মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনে মুসলিমদের গুরুত্ব বাড়ছে



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
মার্কিন নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন এক মুসলিম নারী, ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন এক মুসলিম নারী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় জনগোষ্ঠী হিসাবে মুসলিমরা তৃতীয় বৃহত্তম। দেশটির ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে মুসলমানদের সুদীর্ঘ ইতিহাস। ইতিহাস বলছে, আড়াই শ’ বছর আগেই মার্কিন ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ইসলাম। মার্কিন সংবিধানের আর্টিকেল ৬-এ স্পষ্টভাবে লেখা আছে, ‘ধর্ম কোনো ধরনের সরকারি রাষ্ট্রীয় বা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে না।’ তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনসহ আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতারা ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছিলেন বলেই সংবিধানে এমন ধারা স্থান পেয়েছে।

এখানে একটি তথ্য জানিয়ে রাখা ভালো, দেশটির স্বাধীনতার অনেক আগে ১৭৬৫ সালে ইংরেজিতে অনুবাদ করা একটি কোরআনে কারিমের কপি কিনেছিলেন জেফারসন। ১১ বছর পর তিনিই রচনা করেন আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। জেফারসনের কেনা পবিত্র কোরআনের ওই কপিটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে সংরক্ষিত আছে।

আমেরিকার প্রথম মসজিদ নির্মাণ করা হয় ১৮৯৩ সালে শিকাগোতে। আর দ্বিতীয় মসজিদটি নির্মিত হয় প্রথম মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রায় তিন দশক পর ১৯২১ সালে। মিশিগান রাজ্যের হাইল্যান্ড পার্কে ওই মসজিদটি স্থাপন করেন কিছু মুসলিম অভিবাসী।

১৭৬৫ সালে ইংরেজিতে অনুবাদ করা কোরআনে কারিমের এই কপি কিনেছিলেন জেফারসন, ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সমাজে কালো মানুষদের তখন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হতো। কিন্তু ইসলাম তাদের দিয়েছিল এমন একটি প্ল্যাটফরম, যেখানে সব মানুষ সমান। এর ফলে দেখা যায় দেশটিতে মুসলিম অভিবাসী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ করে বিংশ শতকের শুরুর দিকে দলে দলে মানুষ মুসলমান হতে থাকেন। অন্য দিকে বিংশ শতাব্দী শেষ হওয়ার আগেই অন্তত ১১ লাখ মুসলিম আমেরিকায় প্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন বসবাসের ও অভিবাসনের কারণে মুসলিমরা ধীরে ধীরে মার্কিন সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠে।

তবে এই পরিস্থিতি পাল্টে যায় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর। কথিত মুসলিম জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার। প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে ওই হামলায়। এ ঘটনা আমেরিকায় অবস্থানকারী মুসলিমদের ওপর তীব্র নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এক ধরনের বিপদের মুখোমুখি হন তারা।

টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যেই আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মসজিদ এবং ইসলামিক কেন্দ্রগুলোতে মার্কিন পতাকা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং সবার জন্য দুয়ার উন্মুক্ত করে অমুসলিমদের আহ্বান জানানো হয় সাধারণ মুসল্লিদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের জন্য। এ সময় তারা ইসলাম ধর্মের শান্তির বার্তা সম্পর্কে অমুসলিমদের জানাতে শুরু করে এবং সদর্পে জানান দেয়, আমেরিকায় বসবাসকারী মুসলিমরা শান্তিপ্রিয় এবং দেশপ্রেমিক।

আমেরিকার প্রথম মসজিদ নির্মিত হয় ১৮৯৩ সালে শিকাগোতে, ছবি: সংগৃহীত

এরই মধ্যে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের সূচনা হয়। ঠিক এ সময়টিতে ইসলাম ধর্ম ও মুসলিমদের সম্পর্কে আমেরিকানদের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। মুসলমান, ইসলাম এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন, তথ্যচিত্র এবং বিভিন্ন বই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্সগুলোতে যুক্ত করা হয়। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কয়েক মিলিয়ন অমুসলিম আমেরিকান ইসলাম ধর্ম এবং এর অনুসারী, ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়।

২০১৭ সালে মার্কিন পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক শুমারিতে দেখা যায়, দেশটিতে প্রায় ৩৫ লাখ মুসলিম বসবাস করছেন। যা মোট আমেরিকান জনগোষ্ঠীর ১ দশমিক ১ শতাংশ। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর) নামে ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি অ্যাডভোকেসি সংগঠনের দাবি, আমেরিকায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ মুসলিম বসবাস করছেন।

