বিপুল উদ্দীপনা ও আনন্দ আয়োজনে ডব্লিউইউএসটির কনভোকেশন সম্পন্ন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ডব্লিউইউএসটি'র কনভোকেশন ২০২২

ডব্লিউইউএসটি'র কনভোকেশন ২০২২

  • Font increase
  • Font Decrease

অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি- ডব্লিউইউএসটি'র কনভোকেশন ২০২২। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে তুলে দেওয়া হলো তাদের গ্রাজুয়েশন সনদ ও সম্মাননা।

শনিবার (১৮ জুন) ভার্জিনিয়ার জর্জ সি. মার্শাল হাইস্কুল মিলনায়তনে সম্পন্ন হয় এই গ্রাজুয়েশন সেরিমনি। কালো গাউন মাথায় গ্রাজুয়েশন হ্যাট পরে সেরিমনির মূল আকর্ষণ হয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সনদ নিলেন, আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তুললেন দিনটিকে। এতে প্রধান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভার্জিনিয়ার ফ্যায়ারফ্যাক্স কাউন্টির বোর্ড অব সুপারভাইজরের চেয়ারম্যান জেফরি সি. ম্যাককে।

কর্মসূচিটিকে স্রেফ সনদ বিতরণে সীমিত না রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজন করে একটি বিশেষ সেমিনারের। তাতে কি-নোট স্পিকার হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন ড. রায়ান সাদী, যুক্তরাষ্ট্রে সমহিমায় প্রতিষ্ঠিত একজন অনন্য বাংলাদেশি আমেরিকান চিকিৎসা-গবেষক। ক্যান্সারের সফল চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করে তিনি কুড়িয়েছেন বিরল সম্মান। শিক্ষার্থীদের তিনি নিজের জীবনের সাফল্যের গল্পটি শোনান এবং তাদের উদ্ধুদ্ধ করেন ভবিষ্যতের পথ চলার নানা দিকনির্দেশনায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ, প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ বিতরণের পাশাপাশি তাদের বক্তৃতায় তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত কর্মপন্থার কথা।

অনুষ্ঠানে অভ্যাগত অতিথি হয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে স্বীয় ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত অন্য আরও অনেক বাংলাদেশি-আমেরিকান। যারা এই গ্রাজুয়েশন-কনভোকেশনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে সফল বাংলাদেশি-আমেরিকান ডেমোক্র্যাট সিনেটর শেখ রহমান, যুক্তরাষ্ট্রে কূটনীতিতে সফল ব্যক্তিত্ব প্রথম মুসলিম বাংলাদেশি-আমেরিকান রাষ্ট্রদূত এম. ওসমান সিদ্দিক, শিক্ষা ও গবেষণায় সফল ব্যক্তিত্ব আইট্রিপলই'র প্রেসিডেন্ট ড. সাইফুর রহমান ও মনমাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং গ্লোবাল সোশ্যাল ওয়ার্ক এডুকেশন কমিশনের কো-চেয়ার ও কমিশনার ড. গোলাম এম. মাতবর, তথ্যপ্রযুক্তির সফল প্রবক্তা ও উদ্যোক্তা, ইউটিসি অ্যাসোসিয়েটস, কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও সিইও আজিজ আহমদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সিদ্দিক শেখ ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ফারহানা হানিপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. জাফর পিরিম ও ড. শ্যান চো ছাড়াও শিক্ষকদের অনেকেই অংশ নেন এই কনভোকেশনে।

মাস্টার অব দ্য সেরিমনি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস'র পরিচালক ড. মার্ক এল রবিনসন। সঞ্চালনায় ছিলেন ডব্লিউপিএলজি এবিসি- টেন'র সিনিয়র প্রডিউসার ও করেসপন্ডেন্ট ড. আনিভা জামান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেফরি সি. ম্যাককে বলেন, বহুজাতির সম্মিলনই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শক্তি। তাদের অন্তর্ভূক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত তারই একটি উদাহরণ এই ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। এর শিক্ষার্থীরা বিশ্বের নানা দেশ থেকে এদেশে এসে তাদের উচ্চতর শিক্ষা নিচ্ছে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা গ্রহণ করছে, যা এই সময়ের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে বক্তৃতায় উল্লেখ করেন তিনি। জেফরি বলেন, ভার্জিনিয়ায় ৯০০০ টেকনোলজি কোম্পানি রয়েছে, এই শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করে এসব কোম্পানিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে যোগ দিতে পারবে, এটি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

আহা আমি নিজেও যদি পারতাম এমন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে শিক্ষা নিতে, আক্ষেপের সুরে বলেন জেফরি সি. ম্যাককে।

কি-নোট স্পিকার ড. রায়ান সাদী তার ব্যক্তি জীবনের গল্প দিয়ে শুরু করেন এবং একটি স্বপ্ন লালন করলে তা যে পূরণ হবেই সে কথাই শোনান শিক্ষার্থীদের। জীবনের প্রতিটি ক্ষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্বে ব্যবহার করার কথা বলেন আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে তা উল্লেখ করে প্রত্যেককে মানবতার শক্তিতে বলিয়ান হওয়ার আহ্বান জানান। আত্মপ্রত্যয়ী হতে বলেন আর পরিশুদ্ধ মনের অধিকারী হতে বলেন প্রতিটি শিক্ষার্থীকে। সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে নিজেকে জানা, প্রত্যেকে তাকে নিজেকে জানতে পারলে, নিজের সক্ষমতা, দক্ষতা ও যোগ্যতা জানলে এরপর আত্ন নিয়োজনেই যে কোনো অর্জন সম্ভব, বলেন ড. রায়ান সাদী।

চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ তার বক্তৃতায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন যারা গ্রাজুয়েটেড হলেন তারা সকলেই গত বছরগুলোতে একটি কঠিন ও অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন। কিন্তু আমি দেখেছি শিক্ষার্থীদের অসীম শক্তি ও আত্মপ্রত্যয়। আর সে কারণেই তারা সফল হতে পেরেছেন। আর তারই পথ ধরে আজ তাদের সেই সাফল্যই আজ উদযাপিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য সাফল্যের একটি দৃঢ় ভিত রচনা করে দিয়েছে। এখন প্রত্যেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে অর্জনের সকল সম্ভাবনা। যা ভবিষ্যতের যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করবে, বলেন আবুবকর হানিপ।

এই গ্রাজুয়েটরা প্রত্যেকেই এখন ওয়াশিংটন সায়েন্স অ্যান্ট টেকনোলজি-ডব্লিউইউএসটি'র এলামনি এবং গোটা বিশ্বের কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়র প্রতিনিধি। তাদের প্রত্যেকের সাফল্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়াবে। আর ভবিষ্যতে এই শিক্ষার্থীরা তাদের যে কোনো প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়কে পাশে পাবে, বলেন চ্যান্সেলর হানিপ।

ড. হাসান কারাবার্ক বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পাশাপাশি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করে সেটিই সবচেয়ে বড় কথা। অভিজ্ঞতার কোনো বিকল্প কিছু নেই। শিক্ষার্থীেদর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন সেটি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। যা তাদের একই ধরণের উদ্যোগ নিতে উদ্যমী করে তুলবে।

এসময় শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করেন ড. হাসান কারাবার্ক।

সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির গ্রাজুয়েটদের এবং কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানান সেনেটর শেখ রহমান।

এম. ওসমান সিদ্দিক শিক্ষার্থীদের দৃঢ়প্রত্যয়ী ও সাহসী হওয়ার উদ্দীপনা যোগান। এবং বলেন, জীবনের পথ চলায় সেটাই করবেন, যা আপনার হৃদয়ে লালিত।

ড. সাইফুর রহমান বলেন, দেশ আপনার জন্য কি করতে পারবে সেটি যেমন জরুরি তেমনি আপনি দেশের জন্য কি করতে পারছেন সেটিও জরুরি। কারো কাছে সহায়তা প্রত্যাশার আগে তাকে কি সহায়তা করতে পারেন সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

একবিংশ শতাব্দীর জন্য উপযোগী উৎপাদনমুখী কর্মশক্তি তৈরিতে কাজ করছে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, এখানকার শিক্ষার্থীরা তাদের যাত্রা শুরুই করতে পারছে এই ভবিষ্যত কর্মশক্তিতে তাদের স্থান করে নিয়ে, এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার, বলেন অধ্যাপক ড. গোলাম এম মাতবর। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি সক্ষমতার পাশাপাশি নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ওপর জোর দেন। এবং বলেন, এসব কিছুর সমন্বয়েই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব।

