২০২০ নির্বাচন: মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক রূপান্তর কত দূর



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়

মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের এখনও এক বছর বাকি। মিয়ানমারের ইতিহাসে কেবল ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনকেই অবাধ ও নিরপেক্ষ বিবেচনা করা হয়, যার ফলাফলও সবার কাছে স্বীকৃতি পায়।

২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন গণতান্ত্রিক মানদণ্ড কতটা পূরণ করবে, সেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ সম্পর্কে মিয়ানমারের দুই জন বিশেষজ্ঞ স্থানীয় গণমাধ্যমে মতামত দিয়েছেন। তারা হলেন—পিপলস অ্যাসাইন্স ফর ক্রিডিবল ইলেকশনের (পিএসিই) নির্বাহী পরিচালক কো সাই ইয়ে কিউ এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর এ নিউ সোসাইটির (ডিপিএনএস) ভাইস চেয়ারম্যান মা নো নো হেতে সান।

পিএসিই’র নির্বাহী পরিচালক কো সাই ইয়ে কিউ বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমারের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ২০১৫ সালের নির্বাচন তুলনামূলকভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিল এবং এর ফলাফল স্বীকৃত হয়েছিল। ১৯৯০ সালের নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হলেও সামরিক সরকার ফলাফলের স্বীকৃতি দেয়নি। ২০১৫ সালের নির্বাচনের লক্ষ্য ছিল সমারিক নিয়ন্ত্রণ থেকে গণতান্ত্রিক সরকারে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার শুভ সূচনা। এটি নিশ্চিত যে, ২০২০ সালের নির্বাচন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যদি তা না হয় কিংবা নির্বাচন স্থগিত হয় তাহলে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি বলেন, ইদানীং আমরা গুজব শুনছি যে, নির্বাচন সামনে এগিয়ে আনা হবে বা পিছিয়ে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এই ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরে, কেন্দ্রীয় (ইউনিয়ন) নির্বাচন কমিশনকে (ইউইসি) একটি নির্দিষ্ট মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে সন্দেহ দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

কো সাই ইয়ে কিউ আরও বলেন, ২০১৫ সালের নির্বাচন যদি ক্ষমতা স্থানান্তরের জন্য হয় তবে ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো গণতন্ত্রের মানদণ্ড নির্ধারণ। বর্তমান নির্বাচনী আইন ২০০৮ সালের সংবিধান থেকে নেওয়া হয়েছে, যা সামরিক শাসনকর্তারা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে তৈরি করেছিলেন।

তিনি বলেন, এই আইনগুলো ২০২০ সালের পরিস্থিতি অনুসারে আর উপযুক্ত নয়। সুতরাং প্রশ্ন কিভাবে এটাকে আরও গণতান্ত্রিক করা যায়। মূল চ্যালেঞ্জটি হলো—প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের জন্য কতটা সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে পারা যায়, যেটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।

নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন কতটা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং স্বাধীন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বর্তমান আইনি কাঠামোর আওতায় কমিশন কেবল ক্ষমতাসীন দলের কাছে দায়বদ্ধ। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, বলেন কো সাই ইয়ে কিউ।

