প্রস্তাবিত হজ ও উমরা আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবি



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাব গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট্রের সংবাদ সম্মেলন, ছবি: সংগৃহীত

হাব গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট্রের সংবাদ সম্মেলন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রস্তাবিত হজ আইনের কয়েকটি ধারা বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকরা। অন্যথায় মানববন্ধন ও সমাবেশসহ আরও বড় কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন তারা।

রোববার (১৪ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘হাব গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট’র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সাবেক সভাপতি আব্দুস সোবহান ভুইয়া হাসান বলেন, হজযাত্রীর ৯০ শতাংশ পরিচালনা করে হজ এজেন্সিগুলো। অথচ এজেন্সি মালিকদের অন্ধকারে রেখে প্রস্তাবিত হজ ও উমরা আইন ২০২০-এ সংবিধানবিরোধী একাধিক ধারা-উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। এটি পাস হলে হজ ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে।

সোবহান বলেন, নতুন ধর্মপ্রতিমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা সংবিধান বিরোধী ধারা উপধারা যুক্ত করে এ হজ ও উমরা আইন প্রস্তাব করেছেন। এটি এখন ভোটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আছে।

আমরা এ আইনের বিতর্কিত ধারা ১৫ প্রশাসনিক ব্যবস্থা (১), ধারা-১৬ জরিমানার অর্থ আদায়, ধারা ১৭ এর আপিল আবেদন, ধারা-১৮ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ, ধারা ২০ আইনের অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ ও ধারা ২৩ রহিতকরণ ও হেফাজতসহ একাধিক ধারা-উপধারা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

এজন্য আমরা ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং এ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সদস্যসহ সবার সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, তবে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে আলোচনার পাশাপাশি আমরা সংবাদ সম্মেলন করছি।

তাদের দাবি, একটি হজ বা উমরা এজেন্সিকে ধর্মীয় সেবা প্রদানের জন্য কাজ করতে হয়। যাত্রীর কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকা টিকেট, ভিসা, মোয়াল্লেম ফি ও বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করতে হয়। হজযাত্রীদের টিকেটের টাকা রিজার্ভফান্ডে জমা থাকে হজ এজেন্সির মালিকরা এ টাকা কেবলমাত্র সৌদি এয়ারলাইন্স ও বাংলাদেশ বিমানের নামে পে-অর্ডার করতে পারেন। মোয়াল্লেম ফি ও বাড়ি ভাড়ার টাকা মোয়াল্লেমকে সৌদি সরকারের (IBAN) এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। এজেন্টরা এ টাকা উঠাতে পারেন না। বাকি কেবল খাওয়ার টাকা হজ এজেন্সির কাছে থাকে। এ কারণে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান যুক্তিযুক্ত নয়। জরিমানার টাকা প্যাকেজ মূল্যের চেয়ে প্রায় ১৭ গুন বেশি। এ কারণে এ ধারা ও উপধারাগুলো রহিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ধারা ১৬ জরিমানার টাকা আদায়, উপধারা (১) ও (২) জামানতের চেয়ে বেশি জরিমানা ধার্য করা ও আদায়ে Public Demands Recovery Act, 1913 কার্যকর করা হলে হজ ও উমরা এজেন্টরা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে অভিযোগের কারণে ব্যবসার মূলধনের বাইরে নিজস্ব জমি, বাড়ি, ভিটা ক্রোক করে ব্যবসা রক্ষা করা মোটেও সম্ভব নয়। বহু এজেন্সির মালিকের এত বেশি জরিমানা প্রদানের ক্ষমতা নেই। Public Demands Recovery Act, 1913 প্রয়োগ করে অর্থাৎ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে সরকারি পাওনা হিসেবে জরিমানার অর্থ আদায়যোগ্য হবে। এ ধারাটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে।

তৃতীয়ত, ১৭ নম্বর ধারা আপিল আবেদন। আইনের আশ্রয় গ্রহণ করা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা কখনও বিচার বিভাগের ওপরে হতে পারে না। অতএব ১৭ (৩) কোনো ব্যক্তি বা এজেন্সির বিরুদ্ধে এই আইন অনুযায়ী প্রশাসনিক জরিমানা বা শাস্তি আরোপিত হলে কোনো আদালতে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে না। এই ধারা সংবিধান পরিপন্থী। আমাদের দাবি এই ধারা ও উপধারাগুলো বাতিল করতে হবে।

