কবি আল মাহমুদের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে লন্ডনে কোরআন খতম



সাঈদ চৌধুরী
ছবি: সাঈদ চৌধুরী

ছবি: সাঈদ চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কোরআন খতম ও মোনাজাতের মাধ্যমে পালিত হয়েছে কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা আল মাহমুদের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী। আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পবিত্র কোরআন খতমের পর লন্ডনের গ্রীনলেন কমিউনিটি সেন্টার মসজিদে মোনাজাত করা হয়।

আল-মাহমুদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কবি-সংবাদিক সাঈদ চৌধুরী কোরআন তেলায়াত এবং মোনাজাতে অংশ গ্রহন করেন। মোনাজত পরিচালনা করেন শায়েখ ওয়াকার। বিশিষ্ট জনের মধ্যে আরো ছিলেন শায়েখ মো: ইয়াসিন, মাওলানা মো: আব্দুল কুদ্দুস ও মো. রাহমান। সুললিত কন্ঠে কেরাত পড়েন ক্বারী রাইয়ান চৌধুরী। এ সময় আবেগে আপ্লুত মুসল্লিরা চোখের জলে প্রিয় কবির জন্য জান্নাতুল ফেরদৌস কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে সাঈদ চৌধুরী বলেন, আল মাহমুদ ছিলেন একাধারে কবি, সাংবাদিক. ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প লেখক, প্রাবন্ধিক ও শিশুসাহিত্যিক। মহান মাবুদের কাছে তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন কোন শুভ শুক্রবারে বিদায় নিতে। কবির সে প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাত ১১টায় ইন্তেকাল করেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। স্মৃতির মেঘলাভোরে’ কবিতায় আল মাহমুদ লিখেন- কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রিশেষে শুভ শুক্রবারে/ মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;/ অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে/ ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।/ … আমার যাওয়ার কালে খোলা থাক জানালা দুয়ার/ যদি হয় ভোরবেলা স্বপ্নাচ্ছন্ন শুভ শুক্রবার।

অনুষ্ঠানে আল মাহমুদকে নিবেদিত সাঈদ চৌধুরীর কবিতা ‘রুপালি আলোয়' আবৃত্তি করা হয়। ‘তুমি এলে আগুনের ফুলকির মতো/ রৌদ্র কিরণে ঝলসিত চারিদিক/ উচ্ছ্বাস আনন্দ ছড়িয়ে মুখরিত/ ছেলেবুড়ো আনন্দে দিক-বিদিক।/ উনুনের ধার ঘেঁষে দাই মা/ আয়াতুল কুরছি পড়ে/ আগুনের আঁচে বসে তা দেয়/ সফেদ কাপড়ের ভাজে, জিন-ভূত/ যেন আসেনা ঘরে।/ ছায়ারৌদ্র মেঘের খেলা/ বনশ্রী প্রফুল্ল হয়ে ওঠে/ দীপ্ত রাঙ্গা উদয়ের বেলা।/ গ্রীষ্মের দাবদাহ মুছে যায়/ সোনার রবি ছড়ায় কিরণ/ মরু মুষিকের উপত্যকা’য়।/ যেভাবে বেড়ে ওঠি প্রাণের স্পন্দনে/ জ্যোতিস্রোতে মিশেছে প্রিয় স্বদেশ/ জীবন্ত মুক্তিসংগ্রামে কাবিলের বোন/ স্বাধীনতার স্বপ্ন জাল বোনে উপমহাদেশ।/ কবির আত্মবিশ্বাস কবির কররেখা/ আগুনের মেয়ে অর্ধেক মানবী/ নিশিন্দা নারী যতই হোক দেখা।/ কবির সৃজন বেদনা কবিতার আঁচল/ দশ দিগন্তে উড়াল ডাহুকী দিনযাপন/ কবিতার জন্য বহুদূর কবি ও কোলাহল।/ তুমি, আরব্যরজনীর রাজহাস/ আমি, দূরগামী/ প্রহরান্তের পাশ ফেরা এক চক্ষু হরিণ/ পাখির কাছে ফুলের কাছে/ কালের কলস- কিরণ ছড়ায়।/ তুমি, সোনালি কাবিন/ মায়াবী পর্দা দুল ওঠো/ বখতিয়ারের ঘোড়া’য়।/ তুমি, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না/ প্রহরান্তের পাশফেরা, দোয়েল ও দায়িতা/ লোক লোকান্তর- বিদ্যুৎ চমকায়।/ তোমার ভরাট গলার সুকন্ঠ উচ্চারণ/ মেঘমালা হয়ে উড়ছে হাওয়ায়/ শ্যামল শ্যামল নীলিমায়।/ সৌরভসিক্ত আল মাহমুদ/ বাংলাভাষা হয় গতিময়/ তোমার দৃপ্ত রুপালি আলোয়।’