সিদ্দিক শেখ এই বিশ্ববিদ্যালয় আপনাদের জন্য একটি সফল ভবিষ্যত অর্জনের পথ খুলে দিয়েছে। ভবিষ্যতের একটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপনার বর্তমান শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রাজুয়েটেড হলেন এটাই হতে পারে আপনাদের গর্বের বিষয়। শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি মনযোগী, সৎ ও বিনয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।

তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষতাভিত্তিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করা প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে ভাগ্যবান বলে উল্লখ করেন আজিজ আহমদ। এই শিক্ষার মধ্য দিয়ে যে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে সেটাই প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিশ্বের কর্মজগতের উপযোগী করে তুলবে। আর সময়ের প্রয়োজনগুলো সঙ্গে শিক্ষার্থীরা তাদের এই জ্ঞানকে যতটা সম্পৃক্ত করতে পারবে তাদের সাফল্যই তত বেশি আসবে, বলেন তিনি।

ফারহানা হানিপ তার বক্তৃতায় নতুন গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আজ আপনাদেরই দিন। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলোজি'র গ্রাজুয়েটরা এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই আয়না। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা একে অন্যের প্রতিবিম্ব হয়ে কাজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা দেশের নানা জাতির শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে, তাদের উপস্থিতিতে প্রতিটি ক্লাসরুম যেনো জাতিসংঘের সম্মেলন কক্ষ হয়ে ওঠে। আর এই ডাইভার্সিটিই প্রকৃত সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি করে, বলেন ফারহানা হানিপ।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাইবার সিকিউরিটিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করে সনদপ্রাপ্ত জোসেফাইন মিলি চুং। তিনি বলেন, একটি পূর্ণসময়ের চাকরি করে, শিশু সন্তান লালন পালন করেও আমি এই ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের সর্বোচ্চ যত্ন ও গুরুত্ব আরোপের কারণে। অনলাইনে সাইবার সিকিউরিটি কোর্স সম্পন্ন করে এই ডিগ্রি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এখন কাজ করছেন মিলি চুং।

পরে একে একে শিক্ষার্থীদের মাঝে তাদের গ্রাজুয়েশন ডিগ্রির সনদ তুলে দেওয়া হয়। আর সবশেষে শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠে ফটো সেশনে এবং তারই সঙ্গে আনন্দ বিনোদনে।

দিনের পরের ভাগে সন্ধ্যায় অভ্যাগত অতিথিরা যোগ দেন কনভোকেশন ডিনারে। স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত এই ডিনারে অতিথিরা একজন বাংলাদেশি আমেরিকান হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনো পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য আবুবকর হানিপকে অভিনন্দিত করেন।

বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান রোকেয়া হায়দার, ভয়েস অব আমেরিকার অপর বর্ষিয়ান সাংবাদিক সরকার কবিরউদ্দিন, এএবিজিএম'র সিইও আবদুল আলিম, ই-লার্নিংয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরুল খান, ভারতীয় সাংবাদিক রঘুবীর গোয়েল প্রমুখ।

বক্তারা আবুবকর হানিপের এই উদ্যোগকে পাহাড় সড়ানোর মতো একটি কাজ বলে উল্লেখ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সম্ভাবনার দিক তুলে ধরে এই যাত্রা অব্যহত রাখতে ইঞ্জি. আবুবকর হানিপকে উৎসাহ যোগান এবং তার ভিশন ও মিশনের প্রশংসা করেন তারা।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাপ্লায়েড রিসার্চ অ্যান্ড ফোটোনিক্স'র প্রেসিডেন্ট ড. আনিস রহমান, এএবিইএ সেন্ট্রাল এর চেয়ারম্যা ড. ফয়সল কাদের, বাংলাদেশের প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হোসেন, কপিন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন, ক্রিকপয়েন্ট'র সিইও কাজী জামান, বাই'র সভাপতি সালেহ আহমেদ, ভারতীয় সাংবাদিক রঘুবীর গোয়েল, টার্কিস কমিউনিটি নেতা ও উদ্যোক্তা ড. ইউসুফ চেতিনকায়া, ড. তার্গে পোলাদসহ কয়েকজন।

সঙ্গীত ও উপাদেয় খাবারে এই সান্ধ্যভোজ হয়ে ওঠে আনন্দময়। গান গেয়ে শোনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নতুন প্রজন্মের শিল্পী নাফিসা নওশিন, স্নেহা ও অন্যরা।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম আইগ্লোবাল ইউনিভার্সিটি থেকে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করা হয়েছে। গ্রাজুয়েটেডরা সকলেই ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে তাদের সনদপত্র পাবেন।

