প্রথম আলেম হিসেবে করোনার টিকা নিলেন মুফতি হামজা

  • মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

করোনার টিকা নিচ্ছেন মুফতি হামজা ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত

করোনার টিকা নিচ্ছেন মুফতি হামজা ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত

‘ভয়কে জয় করেই টিকা নিয়েছি। আশা করি, এর মাধ্যমে টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্ট অজানা ভয় কাটবে। একটি ভালো বার্তা যাবে সবার মাঝে।’

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে উদ্বোধন হয়েছে বাংলাদেশের করোনার টিকাদান কর্মসূচি। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞাপন

করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর প্রথম যে দশ জন টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে সেবামূলক দাতব্য প্রতিষ্ঠান আল মারকাজুল ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুফতি হামজা ইসলাম একজন। তিনি বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে বাম হাতে টিকা গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম আলেম হিসেবে তিনি করোনার টিকা নিলেন।

রাত আটটার সময় বার্তা২৪.কম-এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি অফিস করছিলেন মারকাজুল ইসলামীতে। কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো সমস্যাবোধ করছি না। অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক কাজ করছি।’ এ সময় তিনি, ‘কোনো ধরনের গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে নির্ভয়ে টিকা নেওয়ার’ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

মুফতি হামজা বলেন, ‘দেশে করোনা আক্রান্তদের মরদেহ ফেলে রাখার মতো অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। এমন প্রেক্ষাপটে মানবতার সেবায় আমরা সবার আগে মৃতদের দাফন-কাফনের কাজ সম্পন্ন করেছি। এরপরই অনেকে এ কাজে আগ্রহী হয়েছেন। তদ্রুপ টিকা নিয়েও নানা শঙ্কার কথা অনেকে বলছেন, মানুষের শঙ্কা কাটাতে আলেম হিসেবে নিজের দায়বদ্ধতা থেকে টিকা নিয়েছে। আশা করি, অন্যরাও ভয় কাটিয়ে টিকা গ্রহণ করবেন।’

বাংলাদেশে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনে সবার আগে এগিয়ে আসে মারকাজুল ইসলামী। গত বছরের ২৯ মার্চ প্রথম রাজধানীর খিলগাঁও-তালতলায় করোনায় মৃত সন্দেহভাজন এক নারীর লাশ দাফনের মাধ্যমে আল মারকাজুল ইসলামী আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৩ হাজার ২৫৫ জনকে দাফন করেছে।

এ ছাড়া দেশের ১০টি সিটি করপোরেশন, বিভিন্ন সেবা সংস্থা বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশে ৬৪ জেলায় করোনা আক্রান্তদের লাশ গোসল, দাফন-কাফন, কবরস্থান সংলগ্ন মৃতদেহ গোসলখানা নির্মাণ, কবরস্থান পরিচর্যা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে আল মারকাজুল ইসলামী।

প্রসঙ্গত ১৯৮৮ সালে নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম আল মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই সংস্থাটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ সেবার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।