পিউ রিসার্চের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকায় মুসলিমের সংখ্যা ৮১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এমনটি হলে ইসলাম হবে আমেরিকার দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম। পিউ রিসার্চের মতে, মুসলিম নারীরা অধিকহারে সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম। ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পৃথিবীতে যত শিশুর জন্ম হয়েছে, তার ৩৫ শতাংশই মুসলিম শিশু। ১৯৯২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ মুসলিম বৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেন। ২০১২ সালেই প্রায় এক লাখ মুসলিম দেশটিতে অভিবাসিত হন। গত শতকের ৯০ দশকে আমেরিকায় প্রবেশ করা বেশিরভাগ মুসলিম মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার। তবে, ২০১২ সালের পর পাকিস্তান, ইরান, বাংলাদেশ ও ইরাক থেকে সবচেয়ে বেশি মুসলিম দেশটিতে বৈধভাবে প্রবেশ করেন।

আমেরিকার প্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান কিথ এলিসন, ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকায় মুসলিম সংখ্যাধিক্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজনীতিতেও তাদের অবস্থান ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ডেমোক্রেটিক পার্টির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান প্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান কিথ এলিসন। ২০০৭ সালে মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সদস্য কিথ এলিসন তার উদারনৈতিক মনোভাবের কারণে মার্কিন সমাজে বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। পরবর্তীতে কংগ্রেসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে আরও বেশ কয়েকজন মুসলিম প্রার্থী নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ মার্কিন নির্বাচনে ৯ মুসলিম প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এটাই সর্বাধিক সংখ্যক মুসলিম প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। মুসলিম প্রার্থীদের বিজয় লাভ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে মুসলিমদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। বিজয়ী ৯ মুসলিম প্রার্থীর অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসতি স্থাপন করেছেন।

বিভিন্ন রাজ্য থেকে এবারের ভোটে নির্বাচিত পাঁচ নারী ও চার পুরুষ সদস্য হলেন- রাশিদা তালিব, ইলহান ওমর, আইমান জাদেহ, মৌরি তার্নার, মাদিনা উইলসন অন্তন, সামবা বালদেহ, ক্রিস্টোফার বেনজামিন, আবুল বি খান ও শেখ রহমান। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে মুসলিমদের ৭০ শতাংশ ভোটই বাইডেন পেয়েছেন। মার্কিন সমাজে মুসলিমদের প্রভাব বাড়ার বিষয়টি আন্দাজ করা যায় নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের দিকে তাকালে। এ পর্যন্ত ১৫ জন আমেরিকান মুসলিমকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। এর আগে মার্কিন প্রশাসনে এত বেশি মুসলিম মুখ দেখা যায়নি।

পবিত্র কোরআন হাতে শপথ নিচ্ছেন রাশিদা তালিব, ছবি: সংগৃহীত

বাইডেনের প্রশাসনে নিযুক্ত আমেরিকান মুসলিমরা হলেন- ১. আয়েশা শাহ, হোয়াইট হাউসের ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি অফিসের অংশীদার বিষয়ক পরিচালক। ২. সামিরা ফাজিলি, মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের (এনইসি) উপ-পরিচালক। ৩. উজরা জিয়া, নাগরিক সুরক্ষা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি। ৪. আলী জায়েদি, জাতীয় জলবায়ু বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা। ৫. জায়েন সিদ্দিক, হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ। ৬. রীমা ডোডিন, হোয়াইট হাউসের আইন বিষয়ক অফিসের উপ-পরিচালক। ৭. আলী জাফরি, হোয়াইট হাউসের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা। ৮. মাহের বিতার, হোয়াইট হাউস জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলে গোয়েন্দা বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর। ৯. সামিয়া আলী, হোয়াইট হাউসের ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট কাউন্সেল। ১০. সালমান আহমেদ, স্টেট ডিপার্টমেন্টের নীতি পরিকল্পনা পরিচালক। ১১. ফারুক মিঠা, উপ-সহকারী প্রতিরক্ষা সচিব। ১২. ডানা শানাত, হোয়াইট হাউসের আইন বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা। ১৩. ব্রেন্ডা আবদেলাল, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের উপদেষ্টা। ১৪. ইসরা ভাটি, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সিনিয়র উপদেষ্টা ও ১৫. সায়মা মহসিন, পূর্বঞ্চলীয় জেলায় নিযুক্ত মার্কিন অ্যাটর্নি।

এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পর মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছেন জো বাইডেন। তার এই পদক্ষেপও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। সবমিলিয়ে ধীরে ধীরে এটা স্পষ্ট হচ্ছে, মার্কিন মুলুকে মুসলিমরা শুধু উপার্জন কিংবা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় যায়নি এবং এ জন্যই ব্যতিব্যস্ত থাকে না। তারাও মানবতা, রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারণী কাজে দক্ষ এবং কাজ করার অধিকার রাখে।

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;