'ভ্যাকসিন যুদ্ধ': করোনা টিকার জন্য লড়াই!
একদিকে যখন বাড়ছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিপদ, তখন অন্যদিকে করোনা টিকার জন্য রীতিমতো লড়াই শুরু করেছে স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ঔষধ কোম্পানিগুলো। যে লড়াইয়ের নাম দেওয়া হয়েছে 'ভ্যাকসিন যুদ্ধ'!
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে টিকা আবিষ্কার নিয়ে সারাবিশ্বে বিজ্ঞানী এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার খবর জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো। বলা হচ্ছে, কার টিকা প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে, তা নিয়ে সারাবিশ্বে প্রতিযোগিতা চলছে, যাতে রয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও এস্ট্রাজেনেকার টিকা, চীনের সিনোভাকের টিকা, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারের টিকা, জনসন এন্ড জনসনের টিকা প্রভৃতি।
সাবধানী কোম্পানিগুলো স্বীকৃতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সর্বসাধারণের মাঝে টিকা বিপণনের ব্যবস্থাও করে রেখেছে। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারের বেলজিয়ামের পুরস-এ অবস্থিত কারখানায় প্রস্তুত করা হয়েছে লাখ লাখ ডোজ টিকা। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় তাদের টিকা সফল প্রমাণিত হলেই তা ব্যবহার করা হবে।
ফাইজার আশা করছে তারা ১০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে এ বছর। সেখান থেকে ৪ কোটি যাবে বৃটেনে। যেসব রোগী এই টিকা নেবেন, তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। সাধারণত টিকা তৈরি করতে তার আগে পরীক্ষা চালাতে হয় অনেক বছর ধরে। তারপর সেই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস বিশ্বকে যেভাবে তছনছ করে দিয়েছে, তাতে দ্রুত গতিতে একটি টিকা আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে মানুষের শরীরে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চলছে কমপক্ষে ৪০টি টিকার। অন্য ১৫৬টি টিকা রয়েছে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার আগের স্তুরে। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানির সহযোগিতায় পরিচালিত বায়োএনটেক এবং ফাইজারের টিকা, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং এস্ট্রাজেনেকার টিকা, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান মডার্নার টিকা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনসন এন্ড জনসনের টিকা, চীনের সিনোফার্মা এবং সিনোভ্যাকের টিকা।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী বসন্তকালের আগে ব্যাপকভিত্তিতে টিকার ব্যবহার হবে না। কারণ, টিকা এলেও কোভিড-১৯ একেবারে বন্ধ করা যাবে না। একমাত্র গুটিবসন্তকে টিকা দিয়ে একেবারে নির্মূল করা গেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসকে একেবারে নির্মূল করা যাবে বলে মনে হয় না। এটি অন্য সব মৌসুমি ফ্লুর মতো থেকে যেতে পারে।