ইসরায়েলের দখলদারি নীতিতে ক্ষুব্ধ জর্ডান, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
যে কোনো শান্তি আলোচনায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন দু'পক্ষই চায় জর্ডান উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ

যে কোনো শান্তি আলোচনায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন দু'পক্ষই চায় জর্ডান উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ

  • Font increase
  • Font Decrease

পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকা দখল করা ইসরায়েলের আগ্রাসন পরিকল্পনার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তেজনা ও সংঘাতের আশঙ্কা। ইসরায়েলে সদ্য ক্ষমতাসীন দক্ষিণপন্থী জোট ১ জুলাই থেকে যে দখল কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে জর্ডান। মনে করা হচ্ছে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসী মনোভাবের পেছনে রয়েছে ২০২০ সালে জানুয়ারিতে সম্পাদিত মার্কিন-ইসরায়েল দ্ব-রাষ্ট্রীয় শান্তিচুক্তির মদদ।

অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান দখলদারিত্বের ঘটনায় আঞ্চলিক সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছে মার্কিন ও ইসরায়েলের মিত্র  খোদ জর্ডানও। অন্যদিকে, বিক্ষুব্ধ আরব দেশগুলো সম্ভাব্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আরব লিগের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা ও অনলাইনে বৈঠক শুরু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলের তৎপরতা থামাতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একমত হয়েছেন।

আরব লিগের প্রধান আহমেদ আহমেদ আবুল গেইত ইসরায়েলের আগ্রাসী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের কাছে এক জরুরি বার্তা পাঠিয়েছেন, যাতে তিনি ইসরায়েলের কারণে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যস্ত, ইসরায়েল তখন নিজের হীন স্বার্থে এই সুযোগের অপব্যবহার করতে চাইছে।’

বস্তুতপক্ষে, সংঘাতময় আরব-ইহুদি সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ক্ষমতার পালাবদলের পর, যখন প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু দখল করা পশ্চিম তীরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরো বাড়াতে ও জর্ডান উপত্যকা কব্জার করার পরিকল্পনা প্রকাশ্য এনে তৎপর হন। তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বেনি গান্তাজের সঙ্গে যৌথ সরকার গঠনের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এবং তারা ইসরায়েলের দখলদারিত্বে নীতি আরো বৃদ্ধি করতেও একমত হয়েছেন।

এদিকে ইসরায়েলকে চলমান আগ্রাসনে উৎসাহদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারি কেমন হবে তা নিয়ে দেশটির নতুন জোট সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এ বছরের (২০২০ সাল) শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তি পরিকল্পনা’ ঘোষণা করে ইসরায়েলকে সহজেই জেরুসালেমের পুরোটা নিজেদের দাবি করে সেটিকে রাজধানী ঘোষণা করার এবং পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ অব্যাহত রাখার সুযোগ করে দেয় বলে পর্যবেক্ষণগণ মনে করেন।

মিশর, জর্ডান ছাড়া প্রায়-সকল আরব দেশই ট্রাম্পের কথিত ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তি পরিকল্পনা’ মানবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে বলেছে, ‘পুরো পরিকল্পনা ইসরায়েলের পক্ষে করা হয়েছে এবং সেখানে ফিলিস্তিনিদের ন্যূনতম অধিকারও রক্ষা করা হয়নি।

আরব দেশগুলো ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তি পরিকল্পনা’র সমালোচনা করে বলেছে, ‘ওই পরিকল্পনা সঙ্কট সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র নীতির কবর দিয়েছে।’

কিন্তু মার্কিন-ইসরায়েল লবি যে চুক্তিকে শতাব্দীর চুক্তি বলে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করলেও ইরাক, ইরান, তুরস্ক এর তীব্র বিরোধিতা করছে আর মার্কিন সমর্থক সৌদি আরব, ওমান, বাহরাইন, আমিরাত, মিশর, জর্ডান চুক্তিকে সমর্থন করলেও মে মাসের মাঝামাঝি জর্ডান চুক্তির ব্যাপারে তার ক্ষোভ, আপত্তি ও বিরোধিতার কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছে।

জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকা দখল করার ইসরায়েলি পরিকল্পনা এ অঞ্চলে সংঘাত বাড়াবে এবং ইসরায়েল ও জর্ডানকে মুখোমুখি দাঁড় করাবে।   

