সংসদে থাকতে অনড় মিয়ানমার সেনারা



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মিয়ানমারের সংসদ | সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারের সংসদ | সংগৃহীত ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সংবিধান দেশটির সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে। আর এটি বদলে ফেলতে চায় অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা হ্রাস করতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছে দলটি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ সাংবিধানিক সংস্কার সম্পর্কিত সংসদীয় বিতর্ক চলাকালে এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন সামরিক সদস্য এবং তাদের সমর্থনকরী দল ইউএসডিপি’র আইন প্রণেতারা। এনএলডির প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা। এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, সেনাবাহিনীর শক্তি দুর্বল করা হলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি হবে।

এ ধরনের হুমকি দেশটির ভঙ্গুর গণতন্ত্রের উত্তরণকে প্রভাবিত করবে। এ তীব্র বিরোধিতার মুখে এনএলডির সংশোধনী প্রস্তাবগুলো পরবর্তী সংসদে পাস করা কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কয়েকদিনব্যাপী উত্তেজিত আলোচনায় মিয়ানমারের সংসদ উত্তপ্ত ছিল। সর্বমোট ১৪৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে সেনা নিযুক্ত আইনা প্রনেতা ও এনএলডি থেকে ৫০ জন করে, ইউএসডিপি থেকে ২৬ জন এবং জাতিগত দলগুলোর সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।

বিতর্ক চলাকালে সবচেয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সংশোধনী প্রস্তাব ছিল এটি। সাংবিধানিক পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে সামরিক বাহিনীর ভেটো থেকে মুক্তি পাওয়াই ছিল এ সংশোধনীর মূল বিষয়।

সাংবিধানিক সংস্কারের মূল প্রতিবন্ধকতা হলো সামরিক বাহিনী দ্বারা কার্যকর ভেটো। যার জন্য সংবিধানে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সংসদের ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে। সংবিধানের ৪৩৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সনদে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের জন্য ৭৫ শতাংশেরও বেশি আইন প্রণেতাদের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে, যার অর্থ সামরিক অনুমোদন ছাড়া কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়।

বর্তমানে এনএলডি সংসদে ৫৯ শতাংশ আসন, জাতিগত সংখ্যালঘু দলগুলি ১১ শতাংশ, ইউএসডিপি ৫ শতাংশ এবং সামরিক বাহিনীকে সাংবিধানিকভাবে ২৫ শতাংশ আসন রয়েছে।

এনএলডি সেনাবাহিনীর সদস্যদের বাদ দিয়ে সংসদে ৭৫ শতাংশেরও বেশি থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থনে এই সনদে সংশোধনী অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা প্রস্তাব করেছে।

যদিও এই প্রস্তাবটি নৃ-তাত্ত্বিক দলের আইন প্রণেতারা ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছেন, সামরিক ও ইউএসডিপি আইন প্রণেতারা এটিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা দাবি করেছেন, এটি জাতীয় ঐক্য ও সামরিক-নাগরিক সম্পর্কের ক্ষতি করবে।

সেনা-নিযুক্ত আইন প্রণেতাদের নেতৃত্বদানকারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মং মাং প্রস্তাবিত সংশোধনীকে সেনাপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত সামরিক সদস্যদের বিরুদ্ধে বৈষম্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, এই ধরনের বৈষম্য নাগরিক-সামরিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং মিয়ানমার যে জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে চলছে, তাতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

সামরিক ঘেষা ইউএসডিপির আইন প্রণেতা ইউ টিন আই বলেন, সংসদে সেনাবাহিনীর আসন হ্রাস করা এমন একটি অস্থিতিশীল সময়ে খুবই তাড়াহুড়ো পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে।

এনএলডি ২০২০ সালের নির্বাচনের পরে সামরিক বাহিনীর অংশীদারিত্ব ধীরে ধীরে ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, ২০২৫ সালের পরে ১০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের পরে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক আইনসভায় সমস্ত আসনের এক-চতুর্থাংশ অনির্বাচিত সামরিক অফিসারদের দখলে রয়েছে।

বিতর্ক চলাকালে, এনএলডি এবং নৃতাত্ত্বিক দলগুলোর আইন প্রণেতারা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সামরিক-নিযুক্ত আইন প্রণেতাদের সংখ্যা কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

সামরিক ও ইউএসডিপি আইন প্রণেতারা বলেছেন, এই পদক্ষেপের অবাঞ্ছিত পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তারা বলেছেন, ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে দেশটি সঙ্কটের মুখোমুখি হওয়ার সময় সামরিক বাহিনী দেশকে রক্ষা করেছিল।

সামরিক আইন প্রণেতা মেজর হেট লিন বলেন, ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে সংকটের পর সেনাবাহিনীর সংসদীয় উপস্থিতি সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল।

তিনি বলেন, সশস্ত্র দ্বন্দ্বের অবসান ঘটার আগে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আগে সামরিক আইন প্রণেতাদের সংখ্যা হ্রাস করা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি ঘটাবে। প্রতিরক্ষা পরিষেবা রাষ্ট্রের জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকায় অংশ নিতে সক্ষম।

এনএলডি এই বাক্যটি অপসারণের পরামর্শ দিয়েছে। তবে, সামরিক ও ইউএসডিপি সংসদ সদস্যরা বলছেন, ঐতিহ্যগত এবং ঐতিহাসিকভাবে জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ দেশকে ভাঙ্গন এবং অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, বহুপক্ষীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এখনও প্রয়োজনীয়।

অন্য এক এনএলডি সংসদ সদস্য ইউ নাইং এইচ তু অং বলেন, গণতন্ত্রের এ জাতীয় ধারণা একনায়কতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। দেশটি যেহেতু এখন একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে চলছে তাই সংরক্ষিত ব্যবস্থার আর প্রয়োজন নেই।

মিয়ানমারের সংবিধানের ৪০ অনুচ্ছেদে (গ) জরুরি অবস্থা চলাকালে কমান্ডার-ইন-চিফকে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করে। সমালোচকরা বলছেন, অনুচ্ছেদটি সামরিক প্রধানকে একটি অভ্যুত্থান পরিচালনার ক্ষমতা দিয়েছে।

এনএলডি’র প্রস্তাব হলো— জরুরি অবস্থার সময়ে রাষ্ট্রপতির কমান্ড গ্রহণ করা উচিত, তা নির্ধারণের জন্য সংসদে পাস হবে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী এবং ইউএসডিপি আইন প্রণেতাদের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে প্রস্তাবটি। তারা বলছে, জরুরি অবস্থার সময়ে আইনসভার পক্ষে কোনও পরিকল্পনা কার্যকর করা অসম্ভব এবং এটি কেবলমাত্র সামরিক বাহিনীর পক্ষেই জাতীয় সংহতি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম।

ইউএসডিপির আইন প্রণেতা ইউ মাউং মাইন্ট বলেন, যদি রাষ্ট্রপতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে কে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তার জন্য সংসদের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করা উচিত। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির পক্ষে শৃঙ্খলা বজায় রাখা অসম্ভব।

   

পাকিস্তানে আকস্মিক সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হামলা-পাল্টা হামলায় লিপ্ত দুই দেশই। সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে ঢুকে পড়েছে যুক্তরাষ্টও। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক পাকিস্তান সফর নিয়ে সোরগোল শুরু হয়েছে বিশ্বকূটনৈতিক মহলে।

তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে রয়েছেন ইব্রাহিম। এএনআই সূত্রে খবর, তার এই সফর সম্পর্কে ইসলামাবাদের কাছে তেমন কোনও খবর ছিল না।

এদিকে, ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। হামলা-পাল্টা হামলায় জড়িয়ে পড়ে দুই প্রতিবেশী দেশ।

গত ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। কেন এই হামলা, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা।

তেহরানের দাবি ছিল, জইশ অল অদল নামক জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ মূলত ইরান-পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে। ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি তোলে ইব্রাহিম সরকার। সেই কারণেই তাদের ঘাঁটি নির্মূল করতে হামলা চালানো হয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে।

ইরানের এই দাবি মানতে নারাজ ছিল ইসলামাবাদ। পাকিস্তান সরকার দাবি করে, ইরানের হামলায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইরানকে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদও।

পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি যে ফাঁপা ছিল না, তার প্রমাণ মেলে দুই দিনের মধ্যেই। ইরানের উপর পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। ইরান এবং পাকিস্তানের হামলা-পাল্টা হামলার আবহে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরে।

তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এই আবহে ইরানের প্রেসিডেন্টের আচমকা পাক সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কেন তিনি পাকিস্তানে গেলেন? এ বিষয়ে তেহরানের যুক্তি, দুই দেশের ভেঙে পড়া সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যেই এই সফর।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসলামাবাদে পা রাখেন রাইসি। শুধু তিনি একা নন, এই সফরে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী। এ ছাড়াও ইব্রাহিমের সফরসঙ্গী হিসাবে রয়েছেন তার দেশের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও। কয়েক জন ব্যবসায়ীও রয়েছেন রাইসির সঙ্গে।

সোমবারই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরীফের সঙ্গে বৈঠক করেন ইব্রাহিম। দুই প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতি, সীমান্ত, জ্বালানি সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। পাকিস্তান সরকারও ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রাইসির এই আকস্মিক সফরের নানা গুঞ্জনের মধ্যে বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েলে আক্রমণের তেজ বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে তেহরান। তারা ইসরায়েলের উপর পারমাণবিক বোমা দিয়েও হামলা চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নিজেদের পারমাণবিক শক্তির ভান্ডার বৃদ্ধি করতেই প্রতিবেশী দেশের সাহায্য চাইছে ইরান।

;

ইরান সফরে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি দল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উত্তর কোরিয়ার একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল ইরান সফরের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। পরমাণু শক্তিধর দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ খবর নিশ্চিত করেছে।

এদিকে উত্তর কোরিযার প্রতিনিধি দলের এই ব্যতিক্রমী সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী উন জং হু দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) খবরে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি দলটি সোমবার (২২ এপ্রিল) ইরানের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে। তবে সংস্থার খবরে বিস্তারিত আর কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মস্কোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করছে পিয়ংইয়ং। আর এই প্রেক্ষাপটেই ইরানে তাদের এই সফর অনুষ্ঠিত হলো।

