মুঘল মিনিয়েচার পেইন্টিং



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মিনিয়ার চিত্রে রাজকীয় মুঘল দরবার, ছবি: সংগৃহীত

মিনিয়ার চিত্রে রাজকীয় মুঘল দরবার, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগ্রা-দিল্লি ঘুরে: মুঘলদের ব্যাপার-স্যাপারই অন্য রকম। আলিশান কায়-কারবার। বিরাট বিরাট স্থাপনা। বিশাল আয়োজন। মধ্য এশিয়ার তুর্কি-ইরানি ঐতিহ্যের ছাপ।

ভারতকে মুঘলরা তাদের কয়েক শতকের শাসনে রাজসিক স্থাপত্য, বিপুল নির্মাণ আর শৈল্পিক সুষমায় ভরপুর করেছে। আগ্রা, ফতেহপুর সিক্রি, দিল্লি ছাড়াও উপমহাদেশের নানা স্থানে মুঘল কৃতিত্ব এখনও মানুষকে মোহিত করে।

বিশ্বের আশ্চর্যজনক দ্রষ্টব্য রূপে তাজমহল, আগ্রার দূর্গ, বুলন্দ দরওয়াজা, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, লালকেল্লা, জামে মসজিদ আজও বিস্ময় জাগায়। একেকটি নির্মাণ এতো বিরাট যে খুঁটিয়ে দেখলে সারা দিনেও শেষ হয় না।

বিশালত্বের পাশাপাশি শৈল্পিক কারুকাজ আর সৌন্দর্যের দিক থেকে মুঘল ঐতিহ্য অতুলনীয়। সূক্ষ্ম কাজ, কাঠামোর বিন্যাস, আগাগোড়া ছন্দের ভারসাম্য মুঘল স্থাপনাকে নান্দনিক গৌরবে ভূষিত করেছে।

সেই বিশাল ও বড় মাপের নির্মাণ কাজের নৈপুণ্যের পাশাপাশি মুঘলরা ছোট ছোট অতি সূক্ষ্ম শিল্পকর্মের নিদর্শনও রেখেছেন। মুঘলদের অসামান্য কৃতিত্ব হলো 'বিন্দুতে সিন্ধু' রচনা, যার নাম মিনিয়েচার পেইন্টিং। 

মিনিয়েচার পেইন্টিং-এর আক্ষরিক অর্থ ক্ষুদ্র চিত্র বা অনুচিত্র। তবে মূলগত দিক থেকে মিনিয়েচার শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে, যার অর্থ লাল মেঠো সিঁদুর। ঐতিহাসিকভাবে মধ্যযুগের ইউরোপে লাল মেঠো সিঁদুর দিয়ে পুস্তক বা পুঁথি ইত্যাদিতে চিত্রাবলী সংযোজনের প্রচলন ছিল। বইয়ের টেক্সটের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম চিত্র দিয়ে বিষয়কে প্রাঞ্জল ভাবে তুলে ধরার এই রীতিতে ছোট্ট পরিসরে শৈল্পিক নৈপুণ্যের ছাপ দেখতে পাওয়া যায়।

ভারতে মুঘল আমলে অনেক বিখ্যাত মিনিয়েচার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার এই চিত্রকর্ম মুঘলদের প্রবর্তিত, যা মূলত ক্ষুদ্র চিত্রশিল্প এবং যাকে বই হিসাবে অথবা ব্যক্তিগত অ্যালবাম হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে৷ চিত্রশিল্পটিতে পারস্যের চিত্রশিল্পের প্রভাব রয়েছে এবং তা  বৃহত্তর তুর্কি-চীনা চিত্রশিল্প দ্বারা প্রভাবিত৷

মুঘলরা ইরানি, পারসিয়ান, তুর্কি, চীনা ঐতিহ্যের সঙ্গে  ভারতের হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধ চিত্র শিল্পকলার  মিশ্রণ ঘটিয়ে অপূর্ব ও অভিনব মুঘল মিনিয়েচার উদ্ভব করেন, যা সারা বিশ্বে অনন্য ও অভিনব রূপে নন্দিত।  ১৬ শতক থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত সময়কালে  মিনিয়েচার চিত্রের স্বর্ণযুগ বিরাজমান ছিল, যা ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতে বিস্তৃতি লাভ করে৷ শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যেও এ চিত্রশিল্পের চর্চা লক্ষ্য করা যায়৷