চতুর্থত, ১৮ নম্বর ধারায় ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ। উপধারা (২) কোনো হজ বা উমরা এজেন্সির অংশীদার, পরিচালক বা অন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হলে একই বিষয়ে এ আইনের অধীনে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কোনো বাধা থাকবে না। আমাদের দাবি একটি অপরাধের জন্য দু‘বার বিচার বা জরিমানা করা অযৌক্তিক। এই অযৌক্তিক ধারা ও উপধারা বাতিল করতে হবে।

পঞ্চমত, আইনের অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ, সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর হাজীদের অধিকাংশ কর্মকাণ্ড, সেবার দায়িত্ব রাজকীয় সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়, মুয়াসসাসা, সৌদি সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত মোয়াল্লেম অফিসের ওপর বর্তায়। কেবলমাত্র খাওয়া ও বাড়ি এজেন্টগণ দেখাশোনা করবেন। যদি কোনো এজেন্ট হাজীদের সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর বাড়ি না পান তাহলে রাজকীয় সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় সাথে সাথেই ওই লাইসেন্স বাতিল করেন। সৌদি আরবে হাজীদের খাবার না পেলে বাংলাদেশের সরকারের কাউন্সিলর হজ সাথে সাথে ওই এজেন্সির বিচারের ব্যবস্থা করেন। তাহলে আইনের অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ এক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। এই ধারাটি বাদ দিতে হবে। হজযাত্রীদের নিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে যদি কোনো এজেন্ট হজযাত্রীর সাথে প্রতারণা বা অনিয়ম করে তাহলে বাংলাদেশে তার বিচার হবে।

এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন হাব গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও হজযাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের, সংগঠনটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজুল ইসলাম, আটাবের সাবেক সেক্রেটারি আসলাম খান, আব্দুস সালাম আরেফি ও মো. মানিক প্রমুখ।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, প্রস্তাবিত হজ আইন বাতিল করা না হলে বেসরকারি পর্যায়ে হজ ব্যবস্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে। তাছাড়া এসব ধারা-উপধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

স্টেকহোল্ডার হিসেবে হাবের ভূমিকা জানতে চাইলে আটাবের সাবেক সেক্রেটারি আসলাম খান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত হজ আইনটির বিতর্কিত ধারা সম্পর্কে হাব নেতারাও অন্ধকারে ছিল। আমরা তাদের বিষয়টি জানানোর পর এসব ধারা বাতিলের জন্য তারা সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

   

বিশ্বজুড়ে হালাল বিনিয়োগ কেন বাড়ছে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিশ্বে বেড়েছে শরিয়াসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বে বেড়েছে শরিয়াসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া বয়কট আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগে। অনেকে অর্থ ব্যয় বা বিনিয়োগের আগে তাদের অর্থ কোথায় যাচ্ছে, সে বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। এ অবস্থায় বেড়েছে ‘শরিয়াসম্মত’ পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, যা বিশ্বব্যাপী গতি এনেছে ‘হালাল’ অর্থনীতিতে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য আগামী বছর ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। ২০১৫ সালে এই হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। অর্থাৎ আট বছরে এর আকার দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ২০২১ সালে হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার। এ খাতের বিশ্লেষকেরা বলছেন, চার বছরের মধ্যেই এই বাজার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

গত বছর প্রকাশিত জেনারেল কাউন্সিল ফর ইসলামিক ব্যাংকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা বলছে, বিগত এক দশকে বৈশ্বিক ইসলামিক তহবিলের বাজার ৩০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি ডলার এখন বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে হালাল বিনিয়োগ ও সুযোগ উভয়েরই চাহিদা বেড়েছে।

হালাল বিনিয়োগের একটি উদাহরণ হলো- ইসলামি ব্যবসায় অর্থায়ন। এই ব্যবসা মুনাফা ভাগাভাগি মডেলের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। আরও আছে শরিয়াসম্মত বিমা এবং সুকুক, যা মালিকানা নির্দেশ করে এমন একটি ইসলামিক আর্থিক সার্টিফিকেট। সুকুক বন্ডধারীরা একটি ব্যবসার আংশিক মালিকানা লাভ করেন, ফলে মুনাফার অংশ পান।

