যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন সারির এক কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছে কোভিড-১৯ পলিসি!
নিম্ন সারির একটি আমেরিকান কোম্পানির তথ্যে কোভিড-১৯ পলিসি পরিবর্তন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং অধিকাংশ দেশের সরকারগুলো।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে সমাদৃত স্বাস্থ্য বিষয়ক পত্রিকা ল্যানসেট এবং নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন স্টাডিজ আমেরিকার সারগিসফের নামক একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য গ্রহণ করেছে। যে প্রতিষ্ঠানটি মূলত বৈজ্ঞানিক কাহিনী লেখা এবং প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট লেখার কাজ করে থাকে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কয়েকটি দেশের সরকার আমেরিকার একটি নিম্ন মানের স্বাস্থ্য সর্ম্পকিত ডাটা প্রদান প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য নিয়ে পলিসি বা নীতি পরিবর্তন করেছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটির থেকে তথ্য নিয়ে প্রকাশ করায় দুটি স্বনামধন্য মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত স্টাডিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, আমেরিকান সার্জিসফের কোম্পানিটির কর্মীরা মূলত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জন্য কনটেন্ট তৈরি করে। কোভিড-১৯ সর্ম্পকিত যে ডাটা এই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহ করেছে, তার মেথডলজি নিয়ে কোনো ব্যাখা দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এই কোম্পানির দেওয়া ডাটার উপর ভিত্তি করে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর কয়েক হাজার হাসপাতাল তাদের কোভিড-১৯ পলিসি পরিবর্তন করেছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বজুড়ে অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল বন্ধের পেছনেও ছিল এই প্রতিষ্ঠানের ডাটার ভূমিকা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, সার্জিসফের কোম্পানিটির কর্মীদের কেউ ডাটা গ্রহণ এবং বৈজ্ঞানিক বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। একজন কর্মী রয়েছেন যিনি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর লেখক এবং খেয়ালের চিত্রশিল্পী। আরেকজন কর্মী রয়েছেন যিনি মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত এবং প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্টের মডেল এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
কোম্পানির লিংকডিন পেইজে মাত্র ১০০ জন ফলোয়ার এবং মাত্র ৬ জন কর্মী রয়েছে। যা বুধবারে তিনজনে নেমে আসে।
যদিও সার্জিসফের দাবি করেছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক হাসপাতাল থেকে সবচেয়ে দ্রুত ডাটা সংগ্রহ করার সামর্থ্য রয়েছে তাদের। তবে তাদের অনলাইনে উপস্থিতি বাস্তবে খুবই কম। তাদের টুইটারে ফলোয়ার ১৭০ জন মাত্র এবং ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত সেখানে কোনো কার্যক্রম নেই।
এছাড়াও কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী পরিচালক সাপান দেসাইয়ের পরিচয় নিয়েও রয়েছে রহস্য।