অন্যদিকে সিউলের দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যে রাশিয়াকে সাত হাজার কন্টেইনার গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার শুরু করা গোয়েন্দা স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে মস্কোর কারিগরী সহায়তার বিনিময়ে এই কন্টেইনার সরবরাহ করা হয়েছে বলে ধারণা করছে সিউল।

ইরান ও রাশিয়াও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও সামরিক মিত্র। রাশিয়া প্রায়শই ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করছে।

কোরিয়া ইন্সষ্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেছেন, সফরটি এই আভাস দিচ্ছে যে, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণে আগ্রহী উত্তর কোরিয়া। সম্ভবত অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে দেশটি সম্পর্ক আরো গভীর করতে চায়। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ঘের প্রেক্ষিতে ইরানের আরো অস্ত্র প্রয়োজন হতে পারে।

;

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সপ্তাহে ১০৮ জন শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার এবং তিনজনকে বহিঃস্কার করা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের দল দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পগুলোকে সরিয়ে দিয়ে যা অর্জন করার আশা করেছিল, তার বিপরীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব ক্যাম্প স্থাপন, ভবন দখল এবং সমাবেশ করেছে।

ইসরায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্রমবর্ধমান দাবির মধ্যে ইয়েল, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) মতো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।

ইউসি বার্কলে এবং ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়েও ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। কারণ, শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্প খালি করার দাবি মানতে অস্বীকার করেছে। প্রশাসনও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।

ফলস্বরূপ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়া স্প্রিং সেমিস্টারের শেষ পর্যন্ত ক্লাসগুলো হাইব্রিড লার্নিং মোডে স্যুইচ করা হবে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সেখানে সড়ক অবরোধের পরিকল্পনা করছেন। ওই এলাকায় মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমারের বাড়ি।

গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কলম্বিয়া, ইয়েল, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মতো বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।

তবে বিক্ষোভের নামে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানো ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন সমালোচকদের অনেকেই। তাদের মধ্যে রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী কয়েকজন আইনপ্রণেতাও রয়েছেন।

অন্যদিকে ব্যাপক ধড়পাকড়ের সমালোচনা করেছেন অধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।

গত শতকের ষাটের দশক থেকে নানা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সরব হতে দেখা যায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের শিক্ষার্থীদের। এখানকার শিক্ষার্থীরাও গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

ক্যাম্পাসে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের কারণে ক্যালফোর্নিয়া পলিটেকনিক হামবোল্ডট বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পর ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার সেন্ট পল ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ নিউইয়র্কের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো থেকে ১২০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরই বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে পুলিশ।

গত সপ্তাহে কলম্বিয়ায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে শতাধিক শিক্ষার্থী আটক করা হয়েছিল। বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার সরাসরি ক্লাস বন্ধ করে দেয় কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি। ইহুদি শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন কিছু মানুষ সমস্যা বাধানোর চেষ্টা করছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে। আমরা তাঁদের সেই সুযোগ দিতে পারি না।’

;

মার্কিন সিনেটে টিকটক নিষিদ্ধকরণ বিল অনুমোদন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে টিকটক নিষিদ্ধের বিল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিলটি সিনেটে অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বিলটি স্বাক্ষরের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে যাবে। তার স্বাক্ষরের পর বিলটি চূড়ান্ত আইনে পরিণত হবে। বিলটি অনুমোদনের পক্ষে ৭৯ জন ভোট দিয়েছেন, অন্যদিকে বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৮ জন।

অনুমোদিত বিলের শর্তে বলা হয়েছে, টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে আগামী নয় মাসের মধ্যে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে হবে। নয়তো এই অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্লক করে দেওয়া হবে।

এটি হলে বাধ্যতামূলকভাবে টিকটক বিক্রির বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চাইতে হবে বাইটড্যান্সকে। তবে বেইজিং এরই মধ্যে শক্তভাবে এর বিরোধিতা করেছে।

শর্ট-ভিডিও শেয়ারের জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটেকের বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারী আছে। তবে টিকটকের সঙ্গে চীনা সরকারের যোগসূত্র এবং এর ব্যবহারকারীদের তথ্য উপাত্তের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমশ প্রশ্ন উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে চীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য-উপাত্ত হস্তান্তরের জন্য টিকটককে বাধ্য করতে পারে। টিকটক অবশ্য বলছে, বিদেশি ব্যবহারকারীদের তথ্য তারা চীন সরকারকে দেবে না।

টিকটকের প্রধান নির্বাহী শোউ জি চিউ গত মাসে বলেছেন, প্ল্যাটফর্মটিকে রক্ষায় তার প্রতিষ্ঠান নিজ ‘আইনি অধিকারসহ’ সম্ভব যা কিছু করার, করে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন নাগরিকরা এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারছেন না- এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কারণ বাইটড্যান্স অ্যাপটির জোরপূর্বক বিক্রয় ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে।

;