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মার্কিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রীয় শান্তিচুক্তি জেরুজালেমকে ইসরায়েল রাজধানী রাখলেও ফিলিস্তিনি অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে। এতে জর্ডান উপত্যকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। ফলে জর্ডান পড়বে বিপদে।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন ডানপন্থীরা এই জন্য জর্ডান উপত্যকা দখল করতে চাচ্ছে, যাতে দখলকৃত পশ্চিম তীরের সঙ্গে জর্ডানকে যুক্ত করে একটি কনফেডারেশন করা যায়। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জর্ডানের ওপর অধিকার সৃষ্টি হবে। এছাড়া যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডানে অবস্থান করছেন ও জর্ডানের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারাও জর্ডানের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর ফলে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি নাগরিকদের চাপ ইসরায়েল থেকে সরে জর্ডানে পড়বে। জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহকে চাপ দিয়ে এতে রাজি করানোর সক্ষমতা ইসরায়েলের আছে। কিংবা জর্ডানের দুর্বল রাজতন্ত্রের অবসান করে সেখানে ক্ষমতার পালাবদল ঘটিয়ে নতুন কাউকে শাসনকার্যে আনা যাবে, যারা হবে ইসরায়েলের প্রতি সহানুভূতিশীল ও বশংবদ।      
          
বিষয়টি টের পেয়ে জর্ডান, যারা মিশরের পর দ্বিতীয় দেশ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি ও সমঝোতায় বিশ্বাসী, বেশ বিপাকে পড়েছে। খোদ বাদশাহ তার অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ্যে বলছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান আল সাফাদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলে যেকোনো ধরনের দখলদারি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।  

উল্লেখ্য,  ঐতিহাসিকভাবেই মে মাসের ১৪ তারিখ ইসরায়েল উজ্জীবিত থাকে এবং নতুন করে নিজেদের শক্তিশালী করে দখলদারিত্ব বিস্তারের মনোযোগী হয়। কারণ ১৪ মে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। যেদিনে তারা ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের সুযোগ নিয়ে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে নিজেদের দখলদারিত্বের অধিকার পায়। ২০১৮ সালে, ইসরায়েলের ৭০ বছর পূর্তির সময়েও গাজা ও আশেপাশের এলাকাকে রক্তাক্ত করে দখল করে ইসরায়েল। যদিও ১৪ মে তারিখকে ফিলিস্তিনিরা মনে করেন 'নাকাবা' বা 'বিপর্যয় দিবস'।

৭০ বছর আগে সন্তর্পণে অতি ক্ষুদ্র একটি এলাকায় জোর করে দখল করে ইসরায়েল, যার আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ২৯০ মাইল আর পূর্ব-পশ্চিমে ৮৫ মাইল। কিন্তু সাত দশকের মধ্যে ইসরায়েল স্থায়ী বাসিন্দাদের হটিয়ে তাদের জায়গা-জমি দখল করার পাশাপাশি সবগুলো প্রতিবেশীর কাছ থেকেও একাধিক যুদ্ধের মাধ্যমে কিছু না কিছু ভূমি দখল করেছে। ভূমধ্য সাগরের পূর্ব সীমায় অবস্থিত ইসরায়েল উত্তরে লেবানন, উত্তর-পূর্বে সিরিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে জর্ডান, দক্ষিণ-পশ্চিমে মিশর থেকে ছিনিয়ে নিয়ে অনেক জায়গা।

সামনের জুলাই মাসে পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকায় তাদের দখলদারিত্ব বিস্তারের পরিকল্পনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কোনো ইচ্ছাই নেই ইসরায়েল নামক দেশটির। বরং ফিলিস্তিনি সমস্যাকে জর্ডানের দিকে ঠেলে দিতেই তারা ইচ্ছুক। এতে জর্ডান ও এর রাজতান্ত্রিক শাসকদের জন্য বিপদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের পুরনো ও স্থায়ী সঙ্কটের বিপজ্জনক নতুন মাত্রা তৈরি হয়েছে, যা সেখানে পুনরায় যুদ্ধাবস্থা, সংঘাত ও অস্থিরতার সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক-গবেষকগণ।

   

গাজায় আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়েও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের  ক্যাম্পাসে যান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ক্যাম্পাসে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আগমনকে ঘিরেই বিক্ষোভের ডাক দেন শত শত শিক্ষার্থী। ফিলিস্তিনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। 

এদিন যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখে দাঙ্গা পুলিশ। বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাজার পক্ষে শুরু হওয়া আন্দোলনের মতোই ফরাসি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে বিক্ষোভ বড় পরিসরে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা সরবোনের শিক্ষার্থীদের। 

প্রসঙ্গত, গাজায় ইসরাইলের অভিযানের প্রতিবাদে ইসরাইলের প্রধান মিত্র ও পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু থেকেই চলছিল। তবে সম্প্রতি তা আরও ব্যাপক রূপ নিয়েছে। 

ক্রমবর্ধমান এই বিক্ষোভ সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তারা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। যে কারণে বিক্ষোভ দমনের নামে ধড়পাকড় চালানো হচ্ছে। তবে যত দিন যাচ্ছে, বিক্ষোভ তত ছড়িয়ে পড়ছে।

কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। নতুন নতুন ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

;

