‘ওমরার সময় আফজাল পরিবারের কথা আমার হৃদয়ে থাকবে’
করোনা মহামারির প্রকোপ কমে আসার পর প্রথমবারের মতো পবিত্র ওমরা পালনে সৌদি আরব যাচ্ছেন টরোন্টোর ইমাম মুনির আল কাসেম। পবিত্র ওমরা পালনকালে কানাডায় বর্ণবাদী হামলায় নিহত মুসলিম আফজাল পরিবার তার হৃদয় থাকবে। তার পরিবারের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করার কথা জানিয়েছেন এই ইমাম।
তিনি বলেন, ‘তারা আমার হৃদয়ে আছে। আমি যখন ওমরায় যাব, তখন তারা আমার সঙ্গে থাকবে’ বলে লন্ডন ফ্রি প্রেসকে বলেছেন ইসলামিক সেন্টার অফ সাউথ ওয়েস্ট অন্টারিওর ইমাম মুনির আল কাসেম।
ওমরার সফরে আফজাল পরিবারের স্মরণের মধ্য দিয়ে ইমাম মুনির আল কাসেম উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। কানাডার মুসলিম কমিউনিটিতে ইমাম মুনির আল কাসেমের বেশ প্রভাব রয়েছে।
চলতি বছরের জুন মাসে কানাডার লন্ডন শহরে বর্ণবাদী এক চালক গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে। তাদেরকে অন্টারিওর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ঘৃণ্য ওই হামলায় মারা যান- সৈয়দ আফজাল (৪৬), তার ৭৪ বছর বয়সি বৃদ্ধ মা, সৈয়দ আফজালের স্ত্রী মাদিহা সালমা (৪৪) এবং মেয়ে ইয়ুমনাহ আফজাল (১৫)।
তাদের মৃত্যুর ঘটনায় কানাডার সব শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ান এবং বর্ণবাদী এই হামলার প্রতিবাদ করেন।
কানাডার পুলিশ ইচ্ছে করে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাকারী বর্ণবিদ্বেষী চালক ন্যাথানিয়েল ভেল্টম্যানকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে চালক স্বীকার করেন, মুসলিম বলেই তাদের তিনি ইচ্ছে করে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন।
নৃশংস এ ঘটনায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিহতদের প্রতি গভীর শোক এবং ধর্মবিদ্বেষের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, আমি খবরটি শুনে আতঙ্কিত, কানাডায় ইসলামবিদ্বেষ বা যে কোনো ধর্মবিদ্বেষীদের স্থান হবে না।
আফজাল পরিবারের কথা স্মরণ করে ইমাম আরও বলেন, ‘আমাদের এক মুসলিম ভাইয়ের পরিবারকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এ জন্য কষ্ট পেয়েছি। ধর্মীয় নেতা হিসেবে ওই পরিবারের কথা মনে রাখা আমার দায়িত্ব। যেহেতু আমি পবিত্র এক সফরে যাচ্ছি, তাই তাদের কথা ভুলতে পারি না।’
আগামী নভেম্বর মাসে দুই সপ্তাহের ওমরা সফরে সৌদি আরব যাচ্ছেন ইমাম মুনির আল কাসেম। তার সঙ্গে প্রায় ৫০ জন মুসলমান থাকবেন। করোনা মহামারির পর কানাডা থেকে ওমরার জন্য তারাই প্রথম সৌদি আরব যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, কানাডায় ইসলাম সবচেয়ে অগ্রসরমান ধর্ম। দেশটির বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত এক দশকে কানাডার মুসলিম জনসংখ্যার হার ৮২ শতাংশ বেড়েছে। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটিতে এক মিলিয়নের চেয়ে বেশি মুসলিম বসবাস করে, যারা কানাডার মোট জনসংখ্যার ৩.২ শতাংশ।