মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করল চীন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বিতর্কিত তাইওয়ান সফরের প্রতিবাদে বেইজিং-এ নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নসকে তলব করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) রাতে পেলোসি তাইপে অবতরণের পরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বেইজিং। এরই অংশ হিসেবে নিকোলাসকে তলব করা হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নসের সঙ্গে আলাপকালে চীনের ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী জি ফেং গণতান্ত্রিক স্ব-শাসিত দ্বীপে পেলোসির সফরের বিষয়ে জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যেটিকে চীন তার ভূখণ্ডের অংশ বলে মনে করে।

চীনের ভাইস-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জি ফেং বলেন, পেলোসির সফরের অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে এবং এর পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর বলেও সতর্ক করা হয়েছে। চীন অলসভাবে বসে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে অবস্থান করা মার্কিন স্পিকার পেলোসি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট এবং আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন জানা গেছে। তাইওয়ানে পৌঁছে টুইট বার্তায়ন পেলোসি বলেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে তাইওয়ানের গতিশীল গণতন্ত্রের প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে তার প্রতিনিধি দল।

   

চীনা তরুণ-তরুণীরা প্রেমে আগ্রহী হলেও বিয়েতে অনীহা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েক বছর ধরেই চীনে মানুষের সংখ্যা দ্রুতগতিতে কমছে। চীন সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েও বিষয়টির মোকাবিলা করতে পারছে না। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, করোনা মহামারিসহ নানা কারণে চীনের তরুণ-তরুণীদের মাঝে বিয়ের আগ্রহ কমছে, বিপরীতে আগ্রহ বাড়ছে প্রেমে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায়, চীনে বিয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে তরুণ চীনারা প্রেমকে বেছে নিয়েছে। দেশটিতে ২০১৩ সালে বিয়ের সংখ্যা ছিল ১৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন যা ২০২২ সালে ৬ দশমিক ৮ মিলিয়নে নেমে আসে।

চীনে ভালোবাসা দিবসের মতো একটি উৎসব পালিত হয় যা কিক্সি উৎসব নামে পরিচিত। ঐতিহ্যগতভাবে চীনা দম্পতিদের বিয়ে করার জন্য একটি শুভ সময় বলে বিবেচিত হয়। চীনা চন্দ্র ক্যালেন্ডারে সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে এই উৎসব উদযাপিত হয়। কিক্সি হল চীনা পুরাণে তারকা-ক্রসড প্রেমিক ঝিনু এবং নিউলং-এর মধ্যে রোমান্টিক প্রেমের উদযাপন। তাই এই দিনে চীনাদের মাঝে গণহারে বিয়ে হওয়ার প্রচলন আছে।

রোমান্টিক এই দিনটিতে বিয়ে প্রদর্শনের লক্ষ্যে, সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানয়াং শহরের একটি বিবাহ নিবন্ধন অফিস চলতি বছরের উৎসবটিকে বিবাহ নিবন্ধন অনুষ্ঠানগুলোর লাইভস্ট্রিম করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই বছর দিনটি ছিল ২২ আগস্ট ৷ তাদের মতে এবারের অনুষ্ঠানে খুব কম দম্পতি বিয়ে করতে এসেছেন। এতে শেষ পর্যন্ত লাইভস্ট্রিম বিঘ্নিত হয়। একটি বড় আড়ম্বড়পূর্ণ বিবাহ নিবন্ধন হলের পরিবর্তে দর্শকদের সেদিন দেখানো হয়েছিলো মিয়ানয়াং শহরের মনোরম দৃশ্য।

আল জাজিরায় প্রকাশিত এক স্থিরচিত্রে দেখা যায়, ২০০৩ সালে সাংহাইতে এমন দিনের রোজ ওয়েডিং নামে পরিচিত এক অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ জন দম্পতির গণবিবাহের জন্য চীনা বধূরা প্রস্তুতি নিচ্ছে, গত ১০ বছরে যা লক্ষ্যণীয় হারে কমেছে ।

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা বর্তমানে চীনের তরুণদের একটি ট্রেন্ডিং বিষয় হয়ে উঠেছে। এই পরিসংখ্যানও বলছে বিয়েতে চীনা তরুণদের আগ্রহ ক্রমহ্রাসমান এবং অবিবাহিত থাকার প্রবণতা বেশি বাড়ছে।

যার প্রভাব পড়েছে চীনের জনসংখ্যায়। বিশ্বের শীর্ষ জনসংখ্যার দেশটি বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ লাখ ৫০ হাজার কম।

এনবিএসের তথ্যমতে, গত বছর চীনে ৯৫ লাখ ৬০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ১০ হাজার জনের।

;

শিখ নেতা হত্যা: কানাডার তদন্তে ভারতকে সহায়তার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিখ নেতা হারদিপ সিং নিজ্জার হত্যার তদন্তে কানাডাকে সহযোগিতা করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

ব্লিঙ্কেন বলেন, আমরা জবাবদিহিতা দেখতে চাই। তদন্ত প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং কাঙ্ক্ষিত ফল বেরিয়ে আসা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক দমন মারাত্মক একটি গুরুতর ইস্যু।

