঠানে যাবার কথা ছিল। পোয়েট লরিয়েট সাইমন আর্মিটেজ ছিলেন মুখ্য আকর্ষণ। বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের জীবন ও কর্ম নিয়ে তার সাথে আলোচনার পরিকল্পনা ছিল। আগের বার আল মাহমুদের আত্মজীবনী 'যেভাবে বেড়ে উঠি' ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘কাবিলের বোন’নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তিনি ইংরেজিতে একটি নোট চেয়েছিলেন। কিন্তু কোভিডের কারণে ৮ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানটি স্তগিত হয়েছে। ৯ জুলাই নরউইচ অ্যাসেম্বলি হাউসে অপর অনুষ্ঠানও একই অবস্থা। তবে ২৭ অক্টোবর লন্ডনের (ও'মিয়েরা স্ট্রিট এসই১১) অনুষ্ঠান এখনো বহাল আছে। এর আগে গ্রেটার লন্ডনে আর কোন অনুষ্ঠান হবে বলে মনে হয়না।

২০১২ সালে সাইমন আর্মিটেজ বৃটেনে সাংস্কৃতিক অলিম্পিয়াডের অংশ হিসেবে অলিম্পিক জাতির কবি এবং কবিতার সমাহার ঘটাতে ব্যাপক কাজ করেছেন। তখনই তার সাথে পরিচয় ঘটে। আন্তর্জাতিক কবিদের একসাথে আসার এই যুগান্তকারী ঘটনাটি কবিতার ইতিহাসের অনেক বড় কাজ হিসেবে স্বীকৃত।

বৃটিশ কবিরা প্রাচীন কাল থেকেই তাদের সমাজ পুনর্গঠনের অংশ ছিলেন। ১৬৬৮ সালে তৎকালীন সম্রাট দ্বিতীয় চার্লস প্রথম জন ড্রাইডেনকে ‘পোয়েট লরিয়েট’ নির্বাচন করেছিলেন। তারপর থেকে রাজকীয় পদটি দশক, শতক পেরিয়ে এখনও সম্মানজনক ভাবে অব্যাহত আছে। সাড়ে তিনশ বছরের সুদীর্ঘ সময়কালে এ পদে অভিষিক্ত হয়েছেন অনেক খ্যাতিমান কবি। বিশ্বসাহিত্যে যাদের অবদান অনস্বীকার্য।

যারা নোবেল পুরস্কার পায় তাদেরকে ইংরেজিতে নোবেল লরিয়েট বলা হয়। আর জাতীয় কবিদের বলা হয় পোয়েট লরিয়েট। বৃটেনে এই সম্মান ও পদবি যারা পেয়েছেন, তারা ইংরেজি সাহিত্যের দিকপাল। ইতিহাসে বিশাল জায়গা দখল করে আছেন।

পোয়েট লরিয়েটদের মধ্যে প্রথম সৌভাগ্যবান হলেন জন ড্রাইডেন। তারপর টমাস শ্যাডওয়েল, নাহুম টাতে, নিকোলাস রো, লরেন্স ইউসডেন, কলি সিবার, উইলিয়াম হোয়াইটহেড, টমাস ওয়ার্টন, হেনরি জেমস পাই, রবার্ট সাদি, উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, আলফ্রেড লর্ড টেনিসন, আলফ্রেড অস্টিন, রবার্ট বৃজেস, জন ম্যাসফিল্ড, সিসিল ডে-লুইস, জন বেতজেমন, টেড হিউজেস, অ্যান্ড্র মোশন, ক্যারল অ্যান ডাফি ও সাইমন আর্মিটেজ।

প্রথমদিকে শুধুমাত্র ইউনাই়়টেড কিংডমের মধ্যে ‘পোয়েট লরিয়েট’ পদবি সীমিত থাকলেও আটের দশকের মাঝামাঝি সময় কমনওয়েলথ-ভুক্ত দেশের কবিদেরও এই পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রতি দশ বছর অন্তর ‘পোয়েট লরিয়েট’ বা রাজ কবি হিসেবে একজনকে মনোনীত করা হয়।

বর্তমান জাতীয় কবি সাইমন আর্মিটেজ ২০১৯ থেকে এ পদে আসীন হয়েছেন। ২০২৯ সাল পর্যন্ত তিনি বহাল থাকবেন। এর আগে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অফ পোয়েট্রির অধ্যাপক ছিলেন।

