গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে জার্মানির অর্থমন্ত্রীর মন্তব্যে চটেছে যুক্তরাষ্ট্র
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরবৃত্তির মধ্যে কোনো তফাত নেই—জার্মানির অর্থমন্ত্রী পিটার আল্টমেইয়ের মন্তব্যে বেজায় চটেছেন দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে এক করে দেখার মধ্যে নৈতিকতার ঘাটতি রয়েছে। আর যারা এটি করেন, তারা ইতিহাসকে অস্বীকার করেন।
দুই মিত্র দেশের মধ্যে বনিবনার সূত্রপাত হয় চীনের টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে। নিজ দেশে হুয়াওয়ের ফাইভ-জি সুবিধা চালুর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি চায়, মিত্র দেশগুলোও তাকে অনুসরণ করুক।
তবে, ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি হাঁটছে উল্টো পথে। চীনের হুয়াওয়েকে অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক দেশটির সরকার। চীন জার্মানির সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, হুয়াওয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফাইভ-জি সুবিধা দেওয়ার নামে এই টেক কোম্পানির মাধ্যমে অনেক গোপন তথ্য হাতিয়ে নেবে চীন। এ জন্য হুয়াওয়ের কার্যক্রমকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
হুয়াওয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সন্দেহবাতিক আচরণে খোঁচা মারেন জার্মানির অর্থমন্ত্রী পিটার আল্টমেইয়ের। রোববার (২৪ নভেম্বর) এক টেলিভিশন বিতর্কে তিনি ২০১৩ সালে ন্যাটো দেশগুলোর নেতাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) নজরদারির কথা উল্লেখ করেন। জানা যায়, এনএসএ জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের ওপর নজরদারি করেন।
জার্মানির অর্থমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অমিত্রসুলভ আচরণের পরও তার দেশটি কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। আল্টমেইয়ের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র (সরকারও) সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করতে তাদের কোম্পানিগুলোর কাছে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য চাওয়া আর চীনের গোয়েন্দা সংস্থাকে হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে তথ্য দেওয়ার সম্ভাব্যতা এক করে দেখায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গ্রেনেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকাণ্ডকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমতুল্য করে দেখার মাধ্যমে জার্মানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত হাজার হাজার মার্কিন সেনা আর শক্তিশালী পশ্চিমা জোট গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ লাখো লাখো মার্কিনিদের অপমাণ করা হয়েছে।
দীর্ঘদিনের মিত্র জার্মানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের চড়াই-উতরাই চলছে। সম্প্রতি একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, তিন-চতুর্থাংশ মার্কিনি দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপারে ইতিবাচক। তবে, দুই-তৃতীয়াংশ জার্মান মনে করে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ।