কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের বহিষ্কারে নিন্দা অ্যামনেস্টির
কাতারের কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু অভিবাসী শ্রমিককে করোনাভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নাম করে ডেকে নিয়ে দেশটি থেকে বের করে দিয়েছে।
এই ঘটনার নিন্দা করে বুধবার (১৫ এপ্রিল) লন্ডন থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এসব জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে গত মার্চ মাসে কাতারের পুলিশের দ্বারা গ্রেপ্তার হওয়া নেপাল থেকে আসা শত কর্মীর সঙ্গে ‘অমানবিক’ আচরণের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
অ্যামনেস্টি তাদের মধ্যে ২০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তারা বলেছেন, পুলিশ তাদের জানিয়েছে, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তাদের নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা করার পরেই নিজ কর্মস্থলে বা বাসস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু শ্রমিকদের একটি বন্দীশালায় আটকে রাখা হয়। বিভিন্ন শর্ত আরোপ করা হয়। পরে তাদের নেপালে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
দোহায় আটককৃত ভুক্তভোগী একজন নেপালী কর্মী অ্যামনেস্টিকে বলেন, ‘আমাদের ভাইরাস পরীক্ষা করা বন্ধ কেন এমন প্রশ্ন তুলতেই পুলিশ আমাদের বলেছে, ডাক্তার এলেই ভাইরাসের পরীক্ষা করবেন। কিন্তু তারা আমাদের কাছে মিথ্যা কথা বলেছে।’
২০ জনের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, বন্দীদশায় তাদের শুধুমাত্র তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
অ্যামনেস্টির উপ-পরিচালক স্টিভ ককবার্ন বলেন, ‘আমরা যে মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি তারা কেউই তাদের সাথে এইরকম আচরণ, আটক বা বহিষ্কারের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি’।
তিনি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন অমানবিক বন্দীদশা কাটানোর পরে নেপালের উদ্দেশ্য যাওয়া ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়ার সময় তাদের নিজ জিনিসপত্র নিতে দেওয়া হয়নি’।
‘এটি খুবই বাজে কর্মকাণ্ড, করোনাভাইরাসের মহামারিকে হাতিয়ার করে কাতারের কর্তৃপক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের উপর এই অমানবিক কাজটি করেছে বলে মনে হচ্ছে।’
এসব শ্রমিককে বেতন বা কোনও সুবিধা না দিয়ে কাতার থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
একজন শ্রমিককে আটককালে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। বন্দীশালায় প্রবেশের আগে তিনি এক পুলিশ কর্মকর্তার হেফাজতে অর্থ রাখলেও ফেরার সময় নিতে পারেননি।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় কাতার সরকার দাবি করেছে, অভিবাসীদের "বিপজ্জনক খাদ্য সামগ্রীর বিক্রয়" করার অভিযোগে কর্মকর্তারা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করেছিল।
তবে কর্মীদের কাউকেই কখনও এ জাতীয় অভিযোগ সম্পর্কে সরাসরি বলা হয়নি। অ্যামনেস্টি পর্যালোচনা করে দেখেছে, তাদেরকে কোনও ফৌজদারি অপরাধে জন্য অভিযুক্ত করা হয়নি।