তিনি বলেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইউ থেইন সেইনের প্রশাসন এই নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল। দেখা যাচ্ছে যে, এটা নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্র সদস্যদের আচরণের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। উপরের নির্দেশে কমিশনের কর্তাব্যাক্তিরা আইনি পদক্ষেপ তাদের পক্ষে নিতে পারেন। এই আইনি কাঠামো সংশোধন করে মৌলিক পরিবর্তন করা উচিত।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর এ নিউ সোসাইটির (ডিপিএনএস) ভাইস চেয়ারম্যান মা নো নো হেতে সান বলেন, ডিপিএনএস ১৯৮৮-এর পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটা মাত্র কয়েকটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। দলটি ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। মিয়ানমারে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য দলীয় ব্যবস্থা অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে। দলীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণকারী আইনের পরিবর্তন জরুরি। দলগুলোর নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বরাবরই অচলাবস্থায় দেখেছি। আমরা কিছু করতে চাইলে আমাদের কমিশনের কাছে অ্যাপ্লিকেশন জমা দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা দরকার। নির্বাচনী সমস্যাগুলোর সমাধান করা কমিশনের দায়িত্ব। রাজনৈতিক দলগুলো কেবলমাত্র তাদের প্রতিনিধিত্বকারী জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এবং কোনও সংস্থাকে তাদের কার্যক্রম অবহিত করার কোনও দায়বদ্ধতা নেই। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করে রাখছে। আমরা যখন নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য দলগুলোর সাথে একত্রে গণতন্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করি তখন নির্বাচন কমিশন বিধিনিষেধ আরোপ করে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ছোট জেলা শহরে আয়োজক কমিটিগুলোর কার্যক্রম চালাতে বিভিন্ন আইনি বাধা আরোপ করেছে। আমি মনে করি না নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম এমন হওয়া উচিত। দলগুলোর উন্নতি ও বিকাশের জন্য তাদের সীমাবদ্ধ না করে উৎসাহিত করা উচিত। ২০০৮ সালের সংবিধান গঠনের জন্য পূর্ববর্তী সামরিক সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

বর্তমান সরকার ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর থেকে যা করা উচিত ছিল তা করেনি। তাই দলগুলোর প্রশ্ন—কেন ক্ষমতাসীন সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি আইনের কোন পরিবর্তন করেনি। নির্বাচনী আইন পর্যালোচনা করা দরকার, সাংবিধানিক সংস্কারের পাশাপাশি সংশোধন করা দরকার, আবার কিছু আইন দীর্ঘমেয়াদে বদলানো দরকার। নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং নির্বাচনী আকারের পরিবর্তন আনাও জরুরি।

মা নো নো হেতে সান আরও বলেন, ২০২০ সালের নির্বাচন যদি আমরা গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠু করতে চাই এবং সমস্ত প্রতিযোগীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে চাই তবে প্রথমে কমিশনকে স্বচ্ছতা দেখাতে হবে। এটা করার জন্য রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা দরকার। এটা হলেই নির্বাচনের তারিখ নিয়ে গুজব থামবে এবং জনসাধারণের সন্দেহ দূর হবে। সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোকে নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে অংশ নিতে এবং অবাধে জরিপ চালানোর অনুমতি দেওয়া দরকার। প্রচার-প্রচারণার নিয়মাবলী প্রকাশ করা উচিত।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীরা যদি রাষ্ট্রীয় তহবিল ব্যবহার করেন তবে তার রূপরেখা তৈরি করা দরকার। ভোটার তালিকা ঠিক করা প্রয়োজন। কোন দল ক্ষমতায় রয়েছে তার দিকে না তাকিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মানদণ্ড নির্ণয়ে মনোনিবেশ করা দরকার। সব রাজনৈতিক দল যেন সমানভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে সেটাই নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বর্তমান নির্বাচন কমিশন মিডিয়া ও সুশীল সমাজ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে।

হেতে সান আরও বলেন, আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলছি। তবে সেনাবাহিনী নির্বাচনে অংশ না নিয়ে সংবিধানের আওতায় সংসদে ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে। এটা ছোট দলগুলোর পক্ষে প্রচার চালানো কঠিন করে তোলে, রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে সম্ভাব্য আসনগুলো সরিয়ে দেয়। যখন আসনগুলো কেড়ে নেওয়া হয় তখন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে কিনা তা নিয়ে রাজনীতিবিদদের সন্দেহ রয়েছে। নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা খুব জরুরি। দলগুলোকে গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার সঙ্গে জনসাধারণের সমর্থন চাওয়া উচিত। দলগুলোকে বুঝতে হবে যে, লোকেরা কেন তাদের নির্বাচন করে এবং নির্বাচিতরা কার প্রতিনিধিত্ব করেন সে সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করা উচিত। তবেই নির্বাচনটি অর্থবহ হবে।