উল্লেখ্য, কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এ যাবৎ তাঁর শতাধিক গ্রন্থ বেরিয়েছে। মোট ১৩ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে ‘আল মাহমুদ রচনাবলি’।

প্রথম কবিতার বই ‘লোক লোকান্তর’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে এবং ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালি কাবিন’ ১৯৬৬ সালে। সোনালি কাবিনে নদীর মতো কবিতার ঢেউয়ে প্রবাহিত রোমাঞ্চকর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন সনেট ছন্দের মেলবন্ধনে। চিত্রকল্পে আত্মিকতার দারুণ খোরাক জুগিয়েছেন পাঠক মহলে। এই গ্রন্থ তাঁকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। এছাড়াও আল মাহমুদের ‘মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো’, ‘অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না’, ‘একচক্ষু হরিণ’, ‘মিথ্যাবাদী রাখাল’ ও ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। ‘কাবিলের বোন’, ‘উপমহাদেশ’, ‘ডাহুকি’, ‘আগুনের মেয়ে’, ‘চতুরঙ্গ’ ও ‘পোড়ামাটির জোড়া হাঁস’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। ‘পানকৌড়ির রক্ত’সহ বেশ কিছু গল্পগ্রন্থও রচনা করেছেন তিনি।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের লিফলেটে কবিতা ছাপার কারণে ফেরারি হওয়া আল মাহমুদ একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামে মুজিবনগর সরকারের স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন, যুক্ত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সাথেও। প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় রচনা করেছেন কালজয়ী দু’টি উপন্যাস ‘কাবিলের বোন’ ও ‘উপমহাদেশ’। ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’ ও ‘বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ’ আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।

তৎকালীন দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক কবি আল মাহমুদ এক সময় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতেও কাজ করেছেন। সেখানে পরিচালক হিসেবে অবসর নিয়েছেন। সৃজনশীল সাহিত্য রচনার জন্য অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮), জয়বাংলা পুরস্কার (১৯৭২), হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৪), ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), একুশে পদক (১৯৮৭), নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৯০), সমান্তরাল (ভারত) কর্তৃক ভানুসিংহ সম্মাননা পদক-২০০৪ উল্লেখযোগ্য।

অনুষ্ঠানে কবি আল মাহমুদকে ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন ও তার মাগফিরাতের জন্য দেশ-বিদেশের সকল পাঠকের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। মহান আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমীন।

   

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে লন্ডনে নির্মূল কমিটির আলোর সমাবেশ



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় গণহত্যা দিবসে লন্ডনে আয়োজিত যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমাবেশে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) ৫৪তম গণহত্যা দিবস উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কস্থ শহীদ মিনারে সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক আলোর সমাবেশ থেকে এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সৈয়দ আনাস পাশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভিনের পরিচালনায় আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি হাইকমিশনার জনাব হযরত আলী খান। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক, প্রবীন রাজনীতিক সুলতান শরীফ ও নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান। বক্তব্য রাখেন, আমরা একাত্তর সংগঠক শাহাব আহমেদ বাচ্চু, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা কবি, সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, এনফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলার মোহাম্মদ ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, কবি, সংস্কৃতিকর্মী ময়নুর রহমান বাবুল, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেত্রী মেহের নিগার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা রবিন পাল, যুক্তরাজ্য জাসদের কোষাধ্যক্ষ শাহনুর খান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আরিফুর খোন্দকার এবং সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সাংবাদিক নিলুফা হাসান, জামাল খান, স্মৃতি আজাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ বেলাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত দাস প্রমুখ।