সাইমন আর্মিটেজ ১৯৬৩ সালে পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের মার্সডেন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। তরুণ অপরাধীদের উপর টেলিভিশন সহিংসতার প্রভাব নিয়ে তিনি এমএ থিসিস করেছেন। (HIS MA THESIS CONCERNED THE EFFECTS OF TELEVISION VIOLENCE ON YOUNG OFFENDERS)

কর্মজীবনে সাইমন আর্মিটেজ ১৯৯৪ সাল অবধি গ্রেটার ম্যানচেস্টারে প্রবেশন অফিসার হিসাবে কাজ করেছেন। পরে তিনি শেফিল্ড,  লিডস ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক এবং ফালমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে হোমস ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন।

আরমিটেজ তার কবিতার জন্য সানডে টাইমস ইয়াং লেখক অফ দ্য ইয়ার ছিলেন। স্পোকেন ওয়ার্ড অ্যাওয়ার্ড (গোল্ড), গান রচনার জন্য অ্যাওয়ার্ড, বিবিসি রেডিওর সেরা বক্তৃতা প্রোগ্রাম, টেলিভিশন সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড সহ অসংখ্য পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

১৯৯৯ সালে আর্মিটেজ মিলেনিয়াম কবি খ্যাতি লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি সাহিত্যের রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। কবিতায় অবদানের জন্য ২০১০ সালে অত্যন্ত সম্মানজনক সিবিই (কমান্ডার অব দ্যা অর্ডার অব দ্য বৃটিশ এম্পায়ার) উপাধি পেয়েছেন। ২০১৮ সালে ‘কুইন্স গোল্ড মেডাল ফর পোয়েট্রি’র মতো রাজকীয় খেতাব লাভ করেছেন। ২০১৯ থেকে হলেন ‘পোয়েট লরিয়েট’ বা বৃটেনের জাতীয় কবি।

সাইমন আর্মিটেজের উল্লেখ্যযোগ্য পুরস্কার সমূহ হলো :

1988 Eric Gregory Award

1989 Zoom! made a Poetry Book Society Choice

1992 A Forward Poetry Prize for Kid

1993 Sunday Times Young Writer of the Year

1994 Lannan Award

1998 Yorkshire Post Book of the Year for All Points North

2003 Ivor Novello Award for song-writing; BAFTA winner

2004 Fellow of Royal Society for Literature

2005 Spoken Word Award (Gold) for The Odyssey

2006 Royal Television Society Documentary Award Winner for Out of the Blue

2008 The Not Dead (Channel 4, Century Films) Mental Health in the Media Documentary Film Winner

2010 Seeing Stars made a Poetry Book Society Choice

2010 Keats-Shelley Prize for Poetry

2010 Awarded the CBE in the Queen’s Birthday Honours List, for services to poetry

2012 The Death of King Arthur made Poetry Book Society Choice

2012 Hay Medal for Poetry

2014 Cholmondeley Award

2017 The Unaccompanied made a Poetry Book Society Choice

2017 Pearl, winner of PEN America Award for Poetry in Translation

2018 The Queens Gold Medal for Poetry

2019 Poet Laureate

2020 Man of the Year, Yorkshire Awards

সাইমন আর্মিটেজের পূর্বসূরী ‘পোয়েট লরিয়েট’ ছিলেন ক্যারল অ্যান ডাফি। ২০০৯ সালে রাজকীয় কবির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালের মে মাসে তিনি মেয়াদ শেষ করেন।

ক্যারোল অ্যান ডাফি বৃটেনের প্রথম নারী পোয়েট লরিয়েট। ইংল্যান্ডের ৩৪১ বছরের ইতিহাসে সর্বপ্রথম মনোনীত কোনো নারী এই পদবি লাভ করেন। যিনি ১০ বছরের জন্য অ্যান্ড্র মোশানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। ডাফি এশীয় লেখকদের বেশ ভাল জানেন। ২০০৪ সাল থেকে কয়েকবার তার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে। এরই মধ্যে তিনি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, আলফ্রেড লর্ড টেনিসন, জন বেজামেন ও টেড হিউজের মতো বিশাল নামগুলোর কাতারে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছেন।

ক্যারল অ্যান ডাফির পরবর্তী ‘পোয়েট লরিয়েট’ পদের জন্য আলোচনার শীর্ষে ছিলেন বৃটিশ-পাকিস্তানি কবি ইমতিয়াজ ধরকর। যথারীতি তার সম্মতির জন্য বিষয়টি তাকে জানানো হয়। কিন্তু তিনি রাজকীয় কবি ‘পোয়েট লরিয়েট’ পদ গ্রহণের ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ইতিহাসের প্রথম কোন এশীয় এমন সম্মানজনক পদবি পেয়েছিলেন। তিনি আগে থেকেই ‘রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচার’ ফেলো। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ‘পোয়েট ইন রেসিডেন্স’। কিন্ত এবার তিনি আর কোন জাতীয় দায়-দায়িত্ব নিতে চাইলেন না। জীবনে বাকি সময়টা কেবল নিরবে লিখে যেতে চান। প্রচন্ড আত্মপ্রত্যয়ী এই কবির এমন সিদ্ধান্ত মিডিয়া অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

