থ্যাংকস গিভিং ডে উপলক্ষে ঘরে ঘরে টার্কি ভোজ



এবিএম আহমেদ, নিউইয়র্ক থেকে
থ্যাংকস গিভিং ডেতে টার্কি ভোজ

থ্যাংকস গিভিং ডেতে টার্কি ভোজ

  • Font increase
  • Font Decrease

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) উদযাপিত হয়েছে থ্যাংকস গিভিং ডে। এ উপলক্ষ্যে আমেরিকানদের পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটিও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করে।

দিনটিতে ব্যক্তি ও পারিবারিক উদ্যোগ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অয়োজন করা হয়। ঘরে ঘরে টার্কি ভোজের পাশাপাশি গান-বাজনারও আয়োজন হয়। উল্লেখ্য, আমেরিকার এক সর্বজনীন সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব থ্যাংকস গিভিং ডে। টার্কি ভোজ থ্যাংকস গিভিং ডে’র অন্যতম অনুষঙ্গ। আমেরিকানদের কাছে খুবই জনপ্রিয় খাবার এটি। স্বজনদের সঙ্গে টার্কি ভোজের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা রীতিমত ঐতিহ্যের অংশ।

এদিকে থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপিত উপলক্ষে থ্যাংকস প্রতি বছরের মতো এ বছরও ম্যাসির উদ্যোগে ম্যানহাটানে ২৮ নভেম্বর দুপুরে বর্ণাঢ্য প্যারেড আয়োজিত হয়। হাজার হাজার নরনারী প্যারেডটি উপভোগ করেন। অপরদিকে থ্যাংকস গিভিং ডে-তে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’-এ আফগানিস্তান সফরে গিয়ে সেনা সদস্যদে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন উপলক্ষে গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদের জ্যামাইকার বাসায় টার্কি ভোজের আয়োজন করা হয়। এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রবাসের শিল্পীরা মধ্যরাত পর্যন্ত সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

অপরদিকে নিউইয়র্কের রিচমন্ডহিলে বসবাসকারী শহীদ-শেলী ও জহির-রেবেকা দম্পতির উদ্যোগে ওই দিন সন্ধ্যায় পারিবারিকভাবে থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন করা হয়।

নিউইয়র্কে আর্তমানবতার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান মজুমদার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ এন মজুমদার এবং বিশিষ্ট এটর্নি এইচ ব্রুশ ফিসার সংগঠনটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এদিন সকাল ১১টায় খলিল বিরিয়ানির বক্স ব্রঙ্কসের একটি চার্চের নির্বাহীর হাতে হাতে তুলে দেন। এরপর তারা ব্রঙ্কসের একটি শেল্টারেও বিরিয়ানি বিতরণ করেন।

মজুমদার ফাউন্ডেশনের ডাইরেক্টর রাশেদ মজুমদারের পরিচালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন স্থানীয় কমিউনিটি বোর্ডের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার উইলিয়াম রিভারা, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ড. সারাহ, ডা. নাহিদ খান, মোজাফফর হোসেন, এ ইসলাম মামুন, আবুল খায়ের আকন্দসহ অনেকে।

এ সময় প্রবাসী আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদার জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার মানবিকতায় উজ্জ্বীবিত হয়ে মজুমদার ফাউন্ডেশন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিতরণ করেছে বিরিয়ানি। মানুষে মানুষে সুসম্পর্ক সৃষ্টিতে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। বিগত কয়েক বছর ধরে এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করে আসছে সংগঠনটি।

বাপা বৃহস্পতিবার ব্রঙ্কসে টার্কি ভোজ পার্টির আয়োজন করে। এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। বাপা প্রেসিডেন্ট ফরিদা ইয়াসমীন আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানান।

মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা’র উদ্যোগে থ্যাংকস গিভিং ডেতে সিটির সানি সাইডের ফোর ফ্লেভার রেস্টুরেন্টে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে মৌলভীবাজারের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী, সংগঠনের সব কর্মকর্তা, ট্রাস্টিবোর্ড ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সপরিবারে এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম আগত অতিথিদের স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার শিল্পী অনিন্দিতা চৌধুরী, প্রবাসী শিল্পী মুক্তধর, মনিকা রায়সহ অনেকে। তবলায় ছিলেন শীতেষ ধর ও পিনু সেন দাস।  উল্লেখ্য, এবারই প্রথম কোনো বাংলাদেশি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ব্যাপক আয়োজনে থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ট্রাভেলস এস্টারিয়ার সত্ত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম, পূর্ব জড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজ, শ্রীমঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুমন এলাহী, মৌলভীবাজার জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরী, ব্যবসায়ী আরজান খান, বড়লেখা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল জব্বার, সমাজসেবী মইনুজ্জামান চৌধুরী, জাকির হোসেন, এমরান তরফদার, জাভেদ আহমদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসীদের থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন

থ্যাংকস গিভিং ডে উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের পক্ষ থেকে জ্যামাইকার পার্সন্স বুলেভার্ডস্থ একটি রেস্টুরেন্টে গত শুক্রবার এক পার্টির আয়োজন করা হয়। এতে প্যানেলটির সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলীসহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

হৃদয়ে বাংলাদেশ: সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশ’র উদ্যোগে উদযাপিত হয় থ্যাংকস গিভিং ডে। গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুল পার্টি সেন্টারে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের ভোজে টার্কি ছাড়াও ছিল মজাদার সব খাবার-দাবার। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিল্পী শারমিন তানিয়া ও শিপু চাকলাদারের মনমুগ্ধকর সঙ্গীত পরিবেশনা উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

হৃদয়ে বাংলাদেশ’র সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পল্লব সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাঙালি চেতনা মঞ্চের সভাপতি আবদুর রহিম বাদশা, খলিল বিরিয়ানি হাউজের সত্ত্বাধিকারী মো. খলিলুর রহমান, হৃদয়ে বাংলাদেশ’র সাহিত্য সম্পাদক মাকসুদা আহমেদ, নারী নেত্রী মেহের চৌধুরী, একাত্তরের যুদ্ধবন্দী আব্দুর রহমান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, মাসুদ রানা, রায়হান জামান রানা, বান্টি প্রমুখ।

সাইদুর রহমান লিংঙ্কন বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রবাস প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে সংগঠনটি। তিনি আসন্ন বিজয় দিবসের উৎসব আয়োজন সফলে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

 

   

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে লন্ডনে নির্মূল কমিটির আলোর সমাবেশ



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় গণহত্যা দিবসে লন্ডনে আয়োজিত যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমাবেশে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) ৫৪তম গণহত্যা দিবস উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কস্থ শহীদ মিনারে সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক আলোর সমাবেশ থেকে এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সৈয়দ আনাস পাশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভিনের পরিচালনায় আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি হাইকমিশনার জনাব হযরত আলী খান। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক, প্রবীন রাজনীতিক সুলতান শরীফ ও নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান। বক্তব্য রাখেন, আমরা একাত্তর সংগঠক শাহাব আহমেদ বাচ্চু, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা কবি, সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, এনফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলার মোহাম্মদ ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, কবি, সংস্কৃতিকর্মী ময়নুর রহমান বাবুল, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেত্রী মেহের নিগার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা রবিন পাল, যুক্তরাজ্য জাসদের কোষাধ্যক্ষ শাহনুর খান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আরিফুর খোন্দকার এবং সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সাংবাদিক নিলুফা হাসান, জামাল খান, স্মৃতি আজাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ বেলাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত দাস প্রমুখ।

সমাবেশে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়। সমাবেশের ঘোষণায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ‘৭১- এর গণহত্যা অস্বীকারকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির জন্য প্রস্তাবিত আইন দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণহত্যার কালরাত্রি পালনের এই সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা করছি- আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রকে জঙ্গি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

সভার বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে যে গণহত্যা হয়েছে, সেটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এত খুন, ধর্ষণ হলো সবকিছু মিলিয়ে যে জাতিগোষ্ঠী নির্মূল করার অপচেষ্টা হয়েছে বিস্মতির অতল গহবর থেকে এটিকে তুলে আনতে হবে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য সরকারকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে।

