হজরত ঈসা আ.-এর শৈশবের বাড়ি আবিষ্কার
ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলীয় নাসেরাহ এলাকায় অবস্থিত একটি বাড়িকে হজরত ঈসা (আ.)-এর শৈশবের বাড়ি বলে দাবি করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকগণ। তাদের দাবি, এ বাড়িতে হজরত ঈসা (আ.) তার শৈশবকাল কাটিয়েছেন।
বেথেলহেম এবং জেরুজালেমের পর এটি তৃতীয় শহর, সেখানে হজরত ঈসা (আ.) তার জীবন অতিবাহিত করেছেন। বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী, হজরত ঈসা (আ.)-এর শৈশব এবং কৈশোরকাল এ সব শহরে কাটিয়েছেন।
১৮৮০ সালে বাড়িটি নাসেরাইট খ্রিস্টান নানরা আবিষ্কার করেন। ১৯৩০ সালে বাইবেলের পণ্ডিত ভিক্টর গেরিন বলেন, নাসেরাহ শহরে ১৮৮৮ সালে গবেষণার জন্য খননকাজ অব্যাহত ছিল। সে সময় নানরা সেখনে হজরত ঈসা (আ.)-এর বসবাস করার কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি, তবে এখন একজন প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক নিশ্চিত হয়েছেন, এটিই হজরত ঈসা (আ.)-এর শৈশবের বাড়ি।
লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের প্রফেসর কেন ডার্ক ২০০৬ সালে এই অঞ্চলে প্রথমবারের মতো অন্বেষণ শুরু করেন এবং ২০১৫ সালে তিনি নিশ্চিত হন, এই বাড়িটিতেই হজরত ঈসা (আ.) তার শৈশবকাল কাটিয়েছেন।
তিনি গবেষণার জন্য আবিষ্কৃত নানা উপাদান আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, বাড়িটি খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল।
অধ্যাপক ডার্ক বিশ্বাস করেন, সংগৃহীত তথ্য ও প্রমাণ দ্বারা তার অনুমান সঠিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
এই প্রত্নতাত্ত্বিকের মতে, বাড়িটি দক্ষ ও পেশাদার রাজমিস্ত্রি দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছিল।
হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন বনি ইসরাঈলের সর্বশেষ নবী ও কিতাবধারী রাসূল। তার ওপর ইনজিল নামের কিতাব নাজিল হয়।
তিনি ইহুদি চক্রান্তের শিকার হয়ে সরকারি নির্যাতনের সম্মুখীন হন। ফলে আল্লাহ তাকে সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন। তিনিই একমাত্র নবী, যাকে মহান আল্লাহ জীবিত অবস্থায় দুনিয়া থেকে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন।
কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার অব্যবহিত কাল আগে হজরত ঈসা (আ.) আল্লাহর হুকুমে আবার পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মদি শরিয়ত অনুসরণ করবেন। তিনি ইমাম মাহদির নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য কায়েম করবেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মদির সঙ্গে বিশ্বসংস্কারে ব্রতী হবেন। কোরআন ও হাদিসে তার সম্পর্কে সঠিক ও বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে।
হজরত ঈসা (আ.)-কে ইহুদিরা নবী বলে স্বীকার করেনি। অন্যদিকে হজরত ঈসা (আ.)-এর ভক্ত ও অনুসারী খ্রিস্টান সম্প্রদায় তাকে ‘আল্লাহর পুত্র’ হিসেবে বিশ্বাস করে। তারা ত্রিত্ববাদে বিশ্বাস করে।
হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের মোট ১৫টি সূরায় ৯৮টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।