মানব পাচার থাবা ভারতের উত্তর-পূর্বে



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে মানব পাচারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাত কন্যা বা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যে বিগত তিন বছরে (২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে) প্রায় ২৮ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন।

ভারতের রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী এই তথ্য স্বীকার করেছেন। তাছাড়া ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে মোট ২৭,৯৬৭ জন নিখোঁজ হওয়ার তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে৷

প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন আসাম রাজ্য থেকে, সংখ্যার হিসাবে তা ১৯,৩৪৪ জন। তাছাড়া ত্রিপুরা থেকে ৪৪৫৫ জন, মেঘালয় থেকে ১৩৮৫ জন, মণিপুর থেকে ৯৯৯ জন, সিকিম থেকে ৯৭৪ জন, অরুণাচল থেকে ৪৫৭ জন, নাগাল্যান্ড এবং মিজোরাম থেকে যথাক্রমে ৩৪৩ এবং ১০ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন।

মানব পাচারের সমস্যার পেছনে সংঘবদ্ধ অপরাধী গোষ্ঠীর ভূমিকা রয়েছে বলে ভারতের অনেকগুলো দায়িত্বশীল সূত্র এবং গবেষণা সংস্থা মনে করে। 'নারী ও শিশু পাচার চক্র উত্তর-পূর্ব ভারতে অত্যন্ত সক্রিয়' বলে রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে স্বীকারোক্তি করতে বাধ্য হয়েছেন খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি৷ তিনি জানিয়েছেন বিস্তারিত পরিসংখ্যানও।

মন্ত্রীর দেওয়া ভাষ্যানুযায়ী, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের পুরো তথ্য এখনও সরকারের হাতে আসেনি। ২০১৫ সালে আসাম থেকে ২১৬৯ জন শিশু, ২৬১৩ জন মহিলা এবং ১৫২৮ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ২৪১৩ জন শিশু, ৩৪৩৯ জন মহিলা এবং ২১৩০ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন।

মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে ১৬৫১ জন শিশু, ২৪৫৩ জন মহিলা এবং ৯৪৮ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ত্রিপুরায় ২০১৫ সালে ১৭৯ জন শিশু, ৫৮৩ জন মহিলা এবং ৪০১ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে ১৬৬ জন শিশু, ৯৩৩ জন মহিলা এবং ৬৪২ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। মেঘালয় থেকে ২০১৫ সালে ১৭৯ জন শিশু, ১৩৮ জন মহিলা এবং ১২৬ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ১৮৪ জন শিশু, ১৫৯ জন মহিলা এবং ১৫৫ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে ১৪৮ জন শিশু, ১৩৬ জন মহিলা এবং ১৬০ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। মনিপুর থেকে ২০১৫ সালে ৭০ জন শিশু, ৪৬ জন মহিলা এবং ৫২ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ১৮৬ জন শিশু, ১৫৪ জন মহিলা এবং ১৫৪ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে ৯৭ জন শিশু, ১৩১ জন মহিলা এবং ১০৯ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। সিকিম থেকে ২০১৫ সালে ১১৯ জন শিশু, ৭৭ জন মহিলা এবং ৫৬ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ১৫০ জন শিশু, ৬৬ জন মহিলা এবং ৩৭ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৭ সালে ৮৮ জন শিশু, ২২৫ জন মহিলা এবং ১৫৬ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। অরুণাচল প্রদেশ থেকে ২০১৫ সালে ১০৫ জন শিশু, ৩২ জন মহিলা এবং ১৮ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ৬১ জন শিশু, ৩৪ জন মহিলা এবং ১৩ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে ৭৪ জন শিশু, ১১২ জন মহিলা এবং ৮ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। নাগাল্যান্ড থেকে ২০১৫ সালে ৩৪ জন শিশু, ১৭ জন মহিলা এবং ১১ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সালে ৭৭ জন শিশু, ২০ জন মহিলা এবং ১৯ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে ১০৩ জন শিশু, ৪০ জন মহিলা এবং ২২ জন পুরুষ নিখোঁজ হয়েছেন।

পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অপর একটি তথ্যও দিয়েছেন। উত্তর পূর্বের ৮ রাজ্য থেকে ২০১৫-১৭ সালের মধ্যে ৫১৩০ টি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৭৬ টি শিশু আসামের, ৪৭২ জন ত্রিপুরার, ৩৭৭ জন মেঘালয়ের, ২৭৭ জন মনিপুরের, ২৬৯ জন সিকিমের, ১৯২ জন নাগাল্যান্ডের, ১৬৩ জন অরুণাচল প্রদেশের এবং ৪ জন মিজোরামের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মানব পাচার সমস্যাকে অন্যতম প্রধান বিপদ বলে মনে করা হচ্ছে। নারী ও শিশু পাচারের নেটওয়ার্ক দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ছড়িয়ে গেছে। ফলে সমস্যাটি রাষ্ট্রীয় সমস্যার গণ্ডি পেরিয়ে আন্তরাষ্ট্রীয় তথা আঞ্চলিক সমস্যা রূপে পরিগণিত হচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা ও থিঙ্কট্যাঙ্কের বরাতে জানা যাচ্ছে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় মাদক-সন্ত্রাস-অস্ত্র চোরাচালানের পাশাপাশি মানব পাচার সমস্যাটিও ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব সমস্যা রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি স্বরূপ, যা শান্তি-স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বিনষ্ট করছে।

