রোমে নব জাগরণ নারী কল্যাণ সমিতির পিঠা উৎসব
শীতের নানা রকম পিঠাপুলি বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের উৎসব-আনন্দের সাথে মিশে আছে রকমারি পিঠার স্বাদ। আর সুদূর প্রবাসে এসেও দেশীয় ঐতিহ্যের হরেক রকম স্বাদের পিঠা নিয়ে রোববার (১৯ জানুয়ারি) নব জাগরণ নারী কল্যাণ সমিতি এর আয়োজন করে শীতকালীন পিঠা উৎসবের। গ্রাম বাংলা রেস্টুরেন্টের বিশাল হলরুমে অনুষ্ঠিত উৎসবে ছিল বাহারি স্বাদের প্রায় অর্ধশতাধিক ধরনের পিঠার সম্ভার।
এতে সংগঠনের সভাপতি সানজিদা ইসলাম সঙ্গীতার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক লিপি আক্তার এর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় পিঠা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার।
এ সময় নব জাগরণ নারী কল্যাণ সমিতি ও রোমের সামাজিক, আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ ইতালি প্রবাসীদের উপস্থিতিতে শুরুতেই পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার এর সহধর্মিনী পারভীন তাহমিনা।
এ সময় অতিথিরা বলেন, আমাদের প্রবাসী সন্তানরা যখন দেশীয় ইতিহাস ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এই দেশীয় পিঠা উৎসব অবশ্যই প্রশংসনীয়। বাঙালির এই চিরন্তন ঐতিহ্য পিঠা নগর জীবনের আধুনিকতার ছোঁয়া আর পিৎজা ও ফার্স্ট ফুডের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে। পিঠা মেলায় দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশিদের মিলনমেলা দেখে অনেক ভালো লাগছে।
এই ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে নব জাগরণ নারী কল্যাণ সমিতিকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন অতিথিরা।
উদ্বোধন ও আলোচনা পর মেলা ঘুরে দেখেছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। ভাপা পিঠা, ফুলি পিঠা, সন্দেশ ছাড়াও আরও অনেক বাহারি পিঠার সমাহার ছিলো উৎসবে। স্টলের মধ্য থেকে পিঠা বানানোর পদ্ধতি, স্বাস্থ্যসম্মত আর মজাদার পিঠা ইত্যাদি বিবেচনায় করে অতিথিরা তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি ছিল পুরো বাঙালিয়ানায় পরিপূর্ণ।
উক্ত পিঠা উৎসবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি রেহানা আক্তার শিল্পী, সহ সভাপতি লাকি সুলতানা, ফরিদা ইয়াসমিন লিপি, উপদেষ্টা নয়না আহমেদ, উম্মেহানি প্রিন্স, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানিয়া হাসান, নুসরাত জাহান বুবলী, শিউলি শাহজাহান, মুনা আহমেদ, উম্মে মিরা, নুপুর, ইতি রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আরা খুকু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শিমু অনন্যা, প্রচার সম্পাদক তানিয়া হোসাইন, নিপা আক্তারসহ আরও অনেকেই।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লিপি আক্তার জানিয়েছেন, আমরা প্রতিবছরই এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করে থাকি। এবারের পিঠা মেলা ছিল আগের বছরগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমধর্মী ও অনেক বড়।
গ্রামবাংলার পিঠাপুলির স্বাদ প্রবাসের নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানান সভাপতি সানজিদা ইসলাম সঙ্গীতা। তিনি আরও বলেন, সকলের সহযোগিতায় বিদেশি ও আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় ঐতিহ্য পৌঁছে দিতে শুধু পিঠা উৎসবই নয়, আরও সুন্দর এবং বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো। এসময় তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।