;

যুক্তরাজ্যের সংসদ হাউসেস অফ পার্লামেন্টে গণহত্যা দিবস পালিত



লন্ডন করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে গত মঙ্গল্বারব(২৫ মার্চ) হাউসেস অফ পার্লামেন্টে “রিমেম্বারিং দ্য বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১- দ্য রোড টু ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন” শীর্ষক স্মারক ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ লর্ড সভার সিনিয়র সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার এবং অনুষ্ঠানের হোস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসবাপী গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। লর্ড সভার এই প্রবীণ সদস্য এবিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ বাংলাদেশের এপিপিজির ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ঘটেছিল তা একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল”। তিনি আশ্বাস দেন যে তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য কাজ করবেন।

ভারতীয় বংশদ্ভুত কনজারভেটিভ লিঙ্কের চেয়ারম্যান লর্ড সুরি ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে সংসদে নতুন প্রস্তাব আনতে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, পরিাজিত পকিস্তান বাহিনী ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের কাছে কিভাবে আতামসমর্পন করেছিল এর বিস্তারিত জেনেছেন তার চাচাত ভাই অরোরার কাছ থেকে।

স্বাগত বক্তব্যে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ১৯৭১ সালের জুনমাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে 'পূর্ব বাংলায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার' প্রথম দিনের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পিটার শোর, এমপি, যিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার পরে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা অ্যাকশন বাংলাদেশ এবং সমর্থন করেছিলেন ২৩৩ জনেরও বেশি ক্রস-পার্টি সদস্য, তারা পূর্ব বাংলায় গণহত্যার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন”।

এছাড়ও অনুষ্টানে আলোচনায় আরো অংশ নেন ড. নাজিয়া এম হাবিব ফাউন্ডার এন্ড রিসার্চ সেন্টার ডিরেক্টর ফর রিসাইলেন্স এন্ড সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট (সিআরএমডি) অব ল্যান্ড ইকনমি কেমব্রিজ ইউনিভারসিটি, প্রফেসার মোহাম্মদ শহাব উদ্দিন প্রফেসর ইন্টারন্যাশনাল ল এন্ড হিউম্যান রাইট বার্মিংহ্যাম ইউনিভারসিটি, ভ্যাল হার্ডিং ট্রাষ্ট্রি স্বাধীনতা ট্রাষ্ট যিনি ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের সরনার্থি শিবিরে একজন নার্স হিসিবে কাজ করেছেন। আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক, সর্ব ইউরোপীয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সৈয়দ মোজাম্মিল আলী প্রেসিডেন্ট ষ্টাডি সার্কুল, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এম এ আজিজ অক্সফাম প্রমুখ।

এছাড়াও বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ গণহত্যা দিবস ২০২৪-ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্রিটিশি এমপি, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্রিটিশ বাঙালিরা অংশ নেন।

;

আমিরাতে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার



সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের মাটিতে এত বড় ইফতার আয়োজন দেখা গেলেও প্রবাসে তা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় এবং ব্যয়বহুল। বিদেশের মাটিতে বিশ্ব পরিচিত আল-হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপি) এর নিজস্ব অর্থায়নে প্রবাসীদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

রোববার (২৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে অবস্থিত কোম্পানির প্রধান কার্যালয় এবং কারখানা প্রাঙ্গণে এ ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।এতে বাংলাদেশি প্রবাসী আমিরাতে বসবাসরত ভারত, পাকিস্তানের নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাত হাজারের অধিক মানুষের সমাগম ঘটে।

আল-হারামাইন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির (সিআইপির) সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাই কনস্যুলেট জেনারেল বি এম জামাল হোসেন।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ী সংগঠনসহ আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসী সাংবাদিক বৃন্দ অন্যান্য দেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


