‘সালাত ফার্স্ট’ অ্যাপের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ!

‘সালাত ফার্স্ট’ অ্যাপের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ, ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ট একটি প্রযুক্তি সংস্থার কাছে ব্যবহারকারীদের অবস্থানের তথ্য পাচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে জনপ্রিয় এক অ্যাপর বিরুদ্ধে। কানাডিয়ান-আমেরিকান ভাইস মিডিয়ার প্রযুক্তিবিষয়ক ম্যাগাজিন মাদারবোর্ড এ খবর প্রকাশ করেছে।
মাদারবোর্ড তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, জনপ্রিয় ‘সালাত ফার্স্ট’ অ্যাপ ফরাসি প্রযুক্তি সংস্থা প্রিডিসিওর কাছে ব্যবহারকারীদের অবস্থানের তথ্য বিক্রি করছিল। সংস্থাটি আগে এফবিআইয়ের সঙ্গে কাজ করা মার্কিন সরকারের এক ঠিকাদার, আইসিই ও শুল্ক ও সীমান্ত নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত একটি জটিল তথ্য সরবরাহ চেইনের অংশ ছিল।
মাদারবোর্ড জানিয়েছে, একটি উৎস থেকে তারা অ্যাপটির ব্যবহারকারীদের সুনির্দিষ্ট গতিবিধির বিশাল তথ্যের সমাহার খুঁজে পেয়েছে।
এ ধরণের স্পর্শকাতর তথ্যগুলো সম্ভবত মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনযাপনকে ট্র্যাক করছিল বলে অভিযোগ করেছে সূত্রটি।
তথ্যগুলো যারা কিনছে তারা এগুলোর অপব্যবহার করতে পারে বলে ‘উদ্বেগ প্রকাশ করা’ হয়েছে।
সূত্রমতে, ‘সারাদিন ট্র্যাকিংয়ের ফলে অনেক তথ্য চলে আসে। সুতরাং যখন আপনি এ সম্পর্কে অবগত নন, তখন এটা আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত নয়।’
১০ মিলিয়নেরও বেশি বার ডাউনলোড হওয়া সালাত ফার্স্ট অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের তথ্য বিক্রি করছে।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে মিডলইস্ট আইয়ের অনুরোধে সাড়া দেননি অ্যাপটির প্রস্তুতকারক হিচাম বৌশাবা।
তবে মাদারবোর্ডকে বলেছেন, শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালি থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা হলে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
প্রিডিসিওর কাছে তথ্য পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৌশাবা।
তিনি বলেছেন, জনপ্রিয় নামাজের অ্যাপ মুসলিম প্রোর কেলেঙ্কারির পর ৬ ডিসেম্বর তারা এ চুক্তি বাতিল করেন।
মাদারবোর্ড জানায়, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে অ্যাপটির নীতিমালার একটি আর্কাইভ কপিতে দেখা যায়। সালাত ফার্স্ট তাদের গোপনীয়তার নীতিমালায় প্রিডিসিও নাম উল্লেখ করেছে। তবে অ্যাপটির মধ্যে গোপনীয়তার নীতিমালার কোনো কপি বা লিঙ্ক নেই। যা গুগল প্লে স্টোরের নীতিমালার লঙ্ঘন।
গুগলের একজন মুখপাত্র মাদারবোর্ডকে জানান, প্লে অ্যাপগুলো থেকে সংগৃহীত ব্যক্তিগত ও স্পর্শকাতর তথ্যগুলোর বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে প্লে স্টোর। যে অ্যাপগুলো আমাদের নীতি লঙ্ঘন করেছে আমরা তাদের ব্যাপারে তদন্ত করছি। লঙ্ঘনের বিষয়টি নিশ্চিত হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রিডিসিও তাদের ওয়েবসাইট ডাউন করে রেখেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, প্রিডিসিও ‘মানব ট্র্যাকিংয়ের উদ্দেশ্যে জাতিগত, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক গোষ্ঠী চিহ্নিতকরণ বা যেকোনো ধরণের লোক শনাক্তকরণের জন্য গোয়েন্দা তথ্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কোনো সরকারি, বাণিজ্যিক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করে না।’