যুক্তরাষ্ট্রে গত সপ্তাহে করোনায় ১০ হাজারের বেশি প্রাণহানি
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এবং নতুন শনাক্ত রেকর্ড করা হয়েছে ১.১ মিলিয়নেরও বেশি। তবে রাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, থ্যাঙ্কসগিভিং ছুটির কারণে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সংবাদ সংস্থাটির এক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ২৯ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে নতুন শনাক্ত ৩.৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ৩.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
রাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের জন্য বৃহস্পতিবার অনেক করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ ছিল এবং কিছু বেসরকারি ল্যাব তাদের স্টাফ কমিয়ে দিয়েছিল বা শুক্রবার বন্ধও রেখেছিলো। তাই গত সপ্তাহ থেকে তথ্য ব্যাকলোগের কারণে এই সপ্তাহে শনাক্ত এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যান অস্বাভাবিকভাবে বেশি হতে পারে।
যে হাসপাতালগুলো ছুটির কারণে বন্ধ ছিল না, শুধুমাত্র তারাই গত সপ্তাহের সঠিক ডেটা সরবরাহ করতে পেরেছে। রয়টার্সের বিশ্লেষণ অনুসারে চলতি সপ্তাহের রোববার হাসপাতালে ভর্তি কোভিড -১৯ রোগী রেকর্ড প্রায় ৯৩ হাজারে পৌঁছেছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১১% বেশি।
এদিকে পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সবশেষ তথ্য বলছে, মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ৭টা নাগাদ বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা ৬ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৫ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, একই সময় বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছে ১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪৪৭ জন। এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৭২ হাজার ৫৬ জন।
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৯ লাখ ১৮ হাজার ২১১ জন। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩২৬ জন।
ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৪ লাখ ৬১ হাজার ২৫৪ জন। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৯ জন। ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৮ জন। করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৬৫ জন।
তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। ফ্রান্স পঞ্চম। স্পেন ষষ্ঠ। যুক্তরাজ্য সপ্তম। গত দুই সপ্তাহে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ায় ইতালি অষ্টম। আর্জেন্টিনা নবম। কলোম্বিয়া দশম। পরিসংখ্যান সংস্থাটির এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৬তম।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।
করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯ ’।