মুঘল মিনিয়েচার চিত্রশিল্প পারস্য এবং ভারতের চিত্রশিল্পের এক ধরণের মিশ্রণ হলেও তা আগে থেকেই দিল্লির তুর্কী-আফগান সুলতানাতে প্রচলিত ছিল। দিল্লির মুসলিমদের মধ্যে ক্ষুদ্র চিত্রশিল্পের চর্চা ছিল, যা মুঘল সম্প্রদায়ের মাধ্যমে অধিগৃহিত হয়৷

মুঘলদের মতোই মধ্য এশিয়ার অন্যান্য বিজয়ী শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে বাইরের সংস্কৃতিকে ভারতে প্রবাহিত করে স্থানীয় ঐতিহ্য বিকাশে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন৷ মুঘলদের দ্বারা ভারত অধিকৃত হওয়ার পর পারস্যের চিত্রশিল্পের ধারার কিছু পরিবর্তন করা হয়৷ যেমন পারস্যের চিত্রশিল্পগুলোতে প্রাণী এবং বৃক্ষের ছবিগুলো যেভাবে দূর অবস্থানে ফুটিয়ে তোলা হত, মুঘল চিত্রশিল্পে এক্ষেত্রে প্রাণী ও গাছপালার ছবিগুলো আরও স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে অতি ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ণ আঁচড়ে।  

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবরের সময়কার কোনও চিত্রকর্ম অবশ্য পরবর্তীতে পাওয়া সম্ভব হয়নি৷ তার লেখা বাবরনামা হতেও এ সম্পর্কে জানা যায় না৷ সম্রাট আকবরের সময়ে অবশ্য বেশ কিছু চিত্রকর্ম প্রস্তুত করা হয়৷ কিছু কিছু শিল্পকর্মের উপর তার সীলও পাওয়া যায়৷ মুঘলরা যেহেতু সুদূর তিমুর-ফারগানা হতে ভারতে এসেছিলো, তাই তাদের উপর স্পষ্টতই পারস্যের সংস্কৃতির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়৷ আর এ কারণেই এ সকল বিজেতারা পারসিক সাহিত্য এবং শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন৷

মুঘল শাসন আমলে রাজ্যে সমৃদ্ধ  শিল্পশালা ছিল, যাতে বিশিষ্ট শিল্পীদের দ্বারা চিত্রকর্মগিলো তৈরি করা হত। ভালো ভালো আর্টিস্ট বা চিত্রশিল্পীদের রাজ দরবারে সমাদর করা হত৷ অনেক সময় একটি চিত্রকর্মের জন্য অনেক শিল্পীরা সম্মিলিত হয়ে একত্রিতভাবে কাজ করতেন৷

মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট হুমায়ুন পারসিক শিল্পের অনুরাগী ছিলেন এবং তিনি ইরানের তাব্রিজ চহর থেকে  দুজন পারসিক আর্টিস্ট আবদ আল সামাদ এবং মীর সাঈদ আলীকে নিয়ে আসেন৷ হুমায়ুনের  ভাই কামরান মির্জা কাবুলে একটি শিল্প কর্মশালা পরিচালনা করছিলেন৷ ধারণা করা হয় যে সম্রাট হুমায়ুন কর্মশালাটিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন৷ এ সময়কার উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম হলো 'খামসা অব নিজামি' যে কাজটিতে বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর চিত্রনৈপূন্যের অবদার স্পষ্ট প্রতীয়মান৷

মুঘল চিত্রশিল্পের চর্চা ও সর্বোচ্চ বিকাশ সম্ভবত সম্রাট হুমায়ূনের উত্তরাধিকারী সম্রাট আকবরের সময়কালে ঘটে৷ এ মহান সম্রাট শিল্প ও সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন৷ জানা যায় যে তরুণ বয়সে তিনি চিত্রশিল্পের উপর পড়াশোনাও করেন৷ এ সময়কার উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হল, তোতানামা, হামজানামা, গুলিস্তান, দারাবনামা ইত্যাদি৷ ১৫৭০ সাল হতে ১৫৮৫ সাল অবধি সম্রাট আকবর একশরও অধিক চিত্রকরকে মুঘল চিত্রশিল্পের কাজে নিযুক্ত করেন৷

পরবর্তীতে সম্রাট জাহাঙ্গীর শিল্প ও সংস্কৃতির অনুরাগী এবং পৃষ্টপোষক হিসাবে সমাদৃত ছিলেন এবং তার সময়ে মুঘল চিত্রশিল্পের উৎকর্ষ সাধিত হয়৷ তিনি ইউরোপীয় চিত্রকর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন এবং তার শাসনামলে মুঘল চিত্রশিল্প একটি নতুন মাত্রা লাভ করে৷ তার সময়ে রচিত জাহাঙ্গীরনামায় অনেক চিত্রকর্ম পরিলক্ষিত হয়৷