সমাবেশে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়। সমাবেশের ঘোষণায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ‘৭১- এর গণহত্যা অস্বীকারকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির জন্য প্রস্তাবিত আইন দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণহত্যার কালরাত্রি পালনের এই সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা করছি- আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রকে জঙ্গি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

সভার বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে যে গণহত্যা হয়েছে, সেটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এত খুন, ধর্ষণ হলো সবকিছু মিলিয়ে যে জাতিগোষ্ঠী নির্মূল করার অপচেষ্টা হয়েছে বিস্মতির অতল গহবর থেকে এটিকে তুলে আনতে হবে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য সরকারকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে।

;

যুক্তরাজ্যের সংসদ হাউসেস অফ পার্লামেন্টে গণহত্যা দিবস পালিত



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে গত মঙ্গল্বারব(২৫ মার্চ) হাউসেস অফ পার্লামেন্টে “রিমেম্বারিং দ্য বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১- দ্য রোড টু ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন” শীর্ষক স্মারক ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ লর্ড সভার সিনিয়র সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার এবং অনুষ্ঠানের হোস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসবাপী গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। লর্ড সভার এই প্রবীণ সদস্য এবিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ বাংলাদেশের এপিপিজির ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ঘটেছিল তা একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল”। তিনি আশ্বাস দেন যে তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য কাজ করবেন।

ভারতীয় বংশদ্ভুত কনজারভেটিভ লিঙ্কের চেয়ারম্যান লর্ড সুরি ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে সংসদে নতুন প্রস্তাব আনতে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, পরিাজিত পকিস্তান বাহিনী ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের কাছে কিভাবে আতামসমর্পন করেছিল এর বিস্তারিত জেনেছেন তার চাচাত ভাই অরোরার কাছ থেকে।

স্বাগত বক্তব্যে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ১৯৭১ সালের জুনমাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে 'পূর্ব বাংলায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার' প্রথম দিনের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পিটার শোর, এমপি, যিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার পরে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা অ্যাকশন বাংলাদেশ এবং সমর্থন করেছিলেন ২৩৩ জনেরও বেশি ক্রস-পার্টি সদস্য, তারা পূর্ব বাংলায় গণহত্যার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন”।

এছাড়ও অনুষ্টানে আলোচনায় আরো অংশ নেন ড. নাজিয়া এম হাবিব ফাউন্ডার এন্ড রিসার্চ সেন্টার ডিরেক্টর ফর রিসাইলেন্স এন্ড সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট (সিআরএমডি) অব ল্যান্ড ইকনমি কেমব্রিজ ইউনিভারসিটি, প্রফেসার মোহাম্মদ শহাব উদ্দিন প্রফেসর ইন্টারন্যাশনাল ল এন্ড হিউম্যান রাইট বার্মিংহ্যাম ইউনিভারসিটি, ভ্যাল হার্ডিং ট্রাষ্ট্রি স্বাধীনতা ট্রাষ্ট যিনি ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের সরনার্থি শিবিরে একজন নার্স হিসিবে কাজ করেছেন। আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক, সর্ব ইউরোপীয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সৈয়দ মোজাম্মিল আলী প্রেসিডেন্ট ষ্টাডি সার্কুল, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এম এ আজিজ অক্সফাম প্রমুখ।

এছাড়াও বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ গণহত্যা দিবস ২০২৪-ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্রিটিশি এমপি, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্রিটিশ বাঙালিরা অংশ নেন।

;

আমিরাতে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার



সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের মাটিতে এত বড় ইফতার আয়োজন দেখা গেলেও প্রবাসে তা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় এবং ব্যয়বহুল। বিদেশের মাটিতে বিশ্ব পরিচিত আল-হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপি) এর নিজস্ব অর্থায়নে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

রোববার (২৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে অবস্থিত কোম্পানির প্রধান কার্যালয় এবং কারখানা প্রাঙ্গণে এ ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।এতে বাংলাদেশি প্রবাসী আমিরাতে বসবাসরত ভারত, পাকিস্তানের নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাত হাজারের অধিক মানুষের সমাগম ঘটে।

