ইস্তেগফার পাঠের উপকারিতা

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

‘ইস্তেগফার’ শব্দের অর্থ কৃত পাপকর্মের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহর অসংখ্য গুণাবলির একটি হলো- ক্ষমা। আল্লাহতায়ালা ‘গাফুরুর রাহিম’ অর্থাৎ তিনি পরম ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়ালু। যদি কোনো বান্দা ভুলবশত অতি ঘোরতর গোনাহের কাজ করে এবং সে যদি কায়মনোবাক্যে সিজদায়রত হয়ে তওবা-ইস্তেগফার করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চায়, তাহলে আল্লাহ সেসব ইমানদার লোকদের ক্ষমা করে দেন। মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি, যে তওবা করে, ইমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচলিত থাকে।’ -সুরা ত্বহা : ৮২

মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী।’ -সুরা নাসর : ৩

বিজ্ঞাপন

ইস্তেগফার পাঠে জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। অশান্ত হৃদয় প্রশান্ত হয়। এ প্রসঙ্গে হজরত হাসান বসরি (রহ.) বলেন, ‘জীবনে ইস্তেগফার পাঠের পরিমাণ বৃদ্ধি করো, কারণ তুমি জানো না, কোন দিকে আল্লাহর রহমত তোমার ওপর অবতীর্ণ হবে।’

ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, ইস্তেগফার পাঠে দুঃখ লাঘব হয়, দুঃশ্চিন্তা কমে, ইস্তেগফারে পাঠের পর দোয়া-মোনাজাত করলে তা কবুল করা হয়, ক্ষমার দরজা খুলে যায়, রিজিকে প্রশস্ততা আসে, অবিবাহিতদের বিয়ে সহজ হয়, নিঃসন্তান দম্পতি সন্তান লাভ করেন ও ধন-সম্পদে বরকত হয়। সুতরাং মানব জীবনের যেকোনো সমস্যায় বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা উচিৎ।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে এই উম্মতের জন্য আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষার দু’টি বিষয় কোরআনে কারিমে উল্লেখ করে ইরশাদ হয়েছে, ‘অথচ আল্লাহ কখনই তাদের ওপর আজাব নাজিল করবেন না যতক্ষণ আপনি (নবী মুহাম্মদ সা.) তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা (তওবা-ইস্তেগফার) প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের ওপর আজাব দেবেন না।’ -সুরা আনফাল : ৩৩

বর্ণিত আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যতদিন নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের মধ্য জীবিত থাকবেন, ততদিন আল্লাহ উম্মতের ওপর আজাব দেবেন না। উম্মত ইস্তেগফারে অটল থাকলেও আল্লাহ তাদের ওপর আজাব নাজিল করবেন না। এখন যেহেতু আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের মধ্যে জীবিত নেই, তাই আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে ইস্তেগফার পডা ছাড়া আমাদের আর বাঁচার কোনো পথ নেই।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগ্‌ফার পাঠ করে, আল্লাহতায়ালা তাকে সর্বপ্রকার বিপদাপদ হতে মুক্ত করবেন, সবরকম দুশ্চিন্তা হতে রক্ষা করবেন এবং তার জন্য এমন স্থান থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারেন না।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইবলিস তার রবকে উদ্দেশ্য করে বলল, আপনার সম্মান ও ইজ্জতের শপথ করে বলছি, যতক্ষণ বনী আদমের দেহে প্রাণ থাকবে ততক্ষণ আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে থাকব। ফলে আল্লাহ বললেন, আমি আমার সম্মান-প্রতিপত্তির শপথ করে বলছি, আমি তাদেরকে ক্ষমা করতে থাকব যতক্ষণ তারা আমার কাছে ক্ষমা চাইতে থাকব।’ -মুসনাদে আহমাদ : ৩/২৯