মুঘল মিনিয়েচার পেইন্টিং শুধু শিল্প নৈপুণ্যেই উজ্জ্বল নয়, ঐতিহাসিক উপাদান হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ। মুঘল ভারতের শাসন, প্রশাসন, সমাজ, রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক জীবনের ছাপ অতি নিপুণ ও স্পষ্ট  ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে মিনিয়েচার চিত্রে। মুঘল মিনিয়েচার পেইন্টিং ভারতের শিল্প-গৌরব ও ঐতিহ্যের অম্লান অংশীদার হয়ে এখনও বিশ্বের বিভিন্ন মিউজিয়াম ও সংগ্রহশালায় দীপ্তি ছড়াচ্ছে।   

   

মস্কোতে সন্ত্রাসী হামলায় এখনও নিঁখোজ প্রায় ১০০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে সন্ত্রাসী হামলায় সর্বশেষ নিহতের সংখ্যা ১৪০ জন বলে জানিয়েছে রাশিয়া। তারা জানিয়েছে ওই হামলায় আহতের সংখ্যা ১৮২ জন। হামলার পর ৯৫ জনের মতো এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

বাজা নিউজ সার্ভিসের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এই তালিকায় এমন লোকও রয়েছেন যাদের সঙ্গে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে আত্মীয়রা যোগাযোগ করতে পারেননি। এর মধ্যে যারা মারা গেছেন, তবে এখনও তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

গত ২২ মার্চ রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছিল। হামলার সময় সামরিক ইউনিফর্ম পরা চার সন্ত্রাসী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে, বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এর আগে সন্ত্রাসীর সংখ্যা পাঁচ বলে জানানো হয়েছিল।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া গেছে পাঁচ শতাধিক রাউন্ড গুলি। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারপারসন দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ‘রাশিয়া রক্ত ​​দিয়ে এর প্রতিশোধ নেবে। সন্ত্রাসীরা বোঝে শুধু সন্ত্রাসের ভাষা। বলপ্রয়োগ না করলে এবং সন্ত্রাসীদের পরিবারসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তদন্ত করে কোনও লাভ নেই।’

আরটি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পরিকল্পনা করেই ওই সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। আক্রমণকারীদের জন্য ক্রোকাস সিটি হলে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

মস্কোর দাবি, একজন অভিযুক্ত হামলাকারী অপরাধ স্বীকার করে পুরো পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। প্ল্যান ছিল, হামলাকারীরা আক্রমণ করার ইউক্রেনের দিকে চলে যাবে। এক্ষেত্রে তিন হামলাকারীর ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। রাশিয়া বলেছে, সন্ত্রাসীরা পুরো হল পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তদন্তের সময় হলটিতে রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া গেছে।

এদিকে, ওই হামলার পর থেকে ভিকটিমদের খুঁজে পেতে সাহায্য করার আবেদন জানিয়েছে রাশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো। ‘ক্রোকাস হেল্প সেন্টার’ নামক একটি টেলিগ্রাম চ্যাটে জড়ো হওয়া ভিকটিমদের বন্ধু এবং আত্মীয়রাও নিজেদের মতো করে খোঁজ চালাচ্ছেন।

এদিকে, বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ব্যক্তিকে মৃত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে, যেমন ১৫ বছর বয়সি আর্সেনি, যিনি তার মা ইরিনা ভেদেনেইভার সঙ্গে কনসার্টে গিয়েছিলেন। রবিবার শট টেলিগ্রাম চ্যানেল আর্সেনির একটি ছবি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, তিনি কনসার্ট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে দাদিকে এই ছবি পাঠিয়েছিলেন এবং তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

তার মাকে ইতিমধ্যেই মৃত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত নিশ্চিত মৃতদের তালিকায় মা ও ছেলে উভয়ের নাম রয়েছে।

;

কাশ্মিরে হাইওয়ে থেকে বাস খাদে পড়ে ১০ জনের মৃত্যু



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত-শাসিত জম্মু-কাশ্মিরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই অভিবাসী শ্রমিক। তারা শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাদের বহনকারী গাড়িটি হাইওয়য়ে থেকে ৩০০ ফুট গভীরে একটি খাদে পড়ে গেলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মিরের শ্রীনগর-জম্মু মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী গাড়ি গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পরে দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে এবং গাড়িটি রামবান জেলার ব্যাটারি চেশমা ​​নামক স্থানে ৩০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়।

