‘জীবাণু বিশ্বযুদ্ধ’ করোনা!
‘জীবাণু বিশ্বযুদ্ধ’ বা চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধের স্বরূপ কি বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দেওয়া অগণিত প্রাণ হরণকারী করোনা ভাইরাস আক্রমণ থেকে পৃথক কিছু?
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা ভাইরাসের আক্রমণের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় 'দ্য স্ট্রাফোর্ড এক্ট' নামের একটি আপৎকালীন আইন কার্যকর করে ৫০ বিলিয়ন ডলার তহবিল ব্যবহার অনুমোদন করেন। এরপর থেকে ট্রাম্প একাধিকবার নিজেকে যুদ্ধকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা অন্য যে দেশই এই জীবাণু যুদ্ধ বা সংক্রমণের সূচনা করে থাকুক, ১৭ নভেম্বর থেকে গত সাড়ে চার মাসে বিশ্বের ২০২ টি দেশে করোনাভাইরাসের জীবাণু সংক্রামিত হয়েছে।
আজ পর্যন্ত ১৩৬ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪২ হাজার মানুষ।
আশংকা করা হচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে এই করোনাভাইরাস মহামারিতে।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে আগামী দু'টি সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য 'কঠিন বেদনাদায়ক' হবে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা করোনা ভাইরাসে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষের সম্ভাব্য মৃত্যুর অনুমিত হিসাব প্রকাশ করেছেন। প্রাণহানির সংখ্যা সীমিত রাখার সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারপরও এক লাখ মানুষের মৃত্যুর আশংকা করা হচ্ছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে ১০ থেকে ২০ লাখ মানুষ হতে পারে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সরকারিভাবে রুদ্ধদ্বার বা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে অন্তত ১৫ টি দেশে। আর অনানুষ্ঠানিক লকডাউনে মানুষ ঘরবন্দি বেশিরভাগ দেশে।
ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগের চেয়েও বেশি মানুষ কার্যত ঘরবন্দি হয়ে আছেন এক থেকে দুই সপ্তাহ। থাকবেন অন্তত আরও দেড় থেকে চার সপ্তাহ।
আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অথবা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসায় রোগের সন্দেহভাজন হয়ে বিশ্বজুড়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ সঙ্গনিরোধ বা কোয়ারিন্টিন ও আইসোলেশনে রয়েছেন।
বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সব ধরণের যান চলাচল প্রায় ৯৯ শতাংশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশ্ব অচল করে দেওয়া এবং অগণিত মানুষের প্রাণহানির জন্য দায়ী এই করোনা ভাইরাস মহামারি 'জীবাণু বিশ্বযুদ্ধ' না হলে জীবাণু বিশ্বযুদ্ধের স্বরূপ আর কি হতে পারে!
টরন্টো
১ এপ্রিল ২০২০