ভারতে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৮৮ আসনে ৬০.৭% ভোট



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দেশটির ১৩টি রাজ্যের মোট ৮৮টি আসনে ভোট প্রদানের হার ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশটির ১৩টি রাজ্যের মধ্যে মণিপুর, ছত্তীসগঢ়, পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং ত্রিপুরায় ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্রে ভোটদানের হার সবচেয়ে কম। সেখানে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ, ৫৩ শতাংশ এবং ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

এর আগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভারতের মোট ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল।

;

ট্রাম্পের বিচার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিভক্তি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টা অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পাবেন কি না, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) প্রায় তিন ঘণ্টা দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকেরা বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন।

২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা নিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ট্রাম্পের বিচার হবে কি না, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের দেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর তা নির্ভর করছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত যা-ই হোক না কেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেক বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার করা বা না করা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে আসা সিদ্ধান্তই আগামী দিনগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের রূপ নির্ধারণ করে দেবে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিল গোরশুচ বলেছেন, ‘আমরা একটি যুগের জন্য রায় লিখছি।’

প্রেসিডেন্ট থাকাকালে গৃহীত পদক্ষেপের জন্য যেকোনো ফৌজদারি অভিযোগ থেকে তিনি দায়মুক্তি পাওয়ার যোগ্য- ট্রাম্পের এমন দাবি নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের এক দিন পর আদালতে মামলাটি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিশেষ এ শুনানি হয়।

ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, এই দায়মুক্তিই হবে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথের আনা অভিযোগ থেকে তার রক্ষাকবচ।

দায়মুক্তির বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারকাজ স্থগিত থাকবে। আগামী জুনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শুনানির সময় বিচারপতিরা যেসব প্রশ্ন তুলেছেন, এতে তাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিভক্তির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি বিভক্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের এমন বিভক্তির জেরে যদি আরও জটিল সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে তা ফৌজদারি এ অভিযোগ নিয়ে ট্রাম্পের বিচার শুরুর প্রক্রিয়াকে আরও বিলম্বিত করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আছেন নয়জন। তাদের মধ্যে রক্ষণশীলেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আর উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত বিচারপতিরা সংখ্যালঘু। শুনানিতে করা প্রশ্নে এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে উভয় পক্ষের বিচারপতিরা ইতিহাসের দিকে চোখ রেখে সিদ্ধান্ত নিতে চান।

এখানে দুটি প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রথমত, যদি সম্পূর্ণ দায়মুক্তি দেওয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীকেও হত্যা করতে পারবেন? দ্বিতীয়ত, এই দায়মুক্তি না থাকলে মেয়াদ শেষে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে প্রেসিডেন্টদের বিচারের মুখোমুখি বা জেলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি করবে কি না?

;

নিখোঁজ থাই মডেলের মরদেহ মিলল বাহরাইনের মর্গে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এক বছর আগে নিখোঁজ হওয়া থাইল্যান্ডের এক মডেলের মরদেহ বাহরাইনের একটি মর্গে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

চায়না টাইমস অনুসারে, ৩১ বছর বয়সি কাইকান কেননাকাম কাজ শেষ হওয়ার পরে তার দেশের বাইরে সুযোগের সন্ধানে গিয়েছিলেন। তিনি উত্তর থাইল্যান্ডে থাকা পরিবারকে সাহায্য করার জন্য তিন বছর আগে বাহরাইনের একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি পেয়ে সেখানে চলে এসেছিলেন।

তিনি নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেন এবং তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি তার বাহরাইনি প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিলে হঠাৎ তিনি পোস্ট করা বন্ধ করে দেন। এ সময় তার পরিবার তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়নি।

কাইকানের পরিবার চলতি বছরের জানুয়ারিতে থাই দূতাবাসের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু, তারা তাকে খুঁজে পায়নি।

গত ১৮ এপ্রিল থাই দূতাবাস তার পরিবারকে জানায় যে, একজন অজ্ঞাত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান মহিলার মৃতদেহ সালমানিয়া মেডিকেল কমপ্লেক্সের মর্গে রাখা হয়েছে।

চায়না টাইমস বলেছে, তার পায়ের একটি ট্যাটু দেখে তার পরিবারকে কাইকান কেননাকামকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার মৃত্যুর কারণ অ্যালকোহল বিষক্রিয়া।

ডেইলি স্টারের মতে, কাইকানের পরিবার এখন তার দেহ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য চাইছে এবং বিশ্বাস করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

কাইকানের বোন সুথিদা নেগারনথাওর্ন ১৯ এপ্রিল একটি অনলাইন পোস্টে বলেছেন, ‘আমার বোন প্রায় দুই বা তিন বছর আগে বাহরাইনে কাজ শুরু করেছিল এবং সেখানে একজন আরব প্রেমিককে পেয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে, আমরা গত বছরের এপ্রিল থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের পরিবার বাহরাইনের থাই দূতাবাসে যোগাযোগ করে এবং চলতি মাসের ১৮ এপ্রিল জানতে পারে যে, তিনি মারা গেছেন।’

;