আল-হারামাইন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপির) সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাই কনস্যুলেট জেনারেল বি এম জামাল হোসেন।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ী সংগঠনসহ আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসী সাংবাদিক বৃন্দ অন্যান্য দেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


এসময় প্রতিমন্ত্রী আল-হারামাইন কোম্পানিকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আরব দেশে এত বড় আয়োজন করে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। প্রবাসীদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত সুন্দর উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আল হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি বলেন, এই আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের অনেক সুনাম রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক কারণে আজকে বাংলাদেশকে এই প্রবাসের মাটিতে এ দেশের সরকার অনেক সম্মান করে যাচ্ছেন। প্রবাসে যারা বসবাস করে ও পরিবার নিয়ে এই দেশে রয়েছে তারা মিলিত হওযার সুযোগ থাকে না। আমি চেষ্টা করি যারা পরিবার ছাড়া এই দেশে রয়েছে বা পরিবাসহ রয়েছে সবাইকে নিয়ে ইফতার আয়োজন করার। এই ইফতার মাহফিল দীর্ঘদিন ধরে শুরু করেছি। বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রতি বছর এই আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

ইফতারের পূর্বে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খতমে কোরআন ও দোয়া, বিশ্ববাসীর শান্তি কামনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আল হারামাইনের কর্ণধার মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি ও আল হারাইমাইনের পরিচালক ডা. মুনীরা মাহতাব (মাহতাব কন্যা) উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত, শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং সবার প্রতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াতে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে প্রথম সুগন্ধি বোতল বাজারে আসার পর থেকে আল হারামাইন পারফিউমের ব্যাপ্তি ও খ্যাতি ক্রমশই বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, বাংলাদেশ, ইউকে এবং ইউএসএ জুড়ে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন পারফিউম শোরুমের একটি সুগন্ধি নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন সুগন্ধি প্রিয়দের হৃদয়।

 

;

নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন।



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বনলতা শিল্পী সাহিত্যিক, নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে নিউইয়র্কের কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

হাসানুর রহমানের ছেলে রাজিব রহমান ও নিউইয়র্কের শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় প্রধান পরিচালক হাকিকুল ইসলাম খোকন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক গোষ্ঠী, যুক্তরাষ্ট্র সোহরাওয়ার্দি স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাপসনিউজ ও আমেরিকান প্রেসক্লাব অব বাংলাদেশ অরিজিন-এর প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

প্রায় তিন বছর আগে বাসায় হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই বছর ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসানুর রহমানের স্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষিকা পারভীন রহমান ও দুই ছেলে রাজিব রহমান ও আশিক রহমান যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন। রাজিব রহমান (আরআর) মিউজিক ডিরেক্টর ও ওয়ারফেয়ার ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। রাজিবের স্ত্রী বিউটি দাসও একজন সঙ্গীত শিল্পী। তারা ভার্জিনিয়ায় থাকেন।

প্রবীণ শিশু সাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত হাসানুর রহমান প্রায় পাঁচ দশক ধরে ছোটদের জন্যে লিখেছেন ছড়া, কবিতা, রূপকথা, গল্প-নিবন্ধ, একাঙ্কিকা। বাংলাদেশ শিল্প কৃষ্টি সংসদের হাজী মোহাম্মদ মহসিন স্বর্ণপদক, ঢাকার ভাস্কর নাট্যদলের ‘ভাস্কর নাট্যদল মিলেনিয়াম ২০০০ পুরস্কার এবং রাজশাহীর ‘খাজা স্মৃতি পাঠাগার ফেলোশিপ ২০০২'-এ ভূষিত।

হাসানুর রহমানের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২২ আগস্ট নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায়। হাসানুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৬৮ সালে বিএ (অনার্স) ও ১৯৬৯ সালে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ষাটের দশকে (১৯৬৬-৭০) ঢাকার অধুনালুপ্ত শিল্পী-সাহিত্যিক গোষ্ঠী ‘পূর্বাশা’র দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত দৈনিক ‘সমাজ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৯৪-৯৫ সালে পেট্রোবাংলার বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডের ঢাকা লিয়াজোঁ অফিসে ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী হন হাসানুর রহমান। তাঁর মৃত্যুতে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

;