   

ভারতে প্রথম দফায় ভোটের হার ৬০%



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে সাত ধাপে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় রেকর্ডসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবগুলো আসন মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভোট হয়েছে তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, আন্দামান-নিকোবর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, পুদুচেরি, সিকিম, লাক্ষাদ্বীপসহ মোট ২১ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে।

প্রথম দফার ভোটে প্রায় ২ হাজার প্রার্থীর ভাগ্য পরীক্ষা করবেন ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ভোটার। এরমধ্যে তরুণ ভোটার রয়েছেন ৩ কোটি ৫১ লাখ। আর প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ভোটার। প্রথম দফায় মোদি সরকারের ছয় শীর্ষ মন্ত্রী ছাড়াও বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে।

নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মধ্যে মূল লড়াই হতে যাচ্ছে। জোটগতভাবে ৪০০ আসন জয়ের স্বপ্ন দেখছে ক্ষমতাসীন জোট এনডিএ। আর এককভাবে ৩৭০ আসনের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে জোটটির মূল দল ভারতীয় জনতা পার্টি।

তবে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার লোকসভা আসনে। স্থানীয় শীতলকুচি এবং মাথাভাঙ্গায় সকাল থেকেই বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করছে ভারতীয় গণমাধ্যম। আর বরাবরের মতোই সহিংসতার জন্য দায় একে অপরের কাছে চাপিয়েছেন রাজ্যের দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন সাতটি ধাপে মোট ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। ভোটারের এই সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগেরও বেশি।

দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ২৬ এপ্রিল। পরবর্তী ধাপগুলোর ভোট হবে যথাক্রমে, ৭ মে, ১৩ মে, ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

;

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন আরও ৬৩ জন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরাইলে হামলা চালায় ইরান। এর প্রতিত্তোরে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য আলোচিত শহর ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি।

এমন পরিস্থিতিতে গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪ হাজার ১২ জন নিহত হয়েছেন। এসময়ে আরও ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জনে। এছাড়াও গাজায় কয়েক ডজন ইসরায়েলি নাগরিক বন্দী রয়েছে।

;

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজা ইস্যুতে যখন ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি, তখন যে কারো মনেই জেগেছে শঙ্কা! সবারই প্রশ্ন- কি হতে যাচ্ছে? কোন পথে বিশ্ব? বিশ্ব কি সেই পথেই যে পথের শঙ্কা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন সেই অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ! কিংবা এক ভয়াল ২০২৪!

জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী সে নারী পৃথিবীর মায়া ছেড়েছেন ২৭ বছর হলো। কিন্তু এখন থেকে আরো তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বে কোন বছর কি ঘটবে তা নিয়ে নিজের গণনালব্দ ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করে গেছেন। তার সে সব কথা যে একেবারে ফ্যালনা নয়, তা এরই মধ্যে বিশ্ববাসী টের পেয়ে গেছে। সবশেষ তাজা তাজা যা ঘটলো তা হচ্ছে কোভিড-১৯ অতিমারি। যে অতিমারির কথাও ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যদ্বাণীতে।

আর ২০২৪ নিয়ে তার বক্তব্যই ছিল ভয়াল কালোয় আচ্ছন্ন একটি বছর হবে এটি। সে আশঙ্কার তালিকায় রয়েছে ইউরোপ জুড়ে সন্ত্রাসী হামলা, বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট আর জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একটি হত্যাচেষ্টা চালানো হবে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যও তার গণনায় এসেছিল।