এনডিটিভি বলছে, নিহতরা অভিবাসী শ্রমিক এবং তারা শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিলেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য কাশ্মিরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশও সেখানে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।

লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এই প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, নিহতদের পরিবারকে সকল সহায়তা দেওয়া হবে।

;

পাথর ছুড়ে নারী হত্যার প্রথা ফেরাচ্ছে তালেবান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে নারীকে পাথর ছুড়ে হত্যার প্রথা আবারও চালু করতে যাচ্ছে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। 

শনিবার রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত এক অডিও বার্তায় তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এই ঘোষণা দেন। 

টেলিগ্রাফ ও এনডিটিভি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, টেলিগ্রাফের হাতে আসা এক ভিডিওতে আখুন্দজাদা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নারীদের অধিকারের পক্ষে যে ওকালতি করছে তা শরিয়াহ-বিরোধী। পাথর মেরে কোনো নারীকে হত্যা করার ঘটনা নারী অধিকারের লঙ্ঘন বলে ভাবছেন তারা। কিন্তু আমরা শিগগিরই ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে এই নিয়ম কার্যকর করব। আমরা নারীদের জনসমক্ষে বেত্রাঘাত করব। আমরা তাদের জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করব।’

তিনি আরও বলেন, কাবুল দখল নিয়েই তালেবানের কাজ শেষ হয়নি, এটি কেবল শুরু মাত্র।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানের নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে কোনো প্রবেশাধিকার নেই।

একজন তরুণ ছাত্রের বরাত দিয়ে এএফপি বলেছে, দেশটিতে অনেক পরিবারের জন্য মেয়েদের একমাত্র ভবিষ্যৎ হলো বিয়ে। তাদের মধ্যে বিষণ্নতা ব্যাপক। গত দুই বছরে মেয়েদের আত্মহত্যার হারও অনেক বেড়েছে দেশটিতে। 



;

হার্ভার্ড লাইব্রেরির বই বাঁধাই থেকে মানুষের চামড়া অপসারণ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লাইব্রেরিতে গত ৯০ বছর যাবত সংরক্ষিত ছিল মানুষের চামড়ায় বাঁধানো একটি বই। বুধবার (২৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, এ বইটি থেকে মানুষের চামড়া অপসারণ করা হয়েছে।

সংবাদ মাধ্যম এএফপি’র মাধ্যমে জানা যায়, ঊনবিংশ শতকের বই ডেস ডেস্টিনেস দে ল’আমে বা আত্মার নিয়তি। পরবর্তীতে বইটি নিয়ে গবেষণা হয়। ২০১৪ সালে জানা যায়, এক মৃত নারীর চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা হয় এই বই।

হার্ভার্ড জানিয়েছে, বইটির বাঁধাই অপসারন করা হয়েছে এবং উল্লেখ করেছে, ‘বইটির তদারককারীদের অতীতের ব্যর্থতা যা মানুষের মর্যাদাকে আরও আপত্তিকর এবং যার দেহাবশেষ বাঁধাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল তাকে হেয় করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ফরাসি লেখক আর্সিন হোসায়ের লেখা বইটির প্রথম মালিক ছিলেন ড. লুডোভিচ বোল্যান্ড। তিনি এক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ওই হাসপাতালের এক মানসিক রোগী হৃদরোগে মারা গেলে তার চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেন ড. বোল্যান্ড। বোল্যান্ড একটি নোটে হাউসেয়েকে বলেছিলেন: ‘মানুষের আত্মা সম্পর্কে একটি বই মানুষের ত্বকের আবরণ পাওয়ার যোগ্য।’

বুধবার হার্ভার্ড বিবৃতিতে বলেছে, বইটির সাথে সম্পর্কিত বোল্যান্ডের স্টুয়ার্ডশিপ অনুশীলনগুলো ‘নৈতিক মানগুলোর স্তর পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ এতে বলা হয়, বইটি মানুষের ত্বকে আবদ্ধ ছিল তা নিশ্চিত করার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের পরে লাইব্রেরি ব্লক পোস্টে বইটি সম্পর্কে ‘একটি চাঞ্চল্যকর, বিষাদগ্রস্ত এবং হাস্যকর টোন ব্যবহার করেছে যা অনুরূপ আন্তর্জাতিক মিডিয়া কভারেজকে উৎসাহিত করে।’

২০২২ সালে হার্ভার্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির সংরক্ষণে রয়েছে আরও ২০ হাজারেও বেশি মানব দেহাবশেষ, যার মধ্যে আছে কঙ্কাল, দাঁত, চুল, এবং হাড়ের অংশ।

;