মানব পাচার সমস্যা নিয়ে কাজ করে, এমন কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের মতে, পাচার করা মানবের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। যাদেরকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন কুখ্যাত পতিতালয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসায় লিপ্ত করা হয়। তাছাড়া যৌনাত্মক চলচ্চিত্র নির্মাণ, কঠিন শ্রমে বাধ্য করা ইত্যাদিতেও পাচারকৃতদের নিয়োজিত করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, টাকা দিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র ও পশ্চাৎপদ সমাজ থেকে নারী ও শিশুদের নিয়ে পাচার করা হয়। কখনো চাকরির নামে নারী ও শিশুদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়, যারা আর কখনোই স্বগৃহে ফিরে আসে না।

মানব পাচারকে বর্তমানে তুলনা করা হয় আধুনিক 'দাস ব্যবসা' নামে। কোটি কোটি টাকায় হাজার হাজার নারী ও শিশুকে পাচার করে অবৈধভাবে দেশে-বিদেশে কেনা-বেচা করা হয়। নানা ধরনের যৌন নিপীড়ন ও শ্রমে নিয়োজিত করা ছাড়াও কখনো কখনো পাচারকৃতদের রক্ত, কিডনি, চক্ষু ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করা হয়। বর্তমান বিশ্বে অবৈধ ব্যবসার মধ্যে অস্ত্র, মাদক ও মানব পাচার টাকার অঙ্কে শীর্ষস্থানীয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় মানব পাচার রোধে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ চলছে। তথাপি সমস্যাটি রোধ করা বা কমিয়ে আনা যাচ্ছেনা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মানব পাচারের থাবা বিস্তারের তথ্য বরং এ সমস্যার বিস্তারের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা সমস্যাটিকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তাকেই তীব্রভাবে সামনে নিয়ে এসেছে।

   

ছত্তিশগড়ে শীর্ষ মাওবাদী নেতাসহ নিহত ২৯



ziaulziaa
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের নিরপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ২৯ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

নিহতদের মধ্যে শঙ্কর রাও নামের একজন প্রবীণ নেতাও রয়েছেন, যার মাথায় মূল্য হিসাবে ২৫ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার বিকালে ছত্তিশগড়ের কাঙ্কের জেলায় জেলা রিজার্ভ গার্ড ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের এক যৌথ অভিযানে ওই মাওবাদীরা নিহত হন। তাদের কাছ থেকে একে-৪৭ ও ইনসাস রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

ছত্তিশগড়ের বিনাগুন্ডা গ্রামের কাছে বনে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিরাপত্তা বহিনীর তিন সদস্য আহত হয়েছেন।

আহত তিনজনের মধ্যে দুজন বিএসএফের সদস্য। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তিনজনই স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত মাসে এই জেলায় আরেকটি অভিযানে হয়েছিল একজন মাওবাদী এবং একজন পুলিশ নিহত হয়েছিল।

;

মেলোনিকে ‘হৃদয়ে নব্য-নাৎসি’ বলায় ঐতিহাসিকের বিরুদ্ধে মামলা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন ঐতিহাসিকের বিরুদ্ধে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির করা মানহানির মামলা মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) গ্রহণ করেছেন দেশটির একটি আদালত।

এনডিটিভি জানিয়েছে ওই ঐতিহাসিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি মেলোনিকে ‘হৃদয়ে নব্য-নাৎসি’ বলে মন্তব্য করেছেন।

ইতালির ব্রাদার্স পার্টির নেতা মেলোনি ঐতিহাসিক নির্বাচনে জয়ের পর দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাস আগে ৮১ বছর বয়সি ওই ঐতিহাসিক তথা বামপন্থী নেতা লুসিয়ানো ক্যানফোরা দক্ষিণ ইতালির বারিতে একটি স্কুল বিতর্কের সময় ওই মন্তব্য করেছিলেন।

মেলোনি দায়ের করা মানহানি মামলার শুনানি আগামী ৭ অক্টোবর শুরু হবে বলে জানা গেছে।

মেলোনি এর আগে গত বছর সাংবাদিক রবার্তো সাভিয়ানোর বিরুদ্ধে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তার অবস্থানের সমালোচনা করায় মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় রবার্তোকে এক হাজার ইউরো জরিমানা করেছিল ইতালির একটি আদালত।

