নৈতিকতা চর্চার কথা বারবার বলতে হবে



মুফতি মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
নৈতিকতা চর্চার কথা বারবার বলতে হবে, ছবি: সংগৃহীত

নৈতিকতা চর্চার কথা বারবার বলতে হবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানব বলতে তাদের বোঝায় যারা মানবিক গুণাবলিতে সমৃদ্ধ ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী। মানুষ মানব হয়ে জন্মগ্রহণ করে না, চেষ্টা দ্বারা তাকে মানুষ থেকে মানব হতে হয়। মানুষ মনুষ্যত্ব নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না, মনুষ্যত্ব তাকে অর্জন করতে হয়। মনুষ্যত্ব অর্জন এক অন্তহীন প্রক্রিয়া, তার জন্য জীবনব্যাপী চেষ্টা করতে হয়। যারা জীবনযাপনের মধ্যদিয়ে জীবনব্যাপী মনুষ্যত্ব অর্জনের চেষ্টা করে, তারাই মানব।

ভালো মানুষের বিপরীত মন্দ মানুষ, যাদেরকে অমানুষ বলে অভিহিত করে সমাজ। যারা অমানুষ তারা সবার জন্য বিপজ্জনক। অমানুষ সবার মানবিকীকরণের প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়, ভালো ভালো প্রয়াসকে নস্যাৎ করে দেয়।

লোভ-লালসা, সাময়িক আনন্দ কিংবা কর্ম ব্যস্ততার চাপে পড়ে মানুষ অনেক কিছুই ভুলে যেতে পারে। সবাই যাতে ভুলে না যায়, তাই মাঝে-মধ্যে নীতি-নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। একবার আলোচনা শুরু করলে সবাই না হোক কিছু মানুষের বোধোদয় হতে পারে।

জ্ঞানীরা বলেছেন, একজন খারাপ মানুষের জন্য সমাজের যে ক্ষতি হয়, তারচেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হয় ভালো ও জ্ঞানী মানুষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে। এই সুযোগে মন্দ মানুষগুলো সমাজে নানা তৎপরতা চালিয়ে সমাজকে ক্ষতি করে।

ব্যক্তি সমাজের অংশ এবং সমাজ ব্যক্তি নিয়ে গঠিত। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির সমাজের প্রতি দায়িত্ব আছে এবং সমাজেরও ব্যক্তির প্রতি দায়িত্ব আছে। প্রত্যেক ব্যক্তিরই কর্তব্য সমাজ গঠন, সমাজ রক্ষা, সমাজের উন্নতি সাধন ও সংস্কার সাধন। অন্যদিকে সামাজিক সংস্থা ও সংগঠনগুলোর কর্তব্য ব্যক্তিকে রক্ষা করা, ব্যক্তির উন্নতিতে সহায়তা করা। ব্যক্তির সমাজবোধ ও সামাজিক দায়িত্বশীলতা একটি মৌলিক মানবিক গুণ।

স্নেহ, মমতা, প্রেম, শ্রদ্ধা, ভক্তি, দয়া, ভদ্রতা, সৌজন্য, সৌন্দর্যবোধ, সৌহার্দ্য, সহানুভূতি, সহিষ্ণুতা, ন্যায়বোধ ও ন্যায়নিষ্ঠা, সামঞ্জস্যবোধ, শক্তিসাধন, শ্রমশীলতা, অনুসন্ধিৎসা, স্বাধীন চিন্তাশীলতা, জ্ঞানানুরাগ, প্রগতিশীলতা ইত্যাদি অজস্র মানবিক গুণ আছে- যেগুলোর অনুশীলন মানুষের মানব হয়ে ওঠার জন্য অপরিহার্য। কোরআনে কারিমে আল্লাহর নিরানব্বই নামের উল্লেখ আছে। দেখা যায়, এ নামগুলোর প্রত্যেকটিই গুণবাচক এবং গুণগুলো মানুষেরই গুণ। ধর্মনির্বিশেষে মানুষের মানব হয়ে ওঠার জন্য এসব গুণের অনুশীলন করতে হয়।

সত্যাসন্ধ হওয়া ও সত্যনিষ্ঠ থাকা একটি মৌলিক মানবিক গুণ। পৃথিবীর সব ধর্মপ্রবর্তক ও আদর্শপ্রসারী মহামানবরা কোনো না কোনোভাবে মানুষকে সত্যাসন্ধ হতে এবং সত্যনিষ্ঠ থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। সত্যের অনুশীলনও কিছুটা ব্যক্তির আয়ত্ত্বাধীন- অনেকটাই সমাজ ও রাষ্ট্রের আনুকূল্যের ব্যাপার। সামাজিক প্রথা, পদ্ধতি ও রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান সত্যের প্রতিকূল হলে ব্যক্তি কতটা পারে? সত্যাসন্ধ হওয়ার ও সত্যনিষ্ঠ থাকার জন্য ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার সঙ্গে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও পালন করতে হয়।

ভালো মানুষ হওয়ার জন্য মানবিক গুণাবলির চর্চা অপরিহার্য। জীবনে মানবিক গুণাবলি অর্জন করেই মানুষ ভালো মানুষ হয়। যারা অনেক বেশি মানবিক গুণাবলির অধিকারী হন- তারা ‘মহামানব’ বলে অভিহিত হন।

দুষ্টু ও অমানুষরা যদি সংঘবদ্ধ হয় এবং ক্ষমতা লাভ করে, তাহলে সব মানুষের জন্য মানব হওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সে জন্য অমানুষকে দমন করা সমাজে ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানুষের অমানুষ হয়ে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ করা অপরিহার্য।

স্বদেশ, স্বজাতি, বিশ্বসম্প্রদায় ও সর্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালন আরেকটি মানবিক গুণ। স্বদেশপ্রেম ও স্বজাত্যবোধ অনুশীলনের ক্ষেত্র আর বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ ও আন্তর্জাতিকতাবোধ অনুশীলনের ক্ষেত্র এক নয়। একটিকে অন্যটির বিরোধী রূপে না গ্রহণ করে গ্রহণ করতে হয় সম্পূরক রূপে।

বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। গবেষণা করে সমস্যার সমাধান বের করে আনতে হবে। না হলে আগামী প্রজন্ম মনুষ্যত্বহীন জড় পদার্থে পরিণত হবে। মনে রাখতে হবে, নৈতিকতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা এখন আর আদব-কায়দার ধার ধারে না। বড়দের সম্মান করাটাও যে এ দেশের সংস্কৃতির অংশ তাও তারা ভুলতে বসেছে। এগুলোর অনুশীলন বাড়াতে হবে।

দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে সাধারণত মানুষের দোষ-ত্রুটি নিয়েই আলোচনা হয়। মানবিক গুণাবলি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে এ দেশে মানুষের সামনে মানবজীবনের নতুন অর্থ ও তাৎপর্য ফুটে উঠবে। তাতে মানুষ থেকে মানব হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে, দেখা দেবে অমানুষের তৎপরতা বন্ধ করার আগ্রহ।

নানা বাস্তবতার মাঝেও এ কথা স্বীকার করতে হবে, মানুষের মধ্যে মানবিক গুণাবলি একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়নি। এখনও মানুষের মধ্যে মানব হয়ে ওঠার আকাঙ্খা অবশিষ্ট রয়েছে। নানাভাবে সেই আকাঙ্খা অভিব্যক্ত হয়। মানবিক গুণাবলির বিকাশের এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে বিকৃত চিন্তা, সামাজিক অবক্ষয় এবং মানবিক বিপর্যয় তৈরির পথ বন্ধ হবে। সমাজ নিষ্ঠুর ও অসহিষ্ণুতার কবল থেকে রেহাই পাবে।

ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য যেমন এগুলো দরকার, তেমনি ভালো সমাজ ও ভালো রাষ্ট্রের জন্যও। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছুটা পারা যায়, সেটুকু করতে হবে, অনেকটা পারা যায় না- তার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রকে ভালো করে তুলতে কাজ করতে হবে।

   

কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেড় কোটি পশু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গতবারের চেয়ে এবার ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বেশি প্রস্তুত রয়েছে। খামারি ও প্রান্তিক চাষিরা জানিয়েছে, প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত। ফলে এবার বিদেশি পশুর ওপর নির্ভর করতে হবে না।

গত ৭ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি, সর্বাধিক পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। আর বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় ২০২১ সালে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি দেওয়া হয়। ওই বছর মাত্র ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন। কোরবানিকৃত এসব পশুর বেশিরভাগই দেশের খামারিরা লালন-পালন করে বড় করেন।