১৯৯৬ সালে মৃত্যু হয় এই বুলগেরীয় জ্যোতিষীর। বলকানদের নস্ট্রাডামাস বলেই ডাকা হতো তাকে। জ্যোতির্গণনার সেই দিনগুলোতে বাবা ভঙ্গ বছর বছর ধরে ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভূমণ্ডলে কখন কি ঘটবে তার একটি তালিকা দিয়ে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর বিগত বছরগুলোতে কিছু ঘটনা তার সেই গণনার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় অনেকেই সেসব সত্যিই বলেই মানতে শুরু করেছেন। তার গণনায় ২০২৪ কে একটি কালো বছর হিসেবেই দেখানো হয়েছে। এ অবস্থায় অনেকেই সামনে এনে মিলিয়ে দেখছেন বাবা ভঙ্গের কোন কোন ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যাচ্ছে নাতো। প্রকাশিত হচ্ছে এ পর্যন্ত সেসব বাণী ফলে গেছে সেসবের কথাও।

কোভিড-১৯ অতিমারির কথা আগেই বলেছি। কিন্তু এই তালিকায় আরেকটি দগদগে স্মৃতি হয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ এর ভয়াল হামলা। ১৯৮৯ সালে এই সম্ভাব্য হামলার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বাবা ভঙ্গ। বলেছিলেন ইষ্পাতে তৈরি পাখি এসে আমেরিকার গর্ব চূর্ণ করবে। সেই কথা সত্যি হলো। চারটি উড়োজাহাজ এসে ভেঙ্গে দিলো আকাশচুম্বির গর্ব। আর কেড়ে নিলো ৩০০০ তাজা প্রাণ। ইস্পাতের পাখি বলতে উড়োজাহাজকেই বুঝিয়েছিলেন বাবা ভঙ্গ।

১৯৬৬ সালে বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎদ্বাণী ছিল কোভিড-১৯ অতিমারির। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, আমাদের সকলের মাঝে করোনা ছেয়ে যাবে। নেশকা স্টেফানোভা রোবেভা নামে ৭৩ বছরের এক নারীকে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছিলো দ্য ডেইলি স্টার। তিনি বলেছিলেন মৃত্যুর আগে বাবা ভঙ্গ তাকে কথাগুলো বলেছিলেন। তখন তিনি বুঝতেও পারেননি এই কথার মানে কি?

কথিত রয়েছে বাবা ভঙ্গ তার মৃত্যুর বছরটিও নাকি ঠিক ঠিক বলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন ১৯৯৬ সালের ১১ আগস্ট ৮৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হবে। তার এই কথা সত্যি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। সে বছর স্তন ক্যান্সারে তার মৃত্যু হয়।

২০০৪ সালের সুনামির কথা বিশ্ববাসী ভুলতে পারেনি আজও। যে সুনামি ভাসিয়ে দিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশকে। সেই সুনামির দিনের আগে কেউ কি জানতো এমন কিছু হতে যাচ্ছে! না। কিন্তু বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন এক বিপুলা ঢেউ এসে সমুদ্র উপকূল ছাড়িয়ে লোকালয়, শহর বন্দর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। পানির নিচে তলিয়ে যাবে সব কিছু। হয়েছিলও তাই। তিনি বলেছিলেন, সবকিছু আইসক্রিমের মতো গলে গলে পড়বে।

২০০০ সালের কার্স্ক সাবমেরিন ডিজ্যাস্টারের কথাও নাকি ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎ বাণীতে। তিনি বলেছিলেন কার্স্ক পানিতে নিমজ্জিত হবে। আর বিশ্বকে কাঁদাবে। কার্স্ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জনের মৃত্যু হয়। ডাইভাররা আটদিন পর কার্স্কের কাছে পৌঁছতে পারে আর জানা যায় সেটি তলিয়ে ছিল ৩৫০ ফুট পানির গভীরে।