২০২৩৪ সালের জুলাইয়ে ইতালিতে একটি পারফরম্যান্সের সময় তাকে বর্ণবাদী এবং ফ্যাসিস্ট বলে অভিহিত করায় ব্রিটিশ রক ব্যান্ড প্লেসবোর ফ্রন্টম্যানের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছিলেন তিনি।

;

জার্মানির লাইপজিগ চিড়িয়াখানা থেকে বিরল সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাক চুরি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জার্মানির লাইপজিগ চিড়িয়াখানা থেকে একটি বিরল সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাক চুরি হয়েছে। গত ৩০ মার্চ (শনিবার) মধ্য রাতে জার্মান রাজ্যের স্যাক্সনি অঞ্চলের চিড়িয়াখানায় রুমা নামে মহিলা ম্যাকাকটি তার খাঁচা থেকে চুরি করা হয়।

এ ঘটনায় জার্মানির পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, চুরির পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা আমরা জানি না, তবে আমরা প্রাণীটির স্বাস্থ্যের বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এর সঠিক যত্নের জন্য বিশেষজ্ঞের জ্ঞান প্রয়োজন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা খুব আশা করি যে প্রাণীটিকে অক্ষত অবস্থায় সুরক্ষিত করা হবে বা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, শনি থেকে রোববার রাতে অজানা ব্যক্তিরা লাইপজিগ চিড়িয়াখানার মাঠে প্রবেশ করে জোর করে বানরের ঘেরটি খুলে দেয়। পরে একটি মহিলা সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাক চুরি করে এবং প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পুলিশ জায়গাটিকে সুরক্ষিত করেছে এবং হারানো প্রাণীটিকে খোঁজার চেষ্টা করছে। কর্মকর্তা বা প্রত্যক্ষদর্শী যাদের কাছে এমন কোনো তথ্য আছে তাদের যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাক হল ওল্ড ওয়ার্ল্ড বানরের একটি প্রজাতি, যা ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণীর বনাঞ্চলে বসবাস করে।

প্রাইমেটরা এটিকে সহজেই চিনতে পারে। এর আকর্ষণীয় ধূসর বা সিলভার চুল তাদের মুখকে ঘিরে থাকে এবং তাদের লেজের ডগায় সিংহের মতো, কালো লেজের টুফ্ট।

মাত্র কয়েক হাজার সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাক রয়েছে বলে মনে করা হয়। আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এ প্রাণীকে
বিপন্ন বলে মনে করে।

;

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিতেই ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা জোটে অংশ নিয়েছিল সৌদি আরব ও জর্ডান দাবি করেছে তেল আবিবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেএএন নিউজ। তবে, এই দাবি অস্বীকার করেছে দেশ দুটি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিতেই ইচ্ছে করেই সৌদি-জর্ডানের নাম জড়িয়েছে ইসরায়েল।

সৌদি সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের হামলা ঠেকানোর সঙ্গে সৌদি আরব জড়িত নয়। একই দাবি করেছে জর্ডানও।

আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সংবাদ মাধ্যমে সৌদি আরবের সরকারি একটি ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে একদিন আগে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ইরানের আক্রমণ থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষা জোটে অংশ নিয়েছে সৌদি আরব। কিন্তু সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সূত্রগুলো এই তথ্য অস্বীকার করেছে।

এর আগে, ওই ওয়েবসাইটে বলা হয়, ইরানের ছোড়া ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সৌদি আরব নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের পাশাপাশি ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক জোটকে সহযোগিতা করেছে।

সহযোগিতার নেপথ্যে কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব মনে করে, গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরান এই সংঘাতে ফায়দা তোলার পরিকল্পনা করছে এবং সম্প্রতি যে হামলা তেহরান পরিচালনা করেছে, তা সেই পরিকল্পনার অংশ।

সৌদির একাধিক সূত্র আল-আরাবিয়াকে জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের চালানো হামলা ঠেকাতে সৌদির অংশগ্রহণ সম্পর্কে যে ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, আসলে সৌদি আরবের এমন কোনো সরকারি ওয়েবসাইটের অস্তিত্বই নেই।

এদিকে জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ বলেন, এটা ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তার আগে ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য আরেকটি যুদ্ধ সহ্য করার সক্ষমতা রাখে না। তাই এখানে উত্তেজনা প্রশমন করাই হবে সবার অগ্রাধিকার।

ইসলামাবাদ সফরের প্রাক্কালে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেনসহ ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা সংযত থাকতে বললেও ইরানের হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি।

আর ইরান বলছে, তাদের ওপর যেকোনো রকম হামলার ভয়াবহ জবাব দেওয়া হবে। দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাগেরি কানি বলেছেন, জবাব দেওয়া হবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। এক্ষেত্রে ইরান এমন অস্ত্র ব্যবহার করবে, যা আগে কখনো ব্যবহার হয়নি।

;