মার্কিন বিবৃতিটি এমন সময় এসেছে যখন ভারত-কানাডা সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে। নয়াদিল্লি কানাডিয়ানদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে এবং অটোয়া একজন ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।

কানাডা অভিযোগ করেছে যে ভারতীয় সরকারের এজেন্টরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তবে এ দাবি নয়াদিল্লি প্রত্যাখ্যান করেছে।

কানাডাও ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার ট্রুডো বলেছেন, অটোয়া ইতিমধ্যেই অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার আগে নয়াদিল্লির সঙ্গে তার উদ্বেগগুলি ভাগ করেছে।

চলতি বছরের জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে নিজ্জারকে গুরুদ্বারের পার্কিং লটে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠে। শিখ ফর জাস্টিট (এসজেএফ)-এর মতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের প্রধান ছিলেন তিনি। এই হত্যার জন্য ভারতকে দায়ী করে ওই খালিস্তানি সংগঠন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মুখে সেই কথার প্রতিফলন দুই দেশের সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হারদিপ সিং নিজ্জার হত্যার জেরে ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব পৌঁছছে চরমে। বৃহস্পতিবার চলমান দ্বন্দ্বের জেরে কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত। এ প্রসঙ্গে অরিন্দম বাগচি বলেন, ইতিমধ্যেই যাদের ভিসা রয়েছে তারা ভারতে আসা- যাওয়া করতে পারবেন। নতুন করে ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

কানাডার নাগরিকদের ভারতের ভিসা দেওয়া ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়েও কথা বলেন তিনি। ভারতে বসবাসকারী কানাডার কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ভারত। আশা করি কানাডায় আমাদের কূটনীতিকদের প্রতিও একই আচরণ করবে সে দেশের প্রশাসন।

;

সিনেটর বব মেনেনডেজের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সিনেটর বব মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।

ওই দুজনের বিরুদ্ধে মিশরকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বৈদেশিক নীতিকে প্রভাবিত করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন প্রসিকিউটররা।

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী নাদিনের বিরুদ্ধে নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছে।

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস তাদের অভিযোগে বলেছে, ‘ওই ঘুষের মধ্যে নগদ অর্থ, স্বর্ণ, একটি বাড়ির বন্ধকের জন্য অর্থপ্রদান, একটি কাজের জন্য ক্ষতিপূরণ, একটি বিলাসবহুল যানবাহন এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস অন্তর্ভুক্ত ছিল।’

প্রসিকিউটররা বলেন, ওই সিনেটর দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি করে সোনার বার এবং লুকানো নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী তিনটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। সেগুলো হলো, ঘুষ নেওয়ার ষড়যন্ত্র, পরিষেবা জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং সরকারি অধিকারের আড়ালে চাঁদাবাজি।

অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পরে এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজ বলেছেন, তিনি মিথ্যা এবং অপপ্রচারের শিকার।

তিনি প্রসিকিউটরদেরকে তার এবং তার স্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যা দাবির জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, বিরোধীরা প্রথম প্রজন্মের ল্যাটিনো আমেরিকান, যারা মার্কিন আইনসভায় সততার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা মেনে নিতে পারে না।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভিযোগকারীরা কংগ্রেসনাল অফিসের স্বাভাবিক কাজকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। এ ছাড়াও, তারা শুধুমাত্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবি করে সন্তুষ্ট নয়, তারা আমার স্ত্রীকেও আক্রমণ করেছে।’

প্রভাবশালী ইউএস সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান ৬৯ বছর বয়সি সিনেটর মেনেনডেজের বিরুদ্ধে এর আগেও নিউ জার্সিতে সরকারি সুবিধার বিনিময়ে একজন ধনী পৃষ্ঠপোষকের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ফ্লাইট, প্রচারাভিযানে অবদান এবং অন্যান্য ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল।

২০০৬ সাল থেকে মার্কিন সিনেটে থাকা মেনেনডেজ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সিনেটর হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাকে দুটি ফৌজদারি অপরাধমূলক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মেনেনডেজ প্রথম প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন যে, তিনি গত অক্টোবরে একটি নতুন ফেডারেল তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

ঘুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রসিকিউটররা মেনেনডেজের নিউ জার্সির বাড়ি, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ, নগদ প্রায় ৫ লাখ ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার, স্বর্ণের বার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছেন৷

ব্যবসায়ী ওয়ায়েল হানা, হোসে উরিবে এবং ফ্রেড ডাইবসকেও ঘুষ প্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা বলেন, হানা, যিনি মূলত মিশর থেকে ২০১৮ সালে মেনেনডেজ এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে নৈশভোজ এবং বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই বৈঠকে মিশরের কর্মকর্তারা মার্কিন সামরিক সহায়তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে সিনেটরকে চাপ দিয়েছিলেন।