গোল্ডম্যান স্যাকস ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছিল যে, ২০৭৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০টি বড় অর্থনীতির মধ্যে ৫টি অর্থনীতির দেশে ৮৫ কোটির বেশি মুসলমান জনগোষ্ঠী থাকবে। এই দেশগুলো হলো- ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও মিসর।

যেহেতু জনসংখ্যা বাড়বে, তাই বাড়বে আর্থিক পণ্যের চাহিদা। ২০২৩ সালের স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২–২৩ অর্থবছরে শরিয়াসম্মত বিনিয়োগে ২ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এক বছরে এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২৮ শতাংশ। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দিনারস্ট্যান্ডার্ড প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ এখন সাবধানী, ফলে তারা নৈতিকতার সঙ্গে বিনিয়োগ করছেন। হালাল বিনিয়োগ এর একটি বড় অংশ। বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এটি বাড়ছে। আগে লোকজন খুঁজত হালাল কোনটি। হারাম না হলেই তারা খুশি হতো। এখন শুধু হালাল নয়, এটি তাদের মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের সঙ্গে যায় কি না, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বিভিন্ন পণ্য বর্জন আন্দোলনের ফলে তারা এখন আরও বেশি সচেতন। কোনো জিনিস হালাল হতে পারে, তবে আপনি হয়তো সেটা ব্যবহার করতে চান না, কিংবা এর সঙ্গে জড়িত হতে বা এতে বিনিয়োগ করতে চান না।

হালাল বিনিয়োগে দখলদার ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধের প্রভাব দেখা গেছে। যেসব পণ্য-ব্র্যান্ড ইসরায়েল ও গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে সমর্থন করছে বলে ভোক্তারা মনে করছেন, সেসব ব্র্যান্ড বর্জন করার একটি প্রচারণা এখন চলছে। হালাল বিনিয়োগের চাহিদা বাড়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে কাজ করছে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হালাল বিনিয়োগ অনেক দিন ধরেই বাড়ছে। তবে এ ধরনের বিনিয়োগ আরও জোরেশোরে বেড়েছে গত ছয় মাসে।

;

উমরা ভিসার মেয়াদ নিয়ে নতুন ঘোষণা সৌদির



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র উমরা ভিসার মেয়াদ নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগে উমরা ভিসার ৯০ দিন মেয়াদ গণনা শুরু হতো সৌদিতে প্রবেশের পর। বর্তমানে এ নিয়ম পরিবর্তন করে ভিসা ইস্যুর দিন থেকে ৯০ দিন সৌদিতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে উমরা ভিসায় যারা সৌদি আরবে অবস্থান করছেন তাদের আগামী ১৫ জিলকদ তথা ২৩ মে এর আগেই সৌদি আরব ত্যাগ করতে হবে। সৌদিতে আসার পর ৯০ দিন পূর্ণ হোক বা না হোক।

এ সময়ের পরেও যারা ৯০ দিন পূর্ণ হয়নি বলে রয়ে যাবেন তারা আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন বলে সতর্ক করেছে হজ মন্ত্রণালয়।

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ১৫ জিলকদের পর এ বছর হজের আগে আর কাউকে উমরা পালনের অনুমতি দেওয়া হবে না।

গালফ নিউজের প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে আগামী ২৭ জুন। তার আগে পালিত হবে পবিত্র হজ। আর হজের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে এবং হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতেই আর উমরা পালন করতে দেওয়া হবে না।

সৌদি মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, যাদের উমরা ভিসা ও অনুমতি দেওয়া হবে, তারা ওই ভিসা দিয়ে হজপালন করতে পারবেন না। অর্থাৎ হজের জন্য আলাদাভাবে অনুমতি নিতে হবে। যাদের কাছে উমরাপালনের অনুমতিপত্র আছে, আগামী ২০ জিলকদের মধ্যে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে মক্কা নগরী ছাড়তে হবে।