২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা ইঞ্জি. আবুবকর হানিপের ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বাংলাদেশি আমেরিকানের হাতে পরিচালিত প্রথম কোনো পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার সিকিউরিটি ও এমবিএ- বিবিএ কোর্সে বর্তমানে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিশ্বের ১২১ দেশের শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন নয়তো বর্তমানে অধ্যয়নরত রয়েছেন।

   

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রামের আকবর



কুয়েত করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুয়েত
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আকবর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর গ্রামের আদর্শ পাড়া হাদির গো বাড়ির সুলতান আহমদের ছেলে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে কুয়েতের রাবিয়া নামক স্থানে ইশারা আল কাসেমিতে রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির ধাক্কা লেগে এই দুর্ঘটনায় ঘটে।

নিহতের আত্মীয় সাখাওয়াত হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন। শুক্রবার রাতে রাস্তা পারাপার করতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়।এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।'

বর্তমানে মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

;

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো



ড. হাসিন মাহবুব চেরী, সিনিয়র স্পেশালিস্ট সায়েন্টিস্ট, ইউকে
দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা বয়সের পরে আমরা আটকা পড়ি শুধুই মায়ার টানে। কোন মানুষটা আমাদের মন থেকে মায়া করে, এটাই সব কিছুর ঊর্ধ্বে বিবেচ্য হয় আমাদের কাছে (অন্তত আমার কাছে ব্যাপারটা এখন তাই)।

কারণ, আমরা বুঝতে শিখি যে, আমাদের আশেপাশে বন্ধুরূপী অসংখ্য মুখের ভিড়ে শুধু মাত্র সেই মুখগুলোই মূল্যবান - যার কাছে আমি মূল্যবান। আর ঠিক একারণেই সুদূর বিলাতের বিভূঁই পরিবেশে ফারহানা হোসেন আপু যখন বললো দেশ থেকে আসা ইলিশ তোমাকে আর Rumana Newlands কে ছাড়া খাবো না বলে তুলে রেখেছি, কবে আসবে? মনে হলো এই ভালোবাসার ডাক পাবার মতো ভাগ্য আসলে ক'জনেরই বা হয়? তাই প্রচন্ড ব্যস্ত সময়ের মধ্যেই হুট করে একবেলার জন্যে লন্ডন থেকে গ্লাসগো উড়ে চলে গেলাম।

এই ঝটিকা সফর বহু কারণেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তবে অর্ধেক দিনের এই মেমরি আমাকে আবার শেখালো:

Life is not about quantity, it`s all about quality. So it doesn`t matter what you have in life, but who you have only matters.

আর জীবনে নিজের পরিবারের মানুষ ছাড়াও কারো সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া আসলেই বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। ফারহানা আপু এবং সাজ্জাদ ভাইয়ার আন্তরিকতায় আবারো মুগ্ধ হতে হতে তাই ভাবছিলাম, যদিও আমি সবসময় সবার থেকে ভালো জিনিস গুলো শেখার চেষ্টা করি তবে কিছু কিছু কোয়ালিটি আসলে মানুষের মধ্যে আসে 'ইন বিল্ট' হয়ে, যেটা অন্য কেউ হয়তো হাজার চেষ্টা করেও আয়ত্ত্ব করতে পারে না!

অন্যকে স্পেশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ ফিল করানোও ঠিক সেরকমই একটা ইন বিল্ট কোয়ালিটি যেটা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেঔ অনুপস্থিত। যেমন আপু এবং ভাইয়া (আমার দেখা দুই অন্যতম ব্রিলিয়ান্ট এবং down to earth মানুষ) যেভাবে ওয়ার্কিং ডে 'র শেষে আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করা থেকে শুরু করে নিজের হাতে রান্না করা বহু পদের মুখরোচক খাবার এবং নিজের হাতে বানানো মিষ্টি'র আয়োজন করলেন, স্কটল্যান্ডে এসে আমার ভাইয়ের সাথে দেখা হবে না বলে আমার ভাই কেও আবেরডিন থেকে ডেকে নিয়ে আসলেন, এবং আসবার পথে একগাদা খাবার প্যাক করে ব্যাগে নিজের হাতে ঢুকিয়ে দিয়ে একদম এডিনবরা এয়ারপোর্ট এর সিকিউরিটি পর্যন্ত এসে বিদায় দিয়ে গেলেন - এই আন্তরিকতাটা বোধহয় একেবারে মনের গভীর থেকে না আসলে করা সম্ভব নয়।

