মিয়ানমারে শরণার্থী শিবিরে সামরিক হামলায় ৩২ জনের প্রাণহানি
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে চীন-সীমান্তবর্তী কাচিনের লাইজা শহরের কাছের একটি শিবিরে সোমবার (৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় সামরিক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত শিশু ও বৃদ্ধসহ ৩২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৫৬ জন। ঘটনাস্থলের উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হলে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান জানা যাবে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত লোকদের একটি শিবির লক্ষ্য করে এই সামরিক হামলা চালানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাম্পটি কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির (কেআইএ) সদর দপ্তর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ক্যাম্পটি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কয়েক দশক ধরে সংঘাতে জড়িয়ে আছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন শিশুসহ অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিটকিনা নিউজ জার্নাল জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিন মাস বয়সী একটি শিশুও রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা অন্ধকারে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। বাঁশ ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষের স্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) মানবাধিকার মন্ত্রী অং মিও মিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এই হামলায় প্রায় ৫৬ জন আহত হয়েছেন।
কেআইএ-র কর্নেল নাও বু বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সশস্ত্র দলটির হামলার কৌশল এবং শিবিরে আঘাত করার কারণ আমরা তদন্ত করছি। আমরা কোনো বিমানের কথা শুনিনি। এই সামরিক বাহিনী হামলায় ড্রোন ব্যবহার করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি।’
এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে কাচিনে কেআইএ আয়োজিত একটি উৎসবে সামরিক বিমান হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। এর পরপরই মিয়ানমার সংকটে নিমজ্জিত হয়। দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে বিমান হামলা, আর্টিলারি শেলিং এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।