গত কয়েক বছর ধরে উমরা ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করায় পবিত্র উমরাপালনকারীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এ বছর পবিত্র রমজানে তিন কোটি মুসলমান উমরা পালন করেছেন।

প্রসঙ্গত, আগামী জুনের শুরুতে পালিত হবে এবারের হজ। অস্বাভাবিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজযাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। অনেকে হজের পরিবর্তে উমরায় যাচ্ছেন। এ কারণেও আগের তুলনায় উমরাযাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

;

রেকর্ড ছাড়িয়েছে মুসলিমবিদ্বেষ, নানা সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নানা সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

নানা সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুধু গাজা ইস্যুতেই যে মুসলমানরা বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ তা নয়, বর্ণবাদ, বৈষম্য ও বিশ্বাসহীনতা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে ধীরে ধীরে ওয়াশিংটনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে আমেরিকার মুসলমান থেকে শুরু করে মুসলিম বিশ্ব। দীর্ঘদিন ধরে জমতে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর।

বিভিন্ন গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর প্রাথমিকভাবে এর পেছনে রয়েছে অভিবাসন এবং অন্য ধর্মের তুলনায় মুসলমানদের মধ্যে উচ্চ জন্মহার। জনসংখ্যার এমন বাড়-বাড়ন্ত সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা বৈষম্য এবং তাদের নিয়ে অনেকের নেতিবাচক ধারণাসহ বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য বলছে, অনেক আমেরিকান মুসলিম সন্দেহ থেকে শুরু করে শারীরিক আক্রমণ পর্যন্ত নানা বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছে এবং গেল কয়েক বছর ধরেই তাদের এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যদিয়ে যেতে হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের বৈষম্য বিচ্ছিন্নতা এবং অবিশ্বাসের অনুভূতি বাড়িয়ে দিতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনেকের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করছে।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ এসব বিষয় বোঝার চেষ্টা করছে? নাকি বুঝেও বুঝতে চাইছে না তারা? এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কিছুটা জটিল হলেও, একটি খবর সবাইকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড হারে মুসলিমবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়া।

গত বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনা রেকর্ড হারে বেড়েছে। এর পেছনে ছিল মূলত ইসলামভীতি (ইসলামোফোবিয়া) এবং বছরের শেষ দিকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ঘিরে সৃষ্ট পক্ষপাত। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (অ্যাডভোকেসি গ্রুপ) কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

সিএআইআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামবিদ্বেষ সংক্রান্ত মোট ৮ হাজার ৬১টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি। এমনকি সংগঠনটির ৩০ বছরের ইতিহাসে এ সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৬০০টি ঘটনা ঘটেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও একই ধরনের ধারণা দিয়েছে। এসব সংগঠন বলছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘিরে ইসলামোফোবিয়া, ফিলিস্তিনবিরোধী জনমত ও ইহুদিবিদ্বেষ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে বেড়েছে।

সিএআইআর জানায়, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসলামবিদ্বেষের ঘটনা কমেছিল। তবে ২০২৩ সালেই তা আবারও বাড়তে থাকে। গত বছরের প্রথম ৯ মাসের প্রতি মাসে গড়ে ৫শ’র মতো এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে শেষের তিন মাসে তা অনেক বেড়ে যায়। এ সময় প্রতি মাসে ১২শটি করে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামোফোবিয়ার এ বৃদ্ধির কারণ হলো- ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত। ওই বছর অভিবাসন ও আশ্রয়, কর্মসংস্থান বৈষম্য, ঘৃণামূলক অপরাধ ও শিক্ষাবৈষম্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে।

এমতাবস্থায় বসে নেই যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতারা। দেশটিতে নিজেদের শক্তি ও ঐক্য দেখিয়েছেন। বাইডেন প্রশাসন থেকে দেওয়া ইফতারের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা। এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতাকে সমর্থন দিয়ে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন মুসলমানরা। বাধ্য হয়ে ইফতার আয়োজন বাতিল করে বাইডেন প্রশাসন।

গত বছরও রমজান ও ঈদে হোয়াইট হাউসে বড় আকারে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। অনেক মুসলমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেসময় সবাই বাইডেনের প্রতি নিজেদের ভালোবাসা আর সমর্থনের কথাও জানিয়েছিলেন।

