চিকিৎসা ঘাটতি হলে করোনার চেয়েও ভয়ংকর হবে ম্যালেরিয়া
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে উপ-সাহারান আফ্রিকাতে চিকিৎসার ঘাটতি এবং নানা ব্যাঘাতের করোনাভাইরাসের মহামারী থেকেও আরো ভয়ংকর রূপ নিতে ম্যালেরিয়া। মারা যেতে পারে আরো হাজার হাজার মানুষ।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) মশার বাহিত রোগের বার্ষিক প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও এই সতর্কবাণী দেয়।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এটি উদ্বেগজনক। চিকিৎসাক্ষেত্রে এমনকি মাঝারি বাঁধাগুলো 'জীবনের যথেষ্ট ক্ষতি'র কারণ হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আফ্রিকার উপ-সাহারানে কার্যকর ম্যালেরিয়া চিকিৎসার শুধুমাত্র ১০ শতাংশ ব্যাঘাত ঘটলেই অতিরিক্ত ১৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ২৫ শতাংশ ব্যাঘাত ঘটলে এই সংখ্যা গিয়ে ৪৬ হাজারে দাঁড়াবে। আর ৫০ শতাংশ ব্যাঘাত ঘটলেই প্রাণহানি হবে ১ লাখ মানুষের।
এদিকে,ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় অগ্রগতি থেমে আছে বলে মন্তব্য করছেন ডব্লিউএইচওর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মাতিশিডিসো মোতি। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমাদেরকে ম্যালেরিয়া মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিয়েছে। বিশেষত এই রোগে আক্রান্ত লোকদের চিকিৎসা করার। করোনা আফ্রিকান অর্থনীতিতে যে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে তা সত্ত্বেও, আন্তর্জাতিক অংশীদার দেশগুলোকে ম্যালেরিয়া মোকাবিলা নিশ্চিতকরণে একসাথে আরো বেশি কাজ করা জরুরী।
ডব্লিউএইচওর সর্বশেষ বিশ্ব ম্যালেরিয়া সম্পর্কিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বলা যায় এটি প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিত্সাযোগ্য। মূলত আফ্রিকার দেশগুলোই এতে বেশি প্রভাবিত। তবে চলতি বছরেরে শুরুর দিক থেকে করোনা মহামারী দেখা দিলে ম্যালেরিয়া রোগের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি হ্রাস পেয়েছিল।
২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ২২৯ মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ায় হয়েছিলো। যা গত চার বছরে কার্যত অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০১৯ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এর সংখ্যা কমে ২০১৯ সালে নেমে আসে ৪ লাখ ৯ হাজারে।
২০০০ সালে আফ্রিকান নেতারা ১০ বছরের মধ্যে এই মহাদেশে ম্যালেরিয়াজনিত মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার সাথে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিলের তীব্র বৃদ্ধি ঘটায় ৫০ শতাংশ না হলেও ম্যালেরিয়া থেকে মৃতের সংখ্যা ৪৪ শতাংশ হ্রাস করতে সহায়তা করেছে। যা কিছুটা হলেও আশা জাগানোর বিষয়।