আসলে জীবনে আমরা বহু অপাত্রে আমাদের ভালোবাসা এবং সময় দান করে নষ্ট করি, বহু মানুষের ব্যবহার দেখে মনে হয় সত্যিই বোধহয় স্বার্থপর না হওয়াটাই আজকাল বোকামি। তবে পরমুহূর্তেই আবার যখন এরকম সুন্দর মনের মানুষ গুলোর আন্তরিকতায় অবাক এবং মুগ্ধ হই, তখন মনে হয় এই সুন্দর মনের মানুষগুলোর উপস্থিতির জন্যেই আসলে জীবনটা এতো সুন্দর। আর এরকম মানুষের উপস্থিতি আমাদের ঠিক একইভাবে ওনাদের মতোই অন্য কারো জীবনেও নিজের উপস্থিতি দিয়ে তার জীবনের কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

;

শেখ হাসিনার সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করবে: থাই সরকারের মুখপাত্র



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ-ইস্ট এশিয়া (ব্যাংকক, থাইল্যান্ড)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর থাইল্যান্ডে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বুধবার (২৪ এপ্রিল) তিনি থাইল্যান্ডে এসে পৌঁছাবেন। পাঁচদিনের সফর শেষে সোমবার (২৯ এপ্রিল) তিনি দেশে ফিরে যাবেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থাই সরকারের মুখপাত্র চাই ওয়াচারানক স্থানীয় গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রেত্থা থাবিসিন এর আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডে আসছেন।

শেখ হাসিনার ভ্রমণের সময় উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং এমওইউ স্বাক্ষর হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সফরসঙ্গীদের জন্য গভর্মেন্ট হাউজে দুপুরের খাবারের আয়োজন করেছেন শ্রেত্থা থাবিসিন।

চাই ওয়াচারানক জানান, ২০০২ সালের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটি প্রথম থাইল্যান্ড সফর। এই সফরে দুই দেশের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বি-পাক্ষীক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আলোচনা করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে সহযোগীতা বৃদ্ধি, বিশেষত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়াও যোগাযোগ, পর্যটন এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে শেখ হাসিনার এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান থাই সরকারের মুখপাত্র। 

;

আমিরাতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব



তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে বসবাসরত বাঙালিরা দিনটি সাড়ম্বরে পালন করে থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার ঈদের ছুটি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পহেলা বৈশাখ। যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। লোকায়ত সংস্কৃতির ডালা সাজিয়ে বর্ণিল উৎসব আয়োজনের মধ্যদিয়ে দেশটিতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

ভিনদেশের মাটিতেও বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হলো নানা অনুসঙ্গে। দেশটিতে বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যেও ছিল আনন্দের কলরব। আর এই আনন্দ উচ্ছ্বাসকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রবাসী সনাতনি ঐক্য পরিষদের চমৎকার আয়োজনের মধ্য দিয়ে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।


রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আমিরাতের সারজায় আল জায়েদ ফার্ম হাউজে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুতে পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা নববর্ষ বরণ করে নিতে সকাল সাড়ে ১০টায় মঙ্গল শোভযাত্রা র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে নাচ, গান, মধ্যাহৃভোজ ও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ উদযাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

একাকী প্রবাসজীবনে পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা, দেশীয় স্বাদ ও আমেজের জন্য সারাবছর লালায়িত থাকা এই প্রবাসীরা হাজার মাইলের দূরত্ব কষ্ট ভুলে গিয়েছিল পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে। আমিরাতের আবুধাবী, দুবাই, আজমান ও বিভিন্ন শহর থেকে প্রবাসীরা পরিবার নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।


অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই লেডিস গ্রুপের সভাপতি আবিদা হোসেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশীষ কুমার সরকার, প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সিনিয়র উপদেষ্টা বিশ্বনাথ দাশ, সভাপতি অজিত কুমার রায়, সহ সভাপতি অজিত চৌধুরী মিঠু, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার, অর্থ সম্পাদক কার্তিক সাহা, দপ্তর সম্পাদক দেবব্রত তালুকদার, ফুজাইরাহ বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি বাবু তপন সরকার, জাতীয় হিন্দু মহাজোট ইউএই’র সিনিয়র উপদেষ্টা মিনাল কান্তি ধর প্রমুখ।

প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সভাপতি অজিত কুমার রায় জানান, প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আগামীতে আরও বড় পরিসরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

 

 

;