এসময় প্রতিমন্ত্রী আল-হারামাইন কোম্পানিকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আরব দেশে এত বড় আয়োজন করে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। প্রবাসীদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত সুন্দর উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আল হারামাইন পারফিউম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি বলেন, এই আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের অনেক সুনাম রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক কারণে আজকে বাংলাদেশকে এই প্রবাসের মাটিতে এ দেশের সরকার অনেক সম্মান করে যাচ্ছেন। প্রবাসে যারা বসবাস করে ও পরিবার নিয়ে এই দেশে রয়েছে তারা মিলিত হওযার সুযোগ থাকে না। আমি চেষ্টা করি যারা পরিবার ছাড়া এই দেশে রয়েছে বা পরিবাসহ রয়েছে সবাইকে নিয়ে ইফতার আয়োজন করার। এই ইফতার মাহফিল দীর্ঘদিন ধরে শুরু করেছি। বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রতি বছর এই আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

ইফতারের পূর্বে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খতমে কোরআন ও দোয়া, বিশ্ববাসীর শান্তি কামনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আল হারামাইনের কর্ণধার মাহাতাবুর রহমান নাসির সিআইপি ও আল হারাইমাইনের পরিচালক ডা. মুনীরা মাহতাব (মাহতাব কন্যা) উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত, শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং সবার প্রতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াতে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে প্রথম সুগন্ধি বোতল বাজারে আসার পর থেকে আল হারামাইন পারফিউমের ব্যাপ্তি ও খ্যাতি ক্রমশই বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, বাংলাদেশ, ইউকে এবং ইউএসএ জুড়ে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন পারফিউম শোরুমের একটি সুগন্ধি নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন সুগন্ধি প্রিয়দের হৃদয়।

 

;

নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন।



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বনলতা শিল্পী সাহিত্যিক, নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুসাহিত্যিক হাসানুর রহমান মারা গেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে নিউইয়র্কের কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

হাসানুর রহমানের ছেলে রাজিব রহমান ও নিউইয়র্কের শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় প্রধান পরিচালক হাকিকুল ইসলাম খোকন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক গোষ্ঠী, যুক্তরাষ্ট্র সোহরাওয়ার্দি স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাপসনিউজ ও আমেরিকান প্রেসক্লাব অব বাংলাদেশ অরিজিন-এর প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

প্রায় তিন বছর আগে বাসায় হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর কুইন্সের একটি রিহ্যাব সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই বছর ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসানুর রহমানের স্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষিকা পারভীন রহমান ও দুই ছেলে রাজিব রহমান ও আশিক রহমান যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন। রাজিব রহমান (আরআর) মিউজিক ডিরেক্টর ও ওয়ারফেয়ার ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। রাজিবের স্ত্রী বিউটি দাসও একজন সঙ্গীত শিল্পী। তারা ভার্জিনিয়ায় থাকেন।

প্রবীণ শিশু সাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত হাসানুর রহমান প্রায় পাঁচ দশক ধরে ছোটদের জন্যে লিখেছেন ছড়া, কবিতা, রূপকথা, গল্প-নিবন্ধ, একাঙ্কিকা। বাংলাদেশ শিল্প কৃষ্টি সংসদের হাজী মোহাম্মদ মহসিন স্বর্ণপদক, ঢাকার ভাস্কর নাট্যদলের ‘ভাস্কর নাট্যদল মিলেনিয়াম ২০০০ পুরস্কার এবং রাজশাহীর ‘খাজা স্মৃতি পাঠাগার ফেলোশিপ ২০০২'-এ ভূষিত।

হাসানুর রহমানের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২২ আগস্ট নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায়। হাসানুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৬৮ সালে বিএ (অনার্স) ও ১৯৬৯ সালে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ষাটের দশকে (১৯৬৬-৭০) ঢাকার অধুনালুপ্ত শিল্পী-সাহিত্যিক গোষ্ঠী ‘পূর্বাশা’র দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত দৈনিক ‘সমাজ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৯৪-৯৫ সালে পেট্রোবাংলার বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডের ঢাকা লিয়াজোঁ অফিসে ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী হন হাসানুর রহমান। তাঁর মৃত্যুতে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

;