মিয়ানমারে চীনের পাশের শহরের দখল নিল বিদ্রোহীরা
মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীর কাছ থেকে আরও একটি শহরের দখল নিয়েছে সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী জোটের বিদ্রোহীরা। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর চীনের সীমান্ত সংলগ্ন লাউকাইং নামের শহরটির দখল নেয় তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ এর বরাত দিয়ে আমেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি বিষয়টি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লাউকাইং হলো কোকাং স্বশাসিত অঞ্চলের রাজধানী। ভৌগোলিকভাবে এটি উত্তরের শান শহরের অংশ। আর এমএনডিএএ হলো কোকাং সংখ্যালঘুদের একটি সামরিক বাহিনী, যারা জাতিগত চীনা।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি নিয়ে গঠিত জাতিগত বিদ্রোহীদের জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গোষ্ঠীটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, লাউক্কাই নামের শহরটিতে জান্তাবাহিনীর যে আঞ্চলিক সেনাঘাঁটি ছিল, সেখানকার সৈন্যরা বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে উভয় পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।
আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর যে পরাজয়, তার মধ্যে এই শহরের পতন সবচেয়ে বড় ঘটনা। গণতন্ত্রপন্থি গেরিলা এবং দেশজুড়ে অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ের কারণে ‘স্বৈরশাসক’ জান্তা সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে, তা স্পষ্ট।
২০২১ সালে দেশটির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর কয়েক মাস ধরে জান্তা সরকার কঠিন সময় পার করছে। জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গত অক্টোবর থেকে সমন্বিতভাবে জান্তাবিরোধী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি ও উত্তরে চীনের সীমান্তবর্তী কয়েকটি শহর এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কয়েকটি শহরও দখল করে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, স্বৈরশাসনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মিয়ানমারের দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডজুড়ে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ চলছে। বিদ্রোহী-জান্তার লড়াইয়ে গত কয়েক মাসে ৩৬০-এরও বেশি বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ।
এদিকে আরাকান আর্মি সিতওয়েসহ অন্য আরও ১৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। পাশাপাশি পালেতওয়ার ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানেরও দখল নিয়েছে তারা। জান্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে ম্রউক উ, পাকতাও ও মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।