ফরিদুল হক খান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন সন্ধ্যায়



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
ফরিদুল হক খান দুলাল ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন সন্ধ্যায়, ছবি: সংগৃহীত

ফরিদুল হক খান দুলাল ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন সন্ধ্যায়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় ছয় মাস খালি থাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে নতুন মুখ। জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলালকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তাকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নেবেন তিনি।

শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদুল হক খান দুলাল বার্তা২৪.কমকে ‘নিশ্চিত কিছু না বলে শুধু দোয়া চান এবং বলেন যদি কোনো দায়িত্ব আসে সেটা পালনে তিনি প্রস্তুত।’

১৩ জুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয় মন্ত্রিশূন্য রয়েছে। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন সমাজ বিনিমার্ণ, হজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন, ধর্মীয় উৎসব উদযাপন ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা, অনুদান প্রদান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজগুলো করে থাকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ফরিদুল হক খান দুলাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জামালপুর-২ আসন (ইসলামপুর) থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্য। তিনি ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

ফরিদুল হক খান ১৯৫৬ সালের ২ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার উত্তর সিরাজাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. হবিবর রহমান খান ও মাতার নাম মোসাম্মৎ ফাতেমা খানম।

জানা গেছে, তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি দশম জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

১০ নভেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পুনর্গঠিত বোর্ড অব গভর্নসের গভর্নর হিসেবে ৩ বছরের জন্য মনোনীত হন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে দল আওয়ামী লীগ। ৪৬ সদস্যের ওই মন্ত্রিসভায় ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ জন উপমন্ত্রী রয়েছেন।

মন্ত্রিসভা গঠনের প্রায় সাড়ে ৪ মাসের মাথায় তা পুনর্বিন্যাস করা হয়। গত বছরের ১৯ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়।

একই দিন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে একই মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী করা হয়। এ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী করা হয় তাজুল ইসলামকে। তাজুল ইসলামকে আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও স্বপন ভট্টচার্যকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল স্বপন ভট্টাচার্যকে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের উপর কর্তৃত্ব হারান তাজুল ইসলাম।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দফতর রদবদল করা হয়। এরমধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে দফতর পরিবর্তন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরুকে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী করা হয়।

বর্তমানে মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ২৫ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৮ জন ও উপমন্ত্রী রয়েছেন ৩ জন।

   

যেভাবে ধরে রাখবেন রমজানের ভালো অভ্যাসগুলো



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করা, ছবি : সংগৃহীত

রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ ৩ সপ্তাহের প্রচেষ্টায় নিজেদের ভালো অভ্যাস গঠনে তৈরি করতে পারে। কোনো মানুষ যদি নিয়মিত ভালো কাজ করে তবে সে নিয়মিত কাজের একটি অভ্যাস তার মধ্যে তৈরি হয়। যেমন- নিয়মিত নামাজ পড়লে নামাজের অভ্যাস তৈরি হয়, রোজা রাখলে রোজাপালনের অভ্যাস তৈরি হয়; আবার মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে ধৈর্যধারণ করলে তাও তৈরি হয়। আর মুমিন-মুসলমানের এসব অভ্যাস তৈরিতে রমজান কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

রমজানে যে ব্যক্তি নিয়মিত রোজা রাখে, নামাজ আদায় করে, ধৈর্যধারণ করে- আল্লাহর ইচ্ছায় ওই ব্যক্তির মাঝে ভালো অভ্যাসগুলো তৈরি হয়। আবার রমজানের পরে অনেকেই সেসব ভালো গুণ থেকে দূরে সরে যায়। কিন্তু উচিৎ ছিলো, গুণগুলো ধরে রাখা। রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার রয়েছে বেশ কিছু উপায়। সেগুলো হলো-

সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালন
রমজানের পর প্রত্যেক সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালনের চেষ্টা করা। তাতে খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা সহজ হয়। রোজা মানুষকে শুধু আধ্যাত্মিক উপকারই দেয় না বরং তাতে শারীরিক স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারও রয়েছে।

স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা যায়, রোজাপালন মানুষের শরীর ও মনের জন্য অনেক উপকারি। রোজায় মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। ঘুম, মনোযোগ ও শারীরিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। নার্ভের কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও উন্নতি হয়।

আর সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালন সুন্নতের অনুসরণও বটে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সপ্তাহে ২ দিন (সোম ও বৃহস্পতিবার) রোজা রাখতেন। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সোমবার এবং বৃহস্পতিবার মানুষের কাজের হিসাব আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়। আর আমি এটি ভালোবাসি যে, রোজা পালনরত অবস্থায় আমার কাজে হিসাব পৌছানো হোক।’ -জামে তিরমিজি

দান-সদকা অব্যাহত রাখা
দানের অভ্যাস অব্যাহত রাখা। কেননা দান-সহযোগিতা মানুষকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। রমজানে যেভাবে বেশি সওয়াব লাভের আশায় মানুষ দান-সদকা করে, রমজান পরবর্তী সময়েও গরিবদের দান-সদকার অভ্যাস চালু রাখা।

দানের কার্যকারিতা শুধু আখেরাতে নয়, বরং দুনিয়াতেও লাভ হয়। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দান-সাদকা মানুষের বিপদ-আপদ দূর করে দেয়।’ দান-সদকার ফলে সমাজের গরিব ও অসহায় মানুষ সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারে। তাতে পাস্পরিক সুসম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সুন্দর সমাজ তৈরি হয়।

নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত
রমজানের পরে নির্ধারিত একটি সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ কোরআন মাজিদ তেলাওয়াতের অভ্যাস তৈরি রাখা। যেভাবে রমজান মাসে মানুষ নির্ধারিত সময়ে কোরআন তেলাওয়াত করে থাকে।

কোরআন তেলাওয়াত মানুষের মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তির জন্য সহায়ক। এটা উত্তম ইবাদতও বটে। কোরআন পরকালে শুধু তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশই করবে না বরং দুনিয়াতে অনেক অন্যায় ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে।

অর্থসহ কোরআন মাজিদ পড়া
রমজানের পর সামান্য সময়ের জন্য হলেও কোরআন অধ্যয়ন তথা অর্থসহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পড়া। রমজানের পরে কোরআন বুঝার নিয়মিত চেষ্টা অব্যাহত রাখলে, একটা সময় কোরআন বুঝা সহজ হয়ে যাবে। আর সে আলোকে গড়ে ওঠবে মানুষ জীবন।

কোরআনে কারিমের জ্ঞান বাস্তবায়ন
রমজান মাসে কোরআনের যেসব জ্ঞান অর্জন করেছে মানুষ। রমজানের পরেও তা যথাযথ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। কোরআনে কারিমের সব ঘটনাগুলোই অর্থবহ এবং পরিপূর্ণ। কোরআনের সে ঘটনাগুলোর আলোকেই নিজেদের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সহজ হয়।

যখনই কোরআনের কোনো ঘটনা বা জ্ঞান অর্জন হয়, তখনই সে ঘটনা বা গুণ দিয়ে নিজেকে মূল্যয়ন করুন। যদি তা থেকে থাকে আলহামদুলিল্লাহ। আর সে গুণ না থাকলে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।

দোয়া করা
কোরআনের অনেক ঘটনায় দোয়ার কথা এসেছে। কল্যাণ লাভে দোয়ার রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। রমজান মাসে দোয়া যেভাবে মানুষের কার্যতালিকা থেকে বাদ যায়নি। রমজান পরবর্তী সময়েও তা অব্যাহত রাখা জরুরি। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’

আল্লাহতায়ালা প্রতিদিনই মানুষকে ডেকে ডেকে বলেন, তার কাছে দোয়া করার জন্য। নিজের গোনাহ মাফের আহ্বান করেন, রিজিক চাওয়ার আহ্বান করেন। সুতরাং যারা রমজানের পরেই আল্লাহর কাছে নিয়মিত দিনে-রাতে দোয়ার অভ্যাস গঠন করবে, তারাই সফলকাম হবে।

ভালো কাজে আগ্রহী হওয়া
প্রতিবেশি কিংবা বন্ধুর সঙ্গে ভালো অভ্যাস গঠনে পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করা। একে অপরের সঙ্গে ভালো আচরণ করা। কারো মাঝে অন্যায় বা খারাপ আচরণ থাকলে তা থেকে বেঁচে থাকতে ভালো কাজ বা গুণের পরামর্শ দেওয়া। একে অপরকে নিয়মিত ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করা।

ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ দিতে একটি গ্রুপ তৈরি করা যেতে পারে। যেখানে প্রতিদিনই নির্ধারিত একটা সময় ভালো কাজের আলোচনা হতে পারে। হতে পারে তা কোরআন শিক্ষা বা গবেষণার আসর।

প্রতিদিন নিজেকে মূল্যয়ন করা
প্রতিটি মানুষেরই উচিত নিয়মিত নিজের কাজের মূল্যয়ন করা। আর তাতে ভেসে উঠবে ভালো ও মন্দ কাজ প্রতিচ্ছবি। নিজেকে মূল্যয়নে কোরআনে সে আয়াতটি বেশি বেশি স্মরণ করা উচিত। তাহলো, ‘তোমার কিতাব (কাজের হিসাব) পাঠ কর। আজ তোমার হিসাব (কাজের মূল্যয়ন) গ্রহণে তুমিই যথেষ্ট।’ -সুরা বনি ইসরাইল : ১৪

প্রতিদিন নিজের কাজের মূল্যয়ন অব্যাহত রাখলে গোনাহমুক্ত জীবন লাভ সম্ভব হবে। পরকালে নিজেদের কাজের হিসাব প্রদানও হবে সহজ। আর তাতেই আলোকিত জীবন লাভ করবে মুমিন।

;

কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেড় কোটি পশু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গতবারের চেয়ে এবার ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বেশি প্রস্তুত রয়েছে। খামারি ও প্রান্তিক চাষিরা জানিয়েছে, প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত। ফলে এবার বিদেশি পশুর ওপর নির্ভর করতে হবে না।

গত ৭ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি, সর্বাধিক পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। আর বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় ২০২১ সালে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি দেওয়া হয়। ওই বছর মাত্র ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন। কোরবানিকৃত এসব পশুর বেশিরভাগই দেশের খামারিরা লালন-পালন করে বড় করেন।

এবার কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখের ওপরে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৩ সালে সারাদেশে ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যদিও গতবছর সারা দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি।

২০২২ সালে কোরবানি দেওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। ২০২০ সালে ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি। ২০১৮ সালে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৭০টি ও ২০১৭ সালে ১ কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার ৯৫৬টি পশু কোরবানি করা হয়।

২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ও ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৯টি, খুলনা বিভাগে ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯০২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।

এর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৬০টি গরু, ১ লাখ ৭ হাজার ৮৭৫টি মহিষ, ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল, ৫ লাখ ২ হাজার ৩০৭টি ভেড়া ও ১ হাজার ২৪২টি অন্যান্য পশু।

অবশ্য এই হিসেবের বাইরে অনেকে নিজের পালিত গবাদি পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন, যা হিসেবে আসে না।

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান প্রত্যেক নারী-পুরুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআন মাজিদের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’

ইসলামি স্কলারদের মতে, কোরবানির জন্য উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ দুই বছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত। বয়স কম, কিন্তু দেখতে হৃষ্টপুষ্ট এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজন কোরবানি করতে পারবেন। উট, গরু, মহিষ সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

;

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করল মুসলিমরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্বঘোষণা মতে গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি হামলার প্রতি অব্যাহত সমর্থন দেওয়ায় ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা। বয়কটকারী দলে রয়েছেন- ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদসহ ব্যবসায়ী ও দাতব্য সংস্থার নেতারা।

রাীতি অনুযায়ী ঈদের পর মুসলিমদের জন্য প্রতি বছরই ডাউনিং স্ট্রিট ঈদ পার্টির আয়োজন করে। এবার সোমবার (১৫ এপ্রিল) ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পূর্ব থেকে চলে আসা রীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আগতদের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, হাউজ অব কমন্সে ইরান প্রশ্নে একটি বিবৃতি প্রস্তুত করতে তাকে ব্যস্ত থাকতে হবে। এ কারণে তিনি এই পার্টিতে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। তার বদলে ব্রিটিশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিচেল মুসলিমদেরকে স্বাগত জানান।

সাধারণভাবে এ ধরনের পার্টিতে যত লোক উপস্থিত হয়, সোমবার তার প্রায় অর্ধেক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এতে উপস্থিত থাকার জন্য প্রকাশ্যে অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

আবার যারা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকার ছোট ব্যাজ পরেছিলেন। কেউ কেউ আবার ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ কেফিয়েহ পরেছিলেন।

রক্ষণশীল নেতা ব্যারোনেস ওয়ার্সিসহ গুরুত্বপূর্ণ কেউই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। উল্লেখ্য ওয়ার্সি হলেন ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় প্রথম নারী মুসলিম মন্ত্রী। তিনি গাজার লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি প্রকাশ্যে সহানুভূতি প্রকাশ করে থাকেন।

উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, অনুষ্ঠানে তারা কোনো এমপিকে দেখেননি। তবে এমপি প্রার্থীদের কেউ কেউ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে বার্ষিক ইফতার মাহফিলও বয়কট করেছিল মুসলিমরা। সেখানেও ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদ করেছিল মুসলিমরা।

;

ফরজ হজ আদায় না করে উমরা করা ঠিক নয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজ কারা করবেন, উমরা কারা করবেন- এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মনে রাখতে হবে, ইসলামের সমস্ত ইবাদত ফরজ হওয়ার জন্য মৌলিক কয়েকটি শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম শর্ত হচ্ছে, তাকে মুসলিম এবং মুমিন হতে হবে। কোনো ব্যক্তির যদি অন্তরের মধ্যে ইমান ও ইসলাম না থাকে এবং তিনি যদি মুসলিম না হয়ে থাকেন অথবা ইসলামের কথা ঘোষণা করে থাকেন এবং ইসলামের ব্যাপারে আন্তরিকভাবে কপটতা রয়েছে, তার ওপর হজ ফরজ না এবং তিনি যদি হজপালন করে থাকেন, তাহলে তিনি হজের ফজিলত পাবেন না।

দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। এটা বলতে বোঝায় যে, ব্যক্তি দুটি জিনিসের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন এমন। এ ব্যাপারে মতভেদ থাকলেও যেটি বিশুদ্ধ অভিমত হজরত আবু দাউদ (রা.)-এর হাদিস দ্বারা বর্ণিত হয়েছে সে হচ্ছে- ১০ বছর। যদি কেউ এই বয়সে উন্নীত হয়ে থাকে, তাহলে সে হজপালন করে থাকে, তাহলে তার হজ গ্রহণযোগ্য হবে, যেহেতু সে এই বয়সের মধ্যে হজ করতে পেরেছে। এটা হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হলো, সমাজে অনেককেই দেখা যায়- ফরজ হজ আদায় করেননি কিন্তু উমরা পালন করতে যাচ্ছেন। এটা ভুল সিদ্ধান্ত। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে ভুল কীভাবে? ভুল হলো, হজ মৌলিক ইবাদত। আগে হজ। যেহেতু তিনি আল্লাহর ঘরে যেতে পারবেন, তার সামর্থ্য আছে তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। হজের জন্য যাবেন আগে হজ করবেন এরপর উমরাপালন করবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু শুধুমাত্র উমরা করতে যাবেন অথচ হজ করলেন না এটা ঠিক নয়। তাহলে তিনি ইসলামের রুকুনের ব্যাপারে গুরুত্ব দেননি। অবজ্ঞা করেছেন। হজ এখানে ফরজ, উমরা ওয়াজিব। তাই আগে হজ। এরপর উমরা। চাইলে একসঙ্গেও করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও আগে হজ করে তারপর উমরা করবেন।

ইসলামের বিধানে হজ আর উমরার বিধান সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো ব্যক্তি উমরা আদায় করার পর যদি তার কোনো শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়, কিন্তু যদি হজ তার ওপর ফরজ হয়ে যায়, তাহলে তিনি তার পক্ষ থেকে বদলি হজ করাবেন। হজ ফরজ হওয়ার যে বিধান আছে, সেটি যদি তার ওপর প্রযোজ্য হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই হজ করতে হবে।

কোনো ব্যক্তি উমরা আদায়ের পর তিনি যদি শারীরিক ও আর্থিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে যদি তার ওপর হজ ফরজ না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি উমরা করার জন্য সওয়াব পেয়ে যাবেন, তাকে হজ করতে হবে না।

উমরা করলেই হজ করতে হবে- এই কথা একেবারেই ভুল। উমরা করলে তিনি উমরার সওয়াব পাবেন। আর হজ যদি তার ওপর ফরজ হয়, তাহলে তিনি হজ আদায় করবেন। যদি এ সামর্থ্য তার কোনো কারণে হারিয়ে যায়, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ হবে না।

;