এবার কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখের ওপরে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৩ সালে সারাদেশে ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যদিও গতবছর সারা দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি।

২০২২ সালে কোরবানি দেওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। ২০২০ সালে ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি। ২০১৮ সালে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৭০টি ও ২০১৭ সালে ১ কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার ৯৫৬টি পশু কোরবানি করা হয়।

২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ও ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৯টি, খুলনা বিভাগে ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯০২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।

এর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৬০টি গরু, ১ লাখ ৭ হাজার ৮৭৫টি মহিষ, ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল, ৫ লাখ ২ হাজার ৩০৭টি ভেড়া ও ১ হাজার ২৪২টি অন্যান্য পশু।

অবশ্য এই হিসেবের বাইরে অনেকে নিজের পালিত গবাদি পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন, যা হিসেবে আসে না।

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান প্রত্যেক নারী-পুরুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআন মাজিদের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’

ইসলামি স্কলারদের মতে, কোরবানির জন্য উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ দুই বছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত। বয়স কম, কিন্তু দেখতে হৃষ্টপুষ্ট এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজন কোরবানি করতে পারবেন। উট, গরু, মহিষ সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

;

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করল মুসলিমরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্বঘোষণা মতে গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি হামলার প্রতি অব্যাহত সমর্থন দেওয়ায় ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা। বয়কটকারী দলে রয়েছেন- ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদসহ ব্যবসায়ী ও দাতব্য সংস্থার নেতারা।

রাীতি অনুযায়ী ঈদের পর মুসলিমদের জন্য প্রতি বছরই ডাউনিং স্ট্রিট ঈদ পার্টির আয়োজন করে। এবার সোমবার (১৫ এপ্রিল) ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পূর্ব থেকে চলে আসা রীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আগতদের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, হাউজ অব কমন্সে ইরান প্রশ্নে একটি বিবৃতি প্রস্তুত করতে তাকে ব্যস্ত থাকতে হবে। এ কারণে তিনি এই পার্টিতে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। তার বদলে ব্রিটিশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিচেল মুসলিমদেরকে স্বাগত জানান।

সাধারণভাবে এ ধরনের পার্টিতে যত লোক উপস্থিত হয়, সোমবার তার প্রায় অর্ধেক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এতে উপস্থিত থাকার জন্য প্রকাশ্যে অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

আবার যারা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকার ছোট ব্যাজ পরেছিলেন। কেউ কেউ আবার ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ কেফিয়েহ পরেছিলেন।

রক্ষণশীল নেতা ব্যারোনেস ওয়ার্সিসহ গুরুত্বপূর্ণ কেউই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। উল্লেখ্য ওয়ার্সি হলেন ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় প্রথম নারী মুসলিম মন্ত্রী। তিনি গাজার লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি প্রকাশ্যে সহানুভূতি প্রকাশ করে থাকেন।

উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, অনুষ্ঠানে তারা কোনো এমপিকে দেখেননি। তবে এমপি প্রার্থীদের কেউ কেউ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে বার্ষিক ইফতার মাহফিলও বয়কট করেছিল মুসলিমরা। সেখানেও ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদ করেছিল মুসলিমরা।

;

ফরজ হজ আদায় না করে উমরা করা ঠিক নয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজ কারা করবেন, উমরা কারা করবেন- এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মনে রাখতে হবে, ইসলামের সমস্ত ইবাদত ফরজ হওয়ার জন্য মৌলিক কয়েকটি শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম শর্ত হচ্ছে, তাকে মুসলিম এবং মুমিন হতে হবে। কোনো ব্যক্তির যদি অন্তরের মধ্যে ইমান ও ইসলাম না থাকে এবং তিনি যদি মুসলিম না হয়ে থাকেন অথবা ইসলামের কথা ঘোষণা করে থাকেন এবং ইসলামের ব্যাপারে আন্তরিকভাবে কপটতা রয়েছে, তার ওপর হজ ফরজ না এবং তিনি যদি হজপালন করে থাকেন, তাহলে তিনি হজের ফজিলত পাবেন না।

দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। এটা বলতে বোঝায় যে, ব্যক্তি দুটি জিনিসের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন এমন। এ ব্যাপারে মতভেদ থাকলেও যেটি বিশুদ্ধ অভিমত হজরত আবু দাউদ (রা.)-এর হাদিস দ্বারা বর্ণিত হয়েছে সে হচ্ছে- ১০ বছর। যদি কেউ এই বয়সে উন্নীত হয়ে থাকে, তাহলে সে হজপালন করে থাকে, তাহলে তার হজ গ্রহণযোগ্য হবে, যেহেতু সে এই বয়সের মধ্যে হজ করতে পেরেছে। এটা হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হলো, সমাজে অনেককেই দেখা যায়- ফরজ হজ আদায় করেননি কিন্তু উমরা পালন করতে যাচ্ছেন। এটা ভুল সিদ্ধান্ত। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে ভুল কীভাবে? ভুল হলো, হজ মৌলিক ইবাদত। আগে হজ। যেহেতু তিনি আল্লাহর ঘরে যেতে পারবেন, তার সামর্থ্য আছে তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। হজের জন্য যাবেন আগে হজ করবেন এরপর উমরাপালন করবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু শুধুমাত্র উমরা করতে যাবেন অথচ হজ করলেন না এটা ঠিক নয়। তাহলে তিনি ইসলামের রুকুনের ব্যাপারে গুরুত্ব দেননি। অবজ্ঞা করেছেন। হজ এখানে ফরজ, উমরা ওয়াজিব। তাই আগে হজ। এরপর উমরা। চাইলে একসঙ্গেও করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও আগে হজ করে তারপর উমরা করবেন।

ইসলামের বিধানে হজ আর উমরার বিধান সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো ব্যক্তি উমরা আদায় করার পর যদি তার কোনো শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়, কিন্তু যদি হজ তার ওপর ফরজ হয়ে যায়, তাহলে তিনি তার পক্ষ থেকে বদলি হজ করাবেন। হজ ফরজ হওয়ার যে বিধান আছে, সেটি যদি তার ওপর প্রযোজ্য হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই হজ করতে হবে।

কোনো ব্যক্তি উমরা আদায়ের পর তিনি যদি শারীরিক ও আর্থিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে যদি তার ওপর হজ ফরজ না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি উমরা করার জন্য সওয়াব পেয়ে যাবেন, তাকে হজ করতে হবে না।

উমরা করলেই হজ করতে হবে- এই কথা একেবারেই ভুল। উমরা করলে তিনি উমরার সওয়াব পাবেন। আর হজ যদি তার ওপর ফরজ হয়, তাহলে তিনি হজ আদায় করবেন। যদি এ সামর্থ্য তার কোনো কারণে হারিয়ে যায়, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ হবে না।

;

১৬ জুন হতে পারে কোরবানির ঈদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বাংলাদেশের এক দিন আগে ১০ এপ্রিল সৌদি আরবে পালিত হয় ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতরের ঠিক দুই মাস দশ দিন পর ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ পালনের নিয়ম। সে হিসেবে এবার ঈদুল আজহা হতে পারে ১৬ জুন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী এবার (২০২৪ সালে) ১০ জিলহজ বা ঈদুল আজহা হতে পারে জুন মাসের ১৬ তারিখ।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে আরবি মাসের গণনা শুরু হলেও বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের পরের দিন ঈদুল ফিতরা কিংবা ঈদুল আজহা পালন করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখ। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

ইসলামমতে, মহান আল্লাহ মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দেন। আদেশের পর তিনি তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে আল্লাহতায়ালা খুশি হন এবং শিশু ইসমাইলের পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়।

এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত পশু কোরবানি করেন। শেষনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের আগে যুগে যুগে সব শরিয়তে কোরবানির বিধান চালু ছিল।

সামর্থ্যবান ব্যক্তির শর্তসাপেক্ষে কোরবানি করা ওয়াজিব। ১০ থেকে ১৩ জিলহজের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হলে কোরবানি করা ওয়াজিব। অর্থাৎ এই সময় কারও কাছে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা থাকলে অথবা এর মূল্যের সমপরিমাণ সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত থাকলে কোরবানি করতে হবে।

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানির জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানিদাতাকে একটি করে সওয়াব দান করা হবে। কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়। -মেশকাত

কোরবানির বিনিময়ে সওয়াব পেতে হলে অবশ্যই কোরবানি হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে।

;