ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্দী বিনিময় সম্পন্ন

কাতারে নামছেন সিয়ামক নামাজি, এমাদ শারকি ও মোরাদ তাহবাজ। ছবি : সংগৃহীত
কাতারের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসাবে পাঁচ মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে ইরান। একইভাবে পাঁচজন ইরানীকেও মুক্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাঁচ মার্কিন নাগরিক এবং দুইজন ইরানি তাদের নিজ নিজ দেশে যাওয়ার উদ্দেশে ইতিমধ্যেই কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন।
তবে, মুক্তি পাওয়া পাঁচ ইরানির মধ্যে তিনজন ইরানে ফিরছেন না। তাদের দুজন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করবেন এবং বাকি একজন তৃতীয় দেশে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
এর আগে, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তির ক্ষেত্রে তেহরানের শর্ত অনুযায়ী এই সপ্তাহের প্রথম দিকে কাতারের ব্যাংকগুলোতে তেহরানের তহবিলে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জমা করার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের।
এনডিটিভি জানিয়েছে, তেহরানের ওই শর্ত পূরণ করার পরই সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ওই বন্দী বিনিময়ের ঘটনা ঘটলো।
ওই অর্থের বিনিময়ে ইরানে আটক পাঁচজন মার্কিন দ্বৈত নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে তেহরান এবং একই সংখ্যক ইরানী বন্দীকে মুক্তি দিলো ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দী বিনিময় আলোচনার সঙ্গে জড়িত আট ব্যক্তি এবং অন্যান্য সূত্র রয়টার্সকে ওই খবর নিশ্চিত করেছে।
বন্দী বিনিময়ের প্রথম ধাপ হিসাবে ইরান গত ১০ আগস্ট তেহরানের এভিন কারাগার থেকে পাঁচ মার্কিন নাগরিককে বের করে গৃহবন্দি অবস্থায় রেখেছিল।
সেই দিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ওই পদক্ষেপকে বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ বলে অভিহিত করেছিলেন।
ইরানে গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন ব্যবসায়ী সিয়ামক নামাজি, এমাদ শারকি এবং পরিবেশবাদী মোরাদ তাহবাজ। গৃহবন্দী চতুর্থ এবং পঞ্চম জনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিশ্বস্ত দুটি সূত্র জানিয়েছে, ওই দুজনের একজন নারী।
দোহা দুই দেশের মধ্যে অন্তত আট দফা আলোচনার আয়োজন করেছিল, যাতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করতে পারে।
পূর্ববর্তী আলোচনাগুলো প্রধানত পারমাণবিক ইস্যুতে হলেও পরে এটি বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীভূত হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীনে প্রকল্পগুলোতে ইরান ব্যয় করতে পারবে না। আর এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে ইরানকে পর্যবেক্ষণ করবে কাতার।
দোহাভিত্তিক তিনটি সূত্র জানিয়েছে, বন্দীরা নিজ দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে কাতারকে ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহার করছে।
এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘ইরান প্রথমে তহবিলে সরাসরি প্রবেশাধিকার চেয়েছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তারা কাতারের মাধ্যমে প্রবেশাধিকারে রাজি হয়েছে। ওই অর্থ দিয়ে ইরান খাদ্য ও ওষুধ কিনবে এবং কাতার সেক্ষেত্রে সরাসরি অর্থ প্রদান করবে।’
এর আগে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলোচনার বিশদ বিবরণ, আলোচনায় কাতারের ভূমিকা বা চূড়ান্ত চুক্তির শর্তাবলী সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তার জাতিসংঘ মিশন এ বিষয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।