আর্থিক সংকটে তুরস্কে হত্যা-আত্মহত্যা বেড়েই চলেছে
আর্থিক সংকটে তুরস্কে হত্যা ও আত্মহত্যা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি ইস্তাম্বুল ও আন্টালিয়ায় খুন-আত্মহত্যা তুরস্ককেও ধাক্কা দিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি তুরস্কে তিনটি পরিবারে ঘটে যাওয়া হত্যা ও আত্মহত্যার পেছনে কারণ ছিল আর্থিক সংকট। যার ফলে তারা মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিল। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীরা বলছে, বেকারত্ব এবং ভঙ্গুর অর্থনীতি মানুষকে মৃত্যুর দিকে চালিত করছে।
গত ১৫ নভেম্বর ছিল শুক্রবার। ইস্তাম্বুলের বাকিরকয় পাড়ার একটি অ্যাপার্টমেন্টের ভেতর থেকে প্রতিবেশীরা রাসায়নিক গন্ধের অভিযোগ করে পুলিশকে। পরে পুলিশ অ্যাপার্টমেন্টের দরজা খুলে ভিতরে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, সায়ানাইডযুক্ত দ্রবণ দিয়ে এক ৩৮ বছর বয়সী জুয়েলারী ব্যাবসায়ী নিজেকে, তার স্ত্রী এবং তাদের ৬ বছরের কন্যাকে বিষ প্রয়োগ করেন। এ ঘটনার আগে ওই ব্যবসায়ীর আর্থিক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। তবে এটাই নতুন নয়। কিছুদিন আগেও একই পরিবারে ৪ জন সায়ানাইডের বিষে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তুরস্ককের মানুষ বেশ হতবাকও হয়।
সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মরদেহগুলো উদ্ধারের সময় দেখা যায়, ফাতিহের অ্যাপার্টমেন্টটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বেশ কয়েকমাস ধরে তারা তাদের বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারেননি বলেও জানা গেছে।
এই মৃত্যু তুরস্কের দারিদ্র্য, ঋণ এবং বেকারত্বের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। পরবর্তীতে এই মৃত্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতারাও প্রশ্ন তুলেছে। তারা বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন "এটা কেন হল?"
পর্যবেক্ষকরা খেয়াল করেন যে এই মামলার সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সহায়তা সংস্থা সাইমন ইভের দারিদ্র্যের গবেষক হেসার ফোগো বলেন, "আত্মহত্যাকে নিখুঁতভাবে স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত হিসাবে ভাবা ভুল, এটি পুরোপুরি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়।"
সরকারি কর্মকর্তারা তুরস্কে সহজে সায়ানাইড পাওয়া ও বিক্রির জন্য এই মৃত্যু হয়েছে বলে দোষারোপ করছেন। তারা সায়নাইড ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞার আহ্বানও জানিয়েছেন।
তুরস্কের পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট অনুসারে, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ১৬১ জন আত্মহত্যা করেছিল। ২০০২ সালে একেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আত্মহত্যা ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সাত বছর ধরে আত্মহত্যার হার ধারাবাহিকভাবে আরো বেড়েছে।