মিশর ওই সময় মার্কিন সামরিক সাহায্যের বৃহত্তম প্রাপকদের মধ্যে একটি ছিল। কিন্তু, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০১৭ সালে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্রের উন্নতি না করা পর্যন্ত ওই সাহায্য বাতিল করে।

প্রসিকিউটররা বলেন, ২০১৮ সালে একটি সভায় মেনেনডেজ হানাকে সাহায্যের অবস্থা সম্পর্কে অপ্রকাশ্য তথ্য জানান। তারপরে হানা একজন মিশরীয় কর্মকর্তাকে টেক্সট করেছিলেন যে, মিশরে ছোট অস্ত্র ও গোলাবারুদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

নৈতিকতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিক্সের প্রেসিডেন্ট শুক্রবার এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।

;

মুসলিম সাংসদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে তোপের মুখে বিজেপির সাংসদ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি। ছবি : সংগৃহীত

বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের রাজনৈতিক দল বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি কর্তৃক সংসদে দাঁড়িয়ে মুসলিম এক সাংসদের প্রতি করা সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

রমেশ বিধুরি তার বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছ থেকে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) কঠোর পদক্ষেপের একটি সতর্ক বার্তা পেয়েছেন৷

বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়ে রমেশকে ১৫ দিনের মধ্যে তার অসংসদীয় ভাষার ব্যবহারের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বিজেপিও।

লোকসভার কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, স্পিকার চন্দ্রযানের সাফল্য নিয়ে আলোচনার সময় মুসলিম সাংসদ দানিশ আলীর (বিএসপি) প্রতি রমেশ বিধুরির দ্বারা ব্যবহৃত আপত্তিকর শব্দগুলোর গুরুতর নোট নেওয়া হয়েছে এবং এই ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এনডিটিভি জানিয়েছে লোকসভার একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রমেশ বারবার দানিশ আলীকে ইসলামোফোবিক এবং সন্ত্রাসী বলে গালিগালাজ করছেন।

ওই ঘটনায় দানিশ আলী স্পিকারকে এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আপনার নেতৃত্বে একটি নতুন সংসদ ভবনে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা এই মহান জাতির একজন সংখ্যালঘু সদস্য এবং একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসাবে আমার জন্য হৃদয়বিদারক।’

ওই চিঠিতে তিনি ঘটনাটি বিশেষাধিকার কমিটির কাছে উল্লেখ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় দানিশ আলী জানান, তিনি অপমানে সারা রাত ঘুমাতে পারেননি।

বিরোধী নেতারা বিজেপি সাংসদকে নিন্দা জানিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানোর পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘সদস্যের মন্তব্যে বিরোধীরা আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’

কিন্তু বিরোধীদের দাবি হলো, রমেশকে বরখাস্ত বা গ্রেপ্তার করা উচিত।

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘এটি একটি চরম লজ্জা। রাজনাথ সিংয়ের ক্ষমা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সংসদের অপমান, প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য অপমান।’

কংগ্রেস বলেছে, আগের অধিবেশনে তাদের লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে মন্ত্রীদের অপমান করার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, একজন বিজেপি সাংসদের জন্য আরও খারাপ কথা বললেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আম আদমি পার্টি (এএপি) ভিডিওটি শেয়ার করে একটি পোস্টে প্রশ্ন করে বলেছে ‘বিজেপির দিল্লির সাংসদ সংসদে স্পিকারের সামনে এই শব্দগুলো দিয়ে অন্য একজন মুসলিম এমপিকে ফোন করছেন এটি কি বিজেপির সংস্কৃতি?’

ওই ঘটনাকে সংসদের ইতিহাসে কালো দিন বলে অভিহিত করেছে আপ।

আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা বলেছেন, তিনি সংসদে বিজেপি সাংসদ দ্বারা ব্যবহৃত সাম্প্রদায়িক অপবাদে দুঃখিত।

তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখ পেয়েছিলাম, কিন্তু অবাক হইনি। এটাই প্রধানমন্ত্রীর বসুধৈব কুটুম্বকমের সত্য। আমাদের ভাবতে হবে যে সংসদে একজন সাংসদের জন্য যদি এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, তাহলে মুসলিম, দলিতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ভাষাকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে? এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রমেশ বিধুরির বিষয়ে একটি কথাও বলেননি।’

ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহ রমেশের ব্যবহৃত অপমানজনক শব্দগুলো তুলে ধরে একটি পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এই ঘৃণ্য মাননীয় সাংসদের জিহ্বা কত সহজে গুটিয়ে যায়! বিজেপি কি এই ঘৃণ্য বিদ্বেষের সঙ্গেই সহাবস্থান করে?’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবদুল্লাহ বলেন, ‘তিনি যদি আমাদের সন্ত্রাসী বলে থাকেন, আমরা তাতে অভ্যস্ত। কিন্তু, তিনি সব মুসলমানদের বিরুদ্ধেই এই কথা বলেছেন। এটা আমাদের খুবই ক্ষুব্ধ করে। এটা শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের মানসিকতা প্রকাশ করে। নতুন সংসদ, কিন্তু পুরনো মানসিকতা।’

;