ইমতিয়াজ ধরকরের অসম্মতির পর সাইমন আর্মিটেজকে খুঁজে বের করা হয়েছে। তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ফোনে আর্মিটেজের সঙ্গে আলাপ করে পুরো প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত করেন।

মূলধারার প্রকাশনার আগে, আর্মিটেজ ছোট এবং স্থানীয় কবিতার প্রকাশনায় কয়েকটি সীমিত সংস্করণ  প্রকাশ করেছিলেন। এরমধ্যে হিউম্যান জিওগ্রাফি, দ্য ডিস্টেন্স বিটিউন স্টারস, দ্য ওয়াকিং হর্সস, রাইডিন রবিনসন এবং স্যুটকেস অন্তর্ভুক্ত ছিল। এসবই এখন জাতীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বের সমাদৃত।

সাইমন আর্মিটেজের উল্লেখযোগ্য বইয়েল মধ্যে রয়েছে: Xanadu (1992), Kid (1992), Book of Matches (1993), The Dead Sea Poems (1995), Moon Country (with Glyn Maxwell, 1996), CloudCuckooLand (1997), Killing Time (1999), Selected Poems (2001), Travelling Songs (2002), The Universal Home Doctor (2002), Tyrannosaurus Rex Versus the Corduroy Kid (2006  & 2008), Seeing Stars (2010 & 2011), Paper Aeroplane: Selected Poems 1989-2014 (2014), The Unaccompanied (2017), Sandettie Light Vessel Automatic (2019), Magnetic Field: The Marsden Poems (2020), A Vertical Art: Oxford Lectures (2020).

সাইমন আর্মিটেজ সাম্প্রতিক কালে ‘লকডাউন’ শীরোনামে একটি কবিতায় ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেন। সপ্তদশ শতকে বৃটেনের মানুষ মারাত্মক ভাবে প্লেগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডার্বিশায়ার এলাকার গ্রামীন জনপদে সংক্রমিত হয়েছিল ভয়াবহ প্লেগ। তখনকার পেক্ষাপটের সাথে বর্তমান লকডাউনের সামাজিক বাস্তবতা ফুটে ওঠেছে তার কবিতায়। সেখানে প্লেগ উপদ্রুত ইয়ামের ঘটনা স্মৃতিপটে অনুরণিত হয়েছে।

করোনা ভাইরাসে পুরো পৃথিবী লকডাউন হয়ে গেছে। মানুষ যেন আজ গৃহবন্দি। সর্বত্র ঘটেছে জীবন ও স্বপ্নের ছন্দপতন। মানবজাতি এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী। তবু কবি স্বপ্নের ডালিমাখা প্রেরণা যুগিয়েছেন।  তার বিশ্বাস একদিন থেমে যাবে  এই মহামারি, ইয়ামের মতো অভিশম্পাত। সুদীঘ বৃষ্টির পরে হেসে উঠবে উজ্জ্বল পদ্ম।

ক‘বছর আগে সাইমন আর্মিটেজ বায়ুদূষণ রোধে কবিতা লিখেও সাড়া জাগিয়েছেন। ‘ইন প্রেইজ অব এয়ার’ কবিতায় তিনি বিজ্ঞান ও সাহিত্যের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। একদল গবেষক কর্তৃক তার কবিতা ধাতুর পাতের ওপর আণুবীক্ষণিক যৌগ টাইটেনিয়াম ডাই-অক্সাইডের অক্ষরে মুদ্রিত হয়েছে৷

লেখক: লন্ডন প্রবাসী। সময় সম্পাদক। কবি ও কথাশিল্পী
   

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে লন্ডনে নির্মূল কমিটির আলোর সমাবেশ