বুলগেরীয় এই জ্যোতির্বিদের ভবিষ্যৎ বাণির তালিকায় ছিল ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ডের কথাও। ১৯৮৪ সালে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। যা ১৯৬৯ সালেই বাবা ভঙ্গ বলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার পোশাকই তাকে ধ্বংস করবে। ধোঁয়াশা ও আগুনের মাঝে আমি দেখতে পাচ্ছি কমলা-হলুদ পোশাক। ১৯৯৪ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীকে যেদিন হত্যা করা হলো সেদিন তার পরনে ছিল জাফরান রঙের শাড়ি।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের খবরও জানা ছিল এই নারী জ্যোতিষীর। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন এক কৃষ্ণাঙ্গ। তবে তার আরেকটি কথা সত্যি হয়নি। বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন সেটাই হবে শেষ কোনো কৃষ্ণাঙ্গের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া। কারণ ৪৫তম মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামাই দ্বিতীয় দফা নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৪৫তমের ব্যাপারে তার ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, তার সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সঙ্কটের মুখে পড়বে। তবে সেটা মিলে গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। ২০২০ সালের ক্যাপিটল হিলের ঘটনার সাথে বিষয়টি মিলিয়ে দেখতে পছন্দ করেন অনেকেই।

৫০ বছরের জ্যোতিষবিদ্যা চর্চার সময়ে আরও কিছু ভবিষ্যৎ বাণী ছিল বাবা ভঙ্গের যা মিলে গেছে। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনে চেরনোবিল ডিজ্যাস্টার, ১৯৯৭ সালে প্রিন্সেস ডায়ানা হত্যাকাণ্ড।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যা মোটেই মেলেনি। যেমন ২০২৩ সালের প্রাকৃতিক জন্মলাভের ইতি ঘটবে, পৃথিবী তার ঘূর্ণয়ণ পথ পরিবর্তন করবে, সৌরঝড় হবে এগুলোর কোনোটাই ঘটেনি। ২০১৭ সালের মধ্যে ইউরোপ তার অস্তিত্ব হারাবে এমন কথাও তিনি বলেছিলেন যা ফলেনি। তবে জ্যোতির্বিদ্যায় যারা বিশ্বাসী তারা ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সাথে এই কথার মিল খোঁজার চেষ্টা করেন।

;

উৎসব-সহিংসতায় কাটলো ভারতের নির্বাচনের প্রথম দিন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভার নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়।

উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হলেও বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি, সহিংসতা ছাড়া ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা হয়। সাধারণ ভোটারকে ভয় দেখানো এবং বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল।

কোচবিহার জেলায় চান্দামারী এলাকায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ছোড়া পাথরের আঘাতে বিজেপি বুথ সভাপতি লব সরকার আহত হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। হাসপাতালে ভর্তি ওই বিজেপি নেতা। এছাড়াও নাটাবাড়ি এলাকায় তাদের আরও বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।


আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের বুথ এজেন্ট এর ওপর হামলা, তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের হরিরহাট এলাকায় দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, তৃণমূল নেতা এবং তৃণমূলের বেতাগুড়ি ব্লক প্রেসিডেন্ট অনন্ত বর্মনের ওপরও হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। নির্বাচনী সহিংসতাসহ বিভিন্ন ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরেও। রাজ্যটির রাজধানী ইমফলে বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বুথ দখল, ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিন নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন যায়গায় বিক্ষিতপ সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মেঘালয়ে পড়েছে ৬২ শতাংশ। কিছু যায়গায় ইভিএম ব্যাবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার খবর পাওয়া গেলেও তা দ্রুত সমাধান করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ছত্তিশগড়ে নকশালবাদীদের প্রভাব থাকলেও ভোটগ্রহণ হয়েছে ৪২ শতাংশের বেশি। রাজ্যের বিজাপুর জেলায় আইইডি বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক সহকারী কমান্ড্যান্ট আহত হন। তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য বিজেপি মরিয়া। এ রাজ্যে ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অরুণাচলে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিহারের চারটি আসনে ৭৫ লাখ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে অবিরাম বৃষ্টির মধ্যেও ৪৩ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় তেমন ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। আলাদা রাজ্যের দাবিতে ওইসব এলাকার উপজাতিদের সংগঠনগুলোর ডাকে সেখানকার ভোটাররা বাড়ি থেকে বের হননিএছাড়া জাতিগত দ্বন্দ্ব থাকা স্বত্বেও মণিপুরে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

উল্লেখ্য, মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে আর ছয়টি দফার ভোটগ্রহণ বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন।

;