অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামের বিকাশ ঘটছে বেশ দ্রুত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সিডনি মসজিদ, অস্ট্রেলিয়া, ছবি: সংগৃহীত

সিডনি মসজিদ, অস্ট্রেলিয়া, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর একটি অস্ট্রেলিয়া। সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ব্যাপকহারে কমলেও অন্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

২০০৬ সালের আদমশুমারির পর থেকে সেখানে মুসলমানের সংখ্যা শতকরা ৪০ ভাগ বেড়েছে। যেখানে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা কমে শতকরা ৬১ ভাগে দাঁড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৭৬ সালে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৪ হাজার ৭১ জন। বর্তমানে দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় সাত লাখের মতো মুসলমান বসবাস করছে।

ব্রিটিশরা অস্ট্রেলিয়ার সভ্যতা গড়ে তোলেন। এর পর মুসলমানরা আবাস গড়েন। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম যে মুসলমানরা পদার্পণ করেন, তারা ছিলেন ব্যবসায়ী। ইন্দোনেশিয়া থেকে তারা সেখানে ব্যবসার উদ্দেশে যান। তবে আফগান উট মালিকদের প্রথম সফল কাফেলা করাচি বন্দর থেকে জাহাজে আরোহণ করে ৩১ ডিসেম্বর ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে। ওই কাফেলায় ১২৪টি উট এবং আরও কিছু পশু ছিল। সেগুলোর তত্ত্বাবধানের জন্য ৩১ জন আফগানকে অস্ট্রেলিয়ায় আনা হয়। তারা ছিলেন মুসলমান। তারাই মূলত অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে একটি ছাপড়া ঘর নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রথম মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়।

আফগানদের পর জার্মান, তুরস্ক, লেবানন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান থেকে বহুসংখ্যক মুসলমান এখানে অস্ট্রেলিয়ায় অধিবাস গ্রহণ করেন। মুসলমানদের সর্বাধিক বসবাস নিউ সাউথ ওয়েলসে, দ্বিতীয়ত ভিক্টোরিয়াতে, তৃতীয়ত কুইন্সল্যান্ডে আর চতুর্থ নম্বরে আছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।

মুসলমানদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনিতেও প্রচুর মুসলমান বসবাস করেন। লাকেম্বায় সিডনি তথা অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ অবস্থিত। এই মসজিদে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত ও তাবলিগ জামাতের মিনি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদটি নির্মিত হয় ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে। পার্থে মসজিদ নির্মাণ করা হয় ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে। গোটা অস্ট্রেলিয়ায় কয়েকশ’ মসজিদ রয়েছে। যদিও নতুন মসজিদ নির্মাণের আবেদন নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগে, অনেক সময় অনুমতিও পাওয়া যায় না। বিশ্বের যে ১০টি মসজিদের সৌন্দর্য দেখে মানুষ মুগ্ধ হন- অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন মসজিদ এর অন্যতম। এই মসজিদের গায়ে সূর্যের আলো পরলে চকচক করে।

অস্ট্রেলিয়ার কোথাও কোনো মসজিদে এমনিতে মাইকে আজান প্রচার হয় না। তবে ঈদের জামাতের সময় অনেক মসজিদে স্থান সঙ্কুলান না হলে রাস্তা বন্ধ করে জামাত আদায় করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালের মে মাসে করোনার কারণে প্রথমবারের মতো উচ্চস্বরে আজানের অনুমতি মেলে কয়েকদিনের জন্য। ওই কয়দিন শুধু লাউডস্পিকারে মাগরিবের আজান প্রচার করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় মুসলমানদের আলাদা একটি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। চ্যানেলটির নাম ‘ওয়ান পাথ নেটওয়ার্ক।’ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর মেলবোর্নের থোর্নবাড়িতে স্থাপিত হয়েছে, ‘ইসলামিক মিউজিয়াম অব অস্ট্রেলিয়া’ (আইএমএ)। ইসলামের ঐতিহাসিক শিল্পকর্ম এবং ইসলামি ইতিহাসের গতিধারা তুলে ধরার একটি অনবদ্য প্রয়াস এটি। এই প্রতিষ্ঠানে সন্নিবেশিত হয়েছে ইসলামি শিল্পকর্মের বর্ণিল আয়োজন। যেমন, ইসলামি স্থাপত্য শিল্প, ক্যালিওগ্রাফি, চিত্রশিল্প, গ্লাস, সিরামিক এবং বস্ত্রশিল্পের বৈচিত্র্যময় প্রদর্শনী।

কয়েক বছরখানেক আগে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফ খেলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম সিডনির গ্র্যান্ড মসজিদে তাবলিগ করে এসেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে তাবলিগের সাথিরা অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম প্রচারের জন্য নিয়মিত সফর করেন।

২০১৩ সালে কোরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম সংসদ সদস্য এড হোসিচ। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুসলমান হওয়া তার জন্য গর্বের বিষয় বলে আখ্যায়িত করেছিলেন তিনি।

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পার্লামেন্টে প্রথম নির্বাচিত মুসলিম মহিলা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন মিসরীয় বংশোদ্ভূত ড. আন্নি এলি। তিনি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান রাজ্য থেকে অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির টিকিটে নির্বাচিত হন।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীতে প্রথম হিজাবি নারীর স্বীকৃতি পেয়েছেন ক্যাপ্টেন মুনা সিন্দি। তিনি নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ পদাধিকারী একজন মুসলিম প্রকৌশলী। অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স কলেজের সেন্টার ফর ডিফেন্স এন্ড স্ট্রাট্যাজিক স্টাডিজ বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন মসজিদ, ছবি: সংগৃহীত

১৯৮৯ সালে মুনা নৌবাহিনীতে প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে হজপালন করেন। হজ থেকে ফেরার পর মুনা ব্যক্তিজীবনে ইসলামে অনুশাসন পুরোপুরি পালনের চেষ্টা করেন। এ ভাবনা থেকেই তিনি হিজাব পরিধান শুরু করেন।

২০১৫ সালে নৌবাহনী প্রধানের ইসলামি সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে তিনি বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন। একই বছর তিনি নৌবাহিনী ও মুসলিমদের মধ্যে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করায় টেলাসটারা বিজনেস উইম্যানের বর্ষসেরা নারী নির্বাচিত হন।

গত কয়েক বছর ধরে মুসলমানদের রমজানের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি মুসলমানদের সম্মানে প্রধানমন্ত্রী ভবনে ইফতারির আয়োজন করা হয়।

অবাক করার মতো বিষয় হলো, গেল কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ‘অস্ট্রেলিয়ান কারিকুলাম অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড রিপোর্টিং অথরিটি’র এক জরিপে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো জরিপে এ ফলাফল বেরিয়ে আসে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ভিক্টোরিয়ার ইসলামি বিদ্যালয়গুলোতে গত ১০ বছরে ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বেড়েছে। ২০১০ সালে রাজ্যটির ৮টি ইসলামি প্রতিষ্ঠানে ৬ হাজার ৬৮৪ জন শিক্ষার্থী ছিল। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ১২ হাজার ৩১৮-তে উন্নীত হয়।

গেল আট বছরেই ভিক্টোরিয়ার ইসলামি বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। ‘আত-তাকওয়া কলেজ’ নামে পরিচিত এসব বিদ্যালয় একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে ১৯৮৬ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। এটি অস্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ ইসলামি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বস্তুত ইসলামি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে বেড়ে ওঠে। ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি এখানে সাধারণ বিষয়গুলোও পাঠদান করা হয়। তাই বেশিরভাগ মুসলিম অভিভাবক সন্তানদের এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম ও ইসলামি মূল্যবোধ দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;