রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্টের সংবর্ধনা পেল আল রশীদ ফাউন্ডেশন

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্টের সংবর্ধনা পেল আল রশীদ ফাউন্ডেশন, ছবি: সংগৃহীত

রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্টের সংবর্ধনা পেল আল রশীদ ফাউন্ডেশন, ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে করোনা মহামারির শুরুতে যখন করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ দাফনে কেউ এগিয়ে আসত না। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি এমনকি নিকটাত্মীয়রাও আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে মৃতদেহের সংস্পর্শে আসত না। তখন আল রশীদ ফাউন্ডেশন একদল স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে করোনায় আক্রান্তদের দাফন-কাফনে এগিয়ে আসে।

ভয়াবহ করোনা মহামারির দুঃসময়ে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ দাফনে বিশেষ সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য আল রশীদ ফাউন্ডেশনকে যৌথভাবে সংবর্ধনা দিয়েছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।

বিজ্ঞাপন

২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনায় আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির বাংলাদেশের হেড অব ডেলিগেশন পাবলো পারসেলসি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন ও আইসিআরসির কর্মকর্তা জেনিফার হিউজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্টের সংবর্ধনা পেল আল রশীদ ফাউন্ডেশন, ছবি: সংগৃহীত

সংবর্ধনা শেষে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ দাফনের কাজ অব্যাহত রাখা এবং করোনা পরবর্তী সময়েও জনকল্যানমূলক কাজ অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আল রশীদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।

বিজ্ঞাপন

এর আগে আইসিআরসির কর্মকর্তা জেনিফার হিউজের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কর্মকর্তাগণ আল রশীদ ফাউন্ডেশনের কার্যালয় পরিদর্শন করেন।

এ সময় তারা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্বেচ্ছাসেবকদের খোঁজ-খবর নেন এবং শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন। করোনা মহামারির দুঃসময়ে মৃতদেহ দাফনের দুঃসাহসিক কাজে স্বেচ্ছায় আত্মনিয়োগের জন্য আল রশীদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, দাফন-কাফনের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকদের অভিনন্দন জানান।

মানবিক দায়বোধ থেকে করোনা মহামারি শুরুর পর করোনায় আক্রান্ত কিংবা করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীদের জানাজা ও দাফন-কাফনে নানাবিধ জটিলতা দেখা দেওয়ার করুণ সময়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ফাউন্ডেশনটি তার বাবার নামানুসারে প্রতিষ্ঠা করেন। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মাওলানা রশিদ আহমেদ অত্যন্ত নামকরা আলেম ছিলেন।

আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কর্মকর্তাগণ আল রশীদ ফাউন্ডেশনের কার্যালয় পরিদর্শন করেন, ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত এই ফাউন্ডেশনে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম নিজ অর্থায়নে একটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের দু’টি অ্যাম্বুলেন্স কেনেন। কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আল ফাউন্ডেশনকে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয়।

এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশনটি আট শতাধিক মরদেহ দাফন করেছে। সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে যেখানে প্রয়োজন সেখানেই করোনারোগী পরিবহন এবং মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের কাজ করে থাকে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তাদের অপারেশনাল অফিস অবস্থিত। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা ঢাকার ভেতরে মরদেহ হাসপাতাল থেকে গ্রহণ করে গোসল দেওয়া, কাফন পরানো, জানাজা শেষে কবর দেওয়া এবং জানাজা পরবর্তী দোয়া ইত্যাদি করে থাকেন বিনামূল্যে।

তিনজন নারীসহ ৩০ সদস্যের একদল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ আলেম ও স্বেচ্ছাসেবক দল ছাড়াও সারাদেশে দাফনকাজে তাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টিম রয়েছে।