অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘নিরাপদ ও কার্যকর’: গবেষণা
করোনা টিকাব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনা টিকা ‘নিরাপদ এবং কার্যকর’। এই টিকা করোনা সুরক্ষা দেবে-গবেষকরা ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যদিও টিকাটির গবেষণায় বেশিরভাগই ৫৫ বছরের কম বয়সী স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল জানায় বয়স্কদেরও এই টিকা করোনা থেকে সুরক্ষা দেবে।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য বলছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া কমাবে। সেই সঙ্গে অসুস্থতা ও মৃত্যু কমিয়ে আনবে।
অক্সফোর্ডের এ টিকার ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এরপর নিরপেক্ষ বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রাপ্ত ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়েছে। অর্ধেক স্বেচ্ছাসেবক যুক্তরাজ্যের, বাকিরা ব্রাজিলের।
সংস্থাটি আশা করছে নিয়ন্ত্রকরাও একই তথ্য দেখবে। তারা জরুরি ব্যবহারের জন্য টিকাটি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তবে কী পরিমাণ ডোজ দিলে করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে এ প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি।
অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, এর আগে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে এ টিকার দুই ধরনের ডোজের তথ্য বিশ্লেষণে একটিতে ৯০ শতাংশ এবং অন্যটিতে ৬২ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে। অর্থাৎ, গড়ে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ টিকা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে একটি পূর্ণ ডোজের পর আরও অর্ধেক ডোজ টিকা দিলে তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে। তারা জানায়, বিভিন্ন বয়স শ্রেণি, এমনকি বয়স্কদেরও যে এই টিকা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে পারে, পরীক্ষায় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাস্কাল সরিওট জানিয়েছেন, গবেষণার ফলাফলগুলি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এই টিকা কার্যকর। বিশেষ করে এই টিকা নিলে গুরুতর সংক্রমণ হবে না এবং হাসপাতালেও যেতে হবে না। পাশাপাশি এটি নিরাপদ এবং সহনীয়।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য সারা বিশ্বের টিকা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য জমা দিতে শুরু করেছি। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগগিরই বিশ্বব্যাপী কয়েক মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্য ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকা প্রয়োগ শুরু করেছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৯০ বছর বয়সী এক নারী বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টিকাটি গ্রহণ করেন।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকাটি দ্রুত অনুমোদন পেলে মহামারির বিরুদ্ধে লড়েইয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। আর এই টিকাটি অন্য করোনার টিকার তুলনায় সাশ্রয়ী ও সহজে পরিবহনযোগ্য। যুক্তরাজ্য সরকার ইতোমধ্যে অক্সফোর্ডের টিকার ১০০ মিলিয়ন ডোজ অর্ডার করেছে।
২০২১ সালে সারা বিশ্বের জন্য তিন বিলিয়ন টিকার ডোজ সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
অক্সফোর্ডের করোনা টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশও এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনবে। এর জন্য সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
সূত্র: বিবিসি