রীতি অনুযায়ী এবারও বাইডেন প্রশাসন থেকে ইফতার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং অনেককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এর মাধ্যমে মুসলিম কমিউনিটির নেতারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে বাইডেনের দলের ন্যাশনাল মুসলিম ডেমোক্র্যাটিক কাউন্সিল শাখার নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ‘ইসরায়েলে গণহত্যা বন্ধ না করলে ২০২৪-এ আমাদের ভোট ও কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার আশা রাখবেন না।’

বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগামী বছরের ভোটে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে মুসলিম ভোট বাইডেনের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মিশিগান, ওহিয়ো ও পেনসিলভানিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে ভালো প্রভাব রয়েছে ন্যাশনাল মুসলিম ডেমোক্র্যাটিক কাউন্সিল শাখার।

;

সামাজিক সংকট মোকাবিলায় আলেমদের ভূমিকা রাখতে হবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নাজিরপুর উলামা পরিষদের বার্ষিক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত, ছবি : সংগৃহীত

নাজিরপুর উলামা পরিষদের বার্ষিক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কোরআন-সুন্নাহর খেদমতের পাশাপাশি সমাজসেবা এবং বিভিন্ন সামাজিক সংকট মোকাবিলায় আলেমদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে মিশে থাকা শিরক-বিদআতের মূলোৎপাটনে আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

রোববার (১৪ এপ্রিল) পিরোজপুরের নাজিরপুরে অবস্থিত জামিয়া আরাবিয়া সাতকাছেমিয়া মাদরাসা মিলনায়তনে নাজিরপুর উলামা পরিষদের বার্ষিক প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাতকাছেমিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান মুমতাজি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি ‘সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ ও খেদমতে খালক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গঠিত নাজিরপুর উলামা পরিষদেরসার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সংগঠনের সভাপতি মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন কাসেমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি আবুল হাসান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি কামরুল ইসলাম আরেফি।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন কাসেমি বলেন, নাজিরপুর উলামা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম গতিশীল করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবার সহযোগিতা নিয়ে এটা দেশের একটি রোল মডেল সংগঠনে পরিণত হবে- ইনশাআল্লাহ।

সাধারণ সম্পাদক মুফতি আবুল হাসান বার্ষিক রিপোর্ট পেশ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে সংগঠনের মূল প্রতিপাদ্য সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ ও খেদমতে খালক বাস্তবায়নে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে এক কাতারে শামিল হওয়ার আহবান জানান।

প্রতিনিধি সম্মেলনে ইউনিয়ন প্রতিনিধিরা নিজ নিজ ইউনিয়নের সার্বিক কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সাতকাছেমিয়া মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন, পিরোজপুর উলামা পরিষদের আমির মুফতি ওয়াহিদুল আলম ও সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমি, মুফতি শেখ মুজিবুর রহমান, মুফতি শরফুদ্দীন আহমাদ, মাওলানা ফেরদাউস আহমাদ, মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মুনীর, মাওলানা ইলিয়াস আহমাদ, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা আতিকুর রহমান, মুফতি হাবিবুল্লাহ মিসবাহ কাসেমি, মুফতি ফরহাদ হোসাইন, মুফতি বেলাল হোসাইন, মুফতি আতাউল্লাহ, মুফতি নাসির উদ্দিন, মাওলানা জামাল উদ্দীন ও মাওলানা শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্মেলনে সাতকাছেমিয়ার প্রবীণ মুরব্বি মাস্টার খালেকুজ্জামান ও শেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং পরিষদের সার্বিক কার্যক্রমে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা আবু সালেহ, মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী, মাওলানা আবুল বাশার পিরোজপুরী, মুফতি ইমরান হোসাইন মুজাহিদী, মাওলানা আবুল খায়ের, মুফতি আসলাম হোসাইন, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা শামসের আলী, মাওলানা আখতারুজ্জামান, মাওলানা এনামুল হক, মুফতি জহিরুল ইসলাম পিরোজপুরী, মাওলানা জামাল উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল জলিলসহ নাজিরপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ।

সম্মেলন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয় এবং আগত অতিথিদের সম্মানে দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়।

;