ওয়াকফ ও জাকাত ব্যবস্থাপনায় সৌদির অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ওয়াকফ সম্পত্তি এবং জাকাত ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবের সফলতাকে কাজে লাগাতে তথ্য বিনিময়, করোনা পরিস্থিতিতে হজ, সৌদি সরকারের অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণ, রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ এবং বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক এমপির সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুলাইহান মতবিনিময় করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সৌদি রাষ্ট্রদূত ধর্ম মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। সাক্ষাতকালে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার ঐতিহাসিক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সুদৃঢ় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী কোভিড-১৯ করোনা পরিস্থিতির কারণে হজ করতে না পারায় বাংলাদেশের অপেক্ষমান লাখ লাখ হজযাত্রীর আগ্রহ ও আবেগের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের যাবতীয় প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় সৌদি সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আগামী হজের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশকে যথাসময়ে অবহিত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী সৌদি আরব সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ ও রাজধানীতে পূর্ব প্রতিশ্রুত আটটি আইকনিক মসজিদের সঙ্গে আরও একটি মসজিদ যুক্ত করে মোট নয়টি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব করলে সৌদি রাষ্ট্রদূত তাতে সম্মতি প্রদান করেন এবং এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যকার প্রস্তুতির অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমার সরকার কর্তৃক জোরপূর্বক বিতাড়িত ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয়ের যে ব্যবস্থা করেছে তা উল্লেখ করেন। এ সময় সৌদি রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে দয়া ও মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকার এবং জনগণের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা প্রশ্নে সৌদি সরকার বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি তার দেশ ও সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে বলেও উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী আলোচনাকালে বাংলাদেশের ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা এবং জাকাত ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সৌদি আরবের সফলতার অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সহযোগিতা চাইলে সৌদি রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন এবং প্রতিনিধি প্রেরণের কথা উল্লেখ করেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি সৌদি আরবে কর্মরত থেকে সে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে তা তুলে ধরেন এবং করোনা পরিস্থিতিতে সৌদিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়ে সৌদি সরকার যথেষ্ট সচেতন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
সাক্ষাতকালে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে উভয় দেশের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। এ সময় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তার বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।