বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় আদভানিসহ সব আসামি খালাস
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার অভিযুক্ত আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দীর্ঘ ২৮ বছর পর এই ধ্বংসযজ্ঞের রায় ঘোষণা করে উত্তরপ্রদেশের লখনৌউয়ের বিশেষ আদালত।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়। সেদিন সেখানে বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই ফৌজদারি মামলায় মোট ৩২ জন অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির দুই প্রবীণ নেতা ৯২ বছরের লালকৃষ্ণ আদভানি ও ৮৬ বছরের মুরলি মনোহর যোশি। আছেন উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও রাজস্থানের সাবেক রাজ্যপাল কল্যাণ সিং এবং সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী। রায়দানের দিন অভিযুক্ত সকলকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলি মনোহর যোশি, উমা ভারতী এবং কল্যাণ সিং আদালতে উপস্থিত না হয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞের সময় লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলি মনোহর যোশি এবং উমা ভারতী মসজিদের নিকটবর্তী মঞ্চে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে তারা তাদের বক্তব্য দিয়ে জনতাকে উস্কে দিয়েছে।
ধ্বংসের সময় কল্যাণ সিং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সারা দেশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ায় তার সরকার বরখাস্ত হয়েছিল।
ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানীর নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে দফায় দফায় রথযাত্রা হয়। এই রথযাত্রা থেকে ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম এই মুসলিম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। কট্টরপন্থী করসেবকরা মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পরপর দেশটিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
আদভানি ও যোশি দুজনেই মসজিদ ধ্বংসের চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ষোড়শ শতকে ওই মসজিদ তৈরি করেন। যেখানে মসজিদের অবস্থান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস সেখানেই ভগবান রামচন্দ্র জন্মেছিলেন। তার জন্মস্থানের মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল বাবরি মসজিদ।