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় গণহত্যা দিবসে লন্ডনে আয়োজিত যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমাবেশে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) ৫৪তম গণহত্যা দিবস উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কস্থ শহীদ মিনারে সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক আলোর সমাবেশ থেকে এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সৈয়দ আনাস পাশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভিনের পরিচালনায় আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি হাইকমিশনার জনাব হযরত আলী খান। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক, প্রবীন রাজনীতিক সুলতান শরীফ ও নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান। বক্তব্য রাখেন, আমরা একাত্তর সংগঠক শাহাব আহমেদ বাচ্চু, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা কবি, সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, এনফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলার মোহাম্মদ ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, কবি, সংস্কৃতিকর্মী ময়নুর রহমান বাবুল, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেত্রী মেহের নিগার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা রবিন পাল, যুক্তরাজ্য জাসদের কোষাধ্যক্ষ শাহনুর খান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আরিফুর খোন্দকার এবং সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সাংবাদিক নিলুফা হাসান, জামাল খান, স্মৃতি আজাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ বেলাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত দাস প্রমুখ।

সমাবেশে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়। সমাবেশের ঘোষণায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ‘৭১- এর গণহত্যা অস্বীকারকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির জন্য প্রস্তাবিত আইন দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণহত্যার কালরাত্রি পালনের এই সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা করছি- আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রকে জঙ্গি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

সভার বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে যে গণহত্যা হয়েছে, সেটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এত খুন, ধর্ষণ হলো সবকিছু মিলিয়ে যে জাতিগোষ্ঠী নির্মূল করার অপচেষ্টা হয়েছে বিস্মতির অতল গহবর থেকে এটিকে তুলে আনতে হবে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য সরকারকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে।

;

যুক্তরাজ্যের সংসদ হাউসেস অফ পার্লামেন্টে গণহত্যা দিবস পালিত



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে গত মঙ্গল্বারব(২৫ মার্চ) হাউসেস অফ পার্লামেন্টে “রিমেম্বারিং দ্য বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১- দ্য রোড টু ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন” শীর্ষক স্মারক ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ লর্ড সভার সিনিয়র সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার এবং অনুষ্ঠানের হোস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসবাপী গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। লর্ড সভার এই প্রবীণ সদস্য এবিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ বাংলাদেশের এপিপিজির ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ঘটেছিল তা একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল”। তিনি আশ্বাস দেন যে তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য কাজ করবেন।

ভারতীয় বংশদ্ভুত কনজারভেটিভ লিঙ্কের চেয়ারম্যান লর্ড সুরি ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে সংসদে নতুন প্রস্তাব আনতে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, পরিাজিত পকিস্তান বাহিনী ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের কাছে কিভাবে আতামসমর্পন করেছিল এর বিস্তারিত জেনেছেন তার চাচাত ভাই অরোরার কাছ থেকে।

স্বাগত বক্তব্যে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ১৯৭১ সালের জুনমাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে 'পূর্ব বাংলায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার' প্রথম দিনের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পিটার শোর, এমপি, যিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার পরে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা অ্যাকশন বাংলাদেশ এবং সমর্থন করেছিলেন ২৩৩ জনেরও বেশি ক্রস-পার্টি সদস্য, তারা পূর্ব বাংলায় গণহত্যার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন”।

এছাড়ও অনুষ্টানে আলোচনায় আরো অংশ নেন ড. নাজিয়া এম হাবিব ফাউন্ডার এন্ড রিসার্চ সেন্টার ডিরেক্টর ফর রিসাইলেন্স এন্ড সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট (সিআরএমডি) অব ল্যান্ড ইকনমি কেমব্রিজ ইউনিভারসিটি, প্রফেসার মোহাম্মদ শহাব উদ্দিন প্রফেসর ইন্টারন্যাশনাল ল এন্ড হিউম্যান রাইট বার্মিংহ্যাম ইউনিভারসিটি, ভ্যাল হার্ডিং ট্রাষ্ট্রি স্বাধীনতা ট্রাষ্ট যিনি ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের সরনার্থি শিবিরে একজন নার্স হিসিবে কাজ করেছেন। আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক, সর্ব ইউরোপীয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সৈয়দ মোজাম্মিল আলী প্রেসিডেন্ট ষ্টাডি সার্কুল, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এম এ আজিজ অক্সফাম প্রমুখ।

এছাড়াও বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ গণহত্যা দিবস ২০২৪-ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্রিটিশি এমপি, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্রিটিশ বাঙালিরা অংশ নেন।

;

আমিরাতে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার



সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের মাটিতে এত বড় ইফতার আয়োজন দেখা গেলেও প্রবাসে তা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় এবং ব্যয়বহুল। বিদেশের মাটিতে বিশ্ব পরিচিত আল-হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপি) এর নিজস্ব অর্থায়নে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

