জেনারেল বাজওয়ার নির্দেশনায় ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়: ফজলুর রহমান
জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলামের (জেইউআই–এফ) আমির মাওলানা ফজলুর রেহমান বলেছেন, সংসদে যে অনাস্থা ভোটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল, সেটি উত্থাপন করা হয়েছিল সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার নির্দেশনায়।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
ফজলুর রহমান বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিলাম। কিন্তু অন্য দলগুলোর চাপাচাপির মুখে আমি যদি না বলতাম, তাহলে আমি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে বাঁচিয়েছি বলে আমার ওপর একটি তকমা লাগানো হতো।
ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহেরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) সরকার পতনের পর পিএমএল–এনের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠন হয়। ওই সরকারই ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগে ১৬ মাস পাকিস্তান শাসন করে।
২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খান প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন। তার ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে জো বাইডেন প্রশাসন। পরে অবশ্য ইমরান এ জন্য সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়ার ওপর দোষ চাপান।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইমরান খান এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে একজন সাংবাদিকের কথোপকথন উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, পিটিআই সরকার উৎখাতের পেছনে যে তার হাত ছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেনারেল বাজওয়া।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ইমরান খান ধারাবাহিকভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন। অবশ্য পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের অনেকে পিটিআই সরকার উৎখাতে সাবেক সেনাপ্রধানের জড়িত থাকার কথা বলেছেন।
সাক্ষাৎকারে ফজলুর রেহমান বলেন, যখন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য আন্দোলন চালাচ্ছিল, তখন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদ আমাকে বলেছিলেন যে আমি যা চাই তা করতে পারি, তবে সিস্টেমের মধ্যে।
তিনি বলেন, হামিদ তাকে বলেছিলেন তিনি এই ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবেন না। অর্থাৎ যা কিছু করার তা পার্লামেন্টের ভেতরেই করতে হবে। রাজপথে কিছু করা যাবে না।
কিন্তু আমি তার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছিলাম, বলেন ফজলুর। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে পরবর্তীতে, বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), এবং অন্যরা পিটিআই-এর নেতৃত্বাধীন সরকার ছেড়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, যখন তারা বলল যে পিটিআইবিরোধীরা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ, তখন আমার তাদের সঙ্গে একমত হতে হয়েছিল। না হলে আমাকে বলা হতো যে আমি ইমরান খানকে রক্ষায় সহযোগিতা করেছি।