রোববার (২৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে অবস্থিত কোম্পানির প্রধান কার্যালয় এবং কারখানা প্রাঙ্গণে এ ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।এতে বাংলাদেশি প্রবাসী আমিরাতে বসবাসরত ভারত, পাকিস্তানের নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাত হাজারের অধিক মানুষের সমাগম ঘটে।

আল-হারামাইন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপির) সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাই কনস্যুলেট জেনারেল বি এম জামাল হোসেন।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ী সংগঠনসহ আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসী সাংবাদিক বৃন্দ অন্যান্য দেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


এসময় প্রতিমন্ত্রী আল-হারামাইন কোম্পানিকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আরব দেশে এত বড় আয়োজন করে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। প্রবাসীদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত সুন্দর উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আল হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি বলেন, এই আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের অনেক সুনাম রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক কারণে আজকে বাংলাদেশকে এই প্রবাসের মাটিতে এ দেশের সরকার অনেক সম্মান করে যাচ্ছেন। প্রবাসে যারা বসবাস করে ও পরিবার নিয়ে এই দেশে রয়েছে তারা মিলিত হওযার সুযোগ থাকে না। আমি চেষ্টা করি যারা পরিবার ছাড়া এই দেশে রয়েছে বা পরিবাসহ রয়েছে সবাইকে নিয়ে ইফতার আয়োজন করার। এই ইফতার মাহফিল দীর্ঘদিন ধরে শুরু করেছি। বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রতি বছর এই আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

ইফতারের পূর্বে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খতমে কোরআন ও দোয়া, বিশ্ববাসীর শান্তি কামনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আল হারামাইনের কর্ণধার মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি ও আল হারাইমাইনের পরিচালক ডা. মুনীরা মাহতাব (মাহতাব কন্যা) উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত, শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং সবার প্রতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াতে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে প্রথম সুগন্ধি বোতল বাজারে আসার পর থেকে আল হারামাইন পারফিউমের ব্যাপ্তি ও খ্যাতি ক্রমশই বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, বাংলাদেশ, ইউকে এবং ইউএসএ জুড়ে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন পারফিউম শোরুমের একটি সুগন্ধি নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন সুগন্ধি প্রিয়দের হৃদয়।

 

;

নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন।



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বনলতা শিল্পী সাহিত্যিক, নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে নিউইয়র্কের কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

হাসানুর রহমানের ছেলে রাজিব রহমান ও নিউইয়র্কের শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় প্রধান পরিচালক হাকিকুল ইসলাম খোকন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক গোষ্ঠী, যুক্তরাষ্ট্র সোহরাওয়ার্দি স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাপসনিউজ ও আমেরিকান প্রেসক্লাব অব বাংলাদেশ অরিজিন-এর প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

প্রায় তিন বছর আগে বাসায় হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই বছর ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসানুর রহমানের স্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষিকা পারভীন রহমান ও দুই ছেলে রাজিব রহমান ও আশিক রহমান যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন। রাজিব রহমান (আরআর) মিউজিক ডিরেক্টর ও ওয়ারফেয়ার ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। রাজিবের স্ত্রী বিউটি দাসও একজন সঙ্গীত শিল্পী। তারা ভার্জিনিয়ায় থাকেন।

প্রবীণ শিশু সাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত হাসানুর রহমান প্রায় পাঁচ দশক ধরে ছোটদের জন্যে লিখেছেন ছড়া, কবিতা, রূপকথা, গল্প-নিবন্ধ, একাঙ্কিকা। বাংলাদেশ শিল্প কৃষ্টি সংসদের হাজী মোহাম্মদ মহসিন স্বর্ণপদক, ঢাকার ভাস্কর নাট্যদলের ‘ভাস্কর নাট্যদল মিলেনিয়াম ২০০০ পুরস্কার এবং রাজশাহীর ‘খাজা স্মৃতি পাঠাগার ফেলোশিপ ২০০২'-এ ভূষিত।

হাসানুর রহমানের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২২ আগস্ট নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায়। হাসানুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৬৮ সালে বিএ (অনার্স) ও ১৯৬৯ সালে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ষাটের দশকে (১৯৬৬-৭০) ঢাকার অধুনালুপ্ত শিল্পী-সাহিত্যিক গোষ্ঠী ‘পূর্বাশা’র দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত দৈনিক ‘সমাজ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৯৪-৯৫ সালে পেট্রোবাংলার বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডের ঢাকা লিয়াজোঁ অফিসে ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী হন হাসানুর রহমান। তাঁর মৃত্যুতে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

;